আন্তর্জাতিক
ভারতকে বৃহত্তর সংঘাত পরিহার করতে বলল যুক্তরাষ্ট্র

কাশ্মিরের মারহামা গ্রামে হামলার পর দক্ষিণ কাশ্মিরের পেহেলগামের দিকে যাওয়ার পথে একটি মহাসড়কে টহল দিচ্ছেন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা—ছবিটি তোলা হয়েছে ২৩ এপ্রিল। সাম্প্রতিক পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে—এমন শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ায় বড় পরিসরের যুদ্ধ এড়াতে ভারতকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চায় না এই অঞ্চল কোনো বৃহৎ সংঘাতের মুখোমুখি হোক। শুক্রবার (২ মে) টিআরটি গ্লোবালের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মিরে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে ভারতের যেকোনও পদক্ষেপ যেন গোটা অঞ্চলে বিস্তৃত সংঘাতে পরিণত না হয়, এ বিষয়ে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ফক্স নিউজের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা আশা করি, ভারত এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে যাতে এ ঘটনা থেকে কোনো বড় আঞ্চলিক সংঘর্ষের জন্ম না হয়।”
ভ্যান্স আরও বলেন, “আমরা চাই, পাকিস্তান এই হামলার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করুক। আমাদের প্রত্যাশা, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের ভূখণ্ডে থাকা সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত ও দমন করবে। এই পথেই আমরা সমস্যার সমাধান দেখতে চাই। পরিস্থিতির ওপর আমরা নিবিড়ভাবে নজর রাখছি—দেখা যাক কী হয়।”
এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন পাকিস্তান তার সামরিক মহড়া শুরু করেছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সেনাবাহিনী পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে, যেখানে আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার ও যুদ্ধ কৌশল প্রদর্শন করা হয়। এতে অংশ নেয় দেশের অফিসার ও সেনাসদস্যরা।
বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক সাম্প্রতিক কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনাকর অবস্থায় রয়েছে। কাশ্মিরের ভারত-শাসিত অঞ্চলে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে সহায়তার অভিযোগ আনে।
পাকিস্তান এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তাদের জড়ানোর চেষ্টা “ভিত্তিহীন” এবং ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদ।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। একই সঙ্গে জাতিসংঘ দুই দেশকে “সর্বোচ্চ সংযম” প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে এবং সমস্যার “অর্থবহ ও শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে” সমাধানের পথে এগোতে বলেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়া জাহাজে ইসরায়েলের হামলা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার ও ত্রাণসামগ্রী বহনকারী একটি জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ১২টার দিকে দক্ষিণ ইউরোপের দেশ মাল্টার আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। খবর এএফপির।
সংবাদসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার হয়ে খাবার, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রীর অভাবে ধুঁকতে থাকা গাজাবাসীর জন্য এই ত্রাণ জোগাড় এবং পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা প্রদানকারী এনজিও দ্য ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন (ট্রিপল এফ)।
হামলায় অবশ্য হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। এক বিবৃতিতে ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১২টার দিকে মাল্টার আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা দিয়ে চলমান অবস্থায় ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশনের ত্রাণবাহী জাহাজে সরাসরি হামলা করা হয়। দুটি সশস্ত্র ড্রোন জাহাজটিতে আঘাত হানে। এতে জাহাজটির সামনের দিকে আগুন ধরে যায় এবং বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।”
ইসরায়েলের এ হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন বলেছে, আমাদের জাহাজটি সম্পূর্ণ বেসামরিক ও নিরস্ত্র ছিল। গাজার অসহায় ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার ও ত্রাণসামগ্রী ছিল সেখানে। ট্রিপল এফের কয়েকটি সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা ছিলেন সেখানে। এ ধরনের হামলায় তাদের প্রাণহানি ঘটতে পারত।
সংস্থাটির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোনো কোনো দেশের আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় বেসামরিক নৌযানকে লক্ষ্য করে আঘাত করা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘণ এবং মাল্টার সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান— ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে যেন এ ইস্যুতে দেশটির কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া হয়।
এদিকে এ ঘটনায় মাল্টা সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাহাজের মূল ইঞ্জিন ও জেনারেটরে আঘাত লেগেছে। জাহাজটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল, তবে মাল্টার নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড বাহিনীর সহায়তায় রাত ১টা ২৮ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। জাহাজটিতে মোট ১২ জন ক্রু এবং ৪ জন বেসামরিক যাত্রী ছিলেন। তাদের সবাই অক্ষত রয়েছেন। রাত ২ টা ১৩ মিনিটে তাদের মাল্টার বন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। জাহাজটি এখনও আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় রয়েছে এবং সেটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হামলার ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ও মন্ত্রিসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এএফপি। কিন্তু, কোনো পক্ষই মন্তব্য করতে রাজি হয়নি এ ব্যাপারে।
প্রসঙ্গত, প্রায় দু’মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। হামলার আগে গত ২ মার্চ গাজায় সব ধরনের ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইসরায়েল, যা বলবৎ আছে এখনও।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারের জন্য আইফোন তৈরি হবে ভারতে

আইফোনের একটি বড় অংশ তৈরি হতো চীনের কারখানায়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে এবার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাপল।
বৃহস্পতিবার অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানিয়েছেন, মার্কিন বাজারের জন্য আইফোনের একটি বড় অংশ এখন থেকে ভারতের কারখানায় তৈরি হবে।
কুকের কথায়, মার্কিন বাজারে যে আইফোন বিক্রি হবে তার একটা বড় অংশ তৈরি হবে ভারতে। অ্যাপলের এই বছরের প্রথম কোয়ার্টারের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে গিয়ে একথা জানিয়েছেন কুক।
ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, আই প্যাড, ম্যাক, ইয়ার পড, অ্যাপল ওয়াচের একটা বড় অংশ তৈরি হবে ভিয়েতনামে। উল্লেখ্য, ভিয়েতনামে এর আগেও অ্যাপলের বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি হতো। কিন্তু এবার তার পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, মার্কিন ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির কারণে চীনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য অনেকটাই মার খেতে শুরু করেছে। ফলে অ্যাপলের মতো সংস্থা চীন থেকে তাদের কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
ট্রাম্প চীনের পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে। অন্যদিকে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করেছে চীনও। সেমিকন্ডাক্টর এবং ইলেকট্রনিক জিনিসের ওপর কিছু ছাড় দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু ওয়াশিংটন জানিয়েছে, সেই ছাড়গুলিও আগামী কিছুদিনের মধ্যে বদলে যেতে পারে।
কুক বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাব প্রথম কোয়ার্টারে তাদের ওপর খুব বেশি পড়েনি। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ার্টারে এভাবে চলতে থাকলে বিরাট ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে তাদের। সেই কারণেই চীন থেকে কারখানা সরিয়ে ভিয়েতনাম এবং ভারতে তা স্থানান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আইফোনের উৎপাদনের একটা বড় অংশ ভারতে নিয়ে এলেও চীনের কারখানা এখনই বন্ধ করছে না অ্যাপল। কুক জানিয়েছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও চীনের কারখানায় অ্যাপলের একটা বড় অংশ উৎপাদন চলতে থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অ্যাপলের যে জিনিস বিক্রি হয়, তার উৎপাদনের বড় অংশ এখনও চীনেই হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
প্লাস্টিকের গৃহসামগ্রী ব্যবহারে বছরে প্রাণহানি সাড়ে ৩ লাখ

প্লাস্টিকের একটি সাধারণ রাসায়নিক উপাদান ডাই-২-ইথাইলহেক্সাইল ফথালেট (ডিইএইচপি) বিশ্বব্যাপী হৃদরোগজনিত মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে ৫৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী প্রায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার ২৩৮ জন মানুষ ডিইএইচপি-জনিত কারণে হৃদরোগে মারা গেছেন। এই সংখ্যা ওই বয়সসীমার হৃদরোগজনিত মোট মৃত্যুর প্রায় ১৩ শতাংশ। খবর দ্য ল্যানসেট
ডিইএইচপি একটি প্লাস্টিসাইজার, যা প্লাস্টিককে নমনীয় ও টেকসই করতে ব্যবহৃত হয়। এটি খাদ্য প্যাকেট, চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রসাধনী, শ্যাম্পু, লোশনসহ নানা পণ্যে ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এই রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করলে হৃদযন্ত্রের ধমনিতে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাংগোন হেলথের গবেষকরা। তারা প্লাস্টিকের নানা পণ্যে ব্যবহৃত রাসায়নিকগুলোর স্বাস্থ্যগত প্রভাব বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের মতে, ডিইএইচপি শরীরে দীর্ঘদিন থেকে গিয়ে হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্লাস্টিকের রাসায়নিক শুধু হৃদরোগ নয়, বরং মুটিয়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বন্ধ্যাত্ব এবং ক্যান্সারের মতো দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিও তৈরি করে। যেসব দেশে রাসায়নিক নিরাপত্তা দুর্বল, সেসব জায়গায় এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ডিইএইচপি-জনিত কারণে ২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে ৫১০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা। তবে গবেষকদের ধারণা, প্রকৃত ক্ষতি ৩.৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
গবেষণার প্রধান লেখক ড. লিওনার্দো ট্রাসান্ডে বলেন, এই গবেষণা শুধু ডিইএইচপি ও নির্দিষ্ট বয়সের মানুষের ওপর ভিত্তি করে করা হলেও, ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত গবেষণা দরকার। এতে অন্য প্লাস্টিক-জাতীয় রাসায়নিকের প্রভাবও জানা যাবে এবং যথাযথ প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, এখনই সময় ডিইএইচপি ও অনুরূপ রাসায়নিকের ব্যবহার সীমিত করে নিরাপদ বিকল্প খোঁজার। শুধু গবেষণা নয়, সরকার ও নীতিনির্ধারকদেরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশিদের অভিযোগ শুনে পদক্ষেপ নিলেন ফিজির প্রধানমন্ত্রী

প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র ফিজির প্রধানমন্ত্রী স্টিভেনি রাবুকার কাছে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন রাজধানী সুভার একটি সুপারমার্কেটে কর্মরত ২৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক। প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা শুনেছেন এবং অভিযোগের তদন্ত করতে পদক্ষেপও গ্রহণ করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুভায় ফিজির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে সাক্ষাৎ করতে যান এই শ্রমিকরা। প্রধানমন্ত্রী তাদের সাক্ষাৎ দিলে তারা সুপারমার্কেটের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের আবাসনের দুরবস্থা, প্রয়োজনীয় খাবারের অভাব এবং নিয়োগচুক্তির লঙ্ঘন সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন।
প্রধানমন্ত্রী রাবুকা তাদের অভিযোগ শোনেন, ব্যক্তিগতভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং যেসব অভিযোগ এই শ্রমিকরা নিয়ে এসেছেন- সেসব তদন্ত করতে কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রীকে নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী রাবুকা বলেন, আত্মসম্মানে আঘাত হানে— এমন কোনো জীবনযাপনের দিকে কোনো কর্মীকে ঠেলে দেওয়া উচিত নয়। আইন মেনে চলা একটা ব্যাপর, কিন্তু শ্রমিকদের জীবনযাপনের মান উন্নত করার ব্যাপারটি শুধু আইন নয়— নিয়োগ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার ওপরও নির্ভর করে।
ফিজির প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের ফিজির অনেক নাগরিকও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। আমরা কখনও চাই না যে তাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করা হোক কিংবা তাদেরকে ঠকানো হোক। ঠিক সে কারণেই ফিজিতে যেসব বিদেশি নাগরিক কাজ করছেন, তাদের প্রতি আমাদের আচরণ অনুরূপ হওয়া উচিত।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অব্যাহতি দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে মাইক ওয়াল্টজকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, মাইক ওয়াল্টজকে জাতিসংঘে তার দেশের পরবর্তী দূত হিসেবে মনোনীত করা হবে। আমাদের জাতির স্বার্থকে সবার ওপরে রাখতে তিনি (ওয়াল্টজ) কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আমি জানি তিনি তার নতুন ভূমিকায়ও (জাতিসংঘে মার্কিন দূত হিসেবে) এভাবেই কাজ করে যাবেন।
প্রেসিডেন্ট এদিন সকালেই ওয়াল্টজকে এই পরিবর্তন বিষয়ে অবহিত করেন, পরে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এমনটি জানান হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা।
গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনান্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রশাসনে মাইক ওয়াল্টজের এই অপসারণ সবচেয়ে বড়সড় রদবদলের ঘটনা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর নতুন পদে আসীন হওয়ার খবর জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তরেও তিনি (রুবিও) তার শক্তিশালী নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন।’
মার্কো রুবিওর আগে একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। তিনি রিপাবলিকান সরকারের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
এদিকে, অব্যাহতি পাওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওয়াল্টজ লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আমাদের মহান জাতির জন্য আমার কাজ অব্যাহত রাখতে পারবো, এ কারণে আমি গভীরভাবে সম্মানিত।
গত মার্চে সামরিক হামলা সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য তৈরি একটি মেসেজিং গ্রুপে অসাবধানতাবশত একটি মার্কিন ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদককে যুক্ত করার পর থেকে ওয়াল্টজের ওপর চাপ বাড়তে শুরু করে। তথ্য ফাঁস নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে প্রভাব হারাতে থাকেন তিনি। যে গ্রুপটিতে ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ছিলেন।
খবরে জানা যায়, ওয়াল্টজ নিজেই ওই গ্রুপ চ্যাট তৈরি করেছিলেন। কিন্তু অসাবধানতাবশত গ্রুপে একজন সাংবাদিককে যুক্ত করা হয়। এপ্রিলে এ ঘটনার দায়ও নিয়েছিলেন ওয়াল্টজ। তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে না সরালেও তার অবস্থান ধীরে ধীরে নড়বড়ে হতে থাকে।