জাতীয়
পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার পরামর্শ

বিগত সরকারের সময়গুলোতে পুলিশ রাজনৈতিক ছাত্রছায়ায় কাজ করেছে। রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে অনেক আইনবিরোধী কাজেও লিপ্ত হয়েছে পুলিশের অনেক সদস্য। জনগণ বাংলাদেশ পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, জনতার পুলিশ হিসেবে দেখতে চায়। পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
বৃহস্পতিবার (১ মে) পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ বক্তব্য উঠে এসেছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন ড. সলিমুল্লাহ খান।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। যেটুকু থাকার কথা ছিল, তা নেই। ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন ও পুলিশ বিধি সেগুলোর পদে পদে সমস্যা আছে। সর্বশেষ পুলিশ সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট একনজর দেখলাম। তারাও উপলব্ধি করতে পারেনি। এসব বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয় সমাজের অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হচ্ছে জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যা সমাধান হচ্ছে গণতন্ত্র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী বলেন, আমরা পুলিশকে যেভাবে মিসইউজ করি, বিরোধীদল দমনের প্রেক্ষিতে অ্যাওয়ার্ড দেওয়াসহ সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে যদি পুলিশকে সংস্কার না করতে পারি তাহলে এই পুলিশকে কেবল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতেই সক্ষম হবো, রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করাতে সক্ষম হবো না। পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন মনে হয়েছে এটি একটি ত্রুটিযুক্ত কমিশন। কারণ পুলিশের ইমেজকে পুনরুদ্ধারের জন্য তেমন কিছু দেখিনি। একজন কনস্টেবলকে আপনি ১২-১৪ ঘণ্টা ডিউটি দিচ্ছেন, তার পরিবার, ব্যক্তিজীবন ও উৎকর্ষতা আসবে না। নন-ক্যাডার পুলিশ সদস্যরাই পুলিশের ইমেজ ফিরিয়ে আনতে পারবে।
নিজের একটি লেখার উদাহরণ দিয়ে ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন কেন করে? পুলিশ কি স্ব-প্রণোদিত হয়ে নির্যাতন করে? আমার বিশ্বাস না। এর পেছনে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং নোংরামি কাজ করে। বিরোধীদল দমনে পুলিশ মনে করে, সিম্বলি গুটিকয়েক ভয় ঢুকিয়ে দিতে পারি তাহলে বিরোধী দল-মত স্তব্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশ পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করবে সেটিই দেখতে চাই। জবাবদিহিতার জায়গা ইফেক্টিভ করতে পারলে পুলিশ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবে।
রাজনৈতিক প্রভাব থেকে দূরে থেকে পুলিশ সদস্যদের কাজ করার আহবান জানান নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. জাহেদ উর রহমান। তিনি বলেন, জনগণের পাশে থাকার জন্য আপনারা (পুলিশ) নিজেদের লড়াই চালাবেন। শাসকের পক্ষে অন্ধভাবে গেলে কী হয়, ৫ আগস্টের পর হয়তো সবাই সেটা বুঝতে পেরেছে।
৩২ বছর পুলিশে কাজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সবাই তেলবাজি করি। মন্ত্রী-এমপিদের বাসায় যাই। ব্যক্তিগত লাভ ও পদোন্নতির জন্য নানান রকম অবৈধ কাজে লিপ্ত হয়ে যাই। এটি দ্বিচারিতা, এর অবসান হওয়া উচিত।
সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষারই যদি দরকার তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার? এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলেনি; গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেই। রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে? যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারব সেটার কোনো গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি স্বদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না। সমাজে বিষাক্ত বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এটি আমাদের বুঝতে হবে। এতদিন যাদের প্রমোশন হয়নি এবং তাদের মধ্যে যাদের চাকরি আছে, তাদের দুই র্যাংক করে প্রমোশন দেওয়া উচিত। তারা অবসরে যাওয়ার আগে তাদের যেটা পাওনা সেটা দেওয়া উচিত। পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এই সম্পর্ক বদলাতে হবে। এটি অবশ্য পুলিশের হাতে নেই।
পুলিশে দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে সাবেক এই আইজিপি বলেন, যেভাবে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছে অফিসাররা এটা চিন্তার বাইরে। আমি এক সময় পুলিশের চাকরি জীবনে শ্বশুরবাড়ি ছিলাম। কারণ আমাদের যে বাড়ি সেখানে থাকার জায়গা ছিল না। তখনকার আইজিপি আমাকে ডেকে বলেছিলেন, ঘুস খাওয়ার চেয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকা ভালো, তুমি একদিন আইজিপি হবা।
তিনি আরও বলেন, আগে পুলিশে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। এখনো যে দুর্নীতি হচ্ছে না এই গ্যারান্টি নেই। আমি খোলাখুলি বলতে চাই না। দুর্নীতি থেকে পুলিশকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, পুলিশের প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি তখনই ইতিবাচক হয়, যখন তারা দেখে এই বাহিনীটি কেবল আইন প্রয়োগ করছে না, বরং জনগণের অধিকার রক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখার দায়িত্ব গ্রহণ করছে। জনতার পুলিশ মানে শুধু একটি পরিচয় নয়। এটি একটি দর্শন, যা নিরাপত্তার সঙ্গে সঙ্গে জনমনে আস্থা, শ্রদ্ধা ও সম্মান গড়ে তোলে।
তিনি বলেন, ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, অস্ত্র নয়; জনগণের আস্থা অর্জনই পুলিশের প্রকৃত শক্তি। পুলিশ যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের পাশে থাকে, তবে তারা ভয়ের প্রতীক নয় বরং হয়ে ওঠে ভরসার আশ্রয়। তাই পুলিশ হতে হবে এমন, যারা থাকবে জনগণের পাশে, জনগণের হয়ে, জনগণের জন্য।

জাতীয়
একদিনে ডেঙ্গুতে আরও এক শিশুর মৃত্যু, আক্রান্ত ২৬২

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২৬২ জন। শনিবার (২৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৮ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আটজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৪০ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ছয়জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ছয়জন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিনজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের এ যাবত আট হাজার ৩৮০ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছরের ২৮ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার ৪৮৪ জন। এর মধ্যে ৫৮ দশমিক নয় শতাংশ পুরুষ ও ৪১ দশমিক এক শতাংশ নারী রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে ৪১ জন মারা গেছেন। মৃত একজন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মারা যান ৫৭৫ জন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
জাতীয়
ঢাকার তিন এলাকায় ই-রিকশা নামানোর ঘোষণা আসিফের

ঢাকার তিনটি এলাকায় ই-রিকশা নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এসব রিক্সা তৈরি করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে তিন চাকার স্বল্প গতির ব্যাটারি চালিত ই-রিকশার প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ঢাকা শহরের অনিয়ন্ত্রিত রিকশা একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। সড়কের ৩২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে এসব অটো রিকশার কারণে। তাই নিরাপদ বাহন হিসাবে ই-রিকশাকে তৈরি করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন ই-রিকশার ক্ষেত্রে লাইসেন্সের ব্যবস্থা থাকবে। যা হবে অনলাইনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আগামী আগস্ট থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির পল্টন ও ধানমন্ডি এবং উত্তর সিটির উত্তরায় প্রাথমিকভাবে চলবে এসব ই-রিকশা।
একই অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, আগস্টের প্রথম থেকেই মার্কেটে আসবে নতুন এই রিকশা পাওয়া যাবে। দুই সিটির দুই জোনে অনুমোদনহীন রিকশাগুলো ধীরে ধীরে সরিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
চালক প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানানো হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় প্রথমে মাস্টার ট্রেইনার গড়ে তোলা হবে, যারা পরে মাঠ পর্যায়ে চালকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
মাস্টার ট্রেইনার তৈরির লক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থী, যুব মহিলা ও পুরুষদের মধ্য থেকে ২০০ জন এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে ১০০ জনসহ মোট ৩০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
দেশে গুঁড়া দুধ আমদানি লজ্জার বিষয়: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

দেশে গুঁড়া দুধ আমদানি করা হয়, যেটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। যে টাকা দিয়ে আমরা গুঁড়া দুধ আমদানি করি সেই টাকা দিয়ে আমরা অনেকগুলো চিলিং সেন্টার স্থাপন করতে পারবো। এই বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে। শুধু সরকারি ভাবে নয়, বেসরকারি ভাবেও উৎসাহ দেব যাতে করে চিলিং সেন্টার স্থাপন করা হয় বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
শনিবার (২৮জুন) সকালে মানিকগঞ্জ সদরের জয়নগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত নির্বাচিত ৪টি জেলায় গবাদিপশুর ক্ষুরারোগের টিকা প্রদান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, পর্যায়ক্রমে সারাদেশে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ও ক্ষুরারোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। সেটা দেশে আমাদের পক্ষ থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে। কিছু আমদানিও করা হতে পারে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
জাতীয়
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় খুব ভালো অগ্রগতি: উপপ্রেস সচিব

ট্রাম্প প্রশাসন আসার পর থেকেই শুল্ক আরোপের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ওপর যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা নিয়ে শুরুতেই আপত্তি জানিয়েছে ইউনূস সরকার। শেষে সরকারের আপত্তিতে তা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই ট্রাম্প সরকারের সঙ্গে জোর আলোচনা চালিয়ে যায় অন্তর্বর্তী সরকার।
সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউএস অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ।
শনিবার (২৮ জুন) প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (ইউএনসিটিএডি) সাবেক বাণিজ্য নীতিবিষয়ক প্রধান ড. খলিলুর রহমানের বরাত দিয়ে উপপ্রেস সচিব বলেন, আমরা মার্কিন দলের সঙ্গে আলোচনায় খুব ভালো অগ্রগতি করেছি। উভয় পক্ষই চুক্তিটি দ্রুত চূড়ান্ত করার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতি ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। ঢালাওভাবে এই শুল্ক আরোপকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতিতে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সমস্ত পণ্যের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এর পাশাপাশি, বাংলাদেশসহ প্রায় ৬০টি দেশের ওপর নির্দিষ্ট হারে আরও বেশি ‘রেসিপ্রোকাল শুল্ক’ আরোপ করা হবে।
উল্লেখ্য, আগে বাংলাদেশি পণ্য গড়ে ১৫.৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে মার্কিন বাজারে প্রবেশ করত।
কাফি
জাতীয়
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে চলছে কমপ্লিট শাটডাউন

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ‘কমপ্লিট শার্টডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। শনিবার(২৮ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সংস্থাটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
সকালে কর্মসুচি শুরুর আগে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ভেতরে প্রবেশ করলেও অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী বাইরে রয়েছেন। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকাসহ ঢাকার বাইরের কর অঞ্চলের কর্মীদের সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
এনবিআরের বন্ধ গেটের সামনে কর্মীরা অবস্থান নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। ভেতরের র্যাব কোস্টগার্ড ও পুলিশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। গেটের সামনে জল কামানসহ পুলিশের কয়েকশ গাড়ির ভীতিকর অবস্থা পরিবেশের মধ্যেই এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান ও বক্তৃতা চলছে।
নেতারা বক্তব্যে বলেন, যেকোনো মূল্যে অংশগ্রহণমূলক সংস্কারবিরোধী ও সাবেক স্বৈরাচারের দোসর এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। তারপরই কাজে ফিরতে চাই।
শুক্রবার (২৭ জুন) এনবিআরের পক্ষ থেকে এনবিআরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজে যোগ দিতে বলেছিল। এ ধরনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল এনবিআরের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে এনবিআর সংস্কারে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে চেয়ারম্যানের দাবিতে ‘কমপ্লিট শার্টডাউন’ ও মাস্ট টু ইন্ডিয়ার কর্মসূচি ঘোষণা দেয়। কর্মসূচি পালনে বিভিন্ন করনচলের কর্মকর্তা কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করছে।