ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ আখ্যা, ইবিতে সাংবাদিককে মারধর

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙ্গার পর জুলাই আন্দোনকারীদের ‘দুবৃত্ত’ আখ্যা দেওয়ার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কলেজে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও তোলা হয়।
আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন এন্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান আবাসিক হলে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর নিরাপত্তার স্বার্থ বিবেচনায় তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
হল সূত্রে জানা গেছে, আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে অবৈধভাবে দীর্ঘদীন ধরে অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রভোস্টকে দেখিয়ে তাকে নামানোর দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট তাকে হল থেকে নামিয়ে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে আবারও ওই হলে অবস্থান করতে শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নেননি। পরে রাত ১২ টা ২০ মিনিট নাগাদ তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলা হলে এক পক্ষ প্রতিরোধ করায় শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের মধ্যে ঠেলাঠেলি সহ শুরু হয় গণ্ডগোল।
ঘটনাস্থলে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রভোস্ট হল থেকে বের হয়ে যেতে বললেও আবরার হল থেকে বের হননি। কতিপয় সমন্বয়ক ও নেতা তাকে শেল্টার দেয়ায় প্রভোস্ট স্যারও অসহায় হয়ে গিয়েছিলো। তাই আমরা তাকে বলতে গেছিলাম যে, সে যেন হল ছেড়ে দেয়।’
শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘ওয়াসিফ আল আবরার কলেজে থাকা অবস্থায় পাবনার বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিল। জুলাই আন্দোলনেও তার ভূমিকা বেশ বিতর্কিত ছিল। তার প্রোফাইলে জুলাই আন্দোলন কেন্দ্রিক উল্লেখযোগ্য কোনো নিউজও শেয়ার করতে দেখা যায়নি। চারদিকে যখন আন্দোলনকারীরা একে একে শহিদ হচ্ছিল তখন সে হাসিমাখা ছবি পোস্ট আপলোড দেয়।’
এদিকে গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা শাখা ছাত্রলীগের অফিস ভাংচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। এতে একটি সংবাদে আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ বলে আখ্যা দেন তিনি। এছাড়াও ৫ আগস্টের পরেও বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জমানো জামাকাপড় ‘হরিলুট’ বলে প্রচার করছে বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার ওয়াসিফ আল আবরার বলেন, “আমাকে ৭/৮ জন লোক গিয়ে বলে ‘২ মিনিট সময় হল থেকে বের হবি।’ আমি তখন জিনিসপত্র নিচ্ছিলাম। আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে তারা বলে ‘আপনি হলুদ সাংবাদিক পরে আবার ঝামেলা করবেন’ বলে আমার ফোন নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ৮/৯ জন মিলে রুমের লাইট বন্ধ করে আমাকে মারধর করে।”
ইবি মেডিকেল (উপপ্রধান মেডিকেল অফিসার) ডাক্তার মো. পারভেজ হাসান জানান, আশা করা যায় তেমন গুরতর কিছু হয়নি। মেডিকেলে নিয়ে আসার পর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পরে ১ ঘণ্টার মত নেবুলাইজার দিয়ে রাখা হয়। অতপর অবস্থা আগের থেকে উন্নত হলে রাত ২ টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এদিকে মেডিকেলে রোগীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক সাকিব আসলামকে বাধা দেয় এবং হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কতিপয় সমন্বয়কের বিরুদ্ধে।
পরে রাত দেড়টার দিকে শাখা সহ-সমন্বয়ক সহ শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপ উপাচার্যের সামনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। মারমুখী অবস্থান সৃষ্টি হলে প্রক্টরিয়াল বডি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত হন। দুই পক্ষকে নিয়ে রাতভর আলোচনায় বসেন প্রক্টরিয়াল বডি।
শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এটিএম মিজানুর রহমান জানান, ‘ওই ছেলেটা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে হলে ছিল। হলে বৈধ সিট ছিল না৷ তাই লিগালি সময় নিয়ে বের করে দেয়া হয়েছিল। আবারও কেন হলে অবস্থান করলো এটা তদন্ত করে দেখা যাবে। এর আগেও আমি তার রুমমেটকে কল দিয়ে রিকুয়েস্ট করেছিলাম যে, সে যেন হলে অবস্থান না নেন।’
সবার বক্তব্য শুনে সকাল ৮ টায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘দুই পক্ষের কথা শুনেছি। সমন্বয়কদের মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে- একটা হল কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক হযরত আলী

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী।
বৃহস্পতিবার (১ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে কুয়েটে পূর্ণকালীন ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগের পূর্ব পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ড. মো. হযরত আলীকে উপাচার্যের দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়।
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অপসারণের এক দফা দাবিতে গত ২২ এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে আমরণ অনশনে বসেন আন্দোলনরত ২৯ শিক্ষার্থী। পরদিন রাতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানানো হলে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। ২৪ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
শহীদ জিয়াউর রহমানকে স্বৈরশাসক বলা সাংবাদিকের পক্ষে ছাত্রদলের বিবৃতি

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্বৈরশাসক বলা সাংবাদিকের পক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল বিবৃতি জানিয়েছে। বিবৃতিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধরের ঘটনায় নিন্দা জানান সংগঠনটি।
বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ও ইবি ছাত্রদল জানায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ইবি প্রতিনিধি ওয়াসিফ আল আবরাররের উপর ইবি শাখা ছাত্রশিবির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ঘটনাটি ছাত্রশিবির এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসে এবং আবাসিক হলে ছাত্রশিবিরের দখলদারিত্বের মুখোশ উন্মোচন করেছে। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও শাস্তি দাবি করেন। নেতৃদ্বয় বলেন, বাকস্বাধীনতা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ছাত্রশিবির এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা হামলা, আক্রমণ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে চায়। ছাত্রজনতাকে এই অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধরের ঘটনায় নিন্দা জানান।
এ বিষয়ে জানার জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদকে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক-সদস্য সচিবের কাছে বক্তব্য নেন।
যেহেতু এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেহেতু আপনার বক্তব্য এখানে প্রযোজ্য বললে নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, লিখিতভাবে প্রশ্ন করেন। পরে লিখিত প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর দেননি নাছির উদ্দীন নাছির।
এর আগে, জুলাই আন্দোলনকারীদের দুর্বৃত্ত আখ্যা, অবৈধভাবে হলে অবস্থান এবং বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধর করা হয়েছে। আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন এন্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ফেসবুকে নিষিদ্ধ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ, শাহিন আলম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন খানসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার পক্ষ হয়ে সমালোচনা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছি ইবি ছাত্রদল। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও মাসুদ রুম মিথুন সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলের সিটে থাকাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ইবি প্রতিনিধি ওয়াসিফ আল আবরাররের ওপর হামলা চালিয়েছে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাখা সমন্বয়কদের একটি অংশ। এ ঘটনায় আবরারকে রক্ষা করতে গিয়ে লাঞ্ছিত ও আহত হয়েছেন সমন্বয়কদের অপর অংশের সদস্য, দুই সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
তারা আরো বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত এ. শাহ আজিজুর রহমান হলের ৪০৫ নম্বর কক্ষে অতিথি হিসেবে অবস্থান করছিলেন সাংবাদিক আবরার। এ সময় ৮-১০ জন শিবিরের কর্মী তার কক্ষে যেয়ে সে কেন ওই কক্ষে অবস্থান করছে তা জেরা করতে শুরু করে। কথাবার্তার একপর্যায়ে আবরার ছাত্রলীগ করে এমন অভিযোগ তুলে তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলে তারা। সাংবাদিকের সাথে দুর্ব্যবহারের সময় আবরার ফোন বের করে তাদের ভিডিও ধারণ করে। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ভিডিও চলাকালেই তারা রুমে ঢুকে লাইট বন্ধ করে ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং মারধর করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমন্বয়কদের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় এবং দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন তারা। দিবাগত রাতে দুই গ্রুপের শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় একটি সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ইবি শাখা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম ফেসবুক স্টাটাসে লিখেন, ‘‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মধ্যরাতে সাংবাদিকের উপর হামলা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন এবং শিবির একসাথে। রিপোর্টার্স ইউনিটের ছোট ভাই আববার লাল স্বাধীনতার পক্ষের সমর্থন করে আসছিলো কিন্তু মিছিল হলো ছাত্রলীগের নামে এবং তাকে চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুশি, লাথি মেরে মেডিক্যালে পাঠাইলো। আবার রিপোর্টার্স ইউনিটে নিউজ করলো দুর্বৃত্তরা আক্রমণ করছে। রিপোর্টাস ইউনিট সরাসরি নাম দিয়ে নিউজ করার সাহস কি পাই নাই? যাইহোক আবরার মব জাস্টিসে মারা যায় নাই শুকরিয়া। ছোট ভাইয়ের সুস্থতা কামনা করি।”
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (ইবি শাখা) মেজবাহ উদ্দিন ফেসবুকে লিখেন, “মধ্যরাতে ডেইলি ক্যাম্পাস প্রতিনিধির সাংবাদিক আবরারের ওপর হা’ম’লা, গুরুতর অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি! এইতো ক্যাম্পাসে থাকতেই আবরার ছেলেটার মা মারা গেল! মা হারা এতিম ছেলেটাকে মারতে তোদের মায়া করলো না? শিবিরের আবার দয়া মায়া! জীবিত রাখছে এটাই অনেক। আবরারকে কখনো ছাত্রলীগের সাথে দেখি নাই! অন্য সাংবাদিকরা আমাদের কাছ থেকে কিছু খেলেও আবরারকে কখনো সেধেও কিছু খাওয়াতে পারি নাই। সেই আবরারকে দিচ্ছে ছাত্রলীগের ট্যাগ! আর প্রকৃত যারা আমাদের লুঙ্গির নিচেই থাকতো শিবির সন্ত্রাসীরা, আগে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম চালাতো আর এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ভাঙিয়ে এইরকম সব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ইবির সাংবাদিকরা যদি এবারও চুপ থাকে তাহলে আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের বোঝার কিছু বাকি থাকবে না। তীব্র নিন্দা জানায় এই সকল সাংবাদিকদের উপর! যারা আজকের ঘটনার পরও চুপ থাকবে।”
হল সূত্রে জানা গেছে, আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে অবৈধভাবে দীর্ঘদীন ধরে অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রভোস্টকে দেখিয়ে তাকে নামানোর দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট তাকে হল থেকে নামিয়ে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে আবারও ওই হলে অবস্থান করতে শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নেননি। পরে রাত ১২ টা ২০ মিনিট নাগাদ তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলা হলে এক পক্ষ প্রতিরোধ করায় শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের মধ্যে ঠেলাঠেলি সহ শুরু হয় গণ্ডগোল।
ঘটনাস্থলে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রভোস্ট হল থেকে বের হয়ে যেতে বললেও আবরার হল থেকে বের হননি। কতিপয় সমন্বয়ক ও নেতা তাকে শেল্টার দেয়ায় প্রভোস্ট স্যারও অসহায় হয়ে গিয়েছিলো। তাই আমরা তাকে বলতে গেছিলাম যে, সে যেন হল ছেড়ে দেয়।’
শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘ওয়াসিফ আল আবরার কলেজে থাকা অবস্থায় পাবনার বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিল। জুলাই আন্দোলনেও তার ভূমিকা বেশ বিতর্কিত ছিল। তার প্রোফাইলে জুলাই আন্দোলন কেন্দ্রিক উল্লেখযোগ্য কোনো নিউজও শেয়ার করতে দেখা যায়নি। চারদিকে যখন আন্দোলনকারীরা একে একে শহিদ হচ্ছিল তখন সে হাসিমাখা ছবি পোস্ট আপলোড দেয়।’
এদিকে গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা শাখা ছাত্রলীগের অফিস ভাংচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। এতে একটি সংবাদে আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ বলে আখ্যা দেন তিনি। এছাড়াও ৫ আগস্টের পরেও বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জমানো জামাকাপড় ‘হরিলুট’ বলে প্রচার করছে বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার ওয়াসিফ আল আবরার বলেন, “আমাকে ৭/৮ জন লোক গিয়ে বলে ‘২ মিনিট সময় হল থেকে বের হবি।’ আমি তখন জিনিসপত্র নিচ্ছিলাম। আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে তারা বলে ‘আপনি হলুদ সাংবাদিক পরে আবার ঝামেলা করবেন’ বলে আমার ফোন নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ৮/৯ জন মিলে রুমের লাইট বন্ধ করে আমাকে মারধর করে।”
ইবি মেডিকেল (উপপ্রধান মেডিকেল অফিসার) ডাক্তার মো. পারভেজ হাসান জানান, আশা করা যায় তেমন গুরতর কিছু হয়নি। মেডিকেলে নিয়ে আসার পর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পরে ১ ঘণ্টার মত নেবুলাইজার দিয়ে রাখা হয়। অতপর অবস্থা আগের থেকে উন্নত হলে রাত ২ টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এদিকে মেডিকেলে রোগীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক সাকিব আসলামকে বাধা দেয় এবং হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কতিপয় সমন্বয়কের বিরুদ্ধে।
পরে রাত দেড়টার দিকে শাখা সহ-সমন্বয়ক সহ শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপ উপাচার্যের সামনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। মারমুখী অবস্থান সৃষ্টি হলে প্রক্টরিয়াল বডি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত হন। দুই পক্ষকে নিয়ে রাতভর আলোচনায় বসেন প্রক্টরিয়াল বডি।
শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এটিএম মিজানুর রহমান জানান, ‘ওই ছেলেটা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে হলে ছিল। হলে বৈধ সিট ছিল না৷ তাই লিগালি সময় নিয়ে বের করে দেয়া হয়েছিল। আবারও কেন হলে অবস্থান করলো এটা তদন্ত করে দেখা যাবে। এর আগেও আমি তার রুমমেটকে কল দিয়ে রিকুয়েস্ট করেছিলাম যে, সে যেন হলে অবস্থান না নেন।’
সবার বক্তব্য শুনে সকাল ৮ টায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘দুই পক্ষের কথা শুনেছি। সমন্বয়কদের মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে- একটা হল কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
নর্থ সাউথের ভর্তি পরীক্ষায় পঞ্চম হলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের (এসআইপিজি) এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স ইন পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (ইএমপিজি) প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি পরীক্ষার এ ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। তালিকায় পাঁচ নম্বরে উপদেষ্টা আসিফের নাম রয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল ইএমপিজি প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সশরীরে হাজির হয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন আসিফ মাহমুদ। তার পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে বেশ আলোচনা হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত

পিএসসি সংস্কারসহ ৮দফা দাবিতে আন্দোলন ও অনশনরত পরীক্ষার্থীদের দাবির মুখে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএসসি।
পিএসসির চেয়ারম্যানসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনরত আন্দোলনকারীদের অনশন ভাঙাতে এসে এই কথা বলেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবির জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে কমিটির প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। পিএসসির দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও গঠিত কমিটি আলোচনায় বসবেন বলেও জানান তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

রাষ্ট্রপতি এবং চ্যান্সেলরের অনুমোদনে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ভিসিকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলেরর অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১০ (২) অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত ভাইস-চ্যান্সেলর পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১২ (২) অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইসচ্যান্সেলর পদে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপন দুটিতে উল্লেখ করা হয়।