রাজনীতি
তারেক রহমানকে নিয়ে ‘দ্য উইকের’ কাভার স্টোরি

সংবাদভিত্তিক প্রখ্যাত সাপ্তাহিক সাময়িকী ‘দ্য উইক’ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি (প্রচ্ছদ প্রতিবেদন) করেছে। প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ডেসটিনি’স চাইল্ড বা নিয়তির সন্তান।
এটি লিখেছেন ‘দ্য উইক’-এর নয়াদিল্লি ব্যুরো চিফ নম্রতা বিজি আহুজা।
‘৪ মে ২০২৫’ তারিখ দিয়ে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের ই-পেপার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন। এছাড়া বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজেও একই ই-পেপার শেয়ার দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সাময়িকীর প্রতিবেদন হওয়ায় এর লিংক দ্য উইকের ওয়েবসাইটে এখন পর্যন্ত মেলেনি।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি ভাঙার নানাচেষ্টা এবং দল টিকিয়ে রাখতে তারেক রহমানের নেতৃত্বের ভূমিকা তুলে ধরে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করলেও তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলটি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। ‘দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় তারেক রহমান পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে’, এক বিশ্লেষকের এমন বক্তব্য প্রতিবেদনে উদ্ধৃত হয়েছে।
জুলাই বিপ্লবের পর আসন্ন নির্বাচনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে বিষয়ে ইঙ্গিত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে পরিবর্তন তারেক রহমানের সামনে একটি সুযোগ এনে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে তারেক রহমানের বাবা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিষ্ঠা, মা খালেদা জিয়ার নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় স্বৈরাচার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হওয়ার চেষ্টার মধ্যে ৫৯ বছর বয়সী তারেক রহমান এখন তার মায়ের (বিএনপি প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া) পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন।
এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারকে (গণঅভ্যুত্থানে) সরিয়ে দেওয়ার পর বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। লন্ডনে থাকা তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন তা নিয়ে ঢাকায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে।
দলকে সংগঠিত রাখতে তারেক রহমান নিয়মিত ভার্চুয়ালি সভা-সমাবেশে বক্তব্য দেন। তৃণমূলেও তার সরাসরি যোগাযোগ আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় নামলে তার জীবনচক্রের পূর্ণতা সম্পন্ন হবে। আশা করা হচ্ছে, আসন্ন নির্বাচনে তারেক রহমান রহমানই দলের মুখ হিসেবে আবির্ভূত হবেন।
প্রতিবেদনে তারেক রহমানের রাজনৈতিক পরিকল্পনা-প্রতিশ্রুতি তুলে ধরতে তার কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন বলেন, তারেক ইতোমধ্যে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা করেছেন।
ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, চাকরিজীবী, জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক বা শ্রমজীবী যেই হোন না কেন, আমরা তাদের সমান সুযোগ, ন্যায্য মজুরি এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দিতে চাই। আমরা একটি জ্ঞানভিত্তিক ও উন্নয়নকেন্দ্রিক রাজনীতি গড়ে তুলতে তারেকের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়ন করতে চাই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় গিয়ে তারেক রহমান কতটা দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের নেতৃত্ব নিতে সক্ষম হবেন সেদিকে নজর থাকবে সবার।
জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ বিন আলী বলেন, (ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের নির্যাতনে) তিনি নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং সামরিক-প্রশাসনিক কর্তৃত্ব তার কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়েছিল যে তিনি ভবিষ্যতে আর রাজনীতিতে জড়াবেন না। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিল।
১৬ বছরের নির্বাসনকালে তারেক রহমান ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন ক্ষতির শিকার হন (তিনি তার ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে হারান) এবং বহু আইনি ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। তবু তিনি বিএনপিতে প্রভাবশালী থেকে যান এবং দলকে একত্রিত রাখেন।
আসিফ বিন আলী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা চালালেও তারেক রহমান ও (বিএনপির মহাসচিব) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখেন।
তারেক রহমান তার তারুণ্যে ১৯৮৮ সালে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। ১৯৯১ সালে দলের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিলেও পরে খুব সক্রিয় থাকেননি, যদিও সেবার বিএনপি সরকার গঠন করে। ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারে পুনরায় সক্রিয় হন এবং বিএনপি ওই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। এ সময় দলে তার উল্লেখযোগ্য প্রভাব তৈরি হয়। তবে মায়ের শাসনামলে (২০০১-২০০৬) তার বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ এবং সরকারে কোনো আনুষ্ঠানিক পদে না থেকেও ক্ষমতা প্রয়োগের অভিযোগ আনা হয়।
২০০৭ সালে ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হলে তারেক রহমানও তার মায়ের সঙ্গে বন্দী হন। ‘ওয়ান-ইলেভেন’ খ্যাত ওই সরকারের আমলে অনেক শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হন। তারেক রহমান ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে মুক্তি পান এবং চিকিৎসার জন্য প্যারোলে লন্ডনে যাওয়ার অনুমতি পান।
বিদেশে থাকাকালে তারেক রহমান ২০০৯ সালে বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে ওই পদে পুনর্নির্বাচিত হন তিনি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে কথিত দুর্নীতির মামলায় তার মাকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আসিফ বিন আলী বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে রয়েছেন, কারণ তার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।

রাজনীতি
তফসিলের আগেই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি ফখরুলের

আগামী সংসদ নির্বাচনে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতার জন্য তফসিলের আগেই উপদেষ্টা পরিষদ থেকে দুই ছাত্র প্রতিনিধিকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, দুই উপদেষ্টার ব্যাপারে আমরা আগেই বলেছি, তারা উপদেষ্টা পরিষদে থাকতে পারবেন না। ড. ইউনূসের উচিত নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে তাদের চলে যেতে বলা। তা না হলে প্রশ্ন উঠবেই।
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ্বে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার পর অনিশ্চয়তা কেটে গেলেও নানা মহলে মতপার্থক্যে বাড়ছে ভোট নিয়ে সংশয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থানে একদিকে সংকটের মুখে জাতীয় ঐক্য অন্যদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের গুপ্ত তৎপরতায় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার শঙ্কা দেখেছেন রাজনীতিবিদরা। এ বিষয়গুলো নিয়েই তিনি বলেন, সংকট বাড়তে থাকলে অনিশ্চয়তায় পড়বে পুরো জাতি, যা থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হবে।
ভারতে বসে আওয়ামী লীগের নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে এসছে। তার (শেখ হাসিনা) পক্ষে নির্বাচন বনচালের চেষ্টা অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু এটাকে প্রতিরোধ করা হবে যখন দলটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে বসে যেসব কথাবর্তা বলছে, এগুলো আওয়ামী লীগের জন্য চরম ক্ষতিকর হচ্ছে। তিনি যদি ক্ষমা চেয়ে বরং বলতো আমরা ভুল করেছি এবং কিছু ভালো লোকজন সামনে এগিয়ে দিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করতো তাহলে ভালো হতো।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ওপরই তারা আস্থা রাখতে চান বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
রাজনীতি
সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে অর্জন বলতে কিছুই থাকবে না সরকারের: সালাহউদ্দিন

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন বলতে কিছুই থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশন আয়োজিত ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করাই জাতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সে অনুযায়ী কমিশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সংবিধান সংশোধনের অনুমোদন দেয়ার ক্ষমতা রাখে। ভিন্ন কোন প্রক্রিয়ায় গেলে পরবর্তীতে সংশোধনী সংবিধান আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, সরকারের অর্জন রয়েছে, ব্যর্থতাও রয়েছে। তবে, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে অর্জন বলতে কিছুই থাকবে না অন্তর্বর্তী সরকারের।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ভোট নিয়ে জনগণের যে দুশ্চিন্তা রয়েছে, সেটা দূর করা সরকারের দায়িত্ব।
রাজনীতি
পিআর পদ্ধতি নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে: ড. হেলাল

পিআর পদ্ধতি নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা-৮ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বিশেষ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে। জনগণের দাবি উপেক্ষা করে ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনার তৈরি আইনে যেনতেন কোনো নির্বাচন জনগণ চায় না, মেনে নিবে না। যেই নির্বাচন জনগণ চায় না, সেই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী যাবে না। জনগণের ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করতে হবে। যারা ক্ষমতায় আসারআগেই ৫ আগস্ট পরবর্তী সারাদেশে খুন, গুম, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলদারিত্বের মহোৎসবে মেতে উঠেছে তারা ক্ষমতায় গেলে জনগণ নিরাপদে-নির্বিঘ্নে রাতে ঘুমাতেও পারবেনা। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে মানুষ ঘরের দরজা খুলে র্নিভয়ে, নির্বিঘ্নে, নিরাপদে ঘুমাতে পারবে। চুরি-ছিনতাই, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। নারীর স্বাধীনতার নামে যারা নারীদের অধিকার লুন্ঠন করেছে, ধর্ষণ করেছে তাদের ঘুম হারাম হয়েযাবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে সবার আগে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। মানুষের জানমাল, ইজ্জতের নিরাপত্তা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে।
এসময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রব বলেছেন, যারা পিআর পদ্ধতি বুঝে না দাবি করে, তাদেরকে পিআর বুঝাতে যা যা করণীয় তা করা হবে। যাদেরকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বুঝাতে ১৭২ দিন হরতাল পালন করতে হয়েছে। তারাই এখন পিআর খায় না মাথায় দেয় জিজ্ঞেস করে। অধ্যক্ষ আব্দুর রব বলেন, জামায়াতে ইসলামী বরাবরই নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটাতে চায়। এজন্য অবশ্যই নির্বাচন প্রয়োজন, তবে হাসিনা মার্কা যেনতেন কোনো নির্বাচন মানবে না। জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন চায়, যেমন নির্বাচন দেশের ৭১ শতাংশ জনগণ চায়। দেশের ৭১ শতাংশ জনগণ পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়, জামায়াতে ইসলামীও পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়।
এসময় তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার রূপরেখা দিলে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিরোধীতা করে বলেছিল, পাগল আর শিশু ব্যতীত কেউ নিরপেক্ষ নয়। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা না দিয়ে একতরফা নির্বাচন করে। পরবর্তীতে দেশের জনগণের তুমুল আন্দোলনের মুখে সরকার গঠনের ১১ দিনের মাথায় সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করতে বাধ্য হয়। এবং একতরফা সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। এরপর বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করছে। ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশের জনগণ যখন পুরোনো ব্যবস্থার পরিবর্তে নতুন ব্যবস্থায় নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায় তখন যারা পুরোনো ব্যবস্থা বহাল চায় তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিন্তু খারাপ। তারাও আওয়ামী লীগের মতোই ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়। এদেশের জনগণ আর কোন ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা হতে দিবে না। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা চাচ্ছে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও গণহত্যার বিচারের নিশ্চয়তা না দিয়ে শুধু নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ায় জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। জনমনে আরো বেশি সংশয় তৈরি হয়েছে, যখন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে তার কার্যালয়ে সীমানা পুনঃনির্ধারনের শুনানিতে হামলা হয় তখন কমিশন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। তাহলে এই কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু,নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারবে বলে জনগণ মনে করে না। তিনি অনতিবিলম্বে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক মো. শামছুর রহমান। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য পল্টন থানা আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সহকারী পরিচালক শাহীন আহমেদ খানের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, শাহবাগ পূর্ব থানা আমীর আহসান হাবীব, শাহবাগ পশ্চিম থানা আমীর এডভোকেট শাহ মাহফুজুল হক, চৌধুরী, মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মোতাছিম বিল্লাহ, মতিঝিল উত্তর থানা আমীর মো. শামছুল বারি, মতিঝিল পূর্ব থানা আমীর মো. নুর উদ্দিন, রমনা থানা আমীর আতিকুর রহমানসহ ঢাকা-৮ আসনের সকল থানা আমীর-সেক্রেটারীবৃন্দ।
রাজনীতি
নির্বাচনে অভিনব পন্থায় কারচুপি হয়েছে: উমামা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অভিনব পন্থায় কারচুপি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা।
তিনি বলেছেন, নিজেদের হীনস্বার্থের জন্য ইসলামি ছাত্রশিবির জাতির সাথে কী পরিমাণ বেঈমানি করেছে, তা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা লিখেছেন উমামা ফাতেমা।
তিনি লিখেছেন, “কারচুপির নির্বাচনের জন্য ১৪০০ মানুষ মরছে! একই ইতিহাস, একই ব্যবস্থা। মাঝে দিয়ে এতগুলা পরিবার নিঃস্ব হলো। অভিনব পন্থায় নির্বাচন কারচুপি হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো রাত হয়ে থাকবে। নিজেদের হীনস্বার্থের জন্য ইসলামি ছাত্রশিবির কি পরিমাণ বেঈমানি করেছে জাতির সাথে তা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। ”
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার পর ফেসবুকে দেওয়া আরেক পোস্টে ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল বর্জনের করেন উমামা। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, “বয়কট! বয়কট! ডাকসু বর্জন করলাম। সম্পূর্ণ নির্লজ্জ কারচুপির নির্বাচন। ৫ আগস্টের পরে জাতিকে লজ্জা উপহার দিল ঢাবি প্রশাসন। শিবির পালিত প্রশাসন। ”
রাজনীতি
মিছিল নয়, সিজদার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করবো: শিবির সভাপতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপিসহ শীর্ষ পদে জয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা। তবে বিজয় মিছিল না করতে সারাদেশের নেতাকর্মীদের আহ্বান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাবির সিনেট ভবনে ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি।
ওই পোস্টে শিবির সভাপতি জাহিদুল লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ মহান। অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই বিজয়ী হলো। আমরা সারাদেশের কোথাও কোনো মিছিল করবো না। শুধু মহান রবের নিকট সিজদার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করবো। এই বিজয় আল্লাহর একান্ত দান। আমরা অহংকারী হবো না, সবার প্রতি উদার ও বিনয়ী থাকবো।
তিনি আরও লিখেন, স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়ার পথযাত্রী, আমরা থামবো না। প্রিয় মাতৃভূমি হবে সবার বাংলাদেশ।
ঘোষিত ফলাফলে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট পেয়েছেন। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৪ ভোট পেয়েছেন।
জিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট।
এজিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান পেয়েছেন ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের এজিএস প্রার্থী আশরেফা খাতুন পেয়েছেন ৯০০ ভোট।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীন বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। বড় কোনো ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে ডাকসুর ৩৮তম নির্বাচন। এবার ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হয়েছে ১৩টি পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৩৫ জন।
ডাকসুতে এবার মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ আর ১৩টি ছাত্র হলে ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার ছিলেন।
কাফি