অর্থনীতি
বাংলাদেশে ডলারের প্রবাহ বাড়বে কমবে ঘাটতি: আইএমএফ

বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি কমবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার রাতে আইএমএফের প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক, এপ্রিল, ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়ায় সরকারের এ হিসাবে ঘাটতি কমবে। চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও এ হিসাবে ঘাটতির মাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি মানেই হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে খরচ বেশি হচ্ছে। ফলে সরকারকে ডলারের চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে খরচ করতে হয়। এতে রিজার্ভ কমতে থাকে। অন্যদিকে ডলারের দামও বাড়তে থাকে। যে কারণে চলতি হিসাবে ঘাটতি দেখা দিলেই ডলার সংকটের আগাম বার্তা হিসাবে গণ্য করা হয়। কিন্তু চলতি হিসাবে আট বছর ধরে ঘাটতি চললেও সরকার সতর্ক হয়নি। ওই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডলার সংকটের কারণে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে চলতি হিসাবে ঘাটতি বেড়ে জিডিপির ৪ শতাংশে উঠেছিল। ওই সময়ে বৈশ্বিক মন্দার কারণে বাংলাদেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে চলতি হিসাবে ঘাটতি কমে আসে। ওই অর্থবছরে ঘাটতি কমে জিডিপির ২ দশমিক ৬ শতাংশে নামে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা আরও কমে জিডিপির ১ দশমিক ৪ শতাংশ নামে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বাংলাদেশকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক

বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ৮৫ কোটি ডলার ঋণ দিবে বিশ্বব্যাংক। দেশীয় মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ১০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। ঋণের এই অর্থ দুটি প্রকল্পে ব্যয় করতে পারবে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস সূত্র নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ ঋণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর ফর বাংলাদেশ গেইল মার্টিন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশকে দেওয়া আর্থিক প্যাকেজের মধ্যে দুটি প্রধান প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে একটি ‘বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’। ৬৫ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে এই মেগা প্রকল্পে। বে-টার্মিনাল গভীর সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে। এর ফলে বন্দরের জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষমতা বাড়বে এবং পরিবহন খরচ ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই বন্দরের উন্নয়ন বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং প্রতিদিন প্রায় এক মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। বৃহত্তর জাহাজ আগমনের সুবিধা তৈরি হওয়ায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। এ ছাড়াও প্রকল্পটি নারী উদ্যোক্তা এবং বন্দর পরিচালনায় নারী কর্মীদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
চুক্তির বাকি ২০ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে ‘স্ট্রেন্থেনিং সোশ্যাল প্রোটেকশন ফর ইম্প্রুভড রেজিলিয়েন্স, ইনক্লুশন, অ্যান্ড টার্গেটিং (এসএসপিআইআরআইটি)’ প্রকল্পে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ সরাসরি নগদ অর্থ ও জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে। এক্ষেত্রে যুব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, নারী এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি জাতীয় ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি তৈরি করা হবে, যা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরি, ক্ষুদ্রঋণ এবং পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অন্যষ্ঠানে ইআরডি শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং দেশের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা অর্জনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের একটি শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই প্রকল্পগুলো দেশের জলবায়ু স্থিতিশীলতা এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
আর বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি গেইল মার্টিন বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে থাকতে হলে বাংলাদেশকে তার জনসংখ্যার জন্য, বিশেষ করে প্রতি বছর শ্রমবাজারে প্রবেশকারী প্রায় ২০ লাখ যুবকের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। বাণিজ্য ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সবচেয়ে দুর্বলদের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থেকে উত্তরণে ও চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একটি গেম-চেঞ্জার হবে বিশ্বব্যাংকের এই আর্থিক প্যাকেজটি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
একদিনের ব্যবধানে কমলো স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা নির্ধারণ করেছে বাজুস।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। আজ বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাজুস।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা।
এর আগে মঙ্গলবার ভরিতে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস, যা আজ (বুধবার) থেকে কার্যকর হয়। সেই হিসেবে প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম হবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকা।
তবে দেশের বাজারে রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৭১৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা দিচ্ছে ওপেক ফান্ড

বাংলাদেশ সরকারকে ১০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা দিচ্ছে ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)। ‘স্ট্রেংথেনিং ইকোনমিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স প্রোগ্রাম’-এর আওতায় এই ঋণচুক্তি সই হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এই চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর সচিব মো. শহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং ওএফআইডি-এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ আলখালিফা সই করেন।
ইআরডির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই ঋণ বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক খাত সংস্কারে সহায়ক হবে। ঋণটির সুদের হার বছরে ছয় মাস মেয়াদি ইউরিবর (EURIBOR) প্লাস ১ দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়াও, উত্তোলন না করা অর্থের ওপর বছরে ০ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট ফি প্রযোজ্য হবে। ঋণের মেয়াদ ১৮ বছর, যার মধ্যে তিন বছর গ্রেস পিরিয়ড থাকবে।
ওপেক ফান্ড ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি মূলত সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে অর্থায়ন করে আসছে।
ইআরডি আরও জানায়, এ পর্যন্ত ওএফআইডি বাংলাদেশে ৩২টি সরকারি খাতে মোট ৬৯৩ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলার এবং বেসরকারি খাতে ৩১০ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৮ শতাংশ হতে পারে: আইএমএফ

চলতি বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক–এপ্রিল ২০২৫’ প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের যৌথ বসন্তকালীন সভার দ্বিতীয় দিনে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জন্য ২০২৫ সালের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হালনাগাদ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০২৬ সালে এই প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি চলতি অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পুনর্বিন্যাস করে ৫ দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।
কয়েক দিন আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। সে তুলনায় আইএমএফ-এর অনুমান আরও কিছুটা কম।
এ বছর গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হতে পারে
অপরদিকে মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত পূর্বাভাসে আইএমএফ জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি থাকতে পারে ১০ শতাংশের কাছাকাছি।
আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং এশিয়া অঞ্চলের গড় প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টিসিবির জন্য ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পাম অয়েল কিনবে সরকার

ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য দুই কোটি ২০ লাখ লিটার পরিশোধিত পাম অয়েল কিনছে সরকার। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মাঝে এই তেল বিক্রি করা হবে।
স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে এই তেল কেনা হবে। প্রতি লিটারের দাম ধরা হয়েছে ১৬২ টাকা ১৯ পয়সা। এতে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পাম অয়েল কিনতে মোট ব্যয় হবে ৩৫৬ কোটি ৮১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি বৈঠকে শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে এই পাম অয়েল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে অর্থ উপদেষ্টা ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা টিসিবির ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ভোজ্যতেল কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২৮ কোটি লিটার। এরমধ্যে ১৫ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার লিটার কেনার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। মোট চাহিদার অংশ হিসেবে আরও ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পরিশোধিত পাম অয়েল কেনার উদ্যোগ নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির অধীন স্থানীয় ক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহ, কার্যসম্পাদন বা ভৌত সেবার জন্য বিজ্ঞাপন পত্রিকায় প্রকাশের তারিখ থেকে দরপত্র প্রণয়ন ও দাখিলের জন্য ন্যূনতম ২৮ দিন সময় ধার্য থাকলেও পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ৬১ (৫) অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ৪ জুন সভায় টিসিবির জন্য স্থানীয় দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে দরপত্র প্রণয়ন ও দাখিলের সময়সীমা ২৮ দিনের পরিবর্তে ১৪ দিন করার সিদ্ধান্ত হয়।
স্থানীয়ভাবে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পরিশোধিত পাম অয়েল কেনার জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ অনুসরণ করে ১৩ জানুয়ারি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের বিপরীতে আংশিক অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৫৫ লাখ লিটারের প্রস্তাব দাখিলের সুযোগ রাখা হয়। দরপত্র দাখিলের সর্বশেষ সময় ২৬ জানুয়ারি এবং দরপত্র উন্মুক্তকরণের সময় ২৭ জানুয়ারি বেলা ১২টা পর্যন্ত ধার্য ছিল।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে দরপত্র দাখিলের সবশেষ সময় ২ ফেব্রুয়ারি এবং দরপত্র উন্মুক্তকরণের সময় ৩ ফেব্রুয়ারি পুনঃনির্ধারণ করে। পরবর্তীতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বৈধতার মেয়াদ ১৪ মে তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি ৩ ফেব্রুয়ারি প্রাপ্ত দরপত্র উন্মুক্ত করে একটি দরপত্র পায়। দরদাতা প্রতিষ্ঠান শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তাদের প্রস্তাবে ২ লিটারের পেট বোতলে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পাম অয়েল প্রতি লিটারের দাম ১৬২.১৯ টাকা দরে সরবরাহের প্রস্তাব করে। যার দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দর ছিল ১৭৪ টাকা ৬৩ পয়সা। অর্থাৎ প্রস্তুতি দাম প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ১২ টাকা ৪৪ পয়সা কম।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত একটি দরপত্র, তুলনামূলক বিবরণী এবং সংযুক্ত দাখিল করা কাগজ পর্যালোচনা করে। পর্যালোচনা শেষে, দাখিল করা দরপত্রটি রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত প্রস্তাবিত দরের বিষয়ে আলোচনা করে।
আলোচনা শেষে, পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৯৯ (জ) অনুযায়ী রেসপনসিভ দরদাতা শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের দরপত্রে প্রস্তাবিত ১ কোটি ১০ লিটার পাম অয়েলের সঙ্গে প্রতি লিটার ১৬২ টাকা ১৯ পয়সা দরে অবশিষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ লিটারসহ সম্পূর্ণ পরিমাণ অর্থাৎ ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পাম অয়েল সরবরাহের জন্য সম্মতি চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি অবশিষ্ট পরিমাণ পাম অয়েল সরবরাহে সম্মতি প্রকাশ করে এবং লিখিতভাবে জানায়।
দরপত্রে প্রস্তাবিত ১ কোটি ১০ লাখ লিটারের সঙ্গে অবশিষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ লিটারসহ মোট ২ কোটি ২০ লাখ লিটার বোতলজাত পরিশোধিত পাম অয়েল ২ লিটার পেট বোতলে প্রতি লিটার অগ্রিম আয়কর, প্রযোজ্য মুসক ও টিসিবির গুদামে পরিবহন খরচসহ ১৬২ টাকা ১৯ পয়সা দরে মোট ৩৫৬ কোটি ৮১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় কেনার সুপারিশ করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি।
সূত্র জানায়, এই পাম অয়েল মে মাসে গ্রহণ করা হবে এবং টিসিবির বিক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এই সময়ে মজুত বিবেচনায় ভোজ্যতেলের প্রয়োজনীয়তা থাকায় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সব সদস্য ক্রয়ের একমত পোষণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয় এবং কমিটির সদস্য প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়।