জাতীয়
দুবাইয়ে অর্থপাচারকারী ৭০ ভিআইপি শনাক্ত, কর নথি তলব

বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার করে সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গোল্ডেন ভিসায় দুবাইয়ে সম্পদ গড়েছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি। যেখানে বাংলাদেশিদের মালিকানায় ৯৭২টি প্রপার্টি কেনার তথ্য রয়েছে।
এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগের অনুসন্ধানে মাঠে নেমে ৭০ অর্থপাচারকারী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যাদের কর শনাক্তকরণ নম্বরসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসর ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। তবে চিঠিতে তাদের পদ বা বিস্তারিত পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
দুদকের উপপরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের লিডার রাম প্রসাদ মন্ডলের সই করা চিঠির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ই-টিআইএন, আয়কর রিটার্নসহ সব প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে।
চিঠিতে সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে পাচার করা অর্থের মাধ্যমে দুবাইয়ে সম্পত্তিগুলো কেনা হয়েছে বলে তথ্য যোগ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ৭০ বাংলাদেশির মধ্যে রয়েছেন– আহসানুল করীম, আনজুমান আরা শহীদ, হেফজুল বারী মোহাম্মদ ইকবাল, হুমায়রা সেলিম, জুরান চন্দ্র ভৌমিক, মো. রাব্বী খান, মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, এস এ খান ইখতেখারুজ্জামান, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সৈয়দ ফাহিম আহমেদ, সৈয়দ হাসনাইন, সৈয়দ মাহমুদুল হক, সৈয়দ রুহুল হক, গোলাম মোহাম্মদ ভূঁইয়া, হাজী মোস্তফা ভূঁইয়া, মনজ কান্তি পাল, মো. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, মো. মাহবুবুল হক সরকার, মো. সেলিম রেজা, মোহাম্মদ ইলিয়াস বজলুর রহমান, এস ইউ আহমেদ, শেহতাজ মুন্সী খান, এ কে এম ফজলুর রহমান, আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, গুলজার আলম চৌধুরী, হাসান আশিক তাইমুর ইসলাম, হাসান রেজা মহিদুল ইসলাম, খালেদ মাহমুদ, এম সাজ্জাদ আলম, মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী, মোস্তফা আমির ফয়সাল, রিফাত আলী ভূঁইয়া, সালিমুল হক ঈসা/হাকিম মোহাম্মদ ঈসা, সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান/সৈয়দ কামরুজ্জামান, সৈয়দ সালমান মাসুদ, সৈয়দ সাইমুল হক, আবদুল হাই সরকার, আহমেদ সামীর পাশা, ফাহমিদা শবনম চৈতি, মো. আবুল কালাম, ফাতেমা বেগম কামাল, মোহাম্মদ আল রুমান খান, মায়নুল হক সিদ্দিকী, মুনিয়া আওয়ান, সাদিক হোসেন মো. শাকিল, আবদুল্লাহ মামুন মারুফ, মোহাম্মদ আরমান হোসেন, মোহাম্মদ শওকত হোসেন সিদ্দিকী, মোস্তফা জামাল নাসের, আহমেদ ইমরান চৌধুরী, বিল্লাল হোসেন, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন চৌধুরী, নাতাশা নূর মুমু, সৈয়দ মিজান মোহাম্মদ আবু হানিফ সিদ্দিকী, সায়েদা দুররাক সিনদা জারা, আহমেদ ইফজাল চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, ফারজানা আনজুম খান, কে এইচ মশিউর রহমান, এম এ সালাম, মো. আলী হোসেন, মোহাম্মদ ইমদাদুল হক ভরসা, মোহাম্মদ ইমরান, মোহাম্মদ রোহেন কবীর, মনজিলা মোর্শেদ, মোহাম্মদ সানাউল্যাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ সরফুল ইসলাম, সৈয়দ রফিকুল আলম ও আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
এবিষয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান কর্মকর্তা তার প্রয়োজনে যেকোনো নথিপত্র তলব করতে পারেন। সেটা সম্পূর্ণ তার এখতিয়ার। কমিশন দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতেই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ’ এবং ইউরোপীয় সংগঠন ‘ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি’র তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪৫৯ জন বাংলাদেশির নামে দুবাইয়ে ক্রয় করা প্রপার্টির কাগজে-কলমে মূল্য ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিলে তথ্য-উপাত্ত জানতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও চিঠি দিয়েছিল দুদক। আর ওই বছরের ১০ এপ্রিল এ সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে দুদক। ওই বছরের ১৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট থেকে দুবাইয়ে অবস্থানরত ৪৫৯ বাংলাদেশি নাগরিকের সম্পদ কেনার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে দুদকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
অভিযোগের বিষয়ে দুদকসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশ্যে-গোপনে বিপুল পরিমাণ মূলধন স্থানান্তরিত হচ্ছে দুবাইয়ে। এ অর্থ পুনর্বিনিয়োগে ফুলে ফেঁপে উঠছে দুবাইয়ের আর্থিক, ভূসম্পত্তি ও আবাসনসহ (রিয়েল এস্টেট) বিভিন্ন খাত। ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪৫৯ জন বাংলাদেশিদের মালিকানায় সেখানে মোট ৯৭২টি প্রপার্টি কেনার তথ্য রয়েছে। কাগজে-কলমে যার মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার। তবে প্রকৃতপক্ষে এসব সম্পত্তি কিনতে ক্রেতাদের ব্যয়ের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে।
অভিযোগ সূত্র বলছে, গত দুই বছরে দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের প্রপার্টি কেনার প্রবণতা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। এসময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কিনেছেন বাংলাদেশিরা, যার তথ্য তারা দেশে পুরোপুরি গোপন করেছেন। এমনকি বৈশ্বিক নেতিবাচক অর্থনীতির মধ্যেও দেশটির রিয়েল এস্টেট খাতের বিদেশি প্রপার্টি ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশিরা শীর্ষে। এদিক থেকে নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, চীন ও জার্মানির মতো দেশগুলোর বাসিন্দাদের পেছনে ফেলেছেন বাংলাদেশিরা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ ২০২২ সালের মে মাসে তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে উপসাগরীয় দেশগুলোতে পাচার করা অর্থ দিয়ে আবাসন সম্পদ কেনার বিষয়টি তুলে ধরে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, তথ্য লুকিয়ে ৪৫৯ জন বাংলাদেশি দুবাইয়ে মোট ৯৭২টি আবাসন সম্পদের মালিক হয়েছেন। এজন্য তারা ব্যয় করেছেন ৩১৫ মিলিয়ন ডলার। এসব সম্পদের মধ্যে ৬৪টি দুবাইয়ের অভিজাত এলাকা দুবাই মেরিনা ও ১৯টি পাম জুমেইরাহতে অবস্থিত। যেখানে অন্তত ১০০টি ভিলা ও কমপক্ষে ৫টি ভবনের মালিক বাংলাদেশি বলে জানা গেছে। চার থেকে পাঁচজন বাংলাদেশি প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক। যদিও প্রতিবেদনে কারো নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

জাতীয়
সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মো. আসকর আলী (২৪) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১২ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার মিনাপুর সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহত মো. আসকর আলী ওই উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের জীবনপুর এলাকার মো. কানু আলীর ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাকারিয়া মন্ডল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে হরিপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত মিনাপুর বিওপির আওতাধীন মেইন পিলার ৩৫৩/ হতে ১০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে তারকাটার কাছে যান আসকর আলী। তখন তাকে লক্ষ্য করে বিএসএফের সদস্যরা গুলি ছোড়েন। গুলির আওয়াজ শুনে স্থানীয় লোকজন এসে দেখেন তার মরদেহ কাটাতারে পড়ে আছে।
এ ব্যাপারে হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাকারিয়া মন্ডল জানান, বিএসএফের গুলিতে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল তানজীর আহম্মদ বলেন, শনিবার ভোররাতে হরিপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক যুবক নিহতের খবর শুনেছি। তবে এটি ৪২ বিজিবি দিনাজপুরের আওতাধীন।
কাফি
জাতীয়
দেশব্যাপী দূষণবিরোধী অভিযানে সাড়ে ২৫ কোটি টাকা জরিমানা আদায়

দেশব্যাপী বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ ও নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে পরিচালিত মোবাইল কোর্ট অভিযানে মোট ২ হাজার ৮৪৬টি মামলা দায়ের করে প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি টাকা জরিমানা আদায় এবং আড়াই লাখ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে যানবাহনের অতিমাত্রায় কালো ধোঁয়া, অবৈধ ইটভাটা, স্টিল মিল, ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য নির্গমনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, সীসা-ব্যাটারি রি-সাইক্লিং কারখানা, জলাশয় ভরাট, খোলা জায়গায় নির্মাণসামগ্রী সংরক্ষণ, টায়ার পাইরোলাইসিস ও চারকোল কারখানার বিরুদ্ধে এ অভিযান পরিচালিত হয়। শুক্রবার (১১ জুলাই) তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত সরকারি এক বিবরণীতে এ তথ্য জানা যায়।
তথ্য বিবরণীতে আরও জানানো হয়, অভিযানকালে ৪৮৩টি ইটভাটার চিমনি ভেঙে কার্যক্রম বন্ধ, ২১৬টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে নির্দেশনা প্রদান, ১৩২টি ইটভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করা এবং ৯১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সেবা বা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। একইসঙ্গে দুইজনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৬টি কারখানা থেকে সীসা গলানোর ৮ ট্রাক সরঞ্জাম জব্দ করে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১০ জুলাই পর্যন্ত পরিচালিত ৪৭৭টি মোবাইল কোর্ট অভিযানে ৯০৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৭ লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং প্রায় ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৭ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে চলতি বছরের ১০ জুলাই ঢাকা মহানগরের মিরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলায় দুটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ছয়টি মামলায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একইদিনে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) অনুযায়ী কিশোরগঞ্জে একটি মামলায় ১৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং ২৭ দশমিক ৪ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। নারায়ণগঞ্জ ও পাবনা জেলায় দুটি এনফোর্সমেন্ট অভিযানে ২টি প্রতিষ্ঠানের সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও জোরালোভাবে অব্যাহত থাকবে।
জাতীয়
কর্ণফুলী ইপিজেডে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট

চট্টগ্রামের পতেঙ্গার কর্ণফুলী ইপিজেডের একটি ভবনে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে আগুন লেগেছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন ইপিজেডের অ্যারো ফেভারিট অফিসের আশপাশের ভবনেও ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে ৮টি ইউনিট কাজ করছে।
জাতীয়
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনায় অগ্রগতি

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান তিন দিনের শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দিন শেষ হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার চলমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বেশ কয়েকটি বিষয়ে সমঝোতা হলেও কিছু বিষয় এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আজ ওয়াশিংটন সময় সকাল ৯ টায় তৃতীয় দিনের আলোচনা শুরু হবে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আলোচনার দ্বিতীয় দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাম্বাসেডর জেমিসন গ্রিয়ারের একান্ত বৈঠক। ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সঙ্গে শুল্ক ছাড়াও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পাশাপাশি আমদানির পরিমাণও বৃদ্ধি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। শুল্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যায্যতা প্রত্যাশা করে।পরিবেশ যেন বাংলাদেশের জন্যে প্রতিযোগিতামূলক থাকে। গ্রিয়ার সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। সরাসরি আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।
জাতীয়
দক্ষ জনগোষ্ঠী দেশের সম্পদ: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দক্ষ জনগোষ্ঠী দেশের সম্পদ। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী ও তরুণ। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, জীবনমান এবং ক্ষমতায়নের ওপর নির্ভর করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। একটি উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে এই কর্মক্ষম তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ, সুশিক্ষিত ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি। বাণীতে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও এ বছর বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ন্যায়সঙ্গত ও আশাব্যঞ্জক এক বিশ্বে তরুণদের নিজেদের কাঙ্ক্ষিত পরিবার গঠনের ক্ষমতায়ন করা’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, শুধু স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা কিংবা পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ে পছন্দমতো সিদ্ধান্ত গ্রহণই যথেষ্ট নয়, টেকসই উন্নয়ন, উন্নত জীবনব্যবস্থা এবং সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিতের জন্য প্রজন্মান্তরে ন্যায্যতা ও ন্যায়-নীতিবোধ ধরে রাখা একান্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ছেলেমেয়ের মাঝে কোনো বৈষম্য না করে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি বৈষম্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে সরকার পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং কৈশোরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে তরুণ প্রজন্মের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
বাণীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, একটি সুস্থ-সবল জাতি গড়ার এই কর্মযজ্ঞে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বেসরকারি সংগঠন, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে আমি এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। আসুন সকলে মিলে বাংলাদেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিই।
তিনি বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।