পুঁজিবাজার
মশিউর সিকিউরিটিজের অর্থ আত্মসাৎ, দুদকে অভিযোগের সিদ্ধান্ত

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত মশিউর সিকিউরিটিজের (ট্রেক নং-১৩৪) বিরুদ্ধে রয়েছে জালিয়াতি সহ নানা অভিযোগ। যা একক কোনো ব্রোকারেজ হাউজ হিসেবে এটাই সবচেয়ে বড় জালিয়াতি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে সমন্বিত গ্রাহক হিসাব (সিসিএ) থেকে ৬৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা এবং শেয়ার বিক্রির ৯২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে।
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ব্যবস্থা নিতে মশিউর সিকিউরিটিজের পরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শেয়ার ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
ব্রোকারেজ হাউজটির পরিচালক-কর্মকর্তারা যেন বিদেশ পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য দুদকে জরুরি ভিত্তিতে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন স্থায়ীভাবে স্থগিত করার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটটকে (বিএফআইইউ) অবহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
মশিউর সিকিউরিটিজের বিষয়ে ইতোপূর্ব গঠিত তদন্ত কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আগের সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন পুনর্গঠিত বিএসইসি সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট ডিএসইর পরিদর্শন দল মশিউর সিকিউরিটিজের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ৬৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ঘাটতি পায়। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবে থাকা শেয়ার বিক্রি বাবদ ৯২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সরিয়ে ফেলার তথ্য পায় পরিদর্শন দল। পরে এসব তথ্যে উল্লেখ করে ওই বছরের গত ২৮ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ পরিদর্শন প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি। কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ এমদাদুল হক, সহকারী পরিচালক মো. মারুফ হাসান, সহকারী পরিচালক অমিত কুমার সাহা, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ম্যানেজার মোহাম্মদ ইকরাম হোসাইন ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ম্যানেজার শরীফ আলী ইরতেরাজ।
তদন্ত কমিটি মশিউর সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের হিসাব, ব্যাক অফিস সফটওয়্যার, অনুমোদিত ট্রেডিং ওয়ার্ক স্টেশনের তালিকা এবং নেতিবাচক ইকুইটির অবস্থা যাচাই করে। একই মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, ব্যাংক হিসাব দিয়ে দুটির বেশি বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে কি না এবং প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, সিইও, অনুমোদিত প্রতিনিধি ও অন্যান্য কর্মচারীর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে কোনো লেনদেন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়।
এর আগে ২০২০ সালের ২৪ জুন ক্রেস্ট সিকিউরিটিজে ১২৪ কোটি টাকা, ২০২১ সালের ১৫ জুন বানকো সিকিউরিটিজে ১২৮ কোটি টাকা, ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর তামহা সিকিউরিটিজের ১৪০ কোটি টাকা সমন্বিত গ্রাহক হিসেবে ঘাটতি পাওয়া যায়।
এদিকে, চলতি বছরের গত ১০ এপ্রিল রাজধানীর বিজয়নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একই সঙ্গে প্রতারক প্রতিষ্ঠান মশিউর সিকিউরিটিজের পরিচালক, কর্মকর্তাসহ ডিএসই ও বিএসইসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
আইন বিভাগ, মার্কেট অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিজ অ্যাফেয়ার্স বিভাগ ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগের একটি সমন্বিত প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো—প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে এনফোর্সমেন্ট প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। মানিলন্ডারিং ও অর্থ আত্মসাতের (প্যানেল কোড, ১৮৬০ এর সংশ্লিষ্ট ধারা ভঙ্গ) বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হবে। এ-সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লিখিত মশিউর সিকিউরিটিজের পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন স্থায়ীভাবে স্থগিত করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি পাঠানো হবে এবং তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্যে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি পাঠানো হবে। এসব বিষয়ে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে। বিএসইসির তদন্তে তা প্রমাণিত হয়েছে। তাই, ব্রোকারেজ হাউজটির পরিচালক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ব্যবস্থা নিতে দুদকে অভিযোগ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
এ বিষয়ে জানতে মশিউর সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

আইন-আদালত
এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোকের নির্দেশ

ব্যাংক এশিয়ার প্রায় ৩৮৯ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের মামলায় এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোক (জব্দ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৪ আগস্ট) ঢাকার ৫ নম্বর অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে ৩৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৪ টাকার ঋণ নেয় এক্সিম ব্যাংক। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও এক্সিম ব্যাংক ওই টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। ওই খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য ঢাকার অর্থঋণ আদালত-৫ এ মামলাটি দায়ের করে ব্যাংক এশিয়া।
আদেশ থেকে জানা যায়, এদিন বাদীপক্ষ আদালতকে জানান, নালিশি ঋণের বিপরীতে এক্সিম ব্যাংকের কোনো সম্পত্তি দায়বদ্ধ নেই। তবে ওই সম্পত্তিতে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। এক্সিম ব্যাংকের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর হওয়ায় সম্প্রতি অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই এক্সিম ব্যাংকের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ায় প্রধান কার্যালয়ের সম্পত্তি ক্রোক না করলে বাদী ব্যাংক এশিয়ার বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
শুনানি শেষে ও নথি পর্যালোচনা করে বিচারক এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কেন ক্রোক করা হবে না মর্মে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে কারণ না দর্শানো বা আপত্তি দাখিল না করা পর্যন্ত ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় অস্থায়ীভাবে ক্রোক করার আদেশ দেন আদালত।
আগামী ২১ আগস্ট বিবাদীপক্ষ অর্থাৎ এক্সিম ব্যাংকের জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
পুঁজিবাজার
ব্লকে ১১ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে মোট ২৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৬৫০টি শেয়ার ৪৩ বারে লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সোমবার (০৪ আগস্ট) ব্লকে সবচেয়ে বেশি জিকিউ বলপেনের ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ২ কোটি ১৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এসএম
পুঁজিবাজার
নগদ লভ্যাংশ পাঠিয়েছে ম্যারিকো বাংলাদেশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রেরণ করেছে।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটি সমাপ্ত হিসাববছরের নগদ লভ্যাংশ বিইএফটিএন সিস্টেমসের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠিয়েছে।
আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি ৩ হাজার ৮৪০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ নগদ ঘোষণা করেছিলো।
এসএম
পুঁজিবাজার
নগদ লভ্যাংশ পাঠিয়েছে মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রেরণ করেছে।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটি সমাপ্ত হিসাববছরের নগদ লভ্যাংশ বিইএফটিএন সিস্টেমসের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠিয়েছে।
আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ নগদ ঘোষণা করেছিলো।
এসএম
পুঁজিবাজার
ট্রাস্ট ব্যাংকের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি। সোমবার (০৪ আগস্ট) ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, এদিন ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ২ টাকা ১০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমেছে। যার ফলে এটি ডিএসইর দরপতনের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে।
দরপতনের এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল লিমিটেড। এই কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমেছে। তৃতীয় স্থানে থাকা এসবিএসি ব্যাংকের শেয়ার দর ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ কমেছে।
এছাড়াও, ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ইউসিবি, এনআরবি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক এবং মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড।
এসএম