জাতীয়
মে থেকে সারাদেশে ডিম-মুরগির খামার বন্ধ ঘোষণা

আগামী ১ মে থেকে সারাদেশে ডিম ও উৎপাদনকারী সব খামার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রমজান ও ঈদ মৌসুমেও ভয়াবহ লোকসান দিয়ে প্রান্তিক খামারিরা প্রতিদিন ২০ লাখ কেজি মুরগি উৎপাদন করেছেন। প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা লোকসানে, এক মাসে লোকসান হয়েছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা।
এছাড়া দৈনিক ৪ কোটি ডিমের মধ্যে প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন করেন ৩ কোটি ডিম। প্রতি ডিমে ২ টাকা করে লোকসানে, দুই মাসে ডিমে লোকসান হয়েছে ৩৬০ কোটি টাকা। মোট দুই মাসে ডিম ও মুরগির খাতে লোকসান দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।
কিন্তু এমন অবস্থায় সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নীরবতায় কিছু করপোরেট কোম্পানি পুরো পোল্ট্রি শিল্প দখলের ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তারা শুধু ফিড, বাচ্চা ও ওষুধ নয়-ডিম ও মুরগির বাজারও নিয়ন্ত্রণ করছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রান্তিক খামারিদের ঠেলে দিচ্ছে ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’ এর দাসত্বে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঈদের আগে ২৮–৩০ টাকায় উৎপাদিত বাচ্চা কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ৭০–৮০ টাকায় বিক্রি করে। এখন সেই বাচ্চাই ৩০–৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লারের উৎপাদন খরচ ১৬০–১৭০ টাকা, অথচ কর্পোরেটরা বাজারে বিক্রি করছে ১২০–১২৫ টাকায়। ফলে লোকসানে খামারিরা। আবার ডিমের উৎপাদন খরচ ১০–১০ দশমিক ৫০ টাকা, অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮–৮ দশমিক ৫০ টাকায়। বাজার মূলত কর্পোরেটের হাতে। তারা দাম নির্ধারণ করে। আর খামারিদের বাধ্য করা হয় মানতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি জানানো হয়। এসব দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো-
১. পোল্ট্রি পণ্যের জন্য জাতীয় মূল্যনিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও নির্ধারণ কমিটি গঠন।
২. কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন
৩. পোল্ট্রি বাজার রেগুলেটরি অথরিটি গঠন
৪. ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ
৫. খামারিদের রেজিস্ট্রেশন ও আইডি কার্ড
৬. কোম্পানিকে কেবল কাঁচামাল উৎপাদনে সীমাবদ্ধ রাখা
৭. কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ও কোম্পানির খামার নিষিদ্ধ করা
৮. কেজি ভিত্তিক ডিম ও মুরগি বিক্রির নীতিমালা প্রণয়ন
৯. ডিম-মুরগির রপ্তানির সুযোগ বৃদ্ধি
১০. পূর্ণাঙ্গ ‘পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড’ গঠন
কাফি

জাতীয়
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক সম্পন্ন

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-এর মধ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি শেষ হয়েছে। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হয় ৩টা ৩৫ মিনিটে। মোট ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটের এই বৈঠকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে তারেক রহমান ডরচেস্টার হোটেল ত্যাগ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানান, এটি তাদের মধ্যে একটি একান্ত বৈঠক ছিল। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে তিনি আগেই জানিয়েছিলেন।
জাতীয়
কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করলেন ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘কিং তৃতীয় চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ গ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে এক অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসের হাতে এই মর্যাদাপূর্ণ অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্বব্যাপী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং পরিবেশ-প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস প্রধান উপদেষ্টাকে এই সম্মানের জন্য মনোনীত করেন।
এই পুরস্কারের প্রবর্তন হয় ২০২৪ সালের জুন মাসে, যখন রাজা চার্লস প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপনের উদ্যাপন হিসেবে এটি চালু করেন। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন ছিলেন এই পুরস্কারের প্রথম বিজয়ী।
১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘দ্য কিং’স ফাউন্ডেশন’—যা তৎকালীন প্রিন্স অফ ওয়েলসের উদ্যোগে গঠিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি দাতব্য সংস্থা—প্রতি বছর টেকসই উন্নয়ন ও মানবিক কর্মকাণ্ডে অসামান্য অবদানের জন্য এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করে থাকে।
জাতীয়
ব্রিটেনের রাজার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানান, এটি একটি ‘প্রাইভেট সাক্ষাৎ’ ছিল এবং সাক্ষাতের সময় শুধু রাজা তৃতীয় চার্লস ও অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল আলম আরও জানান, সাক্ষাতে বাংলাদেশের বর্তমান ‘ট্রানজিশন’ বা অবস্থার পরিবর্তন নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা রাজা চার্লসকে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কী কী সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে অবহিত করেন।
এছাড়াও, যেহেতু রাজা চার্লস অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের পরিচিত, তাই তাদের মধ্যে পুরনো দিনের নানা স্মৃতি নিয়েও কথাবার্তা হয়েছে। প্রেসসচিব জানান, রাজা চার্লসের সঙ্গে এই একান্ত সাক্ষাৎটি অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ছিল।
জাতীয়
বিশ্বে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত

বৈশ্বিক প্রচেষ্টার ফলে শিশুশ্রম উল্লেখযোগ্যভাবে কমলেও প্রায় ১৩ কোটি ৮০ লাখ শিশু ২০২৪ সালে শিশুশ্রমে যুক্ত ছিল, যার মধ্যে ৫ কোটি ৪০ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত, যা তাদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস ও আন্তর্জাতিক খেলা দিবস উপলক্ষে ‘চাইল্ড লেবার: গ্লোবাল এস্টিমেটস ২০২৪, ট্রেন্ডস অ্যান্ড দ্য রোড ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। শিশুশ্রম নিরসনের ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন হলেও প্রতিবেদনে একটি কঠিন বাস্তবতা উঠে এসেছে যে এখনো লাখ লাখ শিশু শিক্ষা, খেলা এবং শুধু শিশু হিসেবে বেড়ে ওঠার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।
প্রতিবেদনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শিশুশ্রম কমার চিত্র দেখা গেলেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সে রকম নয়। ২০১৩ সালে যেখানে দেশে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের হার ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ, ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২ দশমিক ৭ শতাংশে (প্রায় ১০ লাখ ৭০ হাজার শিশু)। কিন্তু একই সময়ে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে শ্রমে যুক্ত থাকার সামগ্রিক হার ৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশে। ক্ষতিকর কাজে যুক্ত বৃহত্তর শিশুশ্রমের হার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে—২০১৩ সালে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে ২০২২ সালে। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, গত দুই দশকে বিদ্যালয়ে ভর্তির হার বাড়ায় কিছু উন্নতি হয়েছে, তবে বাংলাদেশ এখনও ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূলের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সঠিক গতিতে নেই। শ্রমে যুক্ত অধিকাংশ শিশু কাজ করছে অনানুষ্ঠানিক খাতে, যেখানে তারা দীর্ঘ সময় ধরে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। এই বাস্তবতা পরিবর্তনে বাংলাদেশে জরুরি প্রয়োজন স্থায়ী, দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই প্রচেষ্টা।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘এই বৈশ্বিক প্রতিবেদনের তথ্য ও বাংলাদেশে আমাদের নিজেদের পাওয়া তথ্য একইসঙ্গে উৎসাহ যোগায় এবং এই সংকট সমাধান করতে উদ্বুদ্ধ করে। ’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম হ্রাসে অগ্রগতি আমরা স্বীকার করি, তবে সামগ্রিক শিশুশ্রমের হার একই রকম থাকায় এটি স্পষ্ট যে আমাদের আরও অনেক কিছু করার রয়েছে। একটি শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া জোরদার করতে হবে, সব শিশুর জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার সার্বজনীন সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে এবং সমাজসেবা, বিশেষ করে শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমে আরও বিনিয়োগ করতে হবে। শিশুদের স্থান স্কুল ও খেলার মাঠে, কর্মক্ষেত্রে নয়। তাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি জরুরি।
শিশুশ্রম শিশুর শিক্ষা ব্যাহত করে, তাদের অধিকার খর্ব করে এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে কমিয়ে আনে। এতে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে। শিশুশ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দারিদ্র্য এবং মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব, যার ফলে পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের কাজে পাঠাতে বাধ্য হয় এবং সেই সঙ্গে বঞ্চনার বংশপরম্পরাগত চক্র স্থায়ী হয়ে যায়।
বিশ্বব্যাপী তথ্য অনুযায়ী, কৃষিখাত এখনও শিশুশ্রমের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র— শিশুশ্রমের ৬১ শতাংশ ঘটে এই খাতে। এরপরেই রয়েছে সেবা খাত (২৭ শতাংশ), যেমন- গৃহস্থালি কাজ বা বাজারে পণ্য বিক্রি এবং শিল্প খাতে রয়েছে (১৩ শতাংশ), যার মধ্যে খনি ও উৎপাদন শিল্প অন্তর্ভুক্ত।
বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসে আইএলও বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অফিসার-ইন-চার্জ) গুঞ্জন ডালাকোটি আইএলও কনভেনশন নম্বর ১৩৮ ও ১৮২ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। আইএলও’র এই দুই কনভেনশন বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সমর্থন দিয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি জাতীয় আইনগত কাঠামোর মাধ্যমে শিশুশ্রম নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শিশুশ্রম নিরসনের অগ্রগতির স্থবিরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি একটি সামগ্রিক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমে পুনরায় প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অর্থপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করতে হলে কমিউনিটি, নিয়োগকর্তা, শ্রমিক সংগঠন, সুশীল সমাজ, এনজিও ও সংবাদমাধ্যমের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আইএলও’র অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, শিশুশ্রম থাকলে সেখানে যথাযথ শ্রমের পরিবেশ থাকে না। তিনি একই সময় প্রতিটি শিশুর জন্য একটি নিরাপদ শিক্ষার সুযোগ সংবলিত শৈশব নিশ্চিত করার জন্য সামগ্রিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
কাফি
জাতীয়
মে মাসে ৫৯৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরল ৬১৪ প্রাণ

গত মে মাসে দেশের গণমাধ্যমে ৫৯৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১৪ জন নিহত ও এক হাজার ১৯৬ জন আহতের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই মাসে রেলপথে ৪৮টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ১৪ জন আহতের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
এ ছাড়া নৌপথে সাতটি দুর্ঘটনায় নয়জন নিহত ও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬৫২টি দুর্ঘটনায় ৬৫৮ জন নিহত ও এক হাজার ২১০ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ২৩৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৫৬ জন নিহত, ২০১ জন আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৯.০২ শতাংশ, নিহতের ৪১.৬৯ শতাংশ ও আহতের ১৬.৮০ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১৩৯টি। এতে ১৪৮ জন নিহত ও ২৭১ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে ৩০টি। এতে ৩০ জন নিহত ও ৪৪ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে সাতজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৫৪ জন চালক, ১০৩ জন পথচারী, ৬৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৯২ জন শিক্ষার্থী, পাঁচজন শিক্ষক, ৮৮ জন নারী, ৫৮ জন শিশু, ৩৭ জন সাংবাদিক, দুজন জন চিকিৎসক, একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সাতজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন দুজন পুলিশ সদস্য, একজন সেনাবাহিনীর সদস্য, একজন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য, দুজন চিকিৎসক, একজন মুক্তিযোদ্ধা, ১৪২ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৯৫ জন পথচারী, ৫৯ জন নারী, ৫৪ জন শিশু, ৬৬ জন শিক্ষার্থী, ৩৪ জন পরিবহন শ্রমিক, পাঁচজন শিক্ষক ও সাতজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৯৪৫টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৯.৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৫৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপভ্যান-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১২.৪৮ শতাংশ বাস, ১৪.১৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬.৬৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯.৩১ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫.৩৯ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৯.০৭ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৪.৯৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২০.১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৫.০২ শতাংশ বিবিধ কারণে, চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ০.৩৩ শতাংশ ও ০.৫০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩.৫০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩২.৮৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.১৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৫১ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.৫০ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৫০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।