Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

পেশাগত দায় ও নৈতিকতা: লেখকের কৈফিয়ত ও সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

Published

on

শাহজালাল ইক্যুইটি

ছোটবেলায় পাঠ্যপুস্তকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটিকা ‘খ্যাতির বিড়ম্বনা’ পড়ে বেশ মজা পেয়েছিলাম। তখন মনের অজান্তে এক গভীর বোধও জন্ম নিয়েছিল যে খ্যাতি কখনো আশীর্বাদ, আবার কখনো অভিশাপও হতে পারে। সাম্প্রতিক ঘটনায় জীবনের এই পড়ন্তবেলায় সেই নাটিকাটির কথা আবার মনে পড়ে গেল। আমি অনুভব করছি যে, যারা নিয়মিত আমার লেখাগুলো পড়েন, ভাবেন, মূল্যায়ন করেন; তাঁদের কারো কারো নজরে আসা সাম্প্রতিক দু’টো ঘটনা আমাকে পীড়া দিচ্ছে। পাঠকদের কাছে একটি আন্তরিক কৈফিয়ত না জানিয়ে যেন আর কোনোভাবেই স্বস্তি পাচ্ছি না। তাই নিজেকে ভারমুক্ত করতে আজকের এই লেখার অবতারণা।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

অনাকাঙ্খিত ঘটনা দু’টোর জন্য একটি আত্মজিজ্ঞাসার দায়ভার অনুভব করছি, যে দায় শুধুই পেশাগত নয়; নৈতিক এবং মানবিকও বটে। সংগত কারণে এই লেখাটিতে ঘটে যাওয়া অনাঙ্খিত ঘটনা দু’টোর ব্যাখ্যা, সেগুলোর জন্য কিছু অনুশোচনা, আর নিজের ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করা থেকে দূরে থাকার পর, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী এক নতুন গণতান্ত্রিক সম্ভাবনার আবহে আবারও কলম হাতে নিয়েছি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মনে হয়েছিল সমাজ, রাষ্ট্র ও মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে কিছু বলার, কিছু লেখার দায় এড়ানো উচিত নয়। সৌভাগ্যক্রমে কয়েকটি জাতীয় পত্রপত্রিকা আমার লেখা সাদরে গ্রহণ করেছে এবং আমাকে তাদের নিয়মিত লেখক হিসেবে পুনরায় জায়গা দিয়েছে। কিন্তু লেখালেখির জগতে এই প্রত্যাবর্তনের আনন্দের মাঝে সম্প্রতি দু’টি বিব্রতকর ঘটনা ঘটে গেছে। দুইটি জাতীয় দৈনিকে অসাবধনতাবশত আমার নামে অন্যের লেখা প্রকাশিত হয়েছে। যদিও উভয় ক্ষেত্রেই তা ছিল অনিচ্ছাকৃত ভুল এবং পত্রিকা কর্তৃপক্ষও বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ও পরবর্তী সংখ্যায় সংশোধনী প্রকাশ করেছে। তথাপি পেশাগত নৈতিকতার জায়গা থেকে ঘটনাগুলো আমাকে গভীর অস্বস্তিতে ফেলেছে।

পেশাগত জগতে বিশ্বাসযোগ্যতা কোনো তাৎক্ষণিক বা বাহ্যিক কৃতিত্ব নয়; এটি গড়ে ওঠে দীর্ঘ সময় ধরে শ্রম, আত্মবিশ্বাস ও নৈতিক দায়বোধের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে। বিশ্বাসযোগ্যতা, দায়িত্বশীলতা ও সুনাম অর্জনের পথে যেমন অধ্যবসায় ও সততা অপরিহার্য, তেমনি এক মুহূর্তের অসতর্কতা, ভুল সিদ্ধান্ত বা যথার্থ যোগাযোগের ঘাটতিতেও সেই বিশ্বাস বিনষ্ট হতে পারে। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্লেটো তাঁর ‘রিপাবলিক’ গ্রন্থে ন্যায়বিচার, দায়িত্ববোধ ও জ্ঞানভিত্তিক নেতৃত্বকে আদর্শ রাষ্ট্রের মূলভিত্তি হিসেবে যে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনি পেশাগত পরিসরেও নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতা কোনো অতিরিক্ত আনুষঙ্গিক নয়, বরং এটি পেশাগত চেতনা, আস্থা ও আন্তরিকতা রক্ষার অবিচ্ছেদ্য উপাদান। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান—উভয়ের জন্যই এটি একটি নীতিগত স্তম্ভ। অতএব ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি পুনরায় না ঘটে এবং পেশাগত সতর্কতার পাশাপাশি সততা, স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা অক্ষুণ্ণ থাকে, সে লক্ষ্যে কিছু বিষয়কে এখানে খোলামেলা ও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা এবং নির্মোহভাবে আলোচনার প্রয়োজন অনুভব করছি।

রাষ্ট্রীয় কিংবা পেশাগত পরিসরে আমি কোনো খ্যাতিমান ব্যক্তি নই। আমি একজন সাধারণ মানুষ, জীবন পাঠশালার একজন সক্রিয় জীবনব্যাপী শিক্ষার্থী ও ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ চলার পথের এক অনুসন্ধিৎসু পথিক, সেই অর্থে আমৃত্যু শিক্ষানবিশ। তবে শিক্ষানবিশ হলেও, আমি পেশাগত পরিসরে যুক্ত এবং সেই কারণে এই ঘটনা দু’টো সম্পর্কে কৈফিয়ত প্রদান পেশাগত পরিচয় থেকেই আমার ওপর ন্যূনতম একটি নৈতিক দায় মনে করছি। আত্মগ্লানি লুকোতে সততার প্রশ্নে আপস করা আমার কাছে আত্মপরিচয়ের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা। তাই কেউ যদি বলেন, ‘এটা তো খুবই সামান্য একটি ভুল’, পেশাজীবি হিসেবে আমি তা সহজে মেনে নিতে পারি না। কারণ এই ‘সামান্য’ ভুলই একজন পেশাজীবীর এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও দায়বোধের ভিত কাঁপিয়ে দিতে পারে। আর এই ছোট ছোট ভুলগুলোকে উপেক্ষা করার মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের পেশাগত এবং মানবিক মূল্যবোধ, দায়-দায়িত্ব ও নীতি-নৈতিকতা ধ্বংশের রাজপথ তৈরি করি।

ঘটনাগুলো যে অনিচ্ছাকৃতভাবে সংগঠিত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমার ও সম্পৃক্ত অপর দুই লেখকের জন্য সেগুলোর অভিঘাত ছিল অনেক গভীর আর অস্বস্তিজনক। বিশেষ করে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি যেন নিজের অজান্তেই অন্য কারো ছায়ায় দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে নিজের কণ্ঠস্বরটাই চাপা পড়েছে। অপর দিকে যাঁদের লেখা আমার নামে ছাপা হয়েছে জানার পর তাঁদের মনের অবস্থাটাও যে খুব একটা ভাল ছিল না, সেটা সহজেই অনুমেয়। এই অভিজ্ঞতা এক ধরনের অস্তিত্বগত অস্বস্তি তৈরি করেছে, যা শুধুই ব্যক্তিগত নয়; বরং বুদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক সংকটেরও ইঙ্গিতবাহী। এই জায়গায় এসে রবীন্দ্রনাথের সেই বিড়ম্বিত উচ্চারণের প্রতিধ্বনি যেন শুনি, যেখানে খ্যাতি কোনো আরাধ্য নয়, বরং হয়ে ওঠে এক বোঝা যা বহনের দায়ে মানুষ ক্লান্ত, জর্জরিত, এমনকি নিজেকেই হারিয়ে ফেলে। যদিও আমার ক্ষেত্রে বিষয়টি খ্যাতির নয়; বরং এক বিভ্রান্তিকর প্রতিচ্ছবির, যা আমার চিহ্ন না রেখেই আমার হয়ে কথা বলছে। এই বিড়ম্বনা, এই অপার বেদনার ভিতর থেকেই এই ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেছি; নিজেকে স্পষ্ট ও সৎভাবে উপস্থিত করার জন্য, এবং নিজের দায় নিজেই গ্রহণ করার দায়বদ্ধতা থেকে।

প্রথম ঘটনাটি ঘটে এক সুহৃদের আন্তরিক অনুরোধের সূত্রে। তিনি তাঁর একটি লেখা আমাকে পাঠিয়ে বলেন, একটি নির্দিষ্ট জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় তা প্রকাশে আমি যেন তাঁকে সহায়তা করি। আমি লেখাটি সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্মানিত সম্পাদকের কাছে পাঠাই এবং সচেতনভাবে তাঁর ইমেইল ঠিকানাও সংযুক্ত করি, যেন তিনি সরাসরি লেখকের সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মনে হয় তিনি আমার ইমেইল মনোযোগ দিয়ে পড়ার সুযোগ পাননি এবং ভেবেছিলেন যে ইমেইলে সংযুক্ত লেখাটি আমারই। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ফলাফল হিসেবে যে সাপ্তাহে কর্মব্যস্ততায় আমি কোনো লেখা পাঠাতে পারিনি, সে সাপ্তাহে ওই লেখাটি তিনি আমার নামে প্রকাশ করেছেন এবং তিনি সেই প্রকাশিত লেখার অনলাইন ভার্সানের লিংকও আমাকে পাঠান।

লিংকে গিয়ে লেখাটির শিরোনাম পড়েই আমি চমকে উঠি। এই তো সেই মুহূর্ত, যখন পেশাগত সংকল্প আর মানবিক বিব্রতবোধ একসঙ্গে ধাক্কা দেয়। মনে পড়ল দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের সেই নীতিবাক্য: ‘নীতির মানদণ্ড হওয়া উচিত এমন আচরণ, যা তুমি চাও সবাই অনুসরণ করুক’। আমি কি এমন আচরণ অনুমোদন করি? না। কাজেই আমি লজ্জা ও বিব্রতবোধ থেকে সঙ্গে সঙ্গে সম্পাদককে আগে প্রেরিত ইমেইলটি ফরওয়ার্ড করি এবং অনুরোধ জানাই যেন অনলাইন সংস্করণে সংশোধন আনা হয় ও প্রকৃত লেখকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ প্রশংসনীয় দ্রুততায় অনলাইনে সংশোধনী আনে এবং আমার সেই সুহৃদ তাতে এতটাই খুশি হন যে, তিনি আমাকে ‘পুরস্কৃত’ করতে চান! কিন্তু ততক্ষণে আমি এমন এক আত্মগ্লানিতে আচ্ছন্ন, এমন সংকোচে ডুবেছিলাম যে, তাঁর সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথাও বলতে পারছিলাম না। এ যেন এমন এক লজ্জা, যা শুধু আত্মপ্রবঞ্চনার ভয় থেকে নয়, বরং নিজের নৈতিক অবস্থান থেকে কারো প্রশ্নের মুখে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে জন্ম নেয়।

দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে রমজানের শেষ সপ্তাহে, যখন আত্মসংশ্লেষ ও আত্মনিয়ন্ত্রণের ভাবনাই মনোজগতকে আচ্ছন্ন করে রাখে। লেখালেখি থেকে তখন কিছুটা মনোযোগ সরে গিয়েছিল, ফলে সেই সাপ্তাহে কাউকেই কোনো লেখা পাঠানো হয়নি। এমন সময় ফেসবুকে অনুজপ্রতীম সতীর্থের একটি অসাধারণ পোস্ট নজরে আসে যেটা পড়ে চিন্তায়, ভাষায় ও সংবেদনায় মন ছুঁয়ে যায়। সেটি হুবহু কপি করে, যথাযথভাবে লেখকের নাম উল্লেখ করে, আমি আমার টাইমলাইনে শেয়ার করি এই ভেবে যে, এটাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমার ফেসবুক টাইমলাইনের সেই শেয়ারকৃত লেখাটিই আমার পরিচিত আরেক সম্পাদক সাহেব, সম্ভবত অসাবধানতাবশত লেখার নিচে লেখকের নাম তাঁর নজর এড়িয়ে গিয়েছে, আমার নামেই তাঁর দৈনিকে ছেপে দেন। এক অতিউৎসাহী পাঠক সেই পত্রিকার ই-পেপারের লিংক আমাকে পাঠালে লেখাটির শিরোনাম দেখে আমি বিব্রত হয়ে পড়ি। সাথে সাথে সম্পাদক সাহেবকে বিষয়টি অবহিত করি, তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং পরবর্তী সংখ্যায় এ বিষয়ে একটি সংশোধনী ছাপেন।

এখানে প্রশ্ন শুধু তথ্যগত সঠিকতা নয়, প্রশ্ন লেখার প্রকৃত স্বত্ত্বধিকার বা মালিকানা, এবং পেশাগত ও নৈতিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি চিন্তার উৎসকে যথাযথ সম্মান জানানো। হান্না আরেন্ড যে ‘নির্বাক নৈতিকতা’র বিরুদ্ধে সরব হতে বলেছিলেন, এই ঘটনা যেন তারই এক বাস্তব পাঠ। জ্ঞান বা চিন্তা যতই মূল্যবান হোক না কেন, তা যখন প্রকৃত লেখককে বাদ দিয়ে অন্যের নামে ছাপা হয়, তখন তা কেবল একজন লেখকের প্রতিই অবিচার নয়, বরং সেটা পাঠকের প্রতিও একপ্রকার বঞ্চনা। সেই বোধ থেকেই আমি সম্পাদক সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করি, কোনো অভিযোগ করার জন্য নয়, বরং একটি নৈতিক অবস্থান থেকে বিষয়টাকে তুলে ধরার জন্য। এ কথা নিঃসন্দেহে সত্য যে, দু’টি ঘটনাই নিছক ভুল; কোনো অমঙ্গলজনক অভিপ্রায় থেকে ঘটেনি। তবু ইতিহাস আমাদের শেখায়, ভুলের দায় এড়িয়ে যাওয়া যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি ভুল থেকে শিক্ষালাভ না করাও একটি গুরুতর ব্যর্থতা। সেই বিবেচনায়, এই অনভিপ্রেত অভিজ্ঞতা থেকে কয়েকটি মূল্যবান শিক্ষা গ্রহণ করাকে আমি আমার পেশাগত ও নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি।

প্রথমত, পত্রিকা কর্তৃপক্ষের উচিত লেখকের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন ও সেটা রক্ষা করা। কোন নির্বাচিত লেখা চূড়ান্তভাবে প্রকাশের আগে লেখককে অবহিত করলে, যেকোনো বিভ্রান্তি বা সম্পাদনাগত মানবিক ও পেশাগত ভুল সংশোধনের একটি সুযোগ তৈরি হয়। লেখক-সম্পাদক সম্পর্ক কেবল কাগুজে যোগাযোগে সীমাবদ্ধ থাকলে ভুল বেড়ে যায়, আর তার দায় বর্তায় উভয় পক্ষের ওপরেই। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, আমাদের দেশের ছাপা গণমাধ্যমগুলোর পেশাদারিত্বকে আরো শানিত ও দায়িত্বশীল করা উচিত বলে মনে করছি। লেখকের লেখা পেলে তার জন্য প্রাপ্তি স্বীকার ও ছাপা আগে জানানো যে কোন লেখাটি কোন সংখ্যায় যাচ্ছে। তাতে নি:সন্দেহে এ ধরনের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

দ্বিতীয়ত, আমার নিজের পক্ষ থেকেও আরও স্পষ্টভাবে সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা জরুরি ও সেখানে দু’পক্ষেরই আরো দায়িত্বশীল হওয়া দরকার। ভবিষ্যতে যখন অন্যের লেখা কোনো ছাপার গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য সুপারিশ করব, তখন আমাকে দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাতে হবে যে, সেটি আমার নিজের লেখা নয়, যাতে করে সে লেখাটি প্রকাশের ক্ষেত্রে যেন কোনো সম্পাদনাগত, ব্যবস্থাপনাগত বা প্রশাসনিক ভুলের সুযোগ না থাকে। একইভাবে মনে রাখতে হবে যে, ফেসবুকে কোনো লেখা শেয়ার করার সময় শুধু লেখকের নাম উল্লেখ করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। যেহেতু লেখা আমার নয়, সেহেতু সেটাকে উদ্ধৃতির মাঝে রাখা উচিত। অপরদিকে যেকোনো পুনঃপ্রকাশ বা ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত থেকে ব্যাখ্যার সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়েও আমাকে সতর্ক থাকতে হবে।

আসলে আমাদের দৈনন্দিন পেশাগত ও সামাজিক আচরণে সতর্কতার অভাব, দ্রুততা ও অনুমানভিত্তিক সিদ্ধান্তের যে প্রবণতা রয়েছে, এই দুটি ঘটনাই তার প্রতিফলন। সোফোক্লিস তাঁর ট্র্যাজেডিতে বলেন, ‘জ্ঞান থাকলেই ভুল হয় না, কিন্তু ভুল থেকেই জ্ঞান জন্ম নিতে পারে’—আমি এই ঘটনা দু’টো থেকে সেই শিক্ষাটিই গ্রহণ করতে চাই।

পরিশেষে স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটি কোনো খ্যাতির বিড়ম্বনা নয়, বরং ব্যক্তি ও পেশার প্রতি আমার দায়িত্ববোধ থেকে জন্ম নেওয়া এক বিব্রতকর অভিজ্ঞতা। ভুলগুলো নিঃসন্দেহে অনিচ্ছাকৃত, কিন্তু সে কারণেই তা এড়ানো যেত যদি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়পক্ষই পেশাগতভাবে আরো সতর্ক, সংবেদনশীল ও দায়বদ্ধ হতো। পেশাগত জগতে কখনো কখনো আমাদের আত্মপরিচয়ের বাইরে গিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এ অভিজ্ঞতা আমার জন্য তেমনই এক পাঠ, যা আমাকে আরও মননশীল, সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল হতে অনুপ্রাণিত ও সর্তক করবে। আমি বিশ্বাস করি, ভুল শুধরে নেওয়ার মধ্যে দুর্বলতা নয়, বরং তা সততা ও শক্তির প্রকাশ। প্রিয় পাঠক এবং পত্রিকা কর্তৃপক্ষ; আপনারা আমার লেখার সঙ্গী, আমার সংলাপ, বয়ান ও আলোচনার শ্রোতা, চিন্তাভাবনা ও চেতনার অংশীদার, আর তাই এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আপনাদের সবার আন্তরিক সহানুভূতিও আমার প্রাপ্য। আপনাদের সহৃদয় বিবেচনাবোধ ও ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে এই অনাঙ্খিত ভুলগুলোকে দেখার বিনীত অনুরোধ রইলো।

ড. মাহরুফ চৌধুরী, ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য। mahruf@ymail.com

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

তরুণ প্রজন্মের চোখে আজকের বাংলাদেশ গুজব, বিভ্রান্তি আর অনিশ্চয়তায় ভরা

Published

on

শাহজালাল ইক্যুইটি

ডাকসু নির্বাচন শেষ না হতেই জাকসু নির্বাচন শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন মানেই এখন আর স্বচ্ছতা কিংবা আস্থার জায়গা নয়, বরং গুজব, পাল্টা গুজব আর দলীয় রাজনীতির ছায়ায় ঢাকা এক নাট্যমঞ্চ। এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছে—বিএনপি সহ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ নিলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে ভোট গণনার কাজ চলছে, কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল কী হবে—সেটি নিয়েই প্রশ্নের শেষ নেই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

প্রশ্ন উঠছে আরও বড় একটি জায়গায়—জামাত কি তাহলে বাংলাদেশের রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে? আবার শোনা যাচ্ছে এমনও গুঞ্জন—স্বয়ং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের সমর্থক শিক্ষার্থীরা নাকি শিবিরের হয়ে নির্বাচনে নেমেছে এবং তাদের জয় নিশ্চিত করেছে। গত ডাকসু নির্বাচনের সময়ও শুনেছি, স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন নাকি র’এর এজেন্ট হয়ে প্রার্থী হয়েছিলো।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত রাজনৈতিক নাটক। কে সত্য বলছে আর কে মিথ্যা, সেটা বোঝা প্রায় অসম্ভব। কারও কাছে তথ্য নেই, কারও কাছে আছে শুধু গল্প। অথচ সত্যিটা চাপা পড়ে আছে—কেউ আসল কথা বলতে চায় না, কিংবা বলার সুযোগ পাচ্ছে না।

এই বাস্তবতা শুধু শিক্ষাঙ্গন নয়, বরং পুরো দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। যে প্রজন্মের এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের নেতৃত্ব গড়ার কথা, তারা আজ গুজব, ষড়যন্ত্র আর অন্ধকার রাজনীতির চক্রে বন্দি। ফলাফল হলো—বিভ্রান্ত তরুণ সমাজ, আস্থাহীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি, আর এক প্রশ্নবিদ্ধ বাংলাদেশ।

আমাদের বর্তমান প্রজন্ম তাই একটাই প্রশ্ন তুলতে বাধ্য—what’s going on? কিন্তু সঠিক উত্তর মেলে না।

দেশের কেন্দ্রবিন্দুগুলো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো শুধু শিক্ষার জায়গা নয়, বরং ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনেতা তৈরির কারখানা। অথচ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে যদি এতো বিভ্রান্তি, এতো গুজব আর এতো রাজনৈতিক কৌশল ঢুকে পড়ে, তাহলে পুরো বাংলাদেশের অবস্থা কী হবে—এ প্রশ্ন কি আমরা ভেবেছি কখনও?

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন জাতিকে আশ্বস্ত করতে চায়—সব ঠিক আছে, সব নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন সংকেত দিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপির ডিজিটাল নেতা তারেক রহমান কী ভাবছেন? লন্ডনের নিরাপদ দূরত্ব থেকে তিনি কি দেশে ফেরার ঝুঁকি নেবেন, নাকি “ডিজিটাল নিরাপত্তা”র আড়ালেই থেকে যাবেন? প্রশ্ন উঠছে যখন তাঁর যোগ্যতা নিয়ে, তখনই আলোচনায় আসছে তাঁর অতীত—অপরাধীর প্রত্যাবর্তন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির গভীর সংকট।

একজন দণ্ডপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ দেশে ফিরছেন—এ খবরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের রায় রয়েছে। তবুও তিনি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আসীন, আর তাঁর সমর্থকরা বর্ণাঢ্য সংবর্ধনার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।

মূল সমস্যা নিহিত আছে নেতৃত্বের যোগ্যতা ও নৈতিক ভিত্তির প্রশ্নে। যাঁর নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, নেই স্বাভাবিক পেশা বা বৈধ আয়ের উৎস, তিনি কীভাবে একটি জাতীয় দলের নেতৃত্বের দাবিদার হতে পারেন? তাঁর একমাত্র পরিচয়—তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও রাষ্ট্রপতির সন্তান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে। অর্থাৎ নেতৃত্বের ভিত্তি তাঁর ব্যক্তিগত অবদান নয়, বরং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পরিচয়।

এই চিত্র শুধু একজনকে ঘিরে নয়; বরং এটি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অন্তর্নিহিত সংকটকে উন্মোচিত করে। দল ও নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্য, ব্যক্তিত্বপূজা এবং বংশকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে অপরাধপ্রবণতা বারবার আড়াল হয়ে যায়। সমর্থকরা অপরাধের সত্যকে উপেক্ষা করে, বরং রাজনৈতিক আবেগে তা “নায়কোচিত প্রত্যাবর্তন” বলে আখ্যা দেয়।

কিন্তু একটি দেশের গণতন্ত্র টিকে থাকে যোগ্যতা, সততা ও জবাবদিহিতার ওপর। যদি অপরাধপ্রবণ ব্যক্তি কেবল পারিবারিক পরিচয়ের কারণে নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হন, তবে তা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতাকেই প্রতিফলিত করে। যতই জাঁকজমকপূর্ণ সংবর্ধনা দেওয়া হোক না কেন, এটি আসলে আমাদের রাজনৈতিক ও নৈতিক মানদণ্ডের অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি।

অতএব, এ মুহূর্তে জাতির সামনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—আমরা কী ধরনের নেতৃত্ব চাই? অপরাধীকে বরণ করা নাকি যোগ্য ও সৎ নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করা? দেশের দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরের ওপর।

আরেকটি অদ্ভুত প্রশ্ন উঠে আসে—যদি আওয়ামী লীগ শিবিরকে সমর্থন করে, তবে কি বিএনপির যুবদলকে ছাত্রলীগ সমর্থন করবে? নাকি উল্টো, তারা একদিন আবার জামায়াতের সঙ্গে গোপন জোট গড়ে তুলবে? আমাদের রাজনীতির ইতিহাস বলছে—অসম্ভব কিছুই নেই।

তাহলে আসল চিত্র কী? উত্তর নেই। শুধু প্রশ্ন, শুধু গুজব, শুধু অবিশ্বাস। শত প্রশ্নে দেশ ভরে গেছে, অথচ একটিরও সঠিক উত্তর মেলে না। কারণ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দীর্ঘদিন ধরে মিথ্যার চর্চায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে জাহির করাই এখন যেন প্রাত্যহিক রুটিন।

এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, ভীষণ হতাশ। তারা রাজনীতিকে আর ভবিষ্যতের ভরসা মনে করে না। তাদের চোখে রাজনীতি মানে দুর্নীতি, সুবিধা আর ক্ষমতার খেলা।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এখন যদি দেশের রাজনীতিবিদদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা না যায়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পুরোপুরি রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। হয়তো সময় এসেছে সকল দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের ধরে ধরে জেলে ঢোকানোর—একটি পরিশুদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য। আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। আর নয়—এবার যথেষ্ট হয়েছে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বারবার এক করুণ সত্য সামনে এসেছে—রাজনৈতিকভাবে এই জাতি একের পর এক পরাজয়ের গল্প শুনে চলেছে। মুক্তির স্বপ্ন ছিল যে স্বাধীনতায়, সেই স্বপ্নকে কলুষিত করেছে দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর অযোগ্য নেতৃত্ব। যারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের হাতে আর কোনোদিন এই দেশকে নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়।

প্রকৃতপক্ষে, এই দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের মানসিক চিকিৎসার আওতায় আনা উচিত—কারণ তারা সত্যকে ভুলে গিয়ে মিথ্যাকে এতটাই চর্চা করেছে যে, আজ বাস্তবতা ও ভ্রান্তির ফারাকও তারা চিনতে পারে না। এদের হাতে দেশকে চালনা করা মানে ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া।

তাহলে সামনে পথ কী?
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে একমাত্র ভরসা সাধারণ জনগণ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—এই জনগণই বারবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এখন প্রয়োজন তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, প্রয়োজন একটি নৈতিক বিপ্লব। আমাদের সময়ের দাবি হচ্ছে—সৎ, সাহসী এবং দায়িত্বশীল মানুষের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। কেবল তারাই পারবে ভাঙা আস্থা মেরামত করতে, দেশকে সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে।

আজ বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে এক নতুন রাজনৈতিক কল্পনার দোরগোড়ায়। যদি আমরা সাহস করে মিথ্যার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারি, যদি আমরা দুর্নীতির শৃঙ্খল ছিন্ন করতে পারি, তবে এই দেশ আবারও স্বপ্ন দেখবে—একটি স্বাধীন, ন্যায়ভিত্তিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস—এখনই সময়। আর নয় আপস, আর নয় প্রতারণা। এখন দরকার সত্য, ঐক্য, আর নতুন নেতৃত্বের পথে অগ্রযাত্রা।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

কেন শিবিরের বিরুদ্ধে এত প্রপাগান্ডা?

Published

on

শাহজালাল ইক্যুইটি

আমি চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ইউরোপে বসবাস করছি। এই দীর্ঘ সময়ে কখনো শুনিনি শিবির কোনো ভালো কাজ করেছে। বরং সবসময় শুনেছি তারা নৃশংস—মানুষের পায়ের রগ কেটে দেয়, নারীদের ধর্ষণ করে, সন্ত্রাসী বানায় ইত্যাদি। কিন্তু আমি দেশের বাইরে থাকলেও, বাংলাদেশের খবর–ঘটনায় সবসময় সচেতন থাকি। আন্দাজে বা গুজবের ওপর নির্ভর করি না। যাচাই–বাছাই ছাড়া কিছু লিখতেও চাই না। কারণ আমি জানি, ভ্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে লিখলে তা শুধু ভুল বার্তাই ছড়ায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ডাকসু নির্বাচনের সময় বেশ কিছু ঘটনা আমি লক্ষ্য করেছি। দেখলাম একজন শিক্ষার্থী ভিসিকে টেবিলে আঘাত করে হুমকি দিচ্ছে। একদল বহিরাগত গুণ্ডা ভাড়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকানো হয়েছে। আবার অন্য একটি পক্ষ ক্যাম্পাসের বাইরে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছে— শিবিরের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার কর।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এমন সময়েই আমার মনে প্রশ্ন জাগল— যে সংগঠনকে নিয়ে এত নেতিবাচক প্রচারণা, তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কীভাবে সম্পর্ক রাখছে? অবাক হয়ে দেখলাম, অনেক ছাত্রী শিবিরের নেতাকর্মীদের কাছে এসে ‘ভাইয়া’ বলে সম্বোধন করছে, সেলফি তুলছে। অথচ অন্য ছেলেরা ভদ্রভাবে কথা বললেও মেয়েরা তাড়াহুড়ো করে সরে যাচ্ছে। বিষয়টি আমাকে সত্যিই বিস্মিত করল।

আমি ভাবলাম— এখানে নিশ্চয়ই কোনো ভিন্ন সত্য লুকিয়ে আছে। রহস্য উদঘাটন করার আগেই সহধর্মিণীর সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করলাম। তিনি সুইডিশ। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, “আচ্ছা বলো তো, কী কারণে একজন নারী কোনো পুরুষকে দেখে অস্বস্তি বোধ করে?”

তিনি বললেন, নারীদের মধ্যে বিশেষ এক ধরনের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাজ করে। এই অনুভূতি তাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে কে ভদ্র, কে কপট, কার সঙ্গে নিরাপদ। ভদ্রতা, নম্রতা, স্বাভাবিক ব্যবহার—এসব মেয়েরা খুব দ্রুত বুঝতে পারে।

আমি আবার তাঁকে কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “তুমি আমাকে কীভাবে পছন্দ করলে?” তিনি হেসে উত্তর দিলেন, “তুমি তোমার আচরণ দিয়ে আমাকে পছন্দ করতে বাধ্য করেছিলে।”

সেখান থেকেই বুঝলাম—নারীরা আস্থার জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়। ভয় বা বাহ্যিক ভদ্রতার আড়ালে লুকানো চরিত্র তারা টের পায়।

আমি আগে কখনো শিবির কী, তা ভালোভাবে জানতাম না। শুধু নেতিবাচক প্রচারণার ফলেই তাদের চিনি। কিন্তু লেখালেখির সুবাদে খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখলাম, ইসলামের মৌলিক কিছু অধিকার যেমন—শিক্ষার অধিকার, নারীর মর্যাদা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান—এসব বিষয় তারা তাদের আদর্শের অংশ হিসেবে ধরে রেখেছে।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের গঠনতন্ত্রে নারী শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া আছে। তাদের ছাত্রীসংগঠন নারীদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষা, আত্মমর্যাদা ও সামাজিক কাজের প্রচারে যুক্ত। যদিও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চাপে এই তথ্যগুলো প্রায়ই আড়ালে থাকে, কিন্তু যারা ভেতর থেকে চেনে তারা ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা বলে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা নিশ্চয়ই অজ্ঞ নন, তারা বোঝেন কোথায় নিরাপদ। অথচ প্রচারণায় শিবিরকে সবসময় অমানবিক ও হিংস্র হিসেবে দেখানো হয়। ডাকসু নির্বাচনের সময় আমি যদি নিজ চোখে দৃশ্যগুলো না দেখতাম, তাহলে হয়তো আমিও ধরে নিতাম—শিবির সত্যিই একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।

তাহলে প্রশ্ন জাগে—সত্যকে এত ভয় পায় কেন? বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নামের দুই বড় দল কেন শিবিরকে নির্মূল করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে? নিশ্চয়ই এখানে অন্য কোনো রাজনৈতিক হিসাব আছে।

গতবছর আমি আমার ছোটবেলার বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীদের দুর্নীতি দেখেছি। পরে ২০০৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দেখছি, যখন কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস করে না, তখনই বুঝতে পেরেছি—আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিরও পতন নিশ্চিত।

আমি সরাসরি তারেক রহমান ও তার দলের কিছু শীর্ষ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। বলেছিলাম, “আমরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে দেশকে দ্বিতীয়বার মুক্ত করেছি। এখনো যদি সন্ত্রাসীরাই দেশ দখল করে, তবে আগের সন্ত্রাসীদের অপরাধ কোথায় ভিন্ন?” কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, বঙ্গবন্ধুর মতো জিয়াউর রহমানের সঙ্গেও আমার ছোটবেলায় মেলামেশার সুযোগ হয়েছিল। তাই হয়তো মনে অজান্তেই তাঁদের প্রতি এক ধরনের শ্রদ্ধা জন্মেছিল। কিন্তু তাঁদের পরিবার ও উত্তরসূরিদের কর্মকাণ্ডে সেই শ্রদ্ধা মুছে গেছে।

দেশটা কারো বাপের নয়। আমি শুধু আমার দেশের মানুষের কথাই ভাবি। তাদের বিপদে–আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করি। চাই—সবাই ভালো থাকুক। চাই—নতুন প্রজন্মকে বিশ্বাস করা হোক এবং দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তাদের হাতে দেওয়া হোক।

আওয়ামী লীগ, বিএনপির মতো শিবিরও একটা নাম। শুধু নাম দিয়ে কাজ হয় না, সে প্রমাণ আমরা পেয়েছি। তবে মিথ্যাচার বা প্রপাগান্ডা না ছড়িয়ে বরং কাজের মাধ্যমে বিচার হওয়া উচিত। আজকের বাংলাদেশে দুর্নীতি ছেড়ে সত পথে চললে, সত্য কথা বললে শিবিরের মতো অন্যরাও আপনাকে অনুসরণ করবে।

পরনিন্দা, পরচর্চা ছেড়ে নিজের উন্নতির দিকে মন দিন। অন্তত আখেরাতের টিকিটটা সাথে নিতে পারবেন।

উপদেশ দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু যেমন রেমিট্যান্স পাঠাতে কেউ আমাকে বলে না, তবু আমি পাঠাই—তেমনি উপদেশ দিতেও কেউ বলেনা, তবুও দিই—ক্ষতি কী?

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

ডাকসু নির্বাচন গণতন্ত্রের পথে কী আশা, বাধা ও সম্ভাবনার বার্তা দিল?

Published

on

শাহজালাল ইক্যুইটি

গণতন্ত্রের অনুশীলনকে যদি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হয়, তবে তার সূচনা হওয়া উচিত শিক্ষাঙ্গন থেকে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যাকে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু বলা হয়, সেখানে ছাত্রসংগঠনের স্বাধীন নির্বাচন গণতান্ত্রিক চর্চার প্রথম পরীক্ষাগার। এবারের ডাকসু নির্বাচন অনেকেই মনে করেছিলেন একটি নতুন সূচনা হতে পারবে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, এখানেও বাধা এসেছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমি খতিয়ে দেখেছি—কিছু শিক্ষার্থীকে তাদের নিজ এলাকার ক্ষমতাসীন বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ফোন করে চাপ দিতে চেষ্টা করেছেন। কেউ হয়তো সেটিকে উপেক্ষা করেছে, কেউ আবার ভয় পেয়েছে। প্রশ্ন হলো, এভাবেই কি আমরা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চাই?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবুও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। বারবার দমন-পীড়নের পরও কেন শিবিরের মতো একটি সংগঠন শিক্ষার্থীদের মাঝে এখনো আকর্ষণ সৃষ্টি করে? গত ৫৪ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এটিই শেখার বিষয়—দমন কখনোই কোনো আদর্শকে মুছে ফেলতে পারে না। বরং দমন যত বেশি, তার প্রতিক্রিয়া সমাজে তত গভীরভাবে থেকে যায়। এখান থেকে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য কয়েকটি শিক্ষণীয় দিক রয়েছে। গণতন্ত্রে সমান সুযোগ মানে হলো শিক্ষার্থীরা বুঝে গেছে, কারো কণ্ঠ রুদ্ধ করা মানেই তাকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করা নয়। বলপ্রয়োগ করে কাউকে হারানো যায় না, বরং যুক্তি ও আলোচনার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হয় কোন পথ সঠিক। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি গণতান্ত্রিক অনুশীলন ব্যাহত হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ আশা করা বৃথা।

এখন প্রশ্ন আসে—ভালো আর মন্দের পার্থক্য কীভাবে নির্ধারণ করবো? ভালো হলো যেখানে স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ ও আলোচনার সুযোগ থাকে। আর মন্দ হলো যেখানে চাপ, প্রভাব, অর্থ আর ভয়ভীতি প্রাধান্য পায়। একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য হলো, ভালোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং মন্দকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেওয়া।

ডাকসু নির্বাচন গতকাল সম্পন্ন হয়েছে এবং আজ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এর ফলাফল এবং অভিজ্ঞতা থেকেই জাতির জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। যদি ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা বাড়বে এবং জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কেও জনগণের মনে নতুন করে আশা জাগবে। কিন্তু এখানে মৌলিক প্রশ্ন উঠতে বাধ্য—আমরা যাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বলছি, বাস্তবে কি সেটি সত্য? যদি সত্য হয়, তাহলে কেন একটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাঙ্গনের নির্বাচন সম্পন্ন করতে এত বিশাল প্রশাসনিক বাহিনী মোতায়েন করতে হয়? কেন নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি ছাড়া আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি না?

আমরা যদি দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ডাকসু নির্বাচনও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে না পারি, তাহলে ১৮ কোটি মানুষের জন্য যে গণতন্ত্রের চর্চার স্বপ্ন দেখাচ্ছি, সেটি কতটা বাস্তবসম্মত? অন্যদিকে, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, লুটপাট, হামলার মতো অপ্রিয় সত্যগুলোকে সুন্দর ইংরেজি শব্দে “মব অ্যাকশন” বলে চালিয়ে দিলে বাস্তবতা কি পাল্টে যায়? যদি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথ হয় ভয় দেখানো আর শক্তি প্রদর্শন, তবে সহজ, সঠিক এবং সরল পথে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আদৌ কি সম্ভব?

এই প্রশ্নগুলো আমাদের নৈতিক চেতনার দ্বার খুলে দিক। এটিই হবে জনগণের শেখার সুযোগ—“লিসন অ্যান্ড লার্ন”। কারণ রাজনীতি করা আর রাজনীতি করতে চাওয়া দুটি আলাদা জিনিস; আবার দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ হয়ে রাজনীতি করাও একেবারেই ভিন্ন জিনিস। এই ভিন্ন জিনিসগুলো রাষ্ট্র থেকে একে একে দূর করতে হবে—এখনই।

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন—এত বড় দুর্নীতি এত অল্প সময়ে কীভাবে রোধ করা সম্ভব? আমি বলবো, অসম্ভব নয়। টুইন টাওয়ার ধ্বংস মুহূর্তেই ঘটেছিল। শেখ হাসিনার পতনও ঘটেছে হঠাৎ করেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মৃত্যু কখনোই পূর্বঘোষণা দিয়ে আসে না। তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থার শুদ্ধিকরণ কি অসম্ভব? না, মোটেও নয়। যখন দুর্নীতি করা সম্ভব হয়েছে, তখন তা বন্ধ করাও সম্ভব—প্রয়োজন কেবল দৃঢ় সংকল্প আর সঠিক সিদ্ধান্ত।

আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাও আমাদের শেখায়। ভারত বারবার ছাত্ররাজনীতিকে গণতন্ত্রের প্রস্তুতিমূলক অনুশীলন হিসেবে ব্যবহার করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের মতো দেশে ছাত্রআন্দোলন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রধান চালিকাশক্তি হয়েছে। এমনকি পশ্চিমা বিশ্বেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায়শই গণতন্ত্র ও সংস্কারের সূতিকাগার। বাংলাদেশের ডাকসু নির্বাচনও সেই ধারাবাহিকতার অংশ হতে পারে, যদি এটি সুষ্ঠু হয়।

সবশেষে একটি আহ্বান—গণতন্ত্র হোক কেবল মুখের বুলি নয়, জীবনের বাস্তব অনুশীলন। প্রশ্ন হতে পারে, বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর বাস্তব অনুশীলনগুলো কী কখনও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়েছে? তাহলে আছে কী কোনো অনুসারী, যাদের পথ অনুসরণ করব? বাংলাদেশে নেই, কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষদের মাঝে আছে।

তাই আমি বলবো: চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

দুর্নীতিবাজ রাজনীতির অবসান: এক জাতীয় অঙ্গীকার

Published

on

শাহজালাল ইক্যুইটি

রাজনীতিবিদরা যদি রাজনীতি করে দেশের উন্নয়নে কোনো অবদান রাখতে না পারে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। দরকার হলে জেলহাজতে পাঠাতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপকর্মে যুক্ত হওয়ার সাহস না পায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস, অবৈধ অর্থ পাচার আর দুর্নীতি—এই অপরাধগুলোতে তারা সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, গত ৫৪ বছরে তারা দেশের জন্য কী কোনো ভালো কাজ করেছে? যদি না করে থাকে, তবে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আপনি হাতে গুনে একজন সৎ রাজনীতিবিদের নাম বলতে পারবেন কি, যার নামে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই? যদি না পারেন, তবে বুঝতেই হবে যে গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থাই দুর্নীতিগ্রস্ত।

তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়—অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী ধরনের সংস্কার করছে? গত এক বছরে তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দেশের মানুষের উন্নয়নের পরিবর্তে তুলনামূলকভাবে এসব অভিযোগই আলোচনায় এসেছে, যা একটি ভয়াবহ আশঙ্কার বিষয়।

এরপরও কি জাতি হিসেবে আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই? নিশ্চয়ই আছে। এই পরিস্থিতিকে এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।

আমি আমার অবস্থান তুলে ধরলাম। যদি আপনি আমার কথার সঙ্গে দ্বিমত করেন, অনুগ্রহ করে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে তা উপস্থাপন করুন। আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত। কিন্তু যদি আমার বক্তব্যই সত্য প্রমাণিত হয়, তবে আসুন—আমরা একসাথে রুখে দাঁড়াই এবং দুর্নীতিবাজ রাজনীতির অপশক্তিকে বিদায় করি।

কারণ এরা দেশের শত্রু, এদের বাংলাদেশের মাটিতে থাকার কোনো অধিকার নেই। সংস্কার মানে একটাই—দুর্নীতিবাজ রাজনীতি দেশ থেকে চিরতরে বিদায় করা।

আমাদের করণীয়
• গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা।

• নাগরিকদের বোঝানো—দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ মানেই দেশের শত্রু।

• বিশেষ দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার।

• অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের কোষাগারে ফেরত আনা।

• দুর্নীতিবাজদের আজীবন রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের পরিবারের বেআইনি সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।

• দুর্নীতিবাজ প্রার্থীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।

• রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

• তরুণ প্রজন্মকে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত করা।

• শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা ও নৈতিকতা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।

• দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বর্জন—তাদের বিয়ে, সমাবেশ, সমাজে কোনো সম্মান না দেওয়া।

• নিরপেক্ষভাবে দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা।

• “দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ” ঘোষণা করে বাস্তবায়ন রোডম্যাপ তৈরি।

• বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা।

• দুর্নীতিবাজদের বৈদেশিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ।

• সততা, স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারকে জাতীয় সংস্কৃতিতে রূপান্তর।

• প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে “সততার উত্তরাধিকার” গড়ে তোলা।

• দুর্নীতিবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা।

• প্রমাণ সংগ্রহ করে জনগণের সামনে প্রকাশ করা।

• আন্দোলনের মাধ্যমে জনচাপ সৃষ্টি করে সরকারকে বাধ্য করা।

• বিকল্প সৎ নেতৃত্বকে গড়ে তোলা।

• জাতীয় চার্টার বা ঘোষণা প্রকাশ করা—যেখানে থাকবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতির অবস্থান ও ভবিষ্যতের অঙ্গীকার।

জাতীয় অঙ্গীকার
• দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চালাবো।

• সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করবো।

• দুর্নীতিবাজদের শুধু বিচার নয়, রাজনীতি থেকে চিরতরে বহিষ্কার করবো।

• জনগণ মিলে তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করবো, যাতে আর কখনো কেউ দুর্নীতির সাহস না করে।

• ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র উপহার দেবো।

সারকথা: দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকে বিদায় না দিলে, জাতির মুক্তি নেই। তাই আসুন, আমরা একসাথে রুখে দাঁড়াই।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বনাম কেমব্রিজ: শিক্ষার মানের এক সঙ্কট এবং সম্ভাবনা

Published

on

শাহজালাল ইক্যুইটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠান। এর স্থাপত্য, ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের কারণে এটি বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে। তবে বাস্তবতা দেখায় যে, শিক্ষার মান, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় আজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীর জ্ঞান, নৈতিকতা এবং চিন্তাশীলতার বিকাশ, কিন্তু কিছু বাস্তব সমস্যা এই লক্ষ্যকে প্রভাবিত করছে। অনেক শিক্ষার্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং অন্যান্য কারণে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হয় না। কিছু বিভাগে অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাব এবং অপ্রশিক্ষিত শিক্ষক থাকায় শিক্ষার মানে ভিন্নতা দেখা যায়। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে প্রচুর বই আছে, তবে অনেক বই ব্যবহারযোগ্য নয় বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শিক্ষার্থীর গবেষণার কাজে আসে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রায়শই রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের প্রভাবের মুখোমুখি হয়। রাজনৈতিক সংঘর্ষ, দ্বন্দ্ব এবং প্রভাব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা ও ক্যাম্পাসের শান্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। অবস্থান সংসদ ভবনের কাছাকাছি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব আরও প্রকট। কিছু ক্ষেত্রে, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়ে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস বা হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। তবে, কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, এবং কিছু শিক্ষার্থী ক্লাসে না এসে বাইরে সময় কাটাতে পছন্দ করে। রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের প্রভাব থাকায় কিছু শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন না থাকলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। শিক্ষার মান নিয়ে কথাবার্তা কম হয়, এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার বিষয়ও প্রায়শই আলোচনার বাইরে থাকে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা, শিক্ষার মানের অবনতি এবং শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি অন্যতম কারণ। প্রতিষ্ঠার সময় বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে অগ্রগতি করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে বর্তমান সময়ে বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাশার সাথে মিলছে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার মান, গবেষণার অগ্রগতি, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা উচিত। এই মূল্যায়ন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, শিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বাধীন মূল্যায়ন সংস্থার মাধ্যমে নিয়মিতভাবে, যেমন প্রতি পাঁচ বছরে একবার, অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখনও সম্ভাবনাময়। তবে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং শিক্ষার পরিবেশে বিঘ্ন থাকায় এটি তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারছে না। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারকদের যৌথ প্রচেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উচ্চমানের শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। সঠিক পদক্ষেপ, স্বচ্ছতা এবং সংস্কারই সেই পথে দিশা দেখাবে।

ওক্সফোর্ড বা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমি জীবনের কোনো এক সময় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, তাই এর শিক্ষার মান, কলেজ ব্যবস্থা এবং গবেষণার সুযোগ সম্পর্কে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে। প্রতিষ্ঠার থেকে আজ পর্যন্ত এটি শিক্ষার মান, গবেষণার গুণগত মান এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত। এখানে শিক্ষার্থীর নৈতিক ও মানসিক বিকাশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ করে, এবং পাঠ্যক্রমের সঙ্গে গবেষণার সুযোগ সমন্বিত। শিক্ষকগণ অত্যন্ত দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং শিক্ষাদানে নিবেদিত, যা শিক্ষার মানকে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ রাখে। কেমব্রিজে রাজনৈতিক প্রভাব সীমিত; প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ, ফলে শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা, ক্যাম্পাসের শান্তি এবং শিক্ষার পরিবেশে বিঘ্ন ঘটে না।

লাইব্রেরি এবং গবেষণা সুবিধা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বই ও রিসোর্সের সংখ্যা প্রচুর, আধুনিক ডিজিটাল রিসোর্স সহজলভ্য, এবং রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথভাবে করা হয়। শিক্ষার্থীরা গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সব সুযোগ ও তথ্য পায়। ক্লাস এবং গবেষণার মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত সুচারু, ফলে শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও চিন্তাশীলতা সর্বোচ্চ মাত্রায় বিকাশ লাভ করে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ই শিক্ষার প্রতি নিবেদিত, এবং নৈতিকতার মানও দৃঢ়।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সার্বিক উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়। কেবল পাঠ্যক্রম নয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং শিক্ষণীয় কর্মকাণ্ডও শিক্ষার্থীর জীবনের অংশ। প্রশাসনিক ও শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা একে একটি স্থিতিশীল এবং ফলপ্রসূ শিক্ষা পরিবেশ হিসেবে গড়ে তোলে। আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা, বিশ্বখ্যাত শিক্ষক এবং সুশৃঙ্খল প্রশাসন প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীর কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ করে তুলেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি তার ইতিহাসের প্রতিটি স্তরে শিক্ষার মান, গবেষণার সুযোগ এবং শিক্ষার্থীর নৈতিক বিকাশকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, মনোযোগ এবং কার্যকলাপের মান নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা হয়। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের স্বচ্ছতা শিক্ষার মানকে বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় একটি আদর্শ শিক্ষার পরিবেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে পরিচিত।

দুটি বিশ্ববিদ্যালয়, দুটো চিত্র—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। একটির অভ্যন্তরীণ অবস্থা রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা, শিক্ষার মানের অনিয়ম এবং দুর্নীতিতে ভরা; অন্যটি স্থিতিশীল, স্বচ্ছ প্রশাসন ও উচ্চমানের শিক্ষায় নিবেদিত। এ থেকে আমাদের জাতি হিসেবে বড় প্রশ্ন জাগে—আমরা কীভাবে দেশের দুর্নীতি ছাড়া প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকব? বিদেশের সঙ্গে যখন প্রতিযোগিতা অব্যাহত, আমাদের শিক্ষার মান, নৈতিকতা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতিহীন পরিবেশ যদি এমন অবস্থায় থাকে, তাহলে আমাদের শিক্ষার্থী ও প্রজন্ম কিভাবে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে?

সমস্যার মূল কারণ স্পষ্ট: রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা, শিক্ষার প্রতি উদাসীনতা, নৈতিকতার অভাব এবং দেশের মধ্যে সিস্টেমিক দুর্নীতি। শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি এই উপাদানগুলো নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে জাতির ভবিষ্যৎ ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

করনীয় স্পষ্ট: প্রথমে শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকের যোগ্যতা, পাঠ্যক্রমের গুণমান এবং গবেষণার সুযোগ উন্নত করতে হবে। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা আনার জন্য নিয়মিত মূল্যায়ন ও তদারকি প্রয়োজন। রাজনৈতিক প্রভাব কমাতে স্বাধীন, নিরপেক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষার্থীর নৈতিকতা ও মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য পড়াশোনা এবং গবেষণাকে অনুপ্রেরণামূলক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দুর্নীতিহীন পরিবেশ প্রতিষ্ঠা এবং সংস্কারমুখী নীতি কার্যকর করা অপরিহার্য।

যদি এসব পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তবে আমরা একটি সংস্কারমূলক পথ ধরে জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারব। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য শিক্ষা, নৈতিকতা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতিহীন পরিবেশ—এই চারটি উপাদানই আমাদের ভবিষ্যতের মূল চাবিকাঠি।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

শাহজালাল ইক্যুইটি শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার3 hours ago

শাহজালাল ইক্যুইটির লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত বিএসইসির

বিতর্কিত মার্চেন্ট ব্যাংক শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন...

শাহজালাল ইক্যুইটি শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

চার কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চার কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনসমূহে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন...

শাহজালাল ইক্যুইটি শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

একমি পেস্টিসাইডসের অনিয়ম-দূর্নীতি, ব্যবস্থা নিতে দুদকে প্রতিবেদন দেবে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের উপর পরিচালিত অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে পরিচালনা পর্ষদসহ সংশ্লিষ্টদের...

শাহজালাল ইক্যুইটি শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

সোনালী পেপারের শেয়ারে কারসাজি, জেনেক্স ইনফোসিসের ৯ পরিচালককে জরিমানা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ ৯ পরিচালককে...

শাহজালাল ইক্যুইটি শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ...

শাহজালাল ইক্যুইটি শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার6 hours ago

ব্লকে ২০ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে মোট ২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট ২০ কোটি...

শাহজালাল ইক্যুইটি শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার6 hours ago

প্রাইম ফাইন্যান্সের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শেষে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট...

Advertisement
AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়1 hour ago

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান হবে আলোচনার টেবিলেই: সালাহউদ্দিন

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়2 hours ago

হাসিনাসহ শেখ পরিবারের সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন না

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার3 hours ago

শাহজালাল ইক্যুইটির লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত বিএসইসির

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

চার কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

একমি পেস্টিসাইডসের অনিয়ম-দূর্নীতি, ব্যবস্থা নিতে দুদকে প্রতিবেদন দেবে বিএসইসি

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়5 hours ago

দুর্গাপূজা নিরাপদে উদযাপিত হবে: আইজিপি

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

সোনালী পেপারের শেয়ারে কারসাজি, জেনেক্স ইনফোসিসের ৯ পরিচালককে জরিমানা

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের রেটিং সম্পন্ন

শাহজালাল ইক্যুইটি
অর্থনীতি5 hours ago

একনেকে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার6 hours ago

ব্লকে ২০ কোটি টাকার লেনদেন

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়1 hour ago

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান হবে আলোচনার টেবিলেই: সালাহউদ্দিন

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়2 hours ago

হাসিনাসহ শেখ পরিবারের সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন না

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার3 hours ago

শাহজালাল ইক্যুইটির লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত বিএসইসির

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

চার কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

একমি পেস্টিসাইডসের অনিয়ম-দূর্নীতি, ব্যবস্থা নিতে দুদকে প্রতিবেদন দেবে বিএসইসি

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়5 hours ago

দুর্গাপূজা নিরাপদে উদযাপিত হবে: আইজিপি

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

সোনালী পেপারের শেয়ারে কারসাজি, জেনেক্স ইনফোসিসের ৯ পরিচালককে জরিমানা

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের রেটিং সম্পন্ন

শাহজালাল ইক্যুইটি
অর্থনীতি5 hours ago

একনেকে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার6 hours ago

ব্লকে ২০ কোটি টাকার লেনদেন

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়1 hour ago

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান হবে আলোচনার টেবিলেই: সালাহউদ্দিন

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়2 hours ago

হাসিনাসহ শেখ পরিবারের সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন না

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার3 hours ago

শাহজালাল ইক্যুইটির লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত বিএসইসির

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

চার কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার4 hours ago

একমি পেস্টিসাইডসের অনিয়ম-দূর্নীতি, ব্যবস্থা নিতে দুদকে প্রতিবেদন দেবে বিএসইসি

শাহজালাল ইক্যুইটি
জাতীয়5 hours ago

দুর্গাপূজা নিরাপদে উদযাপিত হবে: আইজিপি

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

সোনালী পেপারের শেয়ারে কারসাজি, জেনেক্স ইনফোসিসের ৯ পরিচালককে জরিমানা

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার5 hours ago

এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের রেটিং সম্পন্ন

শাহজালাল ইক্যুইটি
অর্থনীতি5 hours ago

একনেকে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন

শাহজালাল ইক্যুইটি
পুঁজিবাজার6 hours ago

ব্লকে ২০ কোটি টাকার লেনদেন