আইন-আদালত
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিনা ভোটে ২১ প্রার্থীই জয়ী

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে ২১ প্রার্থীই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনী কার্যক্রমে ২১ পদে ২১ জন প্রার্থী থাকায় রোববার ১৩ এপ্রিল তাদের সবাইকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
জয়ী সবাই বিএনপি জামায়াত সমর্থিত। এর মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১৪ পদে বিএনপি অনুসারী এবং একটি সহ-সভাপতি পদ ও দুটি সম্পাদকীয় পদসহ মোট ৭ পদে জামায়াত অনুসারীরা জয়ী হন।
তবে নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মনোনয়ন ফরম কিনতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি নির্বাচনকে অস্বচ্ছ আখ্যা দিয়ে আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ আনোয়ার হোসেন পদত্যাগ করেছেন। চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির ১৩২ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবকটি পদে নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
নির্বাচনে জয়ীরা হলেন- সভাপতি পদে আবদুস সাত্তার, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সিরাজ, সহ-সভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনূস, সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুল বারী, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, লাইব্রেরি সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফী বিনতে মোতালেব, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মনজুর হোসাইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে আবদুল জব্বার, নির্বাহী সদস্য পদে- আহসান উল্লাহ মানিক, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, হেলাল উদ্দিন, মেজবাহ উল আলম আমিন, মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, মো. রোবায়তুল করিম, মো. শাহেদ হোসাইন, মোহাম্মদ মোরশেদ, রাহেলা গুলশান ও সাজ্জাদ কামরুল হোসাইন।
এর মধ্যে সহ-সভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনূস, সহ-সাধারণ সম্পাদক ফজলুল বারী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল জব্বার এবং নির্বাহী কমিটির চার সদস্য হেলাল উদ্দিন, মো. শাহেদ হোসাইন, মো. রোবায়তুল করিম ও মোহাম্মদ মোরশেদ জামায়াত অনুসারী।
এদিকে ঘোষিত তফসিলে গত ১০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিনে মনোনয়নপত্র কিনতে গিয়ে বাধার মুখে ফরম কিনতে পারেননি আওয়ামী লীগ, এলডিপি ও বাম ঘরানার আইনজীবীরা। তারা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশনের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো সমাধান হয়নি।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন সাবেক মহানগর পিপি আবদুর রশীদ। মনোনয়ন ফরম কিনতে দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বারের ১৩২ বছরের ইতিহাসে পুরো কমিটির সবাই ভোটবিহীনভাবে জয়ী হয়নি। বারের সব সদস্যরা রাজনীতি করেন না। সাধারণ সদস্যরা রয়েছেন। তারা আজকের এই ভোটারবিহীন নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছেন। অতীতে চট্টগ্রাম বারের সব দলমতের আইনজীবীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, জয়ীও হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এবার বারের গুটিকয়েক আইনজীবী পুরো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২১ পদের বিপরীতে ২১ জন ফরম কিনেছেন। আমরা ফরম কিনতে গিয়ে কিছু আইনজীবী ও দুর্বৃত্তদের বাধার মুখে পড়েছি। চট্টগ্রাম বারের জন্য এটি কলঙ্কের ইতিহাস হয়ে থাকলো। বিএনপি-জামায়াতের সাধারণ সমর্থকরাও ভোটারবিহীন এ নির্বাচন আশা করেননি। সুযোগ থাকলেও আমরা আইনি মোকাবিলায় যাচ্ছি না। আমরা সাধারণ সদস্যদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। সাধারণ সদস্যরাই একদিন এটির বিচার করবেন।’
এদিকে বারের এ নির্বাচনকে অস্বচ্ছ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেছেন অ্যাডহক কমিটির সদস্য সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। ১২ এপ্রিল অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ককে দেওয়া পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ায় এবং প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় আমি ব্যক্তিগতভাবে মর্মপীড়ায় ভুগছি। যা চট্টগ্রামবারের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে মর্মে আমি মনে করি। এ পরিস্থিতিতে বিবেকের তাড়নায় দায়িত্বপালন থেকে বিরত থাকা এবং পদ থেকে অব্যাহতি গ্রহণ করাকে আমি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতি সম্মান ও দায়িত্বশীলতার অংশ হিসেবে বিবেচনা করছি।’
এ বিষয়ে কথা হলে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বারের এবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। সবশেষ ঘোষিত তফসিলে আমরা চেয়েছিলাম সবার অবাধ অংশগ্রহণ। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। ২১ পদের সবাই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মানে এখানে ভোটারদের কোনো সম্মান করা হয়নি। বিনাভোটের নির্বাচন হয়েছে। একজন সচেতন আইনজীবী হিসেবে আমাকে পীড়া দিচ্ছে। আমি তিনদিন আগেও অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ককে বলেছি, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে আমি পদত্যাগ করবো।’
তিনি বলেন, ‘অনেককে নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম কিনতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামীপন্থিদের দেওয়া হয়নি। এমন কী এলডিপির অ্যাডভোকেট শাহাদাতকেও মনোনয়ন ফরম কিনতে দেওয়া হয়নি। আমরাতো এ ধরনের নির্বাচন চাইনি। তাই মর্মপীড়া থেকে অ্যাডহক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি।’
এ বিষয়ে কথা হলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমদ বলেন, ‘আমরা একুশ পদের সবাইকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছি।’
নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম কিনতে বাধা দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরনের অভিযোগ কেউ করেনি।’ ২১পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ ফরম না কিনলেতো আমার কিছু করার নেই।’
অ্যাডহক কমিটির এক সদস্যের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি (সৈয়দ আনোয়ার হোসেন) আগে কোথায় ছিলেন। তিনি কেন পদত্যাগ করেছেন, তার ব্যক্তিগত বিষয়। কাউকেতো আমরা জোর করে নির্বাচনে আনতে পারবো না। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আমরা সবাইকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেছি।
এ ব্যাপারে কথা বলতে সভাপতি নির্বাচিত হওয়া বিএনপিপন্থি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারকে ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি। এতে মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা করা হয় অ্যাডভোকেট তারিক আহমেদকে। আর আইনজীবী মো. মাসুদুল আলম, মুহাম্মদ কবির হোসাইন, মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন এবং মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন শাহীনকে নির্বাচনী কর্মকর্তা করা হয়।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচন উপলক্ষে গেলো বছরের ৩০ ডিসেম্বর প্রথম দফায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। পরে ওই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে ফের চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটি।
নির্বাচনে ২১টি পদের জন্য ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা ছিল মোট ৫ হাজার ৪০৪ আইনজীবীর। এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের মাত্র চারদিন আগে পদত্যাগ করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সভা করে নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৫ সদস্যের চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন-আদালত
সাবেক সচিব খাইরুলের ছেলের ৫৪ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী সদস্য মো. খাইরুল ইসলামের ছেলে মোরসালিন ইসলাম সৌরদীপের ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির একটি বিও হিসাবের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
এ শেয়ারে ৫৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা রয়েছে বলে আবেদনে উল্লেখ করেছেন দুদকের উপ সহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
এর আগে দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার এসব শেয়ার অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, মো. খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভুয়া সস্পত্তি জামানত হিসেবে মর্টগেজ দিয়ে বেসিক ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখা থেকে ১০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগটি অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, খাইরুল ইসলাম তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একাত্ম সচিব-১ হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক অসদাচারণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি সার্কুলার অনুসারে প্রতিজন ঋণগ্রহীতাকে গৃহঋণ বাবদ সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার বিধান থাকলেও নিজের নাবালক দুই সন্তান রওশন শিপারিন মেঘমালা ও মোরসালিন ইসলাম সৌরদীপের প্রত্যেকের নামে দুই কোটি টাকা করে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। মোরসালিন ইসলাম সৌরদীপের শেয়ারগুলো জরুরি ভিত্তিতে ফ্রিজ করা প্রয়োজন। এই শেয়ারের মূল্য ৫৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের স্ত্রীর ৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলামের স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের নামে থাকা ১৪টি কোম্পানির শেয়ার ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৩ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার ৪৮০ টাকা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
এছাড়া ফৌজিয়া ইসলামের নামে ইজারা ও বায়না দলিলে বান্দরবানের লামা উপজেলায় ৩০৪ দশমিক ৫৯ একর জমি, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ফ্ল্যাট ক্রোক, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপপরিচালক আবু মোহাম্মদ আনোয়ারুল মাসুদ এসব সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ চেয়ে আবেদন করেন।
জানা যায়, ফ্রিজ হওয়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ১২টি ব্যাংক হিসাব ও ১৪টি কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। ব্যাংক হিসাবগুলোতে আছে এক কোটি ৪২ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৫ টাকা। আর শেয়ারের মূল্য ৩ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার ৪৮০ টাকা। জব্দ হওয়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে ঢাকার গুলশানে জমিসহ একটি ফ্ল্যাট, চট্টগ্রামের হালিশহরে চার তলা পাকা বাড়ির তিনভাগের একভাগ অংশ রয়েছে। এ ছাড়া বান্দরবানের লামা উপজেলায় ইজারা ও বায়না দলিল মূলে ৫৩ দলিলে প্রায় ৩০৪ দশমিক ৫৯ একর জমি রয়েছে।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, ফৌজিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৪ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রাখা এবং তার স্বামী মো. তাজুল ইসলাম কর্তৃক অসদুপায়ে উপার্জিত অর্থ দ্বারা স্ত্রীর নামে ৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা প্রদান এবং ১১টি ব্যাংক হিসাবে ১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার ২০৩ টাকা জমা ও ১৩ কোটি ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭৫ টাকা উত্তোলনসহ সর্বমোট ২৭ কোটি ১১ লাখ ৯৫ হাজার ১৭৮ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরপূর্বক আয়ের উৎস আড়াল করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ পেনাল কোডের ১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা তদন্তকালে তার নামে ব্যাংক হিসাবসমূহে গচ্ছিত অর্থের তথ্য পাওয়া যায়। যা তিনি যেকোনো সময় হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করছেন বলে জানা যায়।
এর আগে ১৩ এপ্রিল সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের নামে থাকা ঢাকা, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জের ২৮ বিঘা জমি, কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় থাকা দুইটি বাণিজ্যিক স্পেস, একটি ফ্ল্যাট ও একটি দোকান ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া তার নিজ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৫০টি ব্যাংক হিসাব ও শেয়ারে জমাকৃত ২৮ কোটি টাকা ফ্রিজ করা হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হলো কারাগারে

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন– ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম ও সাবেক ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
এর আগে জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারিক প্যানেল ১৫ এপ্রিল আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে ওইদিন শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন। এসময় প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
মরদেহ পোড়ানোর নৃশংস ঘটনার বিষয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। যখন এসব মরদেহে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, তখন একজন জীবিত ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করেন। এর মধ্যে এক মামলায় ১২ জন ও অন্য মামলায় ১৭ জন আসামি। আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ। শেষের দুইজন তদন্তপ্রাপ্ত আসামি।
জানা গেছে, পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নং সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
দেড় দশক দেশ শাসনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
মরদেহ পোড়ানো তিন পুলিশ কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১১টায় প্রিজন ভ্যানে কারাগার থেকে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
তারা হলেন, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম এবং সাবেক ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
এর আগে, গত ৮ এপ্রিল প্রসিকিউসনের আবেদনে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। আজ ১৫ এপ্রিল হাজিরের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে চলা ছাত্র আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় এ বর্বর ঘটনা ঘটে। অভিযোগে বলা হয়, ওইদিন ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ, এরপর তাদের মরদেহ একটি পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভয়াবহ এ ঘটনার সময় একজন তরুণ তখনো জীবিত ছিলেন। তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়।
এ ঘটনাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল আদালত ওই তিন কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেন। চিফ প্রসিকিউটর জানান, মামলার তদন্ত ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।
লাশ পোড়ানোর নৃশংস ঘটনার বিষয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। যখন এসব মরদেহে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, তখন একজন জীবিত ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।
এসএম