অর্থনীতি
জাপানের কোম্পানিই পাচ্ছে থার্ড টার্মিনালের দায়িত্ব

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল-৩ পরিচালনা নিয়ে শুরু থেকেই জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছিল। অবশেষে জাপানের দুটি সরকারি ও চারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত একটি ‘বিশেষায়িত কোম্পানি’ ১৫ বছরের জন্য নবনির্মিত টার্মিনালটির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পাচ্ছে।
এবিষয়ে দেশটির কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, জাপানি কনসোর্টিয়ামের নেতৃত্বে থাকবে দেশটির বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো করপোরেশন। চারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি একই কনসোর্টিয়ামের অংশীদার জাপানের মিনিস্ট্রি অব ল্যান্ড, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) মডেলে বিশেষ এ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করবে বাংলাদেশ।
থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব এরই মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিমান অবশ্য সে কাজটি করবে জাপানি কনসোর্টিয়ামের অধীনে।
বেবিচক সূত্র বলছে, থার্ড টার্মিনাল থেকে দুই ধরনের আয় হবে। অ্যারোনটিক্যাল আয়ের মধ্যে অ্যামবার্কেশন ফি ও বোর্ডিং ব্রিজের চার্জ আদায় করবে জাপানি কনসোর্টিয়াম। আর নন-অ্যারোনটিক্যাল আয়ের মধ্যে বিমানবন্দরের সার্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমের পুরোটাই থাকবে তাদের হাতে। এসব আয় দিয়েই টার্মিনালের যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণকাজ করা হবে। এরপর যে অর্থ উদ্বৃত্ত থাকবে, তার একটি অংশ পাবে পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জাপানি কনসোর্টিয়াম, আরেকটি অংশ পাবে বাংলাদেশ সরকার।
বেবিচকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাপানি কনসোর্টিয়ামকে খসড়া চুক্তির জন্য ‘রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল’ পাঠানো হয়েছে। পিপিপি আইন অনুযায়ী, এটা পাওয়ার পর তারা সর্বোচ্চ ৪২ দিন সময় নিতে পারে। যদিও বেবিচক কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা, এক মাসের মধ্যেই চুক্তি সম্পাদন হয়ে যাবে।
চুক্তির পর পরই অবশ্য টার্মিনালে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে না অপারেটর প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ করে টার্মিনালের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে তাদের ছয় থেকে আট মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে বেবিচক সূত্রে জানা গেছে।
থার্ড টার্মিনালের অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রায় এক মাস ধরে তাদের (জাপানি কনসোর্টিয়াম) সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে তাদের রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল এবং কনসেশন এগ্রিমেন্ট দিয়েছি। টার্মস নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়ে গেছে।’
জাপানি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে থার্ড টার্মিনালের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। শিগগিরই আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করে ফেলব। এরপর আমরা থার্ড টার্মিনাল অপারেশনে যাব। চুক্তি সম্পন্ন করার পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে অপারেশনে যেতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।
টার্মিনাল থেকে আয় হওয়া রাজস্ব কীভাবে বণ্টন হবে এমন প্রশ্নে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, এটা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। যা আয় হবে, তার বড় অংশই টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে। বাকি অংশের এক ভাগ পাব আমরা, আরেক ভাগ অপারেটর। যেহেতু এখনো চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি, সেহেতু রাজস্ব ভাগাভাগির বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ হচ্ছে জাইকার ঋণে। ২ হাজার ১৩৯ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে জাপানের আর্থিক সংস্থাটির ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। ঋণদাতা দেশের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টার্মিনালের নির্মাণকাজেও যুক্ত ছিল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তরিঘড়ি করে থার্ড টার্মিনালের ‘সফট লঞ্চিং’ করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সে সময় টার্মিনাল প্রকল্পের অগ্রগতি ছিল ৯০ শতাংশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে টার্মিনাল ভবন প্রস্তুত থাকলেও অপারেটর না থাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এক মাসের মধ্যে অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি হলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

অর্থনীতি
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। এতদিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাজেট ঘোষণায় বলা হয়, ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। বর্তমানে ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসব ৪৬ সেবার মধ্যে এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই সেবা মিলবে।
বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংকের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে চায় সরকার। এ খাত থেকে এক লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তাব করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
এদিকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মোট ৮৩ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যার মধ্যে আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের পরিশোধ বাদ দিয়ে সরকারের নিট ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। তবে অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) মোট ৪৮ হাজার ৬১৫ কোটি বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিক্রি হয়েছে ৩৬ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকার। একই সময়ে আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের নগদায়ন বাবদ ৪৩ হাজার ৪৭৬ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। সে হিসাবে নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা।
তবে স্বস্তির বিষয় হলো ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম আরও সহজ করেছে সরকার। এতে স্বস্তি পাবে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও কৃষিপণ্যের আমদানিতে স্থানীয় ঋণপত্রের (এলসি) কমিশনের ওপর উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর আওতায় পড়বে চাল, ডাল, ধান, গম, পেঁয়াজ, আলু, চিনি, ভোজ্যতেলসহ ২৫টির বেশি খাদ্যপণ্য। এছাড়া কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ, ফলমূল আমদানির ওপর কর হ্রাসের মাধ্যমে ভোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।
অর্থনীতি
বছরে একবারের বেশি স্বর্ণ আনলে মিলবে না ব্যাগেজ রুলসের ছাড়

শুল্ক পরিশোধ করে বিদেশ থেকে স্বর্ণ আনার সুবিধা আরও সংকুচিত করলো অন্তর্বর্তী সরকার। শুল্ক পরিশোধ সুবিধার আওতায় ঘন ঘন দেশে স্বর্ণ আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাগেজ রুলসে পরিবর্তন আনা হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে।
এখন থেকে কোনো যাত্রী বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনতে পারবেন না।
সোমবার (২ জুন) অর্থমন্ত্রী ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের রেকর্ডকৃত বক্তব্যের মাধ্যমে এই সংশোধনের ঘোষণা দেন।
বর্তমানে ঘোষণা দিয়ে একজন যাত্রী বছরে যতবার ইচ্ছা ১১৭ গ্রাম বা ১০ ভরি স্বর্ণ আনতে পারেন এবং এতে ৪০ হাজার টাকা কর দিতে হয়।
এই পরিবর্তনের ফলে কোনো যাত্রী বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনতে পারবেন না।
বাণিজ্যিকভাবে স্বর্ণ আমদানির অনুমতি থাকলেও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) নেতারা বলছেন, আমদানির তুলনায় ব্যাগেজ রুলসের আওতায় স্বর্ণ আনা তুলনামূলক সস্তা। তাই অনেকে আমদানির বদলে যাত্রীদের মাধ্যমে ব্যাগেজ রুলস ব্যবহারে বেশি আগ্রহী।
এমনকি অনেক চোরাচালানকারীও এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরকার ২০১৮ সালে দেশে বাণিজ্যিকভাবে স্বর্ণ আমদানির অনুমতি দিলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওই বছর থেকে চার বছরে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে দেশে এসেছে মাত্র ১৪৫ কেজি স্বর্ণ, যা দেশে স্বর্ণের বার্ষিক চাহিদার এক শতাংশেরও কম।
তবে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় প্রতিদিন শত কেজির বেশি স্বর্ণ দেশে প্রবেশ করছে, যা আইনি হলেও আমদানির হিসাব ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকছে।
আগের ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন নারী যাত্রী ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার বিনা শুল্কে আনতে পারতেন।
অর্থনীতি
বাড়ছে না বিদ্যুতের দাম

বিদ্যুৎ উৎপাদনের সার্বিক ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হলেও আপাতত দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় তিনি এ তথ্য জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আপাতত বিদ্যুতের মূল্য না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে চলতি বছরের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে নীতিগতভাবে আমরা বিদ্যুতের মূল্য আপাতত না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎ খাতে প্রদত্ত ভর্তুকির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সার্বিক ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিগুলোও পর্যালোচনা করছি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমাতে এনার্জি অডিট করার উদ্যোগ নিয়েছি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বছরের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার এবং ২০২৮ সালের মধ্যে স্থানীয় কূপ থেকে অতিরিক্ত ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে: অর্থ উপদেষ্টা

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।
মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।
কাফি
অর্থনীতি
বাড়বে প্লাস্টিক পণ্যের দাম

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে প্লাস্টিকের তৈরি আসবাবপত্র, তৈজসপত্রসহ সব ধরনের পণ্যে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট দ্বিগুণ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে সরকার।
সোমবার (২ জুন) আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিকের তৈরি সব ধরনের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালী সামগ্রী, হাইজেনিক ও টয়লেট্রিজ সামগ্রীসহ অনুরূপ যেকোনো পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটের হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।