জাতীয়
‘মার্চ ফর গাজা’ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে: ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত

ঢাকার ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ ওয়াই রামাদান। তিনি বলেন, এই সমাবেশ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রতিধ্বনিত হবে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বিবৃতিতে বলেন, ঢাকা তার অতুলনীয় আন্তরিকতা দিয়ে বিশ্বকে অবাক করে চলেছে। ১২ এপ্রিল বিশ্ব যা প্রত্যক্ষ করেছে তা ইতিহাসের পাতায় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন ও সংহতির অন্যতম সেরা ঘোষণা হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে, যা সীমান্ত এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রতিধ্বনিত হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের প্রাণশক্তি একটি অকাট্য সত্যকে নিশ্চিত করে। বাংলাদেশ, তার পুরুষ ও নারী, তরুণ ও বৃদ্ধ উভয়ের মাধ্যমে, ফিলিস্তিনি জনগণকে স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য শক্তি, উৎসাহ এবং নৈতিক প্রতিরোধ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ বাংলাদেশিদের মতো মহান জাতি খুঁজে পাওয়া বিরল।
তিনি আরও বলেন, এই মহৎ জাতি একটি অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একটি ঘোষণা, যা কেবল কথায় নয় বরং নীতিগতভাবে খোদাই করা হয়েছে- বাংলাদেশ ইতিহাসের সঠিক দিকে থাকা ছাড়া আর কিছুই মেনে নেবে না। ফিলিস্তিন এবং এর জনগণের ন্যায্য সংগ্রামের পাশে দাঁড়ানো ছাড়া আর কিছুই গ্রহণ করবে না। এই পৃথিবীর প্রতিটি সম্মানিত আত্মার গভীরে বসবাসকারী এই নীতির সঙ্গে তারা কখনও আপস করবে না।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, সমগ্র ফিলিস্তিন থেকে সমগ্র বাংলাদেশের কাছে, আমরা এমন এক জনগোষ্ঠীকে আমাদের শুভেচ্ছা জানাই যাদের মাহাত্ম্য এবং সাহসী অবস্থানকে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ফিলিস্তিন তার বাংলাদেশের ভাইবোনদের কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশা করে, আমাদের জনগণ তাদের পূর্ণ অধিকার, তাদের স্বাধীনতা এবং তাদের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার না করা পর্যন্ত তাদের সমর্থনে অনুগত এবং অটল থাকবে।
তিনি বলেন, এই মহান জনগণের প্রতি, আমরা আমাদের স্থায়ী অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করি। ফিলিস্তিন এবং এর জনগণ আপনাদের প্রতি অনুগত থাকবে, যতক্ষণ না এটি তাদের পূর্ণ অধিকার, তাদের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করে। আমরা আপনাদের সম্মানজনক অবস্থান কখনও ভুলব না। আমরা বাংলাদেশের জন্য আপনাদের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং অব্যাহত অগ্রগতির জন্য ক্রমাগত প্রার্থনা করি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে, আমরা লাল এবং সবুজ রঙের সমুদ্রের উত্থান প্রত্যক্ষ করেছি। ফিলিস্তিনের পতাকার পাশে বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যটি এই অসাধারণ দৃশ্যের পটভূমি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জাতীয় রং ফিলিস্তিনের সঙ্গে মিশে আছে, সাহসের দুটি পতাকা পাশাপাশি উড়ছে। হাজার হাজার কণ্ঠস্বর, যার মধ্যে শিক্ষার্থী, মা, ইমাম, শিল্পী এবং আরও অনেকে স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য একযোগে ধ্বনি তুলেছেন। ঢাকার কণ্ঠস্বর চিৎকার করে উঠবে এবং কখনও নীরব থাকবে না, যতক্ষণ না ফিলিস্তিনি ভাই-বোনেরা দখলদারিত্ব এবং অবিচারের শিকার হচ্ছে।
ইউসুফ ওয়াই রামাদান বলেন, বাংলাদেশে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি গত কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের অবিচল সংহতির জন্য কৃতজ্ঞতায় ভরা হৃদয় নিয়ে লিখছি। মিছিল করা প্রতিটি ছাত্র, চিত্রশিল্পী, প্রার্থনাকারী, ইমাম এবং কণ্ঠস্বর তুলে ধরা প্রতিটি বাংলাদেশিকে ধন্যবাদ। গাজার শরণার্থী শিবির থেকে পশ্চিম তীরের জলপাই গাছ পর্যন্ত আপনার সংহতি অনুভূত হয়। ন্যায়বিচারের জয় হবে এই বিশ্বাসকে আপনারা বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করেছেন।
তিনি বলেন, আমার হৃদয় থেকে এবং ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ। আপনারা কেবল সমর্থক নন। আশা, মর্যাদা এবং সংগ্রামে আমাদের ভাই ও বোন। ফিলিস্তিন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক। ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের যৌথ সংগ্রাম দীর্ঘজীবী হোক।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’। এই কর্মসূচিতে দল-মত নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
দেশ থেকে অশুভ দূর হয়েছে: প্রেস সচিব

দেশ থেকে ইতোমধ্যে অমঙ্গল দূর হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের চেষ্টা করছি। যেটুকু অশুভ আছে, তাও দূর হয়ে যাবে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রমনার বটমূলে বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, নতুন বাংলাদেশে নববর্ষের উৎসব একটি মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। সবাই সকাল থেকে খুব আনন্দে আছি। নববর্ষকে বরণ করছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ইচ্ছা ছিল আমরা সবাই সমতল ও পাহাড়ের জাতি-গোষ্ঠী সবাই মিলে একসঙ্গে মিলে আনন্দ করব, আনন্দ ভাগাভাগি করব। এটা হয়েছে।
এ সময় দেশের উত্তরোত্তর উন্নতির প্রচেষ্টার কথাও জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মধ্যরাত থেকে ৫৮ দিন সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশসহ উপকূলীয় অনেক দেশই প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সমুদ্রগামী মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে আগামী সোমবার (১৫ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে ৫৮ দিনের সর্বাত্মক মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা, যা চলবে ১১ জুন পর্যন্ত। তবে এবারও নিষেধাজ্ঞার পূর্বে খাদ্য সহায়তা পাননি জেলেরা।
অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারতও ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত তাদের সমুদ্রসীমায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অর্থাৎ দু’দেশের সমন্বিত এই উদ্যোগে বৃহৎ পরিসরে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও মাছের প্রজননে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গ্রীষ্মের এই সময়টি সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে ইলিশের প্রধান প্রজননকাল। মাছগুলো ডিম ছাড়ে উপকূলবর্তী এলাকায়। এই সময়ে যদি অধিক হারে মাছ ধরা হয়, তাহলে প্রজনন ব্যাহত হয় এবং পরবর্তী মৌসুমে মাছের উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। এ কারণেই ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার সমুদ্রগামী সব প্রকার মাছ ধরায় প্রতি বছর গ্রীষ্মকালীন এই নিষেধাজ্ঞা চালু করে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রজননকালে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে পরবর্তী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন প্রায় ২০-২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। পটুয়াখালী জেলার মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এই সময়ে সামুদ্রিক মাছগুলো নিরাপদে ডিম ছাড়ে ও বংশবৃদ্ধি করে। দুই দেশের সমন্বিত এই নিষেধাজ্ঞা বঙ্গোপসাগরের মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে।’
সমুদ্র শান্ত, কিন্তু উত্তাল উপকূল
তবে মাছ ধরার ওপর এই দীর্ঘমেয়াদি নিষেধাজ্ঞা সরাসরি আঘাত হানে উপকূলের লাখো মানুষের জীবিকায়। বিশেষ করে দিনমজুর নির্ভর জেলে পরিবারগুলো এই সময়ে চরম দুর্দশায় পড়ে। সরকার প্রতি বছর নিবন্ধিত জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তা ঘোষণা করলেও, বাস্তব চিত্র কিছুটা ভিন্ন।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার জেলে নুরুল হক মাঝি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা হলেই আমাদের কাজ বন্ধ। সরকার বলে চাল দেবে, কিন্তু অনেক সময় পাই না, আবার দেরি হয়। অনেকেই পাই না যারা সত্যিই মাছ ধরে।’
পটুয়াখালী জেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত জেলে ৬৯ হাজারের বেশি। কিন্তু স্থানীয়ভাবে ধারণা করা হয়, অনিবন্ধিত ও ভাসমান জেলে মিলিয়ে এ সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এদের অনেকে সরকারি সহায়তার বাইরে থেকে যান।
স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনগুলোর দাবি, সহায়তার তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি রয়েছে। সহায়তার চাল সময়মতো পৌঁছায় না, এবং প্রকৃত জেলের জায়গায় অনেক সময় সুবিধাভোগী হন প্রভাবশালী ব্যক্তি বা রাজনৈতিক সংযোগধারীরা।
সমন্বিত প্রচেষ্টা, ভবিষ্যতের জন্য সম্ভাবনা
এই বছর বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন, আর ভারতের ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ফলে এই সময়টায় বঙ্গোপসাগরের বড় একটি অঞ্চল কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকবে মাছ ধরার ক্ষেত্রে, যা ভবিষ্যতের জন্য টেকসই মাছ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন বাড়াতে এবং প্রজাতিসমূহের টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখার এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশের সাবেক গবেষক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সময়টি ইলিশসহ অনেক সামুদ্রিক মাছের জন্য প্রজননের উপযুক্ত সময়। এই সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখা মানে শুধু পরবর্তী মৌসুমের উৎপাদন বাড়ানো নয়, বরং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা, খাদ্য চক্র বজায় রাখা ও দীর্ঘমেয়াদে সমুদ্রসম্পদ টেকসই করার জন্য একটি অত্যন্ত কার্যকর কৌশল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত মৎস্যসম্পন্ন দেশগুলোও এই ধরনের নিষেধাজ্ঞাকে সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনার মূল অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। আমাদের মতো দেশগুলোর জন্য এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠী সামুদ্রিক মাছের ওপর নির্ভরশীল। তাই বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ এই সিদ্ধান্ত একটি প্রশংসনীয় অগ্রগতি। তবে, এটি যেন শুধু প্রশাসনিক আদেশে সীমাবদ্ধ না থাকে। মাঠপর্যায়ে জেলেদের জন্য বিকল্প জীবিকা, খাদ্য সহায়তা এবং সচেতনতা নিশ্চিত করতে হবে—তা না হলে তারা অনিয়মিতভাবে মাছ ধরায় ফিরে যেতে পারে, যা পুরো উদ্যোগকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা একটি সময়োপযোগী ও বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ, তবে এর সাথে সমান্তরালভাবে জেলেদের জন্য সঠিক তালিকাভুক্তি, নিয়মিত খাদ্য সহায়তা, এবং জীবিকা বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি। সাগর যেমন বিশ্রাম পাচ্ছে, তেমনি বিশ্রামের দরকার উপকূলবাসীর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনেও।
বাংলাদেশ-ভারতের এই সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা সাগরের জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক বার্তা। কিন্তু উপকূলের লাখো জেলের জীবিকা যদি না পায় সুরক্ষা, তবে এই উদ্যোগ থেকে যাবে কেবল কাগজে-কলমে। সরকারি সহায়তা না পেলে পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে পা দিতে পারেন আইনের ফাঁদে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আনন্দ উল্লাসে শেষ হলো ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’

‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হওয়া ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ।
শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় অংশ নেন চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী এবং নানা বয়সি মানুষ। তবে শুধু দেশের মানুষ নয়, নেচে-গেয়ে উৎসবে মেতে উঠেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও পর্যটকরাও।
এতে অংশ নেন জাপান, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানিসহ নানা দেশের পর্যটক ও শিক্ষার্থীরাও। কেউ গলায় বাঁশি ঝুলিয়ে বাজান, কেউ আবার লাল-সাদা শাড়ি-পাঞ্জাবিতে বাঙালির সাজে ঢুকে পড়েন।
শোভাযাত্রায় মুখোশ, পাপেট, বাঁশের তৈরি বাঘ, পাখি, মাছসহ নানা বিশালাকৃতির শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় গ্রামীণ জীবন ও প্রকৃতিনির্ভর মানুষের সংগ্রামের রূপ। তবে একটি বিশেষ মুখাবয়ব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সেটি হচ্ছে ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব।
আগে তৈরি করা মুখাবয়বটি পুড়িয়ে ফেলার পর ফের ককশিট দিয়ে তৈরি করা হয় আরেকটি মুখাবয়ব। এর সঙ্গে সবার দৃষ্টি কাড়ে জুলাই আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মরণে ‘পানি লাগবে পানি’ মোটিফ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আনন্দ শোভাযাত্রায় রাজধানী জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা

‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ ঘিরে শাহবাগ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ উদযাপন উপলক্ষে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলামোটর মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে। যাতে বাসসহ বড় যানবাহন শাহবাগের দিকে যেতে না পারে। নেভি গলির মুখে পুলিশের আরেকটি ব্যারিকেড আছে। যাতে ছোট যানবাহন শাহবাগের দিকে যেতে না পারে। এরপর থেকে শাহবাগের উদ্দেশ্যে যাওয়া মানুষজনকে হেঁটেই যেতে হচ্ছে।
এদিকে পুরো শাহবাগ মোড় ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে রাখতে দেখা যায়। যাতে কেউ শোভাযাত্রায় সামনে দিয়ে প্রবেশ করতে না পারে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও সেনাবাহিনীসহ অন্যনা বাহিনীর সদস্যদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
ঢাকাবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে নিরাপত্তার বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন মো. নজরুল বলেন, ঢাকাবাসী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা যে ব্যারিকেড দিয়েছি সেগুলো তারা মেনে চলছেন। ডিএমপির পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনা মেনে তারা নববর্ষ পালন করতে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, পুরো রাজধানীর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে। ডিএমপির ১৮ হাজার ফোর্সের পাশাপাশি র্যাব, সেনাবাহিনীসহ আমাদের সাইবার ও ডিবি টিম কাজ করছে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি। সবাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সোমবার সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের হয়েছে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন আটক ২০ বাংলাদেশি

মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়া ২০ বাংলাদেশি দেশে ফিরছেন। রবিবার (১৩ এপ্রিল) মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।
দূতাবাস জানায়, অসাধু দালালরা এসব অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথিমধ্যে মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হন। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবং তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর বাংলাদেশ দূতাবাস আজকে তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে। গত কয়েক মাস ধরে তারা মিয়ানমারে আটক ছিলেন।
মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন ২০ জন বাংলাদেশি তরুণের হস্তান্তরের সময় বন্দরে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে প্রবেশ করেছেন, তাদের যাচাই-বাছাই করে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য দূতাবাস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি সম্প্রতি মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টার থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনার উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন।
একই জাহাজে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবার জন্য যাওয়া বাংলাদেশের ৫৫ সদস্যের দলটিও দেশে ফিরছেন। তারা মিয়ানমারে ১০ দিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন দলটির সদস্যদের তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে মিয়ানমারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সকলকে কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান। তিনি বিদেশগামীদের সন্দেহজনক বা প্রতারণামূলক চাকরির প্রস্তাবের শিকার না হওয়ার পরামর্শ দেন।
গত দুই বছরে মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস ৩৫২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে প্রত্যাবাসন করেছে। সর্বশেষ গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে ৮৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রত্যাবাসন হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’ শুক্রবার মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য ১২০ মেট্রিক টন মানবিক সহায়তা নিয়ে ইয়াঙ্গুনে যায়। আগামী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।