সারাদেশ
আলোচিত ‘ক্রিম আপা’ গ্রেফতার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে টাকা আয়ের জন্য নিজের শিশু সন্তানের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগে করা মামলায় শারমীন শিলাকে (ক্রিম আপা) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সাভার পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে টাকা আয়ের জন্য নিজের শিশু সন্তানের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগে শারমীন শিলার (ক্রিম আপা) বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।
বুধবার (৯ এপ্রিল) আশুলিয়া থানায় মামলাটি করেন সাভার উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান।
এজাহারে বলা হয়, শারমীন শিলা একজন বিউটিশিয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। তিনি মূলত মেকআপের জন্য বিভিন্ন ক্রিম তৈরি করে তা বিক্রি করেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি তার সন্তানদের নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করেন।
এতে আরও বলা হয়, ৩ মার্চ বিকেল ৪টায় তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, শারমীন শিলা তার মেয়ে জিমকে (বয়স ২ বছর) জোর করে মুখ হা করিয়ে কেক জাতীয় খাবার দিচ্ছেন। মেয়ে খেতে চাচ্ছিল না, এজন্য তিনি জোর করে মুখে চাপ দিয়ে খাবার দিতে থাকেন। আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলা ও মাতৃসুলভ আচরণ বর্জন করে শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছেন ক্রিম আপা। ফলে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভিউ বাড়ানো ও টাকা আয়ের জন্য তিনি তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। কখনো মাথা ন্যাড়া করে, আবার কখনো ভারী কানের দুল লাগিয়ে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে দেন।
এর বাইরে কী রান্না করছেন, কী খাচ্ছেন- এসব নিয়ে করা বিভিন্ন ভিডিওতে মেয়েকে হাজির করেন ‘ক্রিম আপা’। তখন মেয়ে ভয়ে চুপ করে থাকে। কখনো হাসে আবার কখনো অস্বাভাবিকভাবে কাঁদে। মেয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকে তা বিভিন্ন ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা যায়।
সাভারের বাইপাইলে ‘ক্রিম আপা বিউটি পার্লার’ নামে শারমীন শিলার একটি পার্লার আছে। এছাড়া তিনি ফেসবুকে রং ফরসার ক্রিম বিক্রি করেন।
এ নিয়ে ৬ এপ্রিল ‘একাই একশো’ নামের শিশুদের সুরক্ষায় সামাজিক আন্দোলনের পক্ষে কিশোর সাদাত রহমানসহ অন্যরা ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তিনদিনের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
শারমীন শিলার বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেওয়া প্রসঙ্গে সাদাত জানান, শারমীন শিলা বা ক্রিম আপার বিরুদ্ধে এর আগেও লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই দুই শিশুর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় এবার জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ফেসবুকে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। বিশেষ করে সন্তানের বাবা-মায়েরা চোখের সামনে দুটি বাচ্চাকে এভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে শারমীন শিলা বলেন, হিংসায় ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমি আমার ছেলে-মেয়েকে ভালোবাসি। তারা আমার ‘কলিজার টুকরা’। তাদের নির্যাতন করার প্রশ্নই আসে না।
এরপর তিনি আর এ ধরনের ভিডিও তৈরি করবেন না বলে জানান। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে ফেসবুক লাইভে এসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ
চাঁদপুরে মফস্বল সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি প্রশিক্ষণ শুরু শুক্রবার

চাঁদপুর সাংবাদিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের আয়োজেন এই প্রথম মফস্বল সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হতে যাচ্ছে। এই প্রশিক্ষণে সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী নবীনদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চাঁদপুর সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
উদ্বোধনী প্রশিক্ষক থাকবেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপস্থাপক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরদার ফরিদ আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, দৈনিক যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশা ও দৈনিক আমার দেশ পাঠক মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মো. কাউছার আলম।
সপ্তাহে দুটি ক্লাস করে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রথম ব্যাচে ১৬টি ক্লাস নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি শুক্রবার ও শনিবার প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশিক্ষণার্থীদের যথা সময়ে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন চাঁদপুর সাংবাদিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মুসাদ্দেক আল আকিব।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
টানা দ্বিতীয়বার শরীয়তপুর জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ওবায়দুল হক

শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানায় গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে যোগদান করেন ওবায়দুল হক। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক ও অপরাধ দমন এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। এই ধারাবাহিকতায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তিনি শরীয়তপুর জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসেবে প্রথমবার পুরস্কৃত হন। এরপর টানা দ্বিতীয়বারের মতো এপ্রিল মাসে, তিনি আবারও শ্রেষ্ঠ অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) শরীয়তপুর জেলা পুলিশ লাইনে অনুষ্ঠিত মাসিক কল্যাণ সভায় পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওসি ওবায়দুল হকের হাতে শ্রেষ্ঠ অফিসারের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
মাদক উদ্ধার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অসাধারণ অবদানের জন্য তাঁকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন থানার ইনচার্জসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার গ্রহণের পর ওসি ওবায়দুল হক বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা। সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত থানায় থাকি। কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে, আমি আইনগত সহায়তা দিতে না পারলেও সৎ পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করি।
তিনি আরও বলেন, “সখিপুরবাসীর প্রতি আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। আমি চেষ্টা করব থানা এলাকা মাদকমুক্ত, জুয়ামুক্ত ও অপরাধমুক্ত রাখতে। যাতে মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারে এবং ভয় ছাড়াই থানায় এসে যেকোনো বিষয়ে কথা বলতে পারে। পুলিশ জনগণের বন্ধু-এটাই আমার বিশ্বাস।”
উল্লেখ্য, তিনি এবার শরীয়তপুর জেলার টানা দ্বিতীয়বারের মতো শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
এক সংবাদ একই শিরোনামে ১৩ পত্রিকায়, সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ

ময়মনসিংহের ১৩টি আঞ্চলিক দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় একই সংবাদ একই শিরোনামে প্রকাশ করায় সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা মীরা। এতে করে সাংবাদিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকদের নামে নোটিশ জারি করা হয়।
নোটিশপ্রাপ্ত পত্রিকাগুলো হলো- শামসুল আলম খান সম্পাদিত দৈনিক আজকের ময়মনসিংহ, এফ এম এ ছালাম সম্পাদিত দৈনিক দেশের খবর, এন বি এম ইব্রাহীম খলিল রহিম সম্পাদিত দৈনিক বিশ্বের মুখপাত্র, মরহুম আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার সম্পাদিত দৈনিক ঈশিকা, নাসির উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত দৈনিক অদম্য বাংলা, আফসার উদ্দিন সম্পাদিত দৈনিক সবুজ, আ ন ম ফারুক সম্পাদিত দৈনিক আলোকিত ময়মনসিংহ ও দৈনিক দিগন্ত বাংলা, শেখ মেহেদী হাসান নাদিম প্রকাশিত দৈনিক জাহান, ওমর ফারুক সম্পাদিত দৈনিক কৃষাণের দেশ, এম এ মতিন সম্পাদিত দৈনিক নিউ টাইমস, ফরিদা ইয়াসমীন রত্না সম্পাদিত হৃদয়ে বাংলাদেশ ও বিকাশ রায় সম্পাদিত সাপ্তাহিক পরিধি।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা মীরা কর্তৃক কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, পত্রিকাগুলো ভিন্ন হলেও চলতি বছরের ৩০ মার্চ, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ এপ্রিল একই সংবাদ, একই শিরোনামে প্রকাশ করে। এসব পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকদের নোটিশ জারির দিন থেকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে একই সংবাদ, একই শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের কারণ ব্যাখ্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
১৩ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের ঘটনা সাংবাদিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
আলোকিত ময়মনসিংহ পত্রিকার সম্পাদক ও ময়মনসিংহ সংবাদপত্র শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ফারুক জানান, এরকম সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর মতো ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। তবে সম্পাদকদের ডেকে নিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিলেই সবচেয়ে বেশি ভালো হতো। ভবিষ্যতে যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে এ বিষয়ে তারা সতর্ক থাকবেন তিনি।
আজকের বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক জানান, একই শিরোনামের সংবাদ একই ছাপাখানা থেকে একাধিক পত্রিকায় একাধারে কয়েকদিন প্রকাশিত হবে এটা পাবলিকেশন অ্যাক্ট পরিপন্থি। সংবাদপত্রের মান ধরে রাখতে এ বিষয়ে সবাকেই সচেতন হওয়া উচিত। এর আগেও এই সমস্যাগুলো নিয়ে সম্পাদকদের মধ্যে কথা হয়েছে, কিন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের নোটিশ কখনও তারা পাননি।
ময়মনসিংহ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম উজ্জ্বল জানান, ময়মনসিংহে একই ছাপাখানা থেকে ১০-১২টি পত্রিকা ছাপা হয়ে থাকে। একজন রিপোর্টার এসব পত্রিকা নিয়ন্ত্রণ করেন। কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন, তথ্য অফিস ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত তদারকি করা উচিত। দুই মাস তিন মাস পর পর মনিটরিং করা হলে এরকম অনিয়ম কখনও হবে না।
ময়মনসিংহ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম মোস্তফা জানান, একই শিরোনাম কয়েকটি পত্রিকায় একাধারে একই বিষয় নিয়ে প্রকাশিত হবে- এটা সংবাদপত্রের মূলনীতি পরিপন্থি। সংবাদপত্রের মাধ্যমে মানুষ সঠিক তথ্য পাবে। পত্রিকাগুলো অবশ্যই নিয়মের মধ্যে আসা উচিত।
জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা মীরা জানান, একই শিরোনাম একাধিক পত্রিকায় একাধারে ছাপা হওয়ার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর পত্রিকার সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে সম্পাদকরা এসে কেন এমন ঘটনা ঘটলো বিষয়টি অবহিত করলেই হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে বাংলাদেশি যুবক নিহত

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে এক বাংলাদেশি মো. আকরাম হোসেন নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায়র লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এক সহযোদ্ধার ফোনে পরিবারের কাছে আকরামের নিহত হওয়ার খবর পৌঁছলে তার বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
জানা গেছে, ওয়েল্ডারের কাজ শিখে সংসারের সচ্ছলতা আর নিজের ভবিষ্যতের আশায় রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন উপজেলার লালপুর হোসেনপুর গ্রামের মোরশেদ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (২৫)। তিন ভাই ও দুই বোনসহ পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে আকরাম ছিল সবার বড়। আকরামদের সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী দিন মজুর পিতা মোরশেদ মিয়া স্ত্রী, পূত্র ও কন্যা নিয়ে কোনরকমে দিনাতিপাত করছিলেন। এরই মধ্যে আকরামের একজন বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন আকরামের বাবা মোরশেদ।
এ অবস্থায় ওয়েল্ডারের কাজ শিখিয়ে আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় বিগত প্রায় এগারো মাস আগে আকরামকে রাশিয়া পাঠানো হয়। রাশিয়ায় যাবার পর বিগত আট মাস সেখানকার একটি চায়না কোম্পানীতে ওয়েল্ডার হিসেবে চাকরি করে আকরাম। বেতন খুব বেশী না পেলেও তার উপার্জনে পরিবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে। ফলে মোরশেদ মিয়ার অসচ্ছল পরিবারটি সচ্ছলতার স্বপ্ন বুনতে থাকে রাশিয়ায় প্রবাসী আকরামকে নিয়ে।
কিন্তু বিগত আড়াই মাস আগে আকরাম দালালের প্রলোভনে পড়ে রুশ সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হয়ে অংশ নেন ইউক্রেন যুদ্ধে। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবিও নিজের ফেসবুকে আপলোড করেছিলেন তিনি। কিন্তু ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার স্বপ্নের যাত্রা।
এদিকে আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া জানান, কোম্পানিতে ভালো বেতন না পাওয়ায় দালালদের প্রলোভনে পড়ে বিগত আড়াই মাস আগে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে আকরাম যোগ দেন রুশ সেনাবাহিনীতে। শর্ত ছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সম্মুখসারিতে থাকার। এতে পরিবারের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হলে আকরাম জানিয়েছেন তার আর ফিরে আসার উপায় নেই। এরই মধ্যে আকরাম বাবাকে জানিয়েছিলেন তার রাশিয়ার ব্যাংক একাউন্টে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে।
আকরামের মা মোবিনা বেগম জানান, যুদ্ধ চলাকালে ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হলেও গত ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আকরামের । রাশিয়ায় অবস্থানর পরিচিতজনরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) তার এক সহযোদ্ধা ফোন করে জানান, যুদ্ধে গিয়ে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর মিসাইল হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। ফোনে জানানো হয় আকরামের ইউনিটের কয়েকজন যোদ্ধা ইউক্রেন বাহিনীর মিসাইল হামলায় মারা গেছেন। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আকরামের পরিণতিও একই হয়েছে বলে তাদের ধারণা।
আকরামের মৃত্যুর খবরে তার বাড়ি আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছেলের ছবি নিয়ে মা মোবিনা বেগম বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। শোকে হতবিহবল পরিবারের অন্য সমস্যরা।
নিহতের লাশ দেশে আনতে ও ক্ষতিপূরণ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন পরিবারের সদস্যরা।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানান, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধে আশুগঞ্জের যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি অবগত হয়েছি। নিহতের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
এখন কেউ চাইলেই ইমামকে বহিষ্কার করতে পারবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

এখন কেউ চাইলেই ইমামকে বহিষ্কার করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হুসাইন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ধুলিয়া মাদরাসা মাঠে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমরা মসজিদ পরিচালনার জন্য নতুন নীতিমালা তৈরি করেছি। এখন থেকে কেউ চাইলেই কোনো ইমামকে বহিষ্কার করতে পারবে না। ইমাম নিয়োগেরও নীতিমালা হবে। ইমাম-মুয়াজ্জিনের বেতনের জন্য ২০১৫ সালের পে-স্কেল অনুযায়ী বেতনকাঠামো করা হবে।
কওমি সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে তিনি বলেন, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। আমাদেরকে দেখতে হবে কওমির সনদ ও সুবিধা যারা নিতে চান তারা নিতে কতটা প্রস্তুত। তারা নিতে চাইলে আমরা দিতে প্রস্তুত আছি। মনে রাখতে হবে মাদরাসা হলো আল্লাহর রহমত। আল্লাহর ভয় থাকলে মানুষের মর্যাদা বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মর্যাদা বাড়ানোর জন্য আমরা প্রতি বছর ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে ৬৪ জেলার সেরা ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করব।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান সরকার ৮ মাস দায়িত্ব পালনকালে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। এবার হজের খরচ প্রায় ১ লাখ টাকা কমানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি টাকায় এখন আর কেউ হজে যেতে পারবে না।
আর-রাহমান ফাউন্ডেশন ধুলিয়া ঘাটুয়া, আমিরপুর বানিয়াচংয়ের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধুলিয়া (র.)-এর সাহেবজাদা মাওলানা হাবিবুর রহমান।
অতিথি হিসেবে আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আহমদ আলী মুকিব, মাওলানা নুরুল ইসলাম খান, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদি, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক উপপরিচালক শাহ নজরুল ইসলাম, মাওলানা জুনাইদ আহমেদ কাটখালীসহ দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম।