জাতীয়
ঈদযাত্রায় সড়কে ৩১৫ দুর্ঘটনায় নিহত ৩২২

ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতে সড়কে ৩১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩২২ জন নিহত ও ৮২৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সমিতি আরও জানায়, একই সময়ে রেলপথে ২১টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত, ৮ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ৪টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত, ১ জন আহত ও ১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৩৪০টি দুর্ঘটনায় ৩৫২ জন নিহত ও ৮৩৫ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি জানান, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২৪ মার্চ থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩১৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২২ জন নিহত ৮২৬ জন আহত হয়েছেন। ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১৩৯৮ জন আহত হয়েছিলেন। আগের বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ২১.০৫ শতাংশ, প্রাণহানী ২০.৮৮ শতাংশ ও আহত ৪০.৪১ শতাংশ কমেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৩৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫১ জন নিহত ও ১৫৫ জন আহত হয়েছেন। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪২.৮৫ শতাংশ, নিহতের ৪৬.৮৯ শতাংশ এবং আহতের ১৮.৭৬ শতাংশ প্রায়।
এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৭০ জন চালক, ৪৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫০ জন পথচারী, ৬০ জন নারী, ৪০ জন শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ২০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৬ জন শিক্ষক, ৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, এক জন সাংবাদিকের পরিচয় মিলেছে।
সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৩২.২৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৬.৫৬ শতাংশ বাস, ১৪.৮৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ১৪.৪৩ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ৮.০৬ শতাংশ কার-মাইক্রো, ৭.২১ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৬.৫৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।
দুর্ঘটনার ২৭.৩০ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪২.২২ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা, ১.৫৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনে, ০.৩১ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ও ৮.৫৭ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৮.৪১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১.২৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৪.৬০ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৪৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৬৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১.৫৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে। তবে এবার দীর্ঘ ছুটির কারণে ধাপে ধাপে বাড়ি ফেরার সুযোগ হওয়ায় ঈদযাত্রা স্বস্থিদায়ক হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে সংগঠনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায়, সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, হাইওয়ে পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কার্যক্রম ছিল যাত্রীবান্ধব ও দৃশ্যমান। উল্লেখ্য, যাত্রীসাধারণ অসংগঠিত ও সচেতন না হওয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে পৌঁছেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনদের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে- দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা অবাধে চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা; সড়কে মিডিয়ামে রোড ডিভাইডার না থাকা, অন্ধবাঁকে গাছপালায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; মহাসড়কের নির্মাণ ক্রটি, যানবাহনের ক্রটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন এবং বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমলো

গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর থেকে সরকারের একক কর্তৃত্ব কমাতে গ্রামীণ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই অধ্যাদেশে সরকারের মালিকানা ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে এবং ৯০ শতাংশ রাখা হয়েছে ব্যাংকের সুবিধাভোগীদের জন্য।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এর আগে এদিন সকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এখানে গ্রামীণ ব্যাংক আগে যখন কাজ করত, একটা মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করত। সেই মূল্যবোধ হচ্ছে যারা গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধাভোগী, তাদেরই অংশগ্রহণ থাকবে ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে।
ঋণসুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা হয়েছিল এবং গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানায় তার যে দর্শন ছিল—যে ঋণ নেবে, তার হাতেই সুবিধা থাকবে। সেখান থেকে সরিয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে নিয়ে আসা হয়।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আজ যে অধ্যাদেশ সংশোধন করা হলো, তার মাধ্যমে আগে গ্রামীণ ব্যাংক ভূমিহীনদের জন্য কাজ করত, এখন বিত্তহীনদের একটা সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে।
“ইউনিয়ন পরিষদের পরিসর থেকে বের করে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পরিচালনা বোর্ডের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যারা উপকারভোগী তাদের মধ্য থেকে নয়জন নির্বাচিত হয়ে আসবেন। সেই নয়জনের মধ্য থেকে আবার তিনজন মনোনীত হবেন। তাদের মধ্যে থেকেই একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন। অধ্যাদেশে গ্রামীণ ব্যাংককে জনস্বার্থ সংস্থা হিসাবে বিবেচনা করার বিধান আনা হয়েছে।“
দেশের প্রান্তিক ও দারিদ্র্য পীড়িত জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারীদের জন্য জামানত ছাড়া ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের উদ্দেশ্যে ১৯৮৩ সালে ‘গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ’ এর মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংক গঠন করা হয়।
পরে অধ্যাদেশটি বাতিল করে ২০১৩ সালে ‘গ্রামীণ ব্যাংক আইন‘ প্রণয়ন করা হয়। সেই আইনেই এতদিন ব্যাংকটি পরিচালিত হচ্ছিল।
১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দীর্ঘ ২৮ বছর গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি এখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।
ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক ও মুহাম্মদ ইউনূসকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আমাদের সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে এবং এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমি সব সময়ই পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পক্ষে, বিশেষ করে সার্ক কাঠামোর মধ্যে। দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধন জোরদারে যুব ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময় আরও বাড়ানো উচিত। আমরা অনেকদিন ধরে একে অপরকে হারিয়ে ফেলেছি, সম্পর্ক স্থবির ছিল। সেই বাধাগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে ৭৯তম জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এবং ডিসেম্বর মাসে কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছিল, যা দ্বিপক্ষীয় অগ্রগতিতে সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক মঞ্চ যেমন সার্ক, ওআইসি ও ডি-৮ এ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।
এ সময় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, অতীতের কিছু সমস্যা থাকলেও বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের উচিত পারস্পরিক সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানো। আমাদের নিজ নিজ বাজারে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমাদের কাজে লাগানো উচিত। প্রতিবারই সুযোগ হাতছাড়া করলে চলবে না।
তিনি বলেন, দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত ব্যবসায়িক পর্যায়ে যোগাযোগ এবং সব পর্যায়ে সফর বিনিময় প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন বাংলাদেশ সফর (এপ্রিলের শেষে) দুই দেশের সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফসহ অন্যরা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানের এফপিসিসিআইর একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠকে উত্থাপন করা হয়েছে যেসব বিষয়

বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠকে আটকেপড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা দেওয়া, একাত্তরে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটিকে ক্ষমা চাইওয়া সহ ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পদ্মায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনার প্ল্যাটফর্ম ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলকে একাত্তরের জন্য ক্ষমার চাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ কথা জানান পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বৈঠকে আমি পাকিস্তানের সঙ্গে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। যেমন- আটকেপড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা দেওয়া, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাঠানো বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া।
প্রায় ১৫ বছর পর আজ ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ দেশটির পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন, আর ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন নেতৃত্ব দেন। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের আলোচনা চলে।
অমীমাংসিত বিষয়ে বাংলাদেশের উত্থাপনে পাকিস্তানের উত্তর জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, তারা বলেছে এ বিষয়টি নিয়ে তারা রিমেইন এনগেজ থাকবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে সামনের দিনে। পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বৈঠকটি নিয়মিত হওয়ার কথা। কাজেই ২০১০ সালের পর যে বৈঠকটি হলো, সেটি নিয়ে আমরা আশা করি না যে একদিনে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের দিক থেকে এ বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছে।
একাত্তরে ক্ষমার বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা আমাদের দিক থেকে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি এবং কূটনীতির কাজ হচ্ছে, আমাদের অবস্থান তুলে ধরে সেটা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এখানে বিষয়টি এমন হয় যে আমি বিষয়টি তোলার পরে তারা আলোচনার মধ্যে রাখতে চাননি। তারা বলেছে, এ নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা অব্যাহত রাখতে চান। কাজেই এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমি ভবিষ্যতে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেব, এটা হচ্ছে আমার অবস্থান।
বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয় তোলার কারণ তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, আমরা দুটো পয়েন্ট মাথায় রেখে এ বিষয়টি উত্থাপন করেছি। একটি হচ্ছে, দেড় দশক পর আমরা এটা নিয়ে বসলাম। কাজেই পুনরায় এই বিষয়টি তোলা উচিত। এটা তোলা উচিত, কারণ তুলেছি এটার ন্যায্যতা…। এ ছাড়া, আমরা পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলকে বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, সাম্প্রতিকালে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার কারণে।
তিনি বলেন, সেই দিক থেকে সম্পর্ক একটি শক্তি ভিত্তিতে দাঁড় করাতে গেলে আমাদের এই অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে মীমাংসায় আসার প্রয়োজন এবং এটা বলেছি। আমরা মনে করি, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের এখন যে সম্পর্ক, এই সময়টাতে এই বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য উপযুক্ত সময়।
ক্ষতিপূরণ
পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের পরিসংখ্যান তুলে ধরে জসীম উদ্দিন জানান, বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক ডেপুটি চেয়ারম্যান একটি হিসাব অনুযায়ী, ৪ হাজার মিলিয়ন ইউএস ডলার পাওনা। আরেকটি হিসাবে বলা হয়েছে, ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন; এটি একটি। আমরা আজকের আলোচনায় এই ফিগারটি উল্লেখ করেছি। আরেকটি হচ্ছে, ১৯৭০ সালের নভেম্বরে যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল, সেখানে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্র ও এজেন্সি ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সমপরিমাণ অর্থ দান করেছিল, সেটার হিস্যা আমরা চেয়েছি।
হিস্যার পাওনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্ধিত হার যুক্ত করছে না কেন, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটি আরও বিস্তারিত আলোচনা করার বিষয়। আজকে আমরা তাদের কাছে যেটা শুনতে চেয়েছি, আমরা এ বিষয়ে এনগেজ থাকব। এই বিষয়ে গত দেড় দশকে কোনো আলোচনা হয়নি। কাজেই আমাদের লক্ষ্য ছিল বিষয়টি তাদের নজরে আনা। আমাদের প্রত্যাশা, সামনে যেসব এনগেজমেন্ট হবে, বৈঠক হবে, এ বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা করার সুযোগ পাব।
বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানি ৩ লাখের বেশি
একাত্তরে পর বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৪১ পাকিস্তানি নাগরিক দেশে ফিরে গেছে। তবে এখনও বাংলাদেশে আটকে আছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ১৪৭ পাকিস্তানি নাগরিক, যাদের বসবাস বাংলাদেশের ১৪ জেলায় ৭৯টি ক্যাম্পে।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। দেড় দশক আগে আমরা বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা বলেছি। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৪১ পাকিস্তানি নাগরিক সেখানে ফিরে গেছেন। আর বাকি আছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ১৪৭, যারা বাংলাদেশের ১৪ জেলায় ৭৯টি ক্যাম্পে বসবাস করছে।
বিদ্যমান সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ
দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিবের মধ্যে হওয়া বৈঠকে উভয়পক্ষ বিদ্যমান সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে একমত হয়েছে। এ বিষয়ে জসীম উদ্দিন বলেন, আজকের বৈঠকে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একমত হয়েছে। আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছি।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছি। পাকিস্তানের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে বাজারে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি, বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং শুল্ক বাধা দূরীকরণ ও বাংলাদেশে পাকিস্তানের বিনিয়োগ বৃদ্ধিকরণের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করার ওপর আমি গুরুত্বারোপ করি।
তিনি বলেন, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্যও আলোচনা হয়েছে, যাতে প্রযুক্তি, উন্নত প্রজাতি এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। এ ছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও বন্যা প্রতিরোধে দুই দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জসীম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পরিবহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে দুদেশের মধ্যে সরাসরি শিপিং রুট চালু হয়েছে এবং সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করার মাধ্যমে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়টিও আলোচনা করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, শিগগিরই দুদেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু সম্ভব হবে। পাকিস্তানের আরেকটি এয়ারলাইন্স অনুমতি চেয়েছে, সেটা প্রক্রিয়াধীন।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, আমরা উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন সুযোগ সন্ধানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি এবং এ সব ক্ষেত্রে পারস্পরিক শিক্ষা বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছি। পাশাপাশি, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথাও আলোচনায় এসেছে। দুই দেশের শিল্পী, চিত্রশিল্পী, সংগীতশিল্পী, লেখক ও শিক্ষাবিদদের সফরের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উভয়পক্ষ থেকেই উৎসাহিত করা হয়েছে।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে সেগুলো তুলে ধরেন জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সার্কের আওতায় সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে এর পুনরুজ্জীবনের আহ্বান জানিয়েছি, যাতে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া যায়। আমরা ওআইসির সনদ বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি এবং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে কাজ করার ব্যাপারে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় দুই দেশই গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছে। আমি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মিয়ানমারে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের সমর্থন কামনা করি।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা সম্পর্কে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, প্রতিরক্ষা নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা দুই দেশে প্রশিক্ষণে যান-আসেন। এই যে যোগাযোগ, এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গণহত্যার জন্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় রাজি পাকিস্তান

স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের সম্পদ ফেরত ও গণহত্যার জন্য সাধারণ ক্ষমা চাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান। ঢাকা-ইসলামাবাদ বিদ্যমান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দুই দেশই একমত। এমনটাই জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের সম্পদ হিসেবে ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ফেরত চেয়েছে সরকার। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে ইসলামাবাদ। বাংলাদেশে এখনও তিন লাখ ২৫ হাজার আটকে পড়া পাকিস্তানি রয়েছে। তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে দুই দেশই অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। খুব শিগগিরই পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে। জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রেখেই দেশটির সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছি। তবে তাদের দিকে ঝোঁকার কোনও বিষয় নেই।
এ সময় ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ বলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়েছে। ঢাকায় এসে আমি খুশি।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন এবং পাকিস্তানের হয়ে ঢাকা সফররত দেশটির পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ অংশ নেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব

বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা জানান।
আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকটি শুরু হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের পক্ষে এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ তার দেশের নেতৃত্ব দেন।
পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের আলোচনা শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বালুচ।
বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে বিস্তারিত এখনো কিছুই জানা না গেলেও, দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া আর রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষের জন্য বৈঠকটি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। কেননা এক যুগের বেশি সময় পর দুই দেশের মধ্যে ষষ্ঠ পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এটি। এর আগে ২০১০ সালে সর্বশেষ ইসলামাবাদে বৈঠকে বসেছিল দুই দেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব।
সূচি অনুযায়ী, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর আমনা বালুচের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ঢাকায় আসেন। এ সময় তাকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগ) ইশরাত জাহান।
এদিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার চলতি মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করবেন বলে জানা গেছে। ২০১২ সালের পর বাংলাদেশে এটিই হবে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।
কাফি