জাতীয়
বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এই জোটের লক্ষ্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে আঞ্চলিক সংযোগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন বাড়ানো।
বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা (সরকার প্রধানরা) সর্বসম্মতিক্রমে ব্যাংকক ঘোষণাপত্র এবং বিমসটেক ব্যাংকক ভিশন গ্রহণ করেছেন, যা একটি কৌশলগত রোডম্যাপ। এটি সংগঠনটিকে টেকসই উন্নয়ন এবং গভীর অর্থনৈতিক একীকরণের দিকে পরিচালিত করবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বিমসটেকের জন্য বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি এবং অগ্রাধিকারগুলো তুলে ধরেন। তার সরকারের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি আশ্বস্ত করেন, বাংলাদেশ তার সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অবিচল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস মুক্ত বাজার এলাকা চুক্তি এফটিএ-সংক্রান্ত বিমসটেক ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি বাস্তবায়নের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং পরিবহন সংযোগ সম্পর্কিত বিমসটেক মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করার জন্য বিমসটেককে আরও দৃশ্যমান এবং সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের ভূমিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সভাপতিত্ব গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কর্মমুখী বিমসটেকের প্রতি স্বীকৃতির বিবৃতি দেন।
এর আগে, সকালে প্রধান উপদেষ্টা থাই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রাতঃরাশের বৈঠক করেন।
১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিমসটেক আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বিশেষ করে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, পরিবহন, জ্বালানি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

জাতীয়
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে চলছে বিটিভি

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে ঢুকতেই চোখে পড়বে নাটক বা বিজ্ঞাপন। শনিবার (৩১ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
মূলত নতুন অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার উপলক্ষে পরীক্ষামূলকভাবে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এটি করা হচ্ছে।
তথ্য অধিদপ্তর গত বৃহস্পতিবার এক তথ্য বিবরণীতে জানিয়েছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হবে আগামী ২ জুন সোমবার বিকেল ৪টায়।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের আগে ধারণ করা বাজেট বক্তব্য ওই দিন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতার থেকে প্রচারিত হবে।
তথ্য বিবরণী অনুযায়ী, জাতীয় বাজেটের ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করার জন্য সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনগুলোকে বিটিভি থেকে ফিড গ্রহণ করে অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার করতে বলা হয়েছে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাজেটের বই দেওয়া হবে এবার সচিবালয়ে অবস্থিত তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) থেকে।
উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন দেওয়ার পর ২ জুন বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা। উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন দেওয়ার পর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি হবে।
প্রতিবছর বাজেট দেওয়া হতো জুনের প্রথম দিকে যেকোনো বৃহস্পতিবার। আগামী ৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই এবার বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা।
জাতীয়
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা

জাপানে চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (৩১ মে) দিনগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এর আগে টোকিওর স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ড. ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইটটি নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
প্রধান উপদেষ্টা জাপান সফরকালে প্রায় ২০টি কর্মসূচিতে অংশ নেন। যার মধ্যে ছিল জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। এ সফরে ১০৬ কোটি ডলারের জাপানি ঋণের প্রতিশ্রুতি ছাড়াও ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
নিক্কেই ফোরামের ৩০তম ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দিতে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে জাপানের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন ড. ইউনূস। পর দিন বুধবার (২৮ মে) স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫ মিনিটে টোকিও পৌঁছান তিনি।
জাতীয়
দেশে আবারও কমল জ্বালানি তেলের দাম

দেশের বাজারে আবারও জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। জুন মাসের জন্য প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ২ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেনের দাম লিটারে ৩ টাকা কমানো হয়েছে। এই নতুন দাম আগামীকাল, ১ জুন থেকে কার্যকর হবে।
শনিবার (৩১ মে) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন দরের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে:
- প্রতি লিটার ডিজেল ১০৪ টাকা থেকে কমিয়ে ১০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
- পেট্রলের দাম প্রতি লিটার ১২১ টাকা থেকে কমিয়ে ১১৮ টাকা করা হয়েছে।
- অকটেনের দাম ১২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১২২ টাকা করা হয়েছে।
- কেরোসিনের নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৪ টাকা।
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি শুরু করেছে সরকার। সে অনুযায়ী প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়।
এর আগে মে মাসে জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১ টাকা কমেছিল। আর এপ্রিলে পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল।
জাতীয়
গরুর বুদ্ধি অনেক মানুষের চেয়ে বেশি: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মন্তব্য করেছেন গরুর যে বুদ্ধি আছে, তা অনেক মানুষের মধ্যেও নেই। তিনি এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন যে, গরু-ছাগল তামাক পাতা খায় না, অথচ অনেক মানুষ এর ক্ষতিকর প্রভাব জেনেও তামাক সেবন করে।
শনিবার (৩১ মে) বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “আমাদের দেশে পুরুষের সিগারেট খাওয়াকে স্বাভাবিক করে ফেলা হয়েছে। বড়দের সামনে এটাকে বেয়াদবি ধরা হয়। বর্তমানে ই-সিগারেটটা তো বৈধ করে ফেলা হয়েছে। এমনভাবে উপস্থাপন করে, যেন বাংলাদেশ সরকার তামাক কোম্পানির টাকায় চলে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটা ভুল তথ্য। আমাদের সরকার জনগণের টাকায় চলে।”
এসময় তরুণদের প্রশংসা করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, “যেই তরুণরা এত বড় সরকার হটিয়েছে তাদের টার্গেট করে তামাক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ব্যবসা করবে, এটা হবে না। আমি আশা করি, আমাদের তরুণেরা তামাক কোম্পানির এই ধ্বংসযজ্ঞ রুখে দেবে।”
তিনি আরও বলেন, এই তামাক কোম্পানিগুলো তামাক চাষের জন্য নদীর পাড় বেছে নেয়, যার ফলে মাছের প্রজনন কমে যাচ্ছে। গরুপালনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং মানুষের প্রজননও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জাতীয়
বাংলাদেশের আকাশে চক্কর দিলো ভারতীয় ৪ ড্রোন

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে ফের বাংলাদেশের আকাশসীমায় ভারতীয় ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। শুক্রবার (৩০ মে) রাত ৮টার দিকে ওই সীমান্তে বাংলাদেশের ৫০০ মিটার অভ্যন্তরে চারটি ড্রোন উড়তে দেখা যায়।
ওই সীমান্তের দায়িত্বে থাকা জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুর রহমান এক ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে বিজিবির আর কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, ভারতের আসাম রাজ্যের কাকড়িপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের আওতাধীন বিএসএফ সদস্যরা শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চারটি ড্রোন পাঠায়। রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা গ্রামের আকাশে এসব ড্রোন প্রায় আধঘণ্টা ধরে চক্কর দেয়। বিএসএফ নজরদারি করতে এবং বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে এসব ড্রোন ওড়াচ্ছে। এর আগে গত ২৭ মে একই সীমান্তে বাংলাদেশের আকাশসীমায় ড্রোন ওড়ায় বিএসএফ।
বিজিবি সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত সোয়া ৮টা থেকে পৌনে ৯টা পর্যন্ত ৩০ মিনিট ধরে সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার ১০৬৭ (১ এস)-এর কাছে বাংলাদেশের ৫০০ মিটার অভ্যন্তরে চারটি ভারতীয় ড্রোন চক্কর দেয়। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা অস্বীকার করে।
সূত্র আরও জানায়, বিএসএফ ছাড়া এসব ড্রোন অন্য কারও ওড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ তারা সীমান্তের ২০০ গজ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। তাদের নজর এড়িয়ে সাধারণ মানুষের এসব ড্রোন ওড়ানোর সুযোগ নেই। কিন্তু বিএসএফ দায় স্বীকার করে না।
রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া বলেন, ২৭ মে বড়াইবাড়ী সীমান্তের ১০৬৭ মেইন পিলার দিয়ে আসামের ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বিএসএফ কর্তৃক পুশ ইন করার পর থেকে ভারত বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে নজরদারি করার চেষ্টা করছে। সেদিনও তারা বাংলাদেশের সীমানায় ড্রোন পাঠিয়েছিল। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশের বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা গ্রামের আকাশে ভারতের ৪-৫টি ড্রোন উড়ছিল। ড্রোনগুলো বড়াইবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের কাছেও এসেছিল।
‘ভারতের এমন আচরণের নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত বৈরী আচরণ করছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এর প্রতিকার চাই’, প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন এই ইউপি সদস্য।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, বৈধ অনুমতি ছাড়া কোনও রাষ্ট্র অন্য কোনও রাষ্ট্রের জল, স্থল কিংবা আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সীমান্তে অস্ত্র বা প্রযুক্তি ব্যবহারে জাতিসংঘের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ভারত বাংলাদেশের আকাশসীমায় এভাবে ড্রোন ওড়াতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ভারতের এসব অপতৎপরতা বন্ধে বাংলাদেশ কূটনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি অকাট্য প্রমাণ সংগ্রহ করে প্রয়োজনে জাতিসংঘে যেতে পারে।