জাতীয়
হাইনান থেকে বেইজিংয়ের পথে প্রধান উপদেষ্টা

চীনের হাইনান প্রদেশ থেকে রাজধানী বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
চীনে চারদিনের সরকারি সফরের প্রথম দিনে তিনি বোআও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দেন এবং অন্তত আটটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। যার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

জাতীয়
প্রথমবার শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করলো বিমান

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে প্রথমবারের মতো একটি প্লেন অবতরণ করেছে। টার্মিনাল-৩ ব্যবহার করা প্রথম প্লেনটি হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার।
বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সোমবার (৪ আগস্ট) বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-এ প্যাসেঞ্জার বোর্ডিং ব্রিজ (পিবিবি) এবং ভিজ্যুয়াল ডকিং গাইডেন্স সিস্টেম (ভিডিজিএস) ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে নতুন এ টার্মিনালে প্রথম অবতরণের স্বীকৃতি পেয়েছে। সোমবার সকালে প্লেনটি রোম থেকে ফিরে তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানায়, ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক হোসেন ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন এবং ফার্স্ট অফিসার তাহসিন তাকে সহায়তা করেন। এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খান এ অপারেশনাল মাইলফলক প্রত্যক্ষ করার জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
যাত্রী নামানোর পর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ডিজিএস, বোর্ডিং ব্রিজে বাহ্যিক বিদ্যুৎ-সংযোগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়।
টার্মিনাল ৩-এর অপারেশনাল প্রস্তুতি এবং বর্ধিত পরিষেবা সক্ষমতার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এর আগে ২০১৭ সালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। এরপর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
৩০ লাখ বর্গফুট জায়গায় তিনতলা বিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির আয়তন হবে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এবং লম্বা ৭০০ মিটার ও চওড়া ২০০ মিটার। এ ভবনটির নকশা করেছেন রোহানি বাহারিন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সিপিজি কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুরের স্থপতি।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ আজ, ঘোষণা করতে পারেন নির্বাচনের তারিখ

গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হলো আজ, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট)। ঠিক এক বছর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন ঘটে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের। সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষিত হতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারের একাধিক সূত্র।
বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন ড. ইউনূস। পরে রাত ৮টার দিকে জাতির উদ্দেশে তার ভাষণ প্রচারিত হতে পারে। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের কার্যক্রম, জুলাই গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়া, চলমান রাজনৈতিক সংস্কার এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে বলে জানা গেছে।
সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ভাষণে ২০২৬ সালের কোন মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট ঘোষণা আসতে পারে। এরপর নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানানো হতে পারে বলেও আভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভাষণটি শুধু নির্বাচন নয়, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করবে। এতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, সংলাপের অগ্রগতি ও নিরাপত্তা পরিকল্পনার বিষয়গুলো উঠে আসবে।
এদিকে প্রেস উইং থেকেও ভাষণ প্রচারের সম্ভাব্য সময় জানিয়ে বলা হয়েছে, রাত ৮টার আগে-পরে প্রচারিত হতে পারে। চূড়ান্ত সময় মঙ্গলবার সকালেই নির্ধারিত হবে।
ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সম্ভাব্য তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সময়সূচি এলে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তফসিল ঘোষণা করব। কমিশনের সকল বিভাগ এখন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই কাজ করছে।
এছাড়া আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। অক্টোবর ও নভেম্বরজুড়ে চলবে এ প্রশিক্ষণ।
এদিকে নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫ আগস্ট থেকেই মাঠে সক্রিয় হয়েছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনের সময় প্রায় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে এবং তাদের দেওয়া হয়েছে বিচারিক ক্ষমতা।
গত জুনে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়। রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও ভোট গ্রহণ সম্ভব—তবে তা বিচার ও সংস্কারে সন্তোষজনক অগ্রগতির ওপর নির্ভরশীল বলে জানানো হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ড. ইউনূস জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।
জাতীয়
গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপনে প্রস্তুত মঞ্চ, নিরাপত্তা জোরদার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা’-এর মূল মঞ্চ, সাউন্ড ও লাইটিং সিস্টেমের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থল এবং আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সোমবার রাত থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। উচ্চ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা ও গোয়েন্দা নজরদারি শুরু হয়েছে। তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ইবনে মিজান এবং র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক হাওলাদার জানান, ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।
এই আয়োজনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ড্রোন শো এবং ঘোষণাপত্র পাঠের ব্যবস্থা রয়েছে। বেলা ১১টা থেকে শুরু হবে বিভিন্ন শিল্পীগোষ্ঠীর সংগীত পরিবেশনা। বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন, যা বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় থাকছে বিশেষ ড্রোন শো এবং রাত ৮টায় থাকবে ব্যান্ডদলের পরিবেশনা।
এদিকে অনুষ্ঠানস্থলের সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে ওয়াটারপ্রুফ সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জনসমাগমের কারণে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
জাতীয়
ঐতিহাসিক ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা আজ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দলিল ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করা হবে আজ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। অভ্যুত্থানের শরিক রাজনৈতিক দল ও পক্ষগুলো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে। অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবে।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫৮ জন সমন্বয়ককে দাওয়াত না দেওয়ায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।
সোমবার (৪ আগস্ট) দিনগত রাত ২টায় নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এদিকে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠের দিন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে উদযাপিত হবে ‘৩৬ জুলাই’। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এদিন থাকছে নানান অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
অনুষ্ঠানসূচি নিয়ে এরই মধ্যে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে দিনব্যাপী আয়োজনের বিস্তারিত জানানো হয়েছে। ঐতিহাসিক এই দিবস উদযাপনে দেশের শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, বয়োজ্যেষ্ঠ নারী- পুরুষ সবাইকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই প্রক্লেমেশন’ বা ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণার উদ্যোগ নেয় তৎকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে শিগগির সরকার তা ঘোষণা করবে, সরকারের এমন আশ্বাসে সেদিন জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেননি শিক্ষার্থীরা।
এরপর অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়ন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সংলাপে উঠে আসা বিষয়গুলো নিয়ে খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়। গত ২৮ জুলাই রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সনদের খসড়া পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
পরে ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়।
জাতীয়
বিদেশে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে গেলে লজ্জা লাগে: আসিফ নজরুল

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গেলে এমনভাবে তাকায় যে, লজ্জা লাগে।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. আসিফ নজরুল আক্ষেপ করে বলেন, আমি যখন আমার পাসপোর্ট নিয়ে যাই, আপনাদের (কূটনীতিক) তো সমস্যা হয় না। আমার এত লজ্জা লাগে এত রাগ লাগে। আমার তো এখন একটা স্পেশাল পাসপোর্ট আছে। কিছু দিন পর আবার সবুজ পাসপোর্ট হবে। আমেরিকায় ছয়বার গিয়েছি। তারপরেও ভিসা দেয় না। দিনের পর দিন ঘুরায়ে ঘুরায়ে ভিসা দেয়। অনেক দেশ আপনার, এয়ারপোর্টে যাওয়ার পর এমনভাবে তাকায় মনে হয় মরে যাই। হংকং দুবাইয়ে পাসপোর্ট দেখছে। আর এমন একটা লুক দেয়। এত প্রশ্ন করে, পেছনে লোকজন ক্ষেপতে থাকে, মনে হয় মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছি। কি দেশ বানিয়েছি আমরা যে, অন্য দেশ আমাদের নিচু চোখে দেখে।
শেখ হাসিনাকে নিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের ধারণাই বুঝতেন না। তার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও তার মন্ত্রীদের ক্রীতদাস ভাবত ভারত। হাসিনা এ দেশের পররাষ্ট্রনীতিকে নতজানু করে রেখেছিলেন। লুটপাট, নির্যাতন, গুম, খুন, আয়নাঘরের বীভৎসতার মাধ্যমে তিনি এ দেশের মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, হাসিনা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিথ্যা বলে পুরো জাতির মাঝে মিথ্যাবাদী, জোচ্চোর প্রজন্ম তৈরি করেছেন। তার ওপর সাইকোলজিক্যাল বা নিউরোলজিক্যাল গবেষণা করা উচিত।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে প্রদান এবং ২০২৪ সালের ডামি ও প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ভুতুড়ে নির্বাচন আর কখনও হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা শতাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের আখড়া বানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও জুলাই আন্দোলনে নেমেছিলেন ছাত্র-জনতা। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার মূলোৎপাটনে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় জীবনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষের সাহস, দৃঢ়তা ও একতার বিজয় হিসেবে চিহ্নিত।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) নজরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জনকূটনীতি) শাহ আসিফ রহমান প্রমুখ।