জাতীয়
ইনভেস্টমেন্ট সামিটে অংশ নেবে চীন-ভারতসহ অর্ধশতাধিক দেশ

বৈশ্বিক বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে বাংলাদেশে। আগামী ৭ থেকে ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডার) আয়োজনে রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকায় ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ এর মাধ্যমে এ সুযোগ তৈরি হবে।
চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সিঙ্গাপুর ও ভারতসহ বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি বিনিয়োগকারী এ সামিটে অংশ নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে সাড়ে ৫ শতাধিক বিদেশি বিনিয়োগকারী রয়েছেন।
রবিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমের কাছে সামিটের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন বিডার নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
বিডার নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরা, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কার প্রদর্শন করা এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সংযোগ তৈরি করায় সামিটের মূল লক্ষ্য।
সামিটে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় করপোরেট ব্যক্তিত্বরা অংশ নেবেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন- জারা গ্রুপের সিইও অস্কার গার্সিয়া মেসেইরাস, ডিপি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বিন সুলাইয়েম, ব্রিটিশ ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন, স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট কিয়ংসু লি, গিওর্দানো-র সিইও জুনসিওক হান, এক্সেলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট স্টিভেন কোবোস, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের উবারের পাবলিক পলিসি প্রধান মাইক অর্গিল এবং মেটার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর সারিম আজিজ।
এছাড়া বি ক্যাপিটাল, গবি, কনজাংশন, মারুবেনি এবং জিএফ আরের মতো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো স্টার্ট-আপ বিনিয়োগ ও ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসারে কাজ করবে।
সামিটের অংশ হিসেবে, ৭ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়ার ২৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম, মিরসরাই ও কোরিয়ান ইপিজেড পরিদর্শন করবেন। একই দিনে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্টার্ট-আপ সংযোগ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। ৮ এপ্রিল, বিনিয়োগকারীরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। দিন শেষে একটি বিশেষ নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া আগামী ৯ এপ্রিল সামিটের মূল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এটি উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত, নীতিনির্ধারক এবং শীর্ষ ব্যবসায়ী ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। এদিন তরুণ উদ্যোক্তা এক্সপো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি আয়োজিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে ব্রেকআউট সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাংলাদেশের ঐতিহ্য তুলে ধরতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজন করা হবে।
১০ এপ্রিল সামিটে বিভিন্ন ব্রেকআউট সেশন অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে ডিজিটাল অর্থনীতি (সিটি এনএ ও ইউএনডিপি), টেক্সটাইল (এইচএসবিসি ও বিজিএমইএ), কৃষি ও কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণ (ডাচ দূতাবাস ও এলসিপি) এবং স্বাস্থ্যসেবা (ইন্সপিরা, ইবিএল ও সাজিদা ফাউন্ডেশন)-এর ওপর আলোচনা হবে। এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের জন্য ম্যাচমেকিং সেশন এবং সেরা বিনিয়োগ চর্চা নিয়ে রাউন্ড-টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সামিটের অংশ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ মিটিং রুম বরাদ্দ থাকবে, যার মধ্যে বোর্ডরুম, লাউঞ্জ, মধুমতি ও তুরাগ কনফারেন্স হল এবং হোটেলের দ্বিতীয় তলায় নেটওয়ার্কিং স্পেস অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সামিটের পার্টনার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে— ইউএনডিপি, এফসিডিও, গ্রামীণফোন, বিশ্বব্যাংক ও ফিকি, জারা যৌথভাবে এফডিআই বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরি বলেন, ‘অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী এখনো বাংলাদেশের প্রকৃত বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন নন। এই সামিটের মাধ্যমে আমরা তাদের বাংলাদেশের সম্ভাবনা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগবান্ধব নীতি এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিত করতে চাই।’
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫ দেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বৈশ্বিক পর্যায়ে তুলে ধরার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন হতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন আশিক চৌধুরী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
ঈদে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত ৫৫ হাজার আনসার

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত, দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
পার্বত্য অঞ্চলে ১৬টি আনসার ব্যাটালিয়নসহ সারা দেশে মোট ৪২টি ব্যাটালিয়নের প্রতিটিতে ১ প্লাটুন করে ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তৎপর থাকবে ৫৫ হাজার অঙ্গীভূত আনসার। প্রস্তুত রাখা হয়েছে এজিবি সদস্যদের।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকউজ্জামান জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। সম্প্রতি, বাহিনীটি দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় করতে তাদের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করা এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে ১৬টি আনসার ব্যাটালিয়নসহ সারাদেশে মোট ৪২টি ব্যাটালিয়নের প্রতিটিতে ১ প্লাটুন করে ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ বাহিনী আনসার-ভিডিপি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে দেশের প্রায় ৫ হাজার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৫৫ হাজার অঙ্গীভূত আনসার সদস্যকে অধিকতর সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নদীপথে যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৬ মার্চ থেকে ঈদ পরবর্তী দুই দিন পর্যন্ত প্রতিটি লঞ্চে চারজন সাধারণ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, ২৫ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত রেলপথে যাত্রীদের নিরাপত্তায় ৬৫০ জন সাধারণ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিশেষায়িত ইউনিট আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি) সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভিডিপি সদস্যদের সক্রিয় রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে এমন কোনো কর্মকাণ্ড সংঘটিত হলে তারা দ্রুততম সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে নামবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা যে ভয়াবহ লুটপাট কায়েম করেছিল; আপনারা সেটার ভুক্তভোগী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় এক লণ্ডভণ্ড অর্থনীতি রেখে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আজ (মঙ্গলবার) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অপরাপর সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করছে। এ সরকারের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯.৩২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগামী জুন মাসের মধ্যে এটি ৮ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশা করছি।
‘দেশের ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিতে স্বস্তি এনে দিয়েছে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্স ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড গড়েছে, প্রায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আড়াই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আমাদের দেশের অর্থনীতি গড়ার বীর সৈনিক। তাদের জন্য প্রক্রিয়াগত যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলো সহজ করে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তারা যেন ভোগান্তির শিকার না হন, দূতাবাস যেন ঠিকমতো কাজ করে, এটি নিশ্চিত করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামী নির্বাচনে যেন তাদের ভোটাধিকার দিতে পারি সেজন্য কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, পলাতক সরকারের আমলে চর দখলের মতো দেশের ব্যাংকগুলো দখল করে নেওয়া হয়েছিল। আমানতকারীর টাকাকে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত টাকায় রূপান্তরিত করে ফেলেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম কাজ ছিল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আস্থা ফিরিয়ে আনা, আমানতকারীর স্বার্থ রক্ষা করে নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, হিসাবপত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা স্থাপন করা। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেছে। এর ফলে অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জনগুলোর মধ্যে এটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত সরকারের লুটপাটের মহোৎসবে গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, এটা আমরা জানি। কত রকমভাবে পাচার হয়েছে তাও জানার বিষয়। অভিনব একেকটা পদ্ধতি ছিল। পাচারের একটা পদ্ধতি সবাইকে হতভম্ব করে দিয়েছে। এই পাচার হয়েছে – বিদেশে অধ্যয়নরত সন্তানের কাছে টাকা পাঠানোর নামে। তিনি সন্তানের লেখাপড়ার জন্য এক সেমিস্টারের অর্থাৎ তিন মাসের খরচ বাবদ অফিসিয়াল ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠিয়েছেন তিন কোটি ৩৩ লক্ষ ডলার অর্থাৎ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। পাচারের এর চাইতে বেশি তাক লাগানো পন্থা আর কী আছে তার কোনো সীমা আছে বলে আমার মনে হয় না। আইন, নিয়ম, নীতির জায়গায় যখন হরিলুট প্রতিষ্ঠিত হয় তখন এমন সবকিছুই সম্ভব। এই অর্থ পাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
দেশবাসীকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মাহে রমজানে সিয়াম সাধনা উপলক্ষে সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানান।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি ঈদের আগাম শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান।
এসময় রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এ বছরের রমজানে দ্রব্যমূল্য আগের তুলনায় কমেছে, জনগণ স্বস্তি পেয়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণে এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।
ড. ইউনূস বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোর ব্যবস্থা নিয়েছে। রমজান ও ঈদে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জিনিসপত্রের দামের লাগাম টেনে ধরা, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ রমজানে যাতে কোনো পণ্যের দাম বেড়ে না যায় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ যেন বিঘ্নিত না হয় সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ: ড. দিলারা চৌধুরী

তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। তুলসী গ্যাবার্ড বলেছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু কোথায় নির্যাতিত হচ্ছে, কে নির্যাতিত হচ্ছে তিনি তা বলেননি। তাকে সেটি স্পষ্ট করতে হবে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণশক্তি সভা কর্তৃক আয়োজিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও তুলসি গ্যাবার্ড শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্রের শিকার। বাংলাদেশের পিঠ এখন দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এজন্য বাংলাদেশকে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ভারত মনে করে চীনকে কব্জা করতে হলে আগে বাংলাদেশকে কব্জা করতে হবে। কারণ বাংলাদেশকে কব্জা করতে না পারলে ভারত কখনো চীনকে কব্জা করতে পারবে না। অপরদিকে ভারতের যেই বৃহৎ উদ্দেশ্য ইন্ডিয়ান ওশান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না। সেজন্য ভারত এদেশে এমন একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেই সরকার ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়ক সরকার হবে। এবং সবচেয়ে বেশি ভারতের স্বার্থে কাজ করতে পেরেছে আওয়ামী সরকার। পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা, এদেশের উপর দিয়ে ভারতকে করিডোর দিয়েছে। এই করিডোর ভারতের আগারতলা থেকে আমাদের চট্রগ্রাম পর্যন্ত রেল সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আগারতলা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত কাজ শেষও হয়ে গেছে। হাসিনা পালিয়ে না গেলে এতোদিনে চট্রগ্রাম পর্যন্ত রেল সংযোগের কাজ শেষ হতো এবং ভারত নিজেদের ভূখন্ডের মতো করে আমাদের ভূমি ব্যবহার করতো। এটি মূলত ভারতের সেভেন সিস্টার্স রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে।
আমাদের গামের্ন্টস ও অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির উপর ভারতের নজর রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সেক্টর ভারত দখল করে নিতে চায়। আগামীতে ভারতের সহায়ক সরকার যাতে এদেশে প্রতিষ্ঠা না হয় সেদিকে সকল রাজনৈতিক দল ও দেশের সচেতন নাগরিকদের সজাগ থাকতে তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন গণশক্তি সভার সভাপতি সাংবাদিক সাদেক রহমান। প্রফেসর ডক্টর দেওয়ান সাজ্জাদের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন সাংবাদিক, কলামিস্ট হাবিবুর রহমান পলাশ।
হাবিবুর রহমান পলাশ তার প্রবন্ধে বলেন, তুলসী গ্যাবার্ড এর এই বক্তব্য অনেকটা প্রিয়া সাহার কথার পুনরাবৃত্তি। যিনি যুক্তরাষ্ট্র সফরে ২০১৯ সালে ট্রাম্পের হাত ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে বলে অপপ্রচার করেন। এবং ট্রাম্পকে সহায়তা করার অনুরোধ জানান। প্রিয়া সাহা আর তুলসী গ্যাবার্ড এর বক্তব্যে যে যুগসূত্র আছে তা বলা বাহুল্য। তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়নি। এটি একটি গোটা দেশকে অন্যায়ভাবে, ভুলভাবে উপস্থাপন করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর বিশিষ্ট আইনজীবী ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে বলা হয়। এই স্বাধীনতা মূলত আওয়ামী লীগের হাত থেকে নয় ভারতের হাত থেকে অর্জিত হয়েছে। ভারত তাদের সহায়ক সরকার হিসেবে আওয়ামী লীগকে চিরস্থায়ী সরকার করার ষড়যন্ত্র করেছে। এবং সেই ষড়যন্ত্রে এখনো লিপ্ত রয়েছে। তারা এদেশে আওয়ামী লীগের পুনবার্সনে নানামূখী চক্রান্তের সাথে জড়িত। বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হাত থেকে ভূখন্ডের স্বাধীনতা লাভ করে আর ২০২৪ সালে ভারতের হাত থেকে আধিপাত্যবাদ মুক্তের স্বাধীনতা লাভ করেছে। তবে পাকিস্তান পরাজিত হয়ে সরে গেলেও ভারত পরাজিত হয়ে সরে না গিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক এবং বাংলাদেশে ভারতীয় দোসরদের মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তারা যে কোন মূল্যে এদেশে ভারতে সহায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেজন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, ড. মো. হুমায়ুন কবির, বিশিষ্ট কলামিস্ট ক্যাপ্টেন অব. জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ নূর, গণ মুক্তিযোটের কো চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, অধ্যাপক মেহেদী হাসান, বিশিষ্ট গবেষক আলাউদ্দিন কামরুল, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী রুহুল আমিন প্রমূখ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
১২ কারখানার মালিকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ না করা পর্যন্ত বিদেশ যেতে পারবেন না ১২ কারখানার মালিক। সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ না করায় সরকার এসব কারখানার মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব সফিকুজজামান উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা জানান, এসব কারখানা মালিকরা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ না করা পর্যন্ত বিদেশ যেতে পারবেন না।
তিনি বলেন, ২৭ মার্চের মধ্যে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার কথা। কিন্তু ১২টি কারখানা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি কারখানায় অসন্তোষ চলছে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আমরা শ্রম আইন অনুযায়ী এদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবো- বলেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
কোন কোন কারখানার মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে? সাংবাদিকরা এ নিয়ে প্রশ্ন করলে কারখানাগুলোর নাম বলা যাবে না বলে জানান উপদেষ্টা।
১২ কারখানার বাইরে অন্য কারখানা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করলে তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২৭ মার্চের মধ্যে সব কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে। ২৭ মার্চের পর আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করবো। যদি আরও কোনো প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে না পারে তাদের বিরুদ্ধেও সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।