আন্তর্জাতিক
ডলারের শক্তি খর্ব করবে না ভারত, থাকবে না ব্রিকস মুদ্রার উদ্যোগে: এস জয়শঙ্কর

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে নির্বাচনে জেতার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কার বলে দেন, ব্রিকস মুদ্রা নিয়ে আসা হলে এই জোটভুক্ত দেশগুলোর পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। অর্থাৎ মার্কিন মুদ্রা ডলারের শক্তি হ্রাসের চেষ্টা তিনি বরদাশত করবেন না। তাঁর সেই হুমকি কাজে দিচ্ছে।
ব্রিকসের অন্যতম সদস্য ভারত জানিয়ে দিয়েছে, ব্রিকস মুদ্রা চালু বা ডলারের শক্তি খর্ব করার কোনো উদ্যোগের সঙ্গে তারা থাকছে না। ভারতের সংসদে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে ব্রিকসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে জোটের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। বলেছেন, বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে এই জোট কাজ করে যাবে। খবর ইকোনমিক টাইমসের
লোকসভায় ব্রিকস মুদ্রা ও ট্রাম্পের হুমকিসংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নের জবাবে এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, গত দুই দশকে ব্রিকসের পরিসর ও সদস্যসংখ্যা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই জোটের কার্যক্রম সম্পর্কে আরও ওয়াকিবহাল হোক, ব্রিকস তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এস জয়শঙ্কর পরিষ্কার বলেছেন, ডলারের শক্তি খর্ব করার কোনো উদ্যোগের সঙ্গে ভারত জড়িত থাকবে না। এটা ভারতের অর্থনৈতিক বা কৌশলগত লক্ষ্য নয়—দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় বিষয়টি মার্কিন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদী। ফলে ব্রিকস জোট সম্পর্কে তিনি সব সময়ই সমালোচনামুখর। গত মাসেই তিনি বলেছেন, ব্রিকস মরে গেছে।
বিশেষ করে ব্রিকসের অভিন্ন মুদ্রার বিষয়ে ট্রাম্প যুদ্ধংদেহী। একাধিকবার বলেছেন, ব্রিকস মুদ্রা চালু করা হলে এই দেশগুলোর পণ্যে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। অর্থাৎ ডলারের আধিপত্য ক্ষুণ্ন হয়—এমন কোনো কাজ তিনি সহ্য করবেন না। তাঁর ভাষ্য, এই শতভাগ শুল্কের হুমকি দেওয়ার পর থেকেই ব্রিকস মরে গেছে।
ব্রিকসের বেশ কয়েকটি সদস্যদেশ বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য খর্ব করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে চীন তার মুদ্রা ইউয়ানকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অন্যতম প্রধান মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার মতো দেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আগের চেয়ে বেশি ইউয়ান ব্যবহার করছে। ভারতও বিশ্ব বাণিজ্যে রুপির ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
ডলারের আধিপত্য কমাতে ব্রিকসের সদস্যদের মধ্যে নতুন একটি ব্রিকস মুদ্রা তৈরিও কথাবার্তা হয়েছে। যদিও সেই আলোচনা খুব বেশি এগোয়নি। এরই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিতে সেই চেষ্টা একরকম বন্ধই হয়ে গেছে।
ব্রিকস জোটের প্রাথমিক সদস্যদেশ দেশগুলো হলো চীন, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। পরে ২০২৩ সালে ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও ইথিওপিয়া ব্রিকসে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
সৌদিতে ঈদের জামায়াতের সময় ঘোষণা

সৌদি আরবে ঈদুল ফিতরের জামাত সূর্যোদয়ের ১৫ মিনিট পর অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে দেশটির ইসলামিকবিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী শেখ আবদুল লতিফ আল শেখ এক নির্দেশনায় দেশব্যাপী নির্ধারিত ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদের নামাজের আয়োজন নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (২৪ মার্চ) মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদের প্রধান জামাত নির্ধারিত ঈদগাহ ও মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। যেসব মসজিদ সাধারণত ঈদের নামাজের জন্য ব্যবহৃত হয় না বা ঈদগাহের খুব কাছে অবস্থিত, সেসব স্থানে মুসল্লিদের নির্ধারিত ঈদগাহেই নামাজ আদায় করতে হবে।
ঈদের জামাত নির্বিঘ্ন করতে দেশব্যাপী সব মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। নামাজের আগে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ও সাউন্ড সিস্টেমের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে, মুসল্লিদের জন্য একটি পরিশুদ্ধ ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতেই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঈদের নামাজের দিন বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে নামাজ নির্ধারিত মসজিদের ভেতর অনুষ্ঠিত হবে। এতে মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ইবাদত সম্পন্ন করতে পারবেন। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে নামাজের সময়সূচি উম্ম আল কুরা ক্যালেন্ডারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি মসজিদ ও ঈদগাহে ইমামদের জামাত পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সৌদি সরকারের এই পদক্ষেপে মুসল্লিদের জন্য ঈদের নামাজকে সুশৃঙ্খল ও আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
স্যামসাং সিইও হান জং-হি মারা গেছেন

স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ভাইস চেয়ারম্যান হান জং-হি মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।
হান ২০২২ সাল থেকে স্যামসাংয়ের ডিভাইস এক্সপেরিয়েন্স (ডিএক্স) ইউনিটের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যেখানে মোবাইল ফোন, টেলিভিশন এবং গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তার আকস্মিক মৃত্যু দক্ষিণ কোরিয়ার করপোরেট জগতে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তিনি সুস্থ ছিলেন বলেই মনে করা হচ্ছিল। গত সপ্তাহে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সুওনে স্যামসাংয়ের বার্ষিক সাধারণ শেয়ারহোল্ডার সভা পরিচালনা করেছিলেন।
স্যামসাং এক বিবৃতিতে বলেছে, এই কঠিন সময়ে তার পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। ভাইস চেয়ারম্যান হান ১৯৮৮ সালে স্যামসাংয়ে যোগ দিয়েছিলেন এবং দীর্ঘ ৩৭ বছরের কর্মজীবনে স্যামসাংয়ের টিভি ব্যবসাকে বৈশ্বিক শীর্ষস্থানে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তিনি ডিএক্স বিভাগ এবং ডিজিটাল অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবসার প্রধান হিসেবেও কোম্পানির প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, বিশেষ করে প্রতিকূল ব্যবসায়িক পরিস্থিতির মধ্যেও।
হানের মৃত্যু এমন এক সময়ে এলো, যখন বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাংয়ের আধিপত্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অ্যাপল এবং চীনা নির্মাতা শাওমির মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের কারণে কোম্পানিটি চাপে রয়েছে। ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে অ্যাপল বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন বাজারে ২৩ শতাংশ শেয়ার নিয়ে শীর্ষে ছিল, আর স্যামসাং ১৬ শতাংশ শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বলে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন করপোরেট নেতা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। স্যামসাংয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী এলজি ইলেকট্রনিক্সের সিইও চো জু-ওয়ান বলেন, আমি অত্যন্ত দুঃখিত। স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের সকলের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ইলেকট্রনিক শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
শিক্ষার্থী-পর্যটনসহ সব ধরনের ভিসা ফি বাড়াচ্ছে যুক্তরাজ্য

আগামী ৯ এপ্রিল থেকে ইটিএ (ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন), স্বল্পমেয়াদী, চিকিৎসা, শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের ভিসা, স্পনসরশিপ ও নাগরিকত্ব ফি বৃদ্ধি করছে যুক্তরাজ্য। আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ৯ এপ্রিল থেকে স্বল্পমেয়াদি পর্যটন ভিসার (৬ মাস) জন্য আবেদনকারীকে গুণতে হবে ১২৭ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯ হাজার ৯৯০ টাকা। বর্তমানে এই ফি ১১৫ পাউন্ড বা ১৮ হাজার ১০১ টাকা।
আর দীর্ঘমেয়াদি পর্যটন ভিসা (৬ মাসের বেশি) ফি হবে ৪৭৫ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৪ হাজার ৭৬৫ টাকা, যা বর্তমানে ৪৩২ পাউন্ড বা ৬৭ হাজার ৩৭৫ রুপি।
এছাড়া ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদি ভিসার ফি করা হবে যথাক্রমে ৮৪৮ পাউন্ড (১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৬ টাকা) এবং ১ হাজার ৫৯ পাউন্ড (১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬৮ টাকা)। বর্তমানে এই ফি যথাক্রমে ৭৭১ পাউন্ড (১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৬ টাকা) এবং ৯৬৩ পাউন্ড (১ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৭ টাকা)।
বাড়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থী ও কর্মী ভিসা ফি-ও। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থী ভিসার ফি ৪৯০ পাউন্ড (৭৭ হাজার ১২৬ টাকা)। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে এই ফি হবে ৫২৪ পাউন্ড (৮২ হাজার ৪৭৮ টাকা)।
এছাড়া তিন বছর মেয়াদি দক্ষ কর্মী ভিসার ফি করা হচ্ছে ৭৬৯ পাউন্ড বা ১ লাখ ২১ হাজার ৪১ টাকা। বর্তমানে এই ফি ৭১৯ পাউন্ড বা ১ লাখ ১৩ হাজার ১৭১ টাকা। আর ৫ বছর মেয়াদি কর্মী ভিসা ফি ১ হাজার ৪২০ পাউন্ড (২ লাখ ২৩ হাজার ৫১০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫১৯ পাউন্ড (২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৩ টাকা) করা হচ্ছে।
যারা ইটিএ ভিসার জন্য আবেদনে আগ্রহী, তাদেরকেও ৯ এপ্রিলের পর থেকে ১০ পাউন্ডের (১ হাজার ৫৭৪ টাকা) পরিবর্তে ১৬ পাউন্ড (২ হাজার ৫১৮ টাকা) ব্যয় করতে হবে।
ভিসার পাশাপাশি স্পনসরশিপ এবং নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের ফিও বাড়ানো হয়েছে। দক্ষ কর্মীদের স্পনসরের ক্ষেত্রে আগামী ৯ এপ্রিল থেকে ৫২৫ পাউন্ড (৮২ হাজার ৬৭৫ টাকা) স্পন্সর ফি দিতে হবে নিয়োগকর্তাদের, বর্তমানে এই ফি ২৩৯ পাউন্ড বা ৩৭ হাজার ৬১৮ টাকা।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব লাভের আবেদন নিবন্ধিত করতে ১ হাজার ৩৫১ পাউন্ড (২ লাখ ১২ হাজার ৬৪৯ টাকা) ফি দিতে হয়। ৯ এপ্রিল থেকে এই ফি হবে ১ হাজার ৪৪৫ পাউন্ড (২ লাখ ২৭ হাজার ৬০২ টাকা)।
ভিসা ফি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, সীমান্ত সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলদারি ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা খাতে প্রতিদিনই সরকারি ব্যয় বাড়ছে। এই ব্যয় সংকুলানের জন্যই ভিসা, স্পনসরশিপ ও নাগরিকত্বের আবেদনের ফি বাড়ানো হয়েছে। কারণ সরকার এই অতিরিক্ত অর্থের জন্য করদাতাদের ওপর চাপ বাড়াতে ইচ্ছুক নয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলি হামলায় গাজার নতুন প্রধানমন্ত্রী নিহত

ইসরাইয়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নতুন প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল বারহুম। এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে উপত্যকাটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
এর আগে, গত ১৮ মার্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইশাম দা-লিসকে হত্যা করে ইসরাইয়েলি বাহিনী। এরপর তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন ইসমাইল বারহুম।
রোববার (২৩ মার্চ) রাতে গাজার নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিহত হওয়ার তথ্য জানান ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, রোববার সন্ধ্যায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ‘সফলভাবে জ্যেষ্ঠ হামাস কর্মকর্তা ইসমাইল বারহুমকে নাসের হাসপাতালে হত্যা করেছে’ প্রতিরক্ষা বাহিনী।
প্রতিরক্ষা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসমাইল ছিলেন গাজার হামাস সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইশাম দা-লিসের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। যাকে কয়েকদিন আগে হত্যা করা হয়েছে।
ইসমাইল বারহুমকে লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি হামলাটি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এবং বিবিসি অ্যারাবিকে ধরা পড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আল জাজিরার সাংবাদিক নাসের হাসপাতালের সামনে থেকে লাইভ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক তখন হঠাৎ করে মিসাইল সদৃশ্য কিছু একটা উড়ে এসে হাসপাতালটিতে আঘাত হানে। এরপরই সেখানে আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় আরও আটজন আহত হয়েছেন।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে হাসপাতালটি হামলায় নতুন করে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৩ মার্চ) রাতে গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই হামলাতেই ইসমাইল বারহুম ও অপর একজন নিহত হন। হামাস ইসমাইল বারহুমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, নাসের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ইসমাইল। সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
হাসিনাবিরোধী গণবিক্ষোভের কথা জানলেও হস্তক্ষেপ করতে পারেনি ভারত: জয়শঙ্কর

সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল এবং তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে শক্তিশালী যে বিক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছিল, সে সম্পর্কে ভারত অবগত ছিল বলে দাবি করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ ব্যাপারে ভারত কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেনি, যোগ করেন তিনি।
শনিবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যরা জয়শঙ্করের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেন, যেখানে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতিই আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে।
জয়শঙ্কর জানান, ভারত বাংলাদেশের ভেতরের অস্থির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করেন। জাতিসংঘ তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল যে, যদি তারা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে সংলাপ শুরু করলেও শেখ হাসিনাকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ায় ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারত এরই মধ্যে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রিকে ঢাকায় পাঠায়।
তবে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক (বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে কি না, সে বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নীরব।
এস. জয়শঙ্কর আলোচনায় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভূমিকা রয়েছে এবং চীনকে তিনি ‘প্রতিপক্ষ’ নয়, বরং ‘প্রতিযোগী’ হিসেবে দেখেন।
এছাড়াও দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নিয়েও আলোচনা করেন জয়শঙ্কর। ২০১৪ সালের পর থেকে সংস্থাটির কোনো শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
এরপর ২০১৬ সালে পাকিস্তানে নির্ধারিত ১৯তম সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। কারণ ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর, উরিতে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়। এরপর থেকে ভারত বিমসটেককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। মূলত, এই কারণে সার্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।