রাজনীতি
‘ক্যান্টনমেন্ট বসে ভারতের পরিকল্পনায় নতুন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়’

অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেছেন তিনি। এরপর থেকে তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। পাশাপাশি এই বক্তব্য প্রত্যাখান করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন একদল শিক্ষার্থী।
এদিকে, এই ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ মধ্যরাতে ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মধ্যরাত ২টার দিকে দেয়া এই স্ট্যাটাসে শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে একাধিক রাজনৈতিক দল রাজি হয়েছে বলে দাবি করে সেখানে তিনি বলেন, ১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২.৩০টা। ক্যান্টনমেন্ট বসে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়, সেই মিটিংয়ে অংশ নিয়ে শেষ না করেই চলে আসতে হয়েছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের বলে দাবি এই নেতার।
স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২.৩০টা। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।
‘আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর ২.৩০টায়। আমাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া হয় আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদেরকে বলা হয়- ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে- তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা নাকি ভালো।’’ ফলশ্রুতিতে আপনি দেখবেন গত দুইদিন মিডিয়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে আরও বলা হয়-রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।
‘আমাদেরকে এই প্রস্তাব দেওয়া হলে আমরা তৎক্ষণাৎ এর বিরোধিতা করি এবং জানাই যে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করুন। এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোন ধরনের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং ‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, আলোচনার এক পর্যায় বলি-যেই দল এখনো ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই,সেই দলকে আপনারা কিভাবে ক্ষমা করে দিবেন! অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে,’ ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডোম এন্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ‘ইনক্লুসিভ’ ইলেকশন হবে না।
‘উত্তরে বলি, আওয়ামী লীগের সাথে কোন ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।’ পরে মিটিং অসমাপ্ত রেখেই আমাদের চলে আসতে হয়।
জুলাই আন্দোলন প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময়ও আমাদের দিয়ে অনেককিছু করানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কখনো এজেন্সি কখনো বা ক্যান্টনমেন্ট থেকে নানা ধরনের প্রেসক্রিপশন গ্রহণ করতে চাপ দেয়া হয়েছে। আমরা ওসব চাপে নতি স্বীকার না করে আপনাদের তথা জনগণের উপরেই আস্থা রেখেছি। আপনাদের সাথে নিয়েই হাসিনার চূড়ান্ত পতন ঘটিয়েছি।
‘আজকেও ক্যান্টনমেন্টের চাপকে অস্বীকার করে আমি আবারও আপনাদের উপরেই ভরসা রাখতে চাই। এ পোস্ট দেওয়ার পর আমার কী হবে আমি জানি না। নানামুখী প্রেশারে আমাকে হয়তো পড়তে হবে হয়তো বিপদেও পড়তে হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোন ধরনের আপস করার সুযোগ নাই।’
তিনি বলেন, জুলাইয়ের দিনগুলোতে জনগণের স্রোতে ক্যান্টনমেন্ট আর এজেন্সির সকল প্রেসক্রিপশন আমরা উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আজ আবারও যদি আপনাদের সমর্থন পাই, রাজপথে আপনাদের পাশে পাই তবে আবারও এই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের ভারতীয় ষড়যন্ত্রও আমরা উড়িয়ে দিতে পারবো।
পরিশেষে তিনি বলেন, আসুন, সকল যদি কিন্তু পাশে রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে জুলাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমাদের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা হতে দিবো না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোন সুযোগ নাই বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতেই হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে এনসিপির অবস্থান

আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁর সঙ্গে সেখানে আরও অনেকে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
এই কর্মসূচিতে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ ঘোষণা দেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) না পাওয়া পর্যন্ত রাত ১০টা থেকে যমুনার সামনে তিনি অবস্থান নেবেন।
রাত ১০টার পর হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সেখানে তাঁর সঙ্গে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। অবস্থান কর্মসূচিতে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচির কারণে যমুনার সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এই কর্মসূচি চলার মধ্যেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফ্যাসিস্ট ও খুনি আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। আসামিদের জামিন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের রাষ্ট্রপতিকে চোখের সামনে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। বিচার প্রশ্নে সরকারের প্রতি আমাদের অনাস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে।’
নাহিদ ইসলাম ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরও লিখেছেন, ‘জুলাইয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল খুনিদের বিচার এবং মুজিববাদীরা বাংলার মাটিতে আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না। আজ রাতেই ফয়সালা হবে আওয়ামী লীগের বিষয়ে। আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না আসা পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে উঠব না।’
জুলাইয়ের সব শক্তি, শহীদ পরিবারের সদস্যদের ও আহতদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি লিখেছেন, ‘বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
আ. লীগের বিষয়ে আজ রাতেই ফয়সালা হবে: নাহিদ ইসলাম

আজ রাতেই আওয়ামী লীগের বিষয়ে ফয়সালা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে উঠব না।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নাহিদ এই আহ্বান জানান।
স্ট্যাটাসে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফ্যাসিস্ট ও খুনি আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে। দলটির নিবন্ধন বাতিল বা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। বরং আসামিদের জামিন দেওয়া হচ্ছে, অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের রাষ্ট্রপতিকে চোখের সামনে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রতি আমাদের অনাস্থা তৈরি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাইয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল খুনিদের বিচার। মুজিববাদীরা বাংলার মাটিতে আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না। আজ রাতেই ফয়সালা হবে আওয়ামী লীগের বিষয়ে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না আসা পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে উঠব না।’
শহীদ পরিবার ও আহতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সবাই চলে আসুন। জুলাইয়ে সকল শক্তি, সকল শহীদ পরিবার ও আহতদের আহ্বান জানাই রাজপথে নেমে আসুন। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে অবস্থানের ডাক হাসনাতের

গণহত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে নিজের ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে এ ডাক দেন হাসনাত। রাত ১০টা থেকে কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।
হাসনাত তার ফেসবুকে বলেন, ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত আজ রাত দশটা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলবে ‘
তিনি আরও বলেন, ‘যার এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট বয়ান নাই, তার সাথে আমরা নাই। ’
ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগের বিচার এবং নিষিদ্ধকরণ এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ কোনোভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালে দেশে ফের রক্তপাত হবে, গুম-খুনের ঘটনা ঘটবে। যে কারণে, সময় থাকতে দলটিকে নিষিদ্ধ করা জরুরি।
এর আগে সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক এক পোস্টে আওয়ামী লীগপন্থী অপরাধীদের ‘সেইফ এক্সিট’ নিশ্চিত করছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এমন অভিযোগ তোলেন হাসনাত। তিনি বলেন, ‘খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, পুলিশ আসামি ধরলেও আদালত জামিন দেয়। শিরীন শারমিনকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও মে মাসেও তা শুরু হয়নি। আর আপনারা বলছেন আওয়ামী লীগের বিচার হবে?
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে আরও লেখেন, ‘তা ইন্টেরিম, এখন পর্যন্ত কী কী বিচার ও সংস্কার করেছেন?’
প্রসঙ্গত আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা সেফ-এক্সিটে দেশ ছেড়ে বিদেশে আয়েশি জীবন-যাপন করছেন। এর মধ্যেই বুধবার মধ্যরাতে দেশ ছাড়েন পতিত সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
তরুণদের নীতি প্রণয়নে বিএনপির মাসব্যাপী কর্মসূচি শুরু আগামীকাল

বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে নীতি-প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে শুরু করেছে এক মাসব্যাপী কর্মসূচি। জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের যৌথ আয়োজনে দেশের চারটি বিভাগীয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ধারাবাহিক সেমিনার ও সমাবেশ। কর্মসূচির প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল (৯ মে)।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে নীতি-প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে শুরু হচ্ছে এক মাসব্যাপী এই কর্মসূচি। কর্মসূচির প্রতিটি আয়োজনেই গুরুত্ব পাচ্ছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকারসহ নানা বিষয়ে তরুণদের ভাবনা।
চট্টগ্রামে এই কর্মসূচির প্রথম সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হতে ৯ মে । ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান বিকেল ৩টায় চট্টেশ্বরী রোডের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্লেষক আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন, কর্নেল ইউনিভার্সিটির লেকচারার জামাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাহরিন খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, চলচ্চিত্র নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ, ওরাকলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ম্যানেজার মুনতাসির মুনীর, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আব্দুল্লাহ, ইউনিভার্সিটি অব ডালাসের শিক্ষক শাফকাত রাব্বী এবং পাঠাও সিইও ফাহিম আহমেদ।
সেমিনারের পরদিন ১০ মে চট্টগ্রামেই আয়োজন করা হবে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ।
এ ধারাবাহিক কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে খুলনায়। ১৬ মে অনুষ্ঠিত হবে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। পরদিন ১৭ মে হবে সমাবেশ। তৃতীয় পর্ব বগুড়ায় ২৩ ও ২৪ মে অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে। শেষ পর্ব ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ও ২৮ মে। যেখানে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, এই সেমিনারগুলোতে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, চিন্তাবিদ, উদ্যোক্তা ও বক্তারা অংশ নেবেন। আলোচনায় উঠে আসবে তারুণ্যের ক্ষমতায়নে একটি আধুনিক, মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনের রূপরেখা।
এসব আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের ভাবনা ও প্রত্যাশা সংগ্রহ করে দলীয় নীতি ও রূপরেখা আরও জনকল্যাণমুখী করে তোলাই এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ‘জুলাই ঐক্য’ নামের জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করা হয়।
জোটটিতে ঐক্যবদ্ধ সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিয়েশন, এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, একতার বাংলাদেশ, রক্তিম জুলাই, স্টুডেন্ট রাইট ওয়াচ ইত্যাদি। এরকম মোট ৩৫টি সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ জোটে সংহতি প্রকাশ করে জোটবদ্ধ হয়েছে বলে জানান জোটটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। বিগত সাড়ে ১৫ বছরের সফল পীড়ন, দুর্নীতি, লুটপাট ও গণতন্ত্র হরণের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতার অভূতপূর্ব এক জাগরণে সংগঠিত হয় ছাত্র জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র, শ্রমিক, শিক্ষক, চিকিৎসক ও সাধারণ জনগণ সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। এই গণঅভ্যুত্থানে জীবন দিতে হয় দুই হাজারের বেশী মানুষকে। সেই সঙ্গে আহত ও পঙ্গু হন প্রায় ৩১,০০০ মানুষ।’
মোসাদ্দেক বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা দেখছি গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া এখনো অনিশ্চিত। সব থেকে বড় উদ্বেগের বিষয় এই যে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহলের কিছু অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। যা একদিকে শহীদ, আহত ও পঙ্গু জনগণের আত্মত্যাগের চূড়ান্ত অপমান। একই সঙ্গে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পূনর্বাসন দেশের স্বাভাবিক গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করার শামিল। সেই সঙ্গে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শংকিত। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা বিভিন্ন দাবি তুলে জুলাইয়ে অংশ নেওয়া বিপ্লবীদেরক বিতর্কিত করতে চায়। আমরা বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই, আমরা বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো নিয়ে ‘জুলাই ঐক্য’ নামে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জোটের ঘোষণা করছি।’
‘জুলাই ঐক্য’ জোটের মূল ও একমাত্র দাবি হচ্ছে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও ’২৪ এর গণহত্যা, শাপলা ট্রাজেডি, পিলখানা ট্রাজেডি, গুম, খুন, দূর্নীতিসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যে সব অপকর্ম সংঘঠিত হয়েছে তার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় ক্যাম্পেইন জারি রাখা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট ধারণকারী সব শক্তিকে নিয়ে একতাবদ্ধভাবে কাজ করবে জোটটি।
সংবাদ সম্মেলনে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের প্রতিনিধি রাফে সালমান রিফাত বলেন, জুলাইয়ে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে মাঝে মাঝে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করতে দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা দেশের ফ্যাসিবিরোধী সব সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করব।
সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আগামী ৭ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কাফি