অর্থনীতি
বিতর্কিত ইকবালের নিয়ন্ত্রণে এনআরবি ব্যাংক!

পণ্য রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার এবং পাচারকৃত অর্থে যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে ইকবাল আহমেদ ওবিইর বিরুদ্ধে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনা-রেহানার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই বিতর্কিত ব্যবসায়ী। শেখ হাসিনার ছত্রচ্ছায়ায় রাজনৈতিক বিবেচনায় গড়ে তোলেন এনআরবি ব্যাংক। দুর্নীতির দায়ে ২০১৫ সালে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি।
‘সব কাজের কাজি’ সেই ইকবাল আহমেদকে পরিচালনা পর্ষদে রেখে পর্ষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংকটির ভবিষ্যত্ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি ব্যাংকে সুশাসন ফেরাতে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে পর্ষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পরিচালক করা হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিইকে।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শেখ মো. সেলিম, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক এমডি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি শেখ মতিউর রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরীফ নুরুল আহকাম ও হিসাববিদ মিজানুর রহমানকে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের মতো জুলাই বিপ্লবে পাওয়া নতুন বাংলাদেশে ফের এই ইকবালদের মাধ্যমে লুটপাট হোক, তা চাইছেন না ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটের সহযোগী, হিমায়িত মাছ ব্যবসার আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়া ইকবালকে কেন ব্যাংকের শীর্ষ পদে বসানো হলো? তাঁর ক্ষমতার উৎস কী?
তাঁদের দাবি, অতি দ্রুত ইকবাল আহমেদ এবং তাঁর দুই ভাই কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদের সম্পদের উৎস খুঁজে বের করে তাঁদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ইকবাল আহমেদ, কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদ তিন ভাই এবং তাঁরা এনআরবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার।
১৭ মার্চ ২০২৫ শেষে তাঁরা যথাক্রমে ৩.৮০ শতাংশ, ১.৫১ শতাংশ ও ২.১৩ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার। এ ছাড়া সিমার্ক (বিডি) লিমিটেড, আইবিসিও লিমিটেড, আইবিসিও এন্টারপ্রাইজ, আইবিসিও ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ম্যানরু ইন্টারন্যাশনাল ও ম্যানরু শপিং সিটিতেও তাঁদের যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, যুক্তরাজ্যে একাধিক কম্পানি রয়েছে তাঁদের। এর মধ্যে রয়েছে সিমার্ক পিএলসি, আইবিসিও হোল্ডিংস, এমএআই ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস, ভার্মিলিয়ন গ্রুপ লিমিটেড, ফ্লাইং ইউনিকর্ন, ওপেনশ হোল্ডিংস লিমিটেড, আইবিসিও লিমিটেড, ইউকেবিসিসিআই, ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং নিউ ইস্ট ম্যানচেস্টার লিমিটেড। এই কম্পানিগুলো মূলত রিয়েল এস্টেট, বিনিয়োগ ও আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত।
শেখ রেহানাসহ শেখ পরিবারের অন্য সদস্যদের নামেও এই কম্পানিগুলোতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া লন্ডন-ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক সম্পদের মালিকানা গড়ে তুলেছেন। শুধু লন্ডনেই তাঁর প্রায় দুই ডজন বাড়ি ও অত্যাধুনিক প্রপার্টি রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিগত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নিজের অবস্থান গড়ে তোলেন ইকবাল। তাঁর ফেসবুক প্রফাইলজুড়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে অসংখ্য ছবি শেয়ার করা হতো, যা তাঁকে ‘হাসিনা বিশ্বস্ত’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। যদিও ৫ আগস্টে হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ফেসবুক থেকে ছবিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার শীর্ষ ২০ জন অর্থদাতার মধ্যে ওবিইও একজন। পতিত সরকারের আমলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সিমার্ক গ্রুপের আড়ালে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের অর্থপাচারের ক্যারিয়ার (বাহক) হিসেবেও কাজ করতেন ওবিই। ইকবাল সিমার্ক গ্রুপের প্রধান ব্যবসা হলো মাছ রপ্তানি। মাছের আড়ালে তিনি বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ও সোনা চোরাচালান করতেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাড়া চুক্তির অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ইকবাল আহমেদ, কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদ- তিন ভাইকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে এনআরবি ব্যাংক। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, নোটিশ পাওয়ার পর অতিদ্রুত অতিরিক্ত ভাড়া বাবদ ব্যাংক থেকে নেওয়া চার কোটি ৫১ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। না দিলে ফৌজদারি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে নোটিশদাতা ব্যারিস্টার হেলাল উদ্দিন বলেন, আইনি নোটিশ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত বিবাদীপক্ষ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
ইকবাল আহমেদ ক্ষমতার জোরে করেছেন নানা অভাবনীয় কাণ্ডও। ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সে অনিয়ম করে গায়েব করেন দুই লাখ পাউন্ড। এরপর ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের নেতারা ইকবাল আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করলে তিনি মামলায় হেরে যান। দেশটির আদালত ইকবাল আহমেদকে পাঁচ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেন এবং চেম্বার অব কমার্স থেকে আজীবন বহিষ্কার করেন। এর আগে ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির গোপন অর্থদাতা ওবিই দলটিকে ১২ হাজার পাউন্ড ডোনেশন দেওয়ার পর খরচ ফেরতের দাবি করে বিতর্কিত হয়েছেন।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দাতা তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য পার্টির তহবিল ব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর এই আচরণ নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, যেখানে জনগণের করের টাকা দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তীব্র হয়েছিল।
এই ঘটনা ঘিরে দলটির অভ্যন্তরীণ আর্থিক নীতিমালা ও নৈতিকতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম ও সুধীসমাজের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়নে কঠোর নিয়মকানুন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছিল।
এদিকে ওবিইর অর্থপাচারের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বাংলাদেশকে ‘ধূসর তালিকা’ থেকে মুক্ত করতে ওবিইর কেলেঙ্কারি দ্রুত বিচারাধীন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থপাচার ও ব্যাংকের অর্থ লুটে কারো বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, সে ক্ষেত্রে এমন ব্যক্তিকে পুনারায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার চলছে। বিতর্কিত ব্যক্তিকে ব্যাংকের শীর্ষ পদে দিয়ে ব্যাংকটির সংস্কার সম্ভব হবে না।
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে ইকবাল আহমদ ওবিইর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সময়ে এনআরবি ব্যাংকের সচিব রেজাউল করিমকে ফোন দেওয়া হলে তিনি জনসংযোগ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। জনসংযোগ বিভাগের প্রধান সালাউদ্দিন মুরাদকে ফোন দেওয়া হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সূত্র: কালের কণ্ঠ।

অর্থনীতি
সাতদিনে রেমিট্যান্স এলো ৮ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা

চলতি অক্টোবরের প্রথম সাতদিনে দেশে এসেছে ৬৯ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) যার পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৪৪২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে এসেছে প্রায় ১০ কোটি ডলার। বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, চলতি বছরের অক্টোবরের প্রথম সাতদিনে ৬৯ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের একই সময়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ৬৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৮২৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই–৭ অক্টোবর) ছিল ৭২২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ফলে রেমিট্যান্সে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্যবিদায়ী সেপ্টেম্বরে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন (২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ) ডলারের রেমিট্যান্স। এর আগে অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার এবং আগস্টে আসে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সর্বাধিক রেমিট্যান্স এসেছিল মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, যা ছিল পুরো বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ওই অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স আসে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল—জুলাইয়ে ১৯১ দশমিক ৩৭ কোটি, আগস্টে ২২২ দশমিক ১৩ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ দশমিক ৪১ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯ দশমিক ৫০ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি, মার্চে ৩২৯ কোটি, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি, মে মাসে ২৯৭ কোটি এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
অর্থনীতি
৬৯০৬ টাকা বেড়ে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও বাড়ানো হয়েছে স্বর্ণের দাম। এবার ভরিতে ৬ হাজার ৯০৬ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৯ হাজার ১০১ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। যা দেশের ইতিহাসে মূল্যবান এই ধাতুর সর্বোচ্চ দাম।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ৯ হাজার ১০১ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনার দাম ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫ টাকা ও ৯৪ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৩০১ টাকা।
এদিকে, বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
অর্থনীতি
জেট ফুয়েলের দাম বাড়লো

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করা উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বুধবার (৮ অক্টোবর) নতুন এ দাম ঘোষণা করে বিইআরসি।
বিইআরসির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রতি লিটারে ৯৬ টাকা ৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ২৯ পয়সা করা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে প্রতি লিটার শূন্য দশমিক ৬৩৩৩ ডলার থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৬৫৪৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন এ সিদ্ধান্ত আজ বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত ১২টা থেকে কার্যকর হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে বলে জানায় বিইআরসি।
এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে কমিয়ে ৯৬ টাকা ৯ পয়সা করা হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে প্রতি লিটার শূন্য দশমিক ৬৫০২ ডলার থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬৩৩৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়।
অর্থনীতি
বিশ্ববাজারে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়ালো সোনার দাম

বিশ্ববাজারে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে সোনার দাম। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সোনার দাম প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ডলার অতিক্রম করেছে। বুধবার এশিয়ার বাজারে সোনার দর আউন্স প্রতি দাঁড়ায় ৪০০০.০১ ডলার, যা বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। খবর এএফপি, রয়টার্স।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারি অচলাবস্থা এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনা কেনায় আগ্রহী হচ্ছেন। এর ফলেই দাম ঊর্ধ্বমুখী।
এছাড়া ফ্রান্সের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাও সোনার বাজারে বড় প্রভাব ফেলেছে। বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে সরে গিয়ে সোনা কেনার দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি শাটডাউন বুুধবার অষ্টম দিনে পৌঁছেছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশ স্থগিত রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা এখন বিকল্প সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে বাজার বিশ্লেষণ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা, বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা ক্রয় বৃদ্ধি, ইটিএফের চাহিদা এবং মার্কিন ডলারের দুর্বলতার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে।
ঐতিহ্যগতভাবে অস্থির সময়ে সোনাকে নিরাপদ সম্পদ হিসেবে দেখা হয়। ২০২৪ সালে স্পট গোল্ডের দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। গত বছরের তুলনায় স্পট গোল্ডের দাম ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, আমরা এখন যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো দাম বেশি থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগকারীরা সোনা কিনছেন এবং এর ফলেই সোনার দাম উর্ধ্বমুখী।
স্পট সিলভার ০.৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৪৮.০৩ ডলার, প্ল্যাটিনাম ২.২ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৬৫৩.২১ ডলার এবং প্যালাডিয়াম ১.৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৫৫.৩২ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা ছাড়াও ফ্রান্সের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে।
অর্থনীতি
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সোনার দামে নতুন রেকর্ড

দেশের বাজারে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও সোনার দাম বেড়েছে, যা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম এক হাজার ৪৬৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে এক ভরি সোনার দাম দুই লাখ ২ হাজার ১৯৫ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম বাড়ানো হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে সোমবার (৬ অক্টোবর) ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এতে দেশের বাজারে প্রথমবার এক ভরি সোনার দাম দুই লাখ টাকার ঘর স্পর্শ করে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ২ লাখ ৭২৬ টাকা। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে সেই রেকর্ড ভেঙে গেলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৬৯ টাকা বাড়িয়ে দুই লাখ দুই হাজার ১৯৫ টাকা নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৩৯৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২০২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ২৭ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭২ টাকা।
সোমবার ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ১৫০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ৭২৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৩ হাজার ১০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৯১ হাজার ৬০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৫৭৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৬৪ হাজার ২২৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৪৫ টাকা। আজ মঙ্গলবার এ দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানোর পাশাপাশি রূপার দামও বাড়ানো রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ১ হাজার ২৬ টাকা বাড়িয়ে ৪ হাজার ৬৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৯৯১ টাকা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৮৩৯ টাকা বাড়িয়ে ২ হাজার ৯৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রূপার দাম ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২ হাজার ২২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।