ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
মুখোমুখি অবস্থান ইবির একই বিভাগের শিক্ষার্থীদের

ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এসময় আন্দোলনে মুখোমুখি অবস্থায় একপক্ষ স্বতন্ত্রতা ফিরে পেতে ডি ইউনিটের মাধ্যমে ভর্তি করানো হোক বলে দাবি জানান। একই বিভাগে অপরপক্ষের শিক্ষার্থীরা গুচ্ছ পদ্ধতির মাধ্যমে আইন অনুষদের স্বাভাবিক নিয়মে ভর্তি করানোর দাবি জানান।
আজ মঙ্গলবার (১১মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মুখোমুখি কর্মসূচি পালন করেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আল ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ দীর্ঘদিন গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি রমজানের ছুটির আগে বিভাগের শিক্ষকরা একাডেমিক মিটিং-এ সিদ্ধান্ত নেন, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় সভাপতির কাছে গিয়ে পরিবর্তনের দাবি জানায়। পরে গত ১ মার্চ তারা প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এসময় প্রশাসনের আশ্বাসে তারা ফিরে যায়।
আইন অনুষদভুক্ত থাকার পক্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, আইন অনুষদের অধীনে আল-ফিকহ বিভাগের যাত্রা শুরু ২০০৩-০৪ সেশনে। সেই ধারাবাহিকতায়, আমরা চাই আমাদের বিভাগে ভর্তির প্রক্রিয়া আইন অনুষদের অন্যান্য বিভাগের মতোই হোক। আইন বিভাগের পরেই আমাদের ডিপার্টমেন্ট তার পরে ল এন্ড ল্যান্ড মেনেজমেন্টের প্রতিষ্ঠা। সে হিসেবে ঐ দুইটা ডিপার্টমেন্টে এল.এল.বি ডিগ্রি দেওয়া জন্য যেভাবে ছাত্র নির্বাচন করবে আমারাও সেভাবে যেতে চাই। তবে কোনভাবে থিওলজির মাধ্যমে ছাত্র নেওয়াটা আমরা মেনে নেব না। বিভাগের নামে আইন শব্দটি যুক্ত করা সহ ইউজিসি কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী বিভাগের কারিকুলাম সংস্কার করতে হবে।
অপর পক্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন, আল-ফিকহ্ অ্যান্ড লিগাল স্টাডিজ বিভাগ শুরু থেকে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । সে উদ্দেশ্য সাথে সামাঞ্জস্য রেখে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার নেয়া হতো। কিন্তু ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পরে একটা স্বৈরাচারী প্রশাসন এসে আমাদের শিক্ষকদের কোনো পরামর্শ ছাড়াই পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনে। যে কারণে আমাদের বিভাগের স্বতন্ত্রতা নষ্ট হয়। আগে যেখানে ভর্তি পরীক্ষায় আল-ফিকহ্ সংক্রান্ত ২০-২৫ টা প্রশ্ন থাকতো কিন্তু বর্তমানে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার কারণে জেনারেল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা চান্স পাচ্ছে যাদের অধিকাংশের আরবিতে তেমন জ্ঞানই নেই। আল-ফিকহ্ বিভাগে আবরিতে ২৩০০ মার্কের পরীক্ষা থাকে যারা আরবিতে অদক্ষ তার কীভাবে ফিকহ্ বুঝবে, কী করে একজন ফকিহ্ হিসেবে পরিচয় দিবে। যেটা আল-ফিকাহ্ বিভাগের সাথে একেবারেই যায় না।
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দীন বলেন, শর্ত পূরণ করার স্বার্থে ধর্মতত্ত্ব অনুষদ ভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার মানে এই নয় যে আমরা ধর্মতত্ত্ব অনুষদে চলে যাচ্ছি। মানবিক অনুষদের একটি বিভাগও এই অনুষদের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। তবে অনেকেই না বুঝে অন্য দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যা কখনও কাম্য নয়। আমরা বিভাগের নামটি পরিবর্তন নিয়েও কাজ করে যাচ্ছি সেশনজট নিরসনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলমান।
এবিষয়ে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ফকরুল ইসলাম বলেন, একাডেমিক ভাবে যে দাবিটা গেছে সেটা একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করা হবে।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ঈদের আগের দুই শনিবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। সেই সঙ্গে দাপ্তরিক কাজের স্বার্থে ১৭ ও ২৪ মে (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিন অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (৭ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সেবা শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একই দিনের প্রজ্ঞাপনকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জাবের মো. সোয়াহিনের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১১ ও ১২ জুন সরকারি ছুটি থাকবে। এই ছুটির সমন্বয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ১৭ মে ও ২৪ মে (শনিবার) সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের অধীনস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহও খোলা থাকবে।
প্রজ্ঞাপনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, এনটিআরসিএ, এনসিটিবি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাপ্তাহিক ছুটির এই ২ দিন একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক ডিএনএ দিবস পালিত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আমেরিকান স্যোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজি স্টুডেন্টস চ্যাপ্টার ইবি শাখার আয়োজনে আন্তর্জাতিক ডিএনএ দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী এ দিবসটি উদযাপন করা হয়। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল: বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি উদযাপন। এছাড়া DNA PUZZLE SOLVING COMBAT অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে, দিবসটি উপলক্ষে শনিবার (৩ মে) ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষর্থীরা ফেসবুকে লাইফ সাইন্স ও বিজ্ঞান বিষয়ক মিমস (কার্টুন) তৈরির প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে। ২০০ জন বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষর্থীরা এই প্রোগ্রামে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োমেডিকেল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক এন্ড ইলেকট্রনিকস, ফলিত খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবনে সকাল ১০ টায় কুইজ প্রতিযোগিতা এবং ১১ টায় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, ছাত্র উপদেষ্টা ও বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকমন্ডলী। দুপুর ১২ টায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এতে সকল বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গত, ডিএনএ (ডিঅক্সিরিবোনিউক্লেইক অ্যাসিড) হলো একধরনের জৈবিক অণু যা সমস্ত জীবের কোষে পাওয়া যায় এবং এটি জীবের জেনেটিক তথ্য সংরক্ষণ করে। ডিএনএ-এর মধ্যে থাকা জেনেটিক কোড জীবের শারীরিক বৈশিষ্ট্য, বৃদ্ধি, পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রজনন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এটি একটি ডবল হেলিক্স (double helix) কাঠামো ধারণ করে, যা জীববিজ্ঞান ও জেনেটিক্সের ভিত্তি রচনা করেছে। ডিএনএ’র এই কাঠামো আমাদের জীবের অণু-গঠন, বিবর্তন এবং বংশগতির প্রক্রিয়া বোঝায় এবং আধুনিক জীববিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২৫ এপ্রিল বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য একটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন, অর্থাৎ DNA দিবস।
বাহাত্তর বছর আগে, ১৯৫৩ সালের এই দিনে, জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক, মরিস উইলকিন্স, রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন ও তাঁর সহকর্মীরা DNA-এর দ্বিতন্ত্রী কাঠামো (double helix structure) সম্পর্কিত গবেষণাপত্র Nature জার্নালে প্রকাশ করেছিলেন। এই আবিষ্কারটি জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি একেবারে পাল্টে দিয়েছিল এবং জীবের অণু-গঠন ও জেনেটিক কোডের সম্পর্কে আমাদের ধারণা পুরোপুরি বদলে যায়। তবে এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, তারা DNA আবিষ্কার করেননি, বরং DNA এর কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হয়েছে।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক হযরত আলী

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী।
বৃহস্পতিবার (১ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে কুয়েটে পূর্ণকালীন ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগের পূর্ব পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ড. মো. হযরত আলীকে উপাচার্যের দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়।
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অপসারণের এক দফা দাবিতে গত ২২ এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে আমরণ অনশনে বসেন আন্দোলনরত ২৯ শিক্ষার্থী। পরদিন রাতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানানো হলে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। ২৪ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
শহীদ জিয়াউর রহমানকে স্বৈরশাসক বলা সাংবাদিকের পক্ষে ছাত্রদলের বিবৃতি

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্বৈরশাসক বলা সাংবাদিকের পক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল বিবৃতি জানিয়েছে। বিবৃতিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধরের ঘটনায় নিন্দা জানান সংগঠনটি।
বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ও ইবি ছাত্রদল জানায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ইবি প্রতিনিধি ওয়াসিফ আল আবরাররের উপর ইবি শাখা ছাত্রশিবির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ঘটনাটি ছাত্রশিবির এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসে এবং আবাসিক হলে ছাত্রশিবিরের দখলদারিত্বের মুখোশ উন্মোচন করেছে। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও শাস্তি দাবি করেন। নেতৃদ্বয় বলেন, বাকস্বাধীনতা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ছাত্রশিবির এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা হামলা, আক্রমণ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে চায়। ছাত্রজনতাকে এই অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধরের ঘটনায় নিন্দা জানান।
এ বিষয়ে জানার জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদকে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক-সদস্য সচিবের কাছে বক্তব্য নেন।
যেহেতু এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেহেতু আপনার বক্তব্য এখানে প্রযোজ্য বললে নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, লিখিতভাবে প্রশ্ন করেন। পরে লিখিত প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর দেননি নাছির উদ্দীন নাছির।
এর আগে, জুলাই আন্দোলনকারীদের দুর্বৃত্ত আখ্যা, অবৈধভাবে হলে অবস্থান এবং বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধর করা হয়েছে। আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন এন্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ফেসবুকে নিষিদ্ধ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ, শাহিন আলম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন খানসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার পক্ষ হয়ে সমালোচনা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছি ইবি ছাত্রদল। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও মাসুদ রুম মিথুন সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলের সিটে থাকাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ইবি প্রতিনিধি ওয়াসিফ আল আবরাররের ওপর হামলা চালিয়েছে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাখা সমন্বয়কদের একটি অংশ। এ ঘটনায় আবরারকে রক্ষা করতে গিয়ে লাঞ্ছিত ও আহত হয়েছেন সমন্বয়কদের অপর অংশের সদস্য, দুই সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
তারা আরো বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত এ. শাহ আজিজুর রহমান হলের ৪০৫ নম্বর কক্ষে অতিথি হিসেবে অবস্থান করছিলেন সাংবাদিক আবরার। এ সময় ৮-১০ জন শিবিরের কর্মী তার কক্ষে যেয়ে সে কেন ওই কক্ষে অবস্থান করছে তা জেরা করতে শুরু করে। কথাবার্তার একপর্যায়ে আবরার ছাত্রলীগ করে এমন অভিযোগ তুলে তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলে তারা। সাংবাদিকের সাথে দুর্ব্যবহারের সময় আবরার ফোন বের করে তাদের ভিডিও ধারণ করে। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ভিডিও চলাকালেই তারা রুমে ঢুকে লাইট বন্ধ করে ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং মারধর করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমন্বয়কদের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় এবং দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন তারা। দিবাগত রাতে দুই গ্রুপের শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় একটি সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ইবি শাখা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম ফেসবুক স্টাটাসে লিখেন, ‘‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মধ্যরাতে সাংবাদিকের উপর হামলা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন এবং শিবির একসাথে। রিপোর্টার্স ইউনিটের ছোট ভাই আববার লাল স্বাধীনতার পক্ষের সমর্থন করে আসছিলো কিন্তু মিছিল হলো ছাত্রলীগের নামে এবং তাকে চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুশি, লাথি মেরে মেডিক্যালে পাঠাইলো। আবার রিপোর্টার্স ইউনিটে নিউজ করলো দুর্বৃত্তরা আক্রমণ করছে। রিপোর্টাস ইউনিট সরাসরি নাম দিয়ে নিউজ করার সাহস কি পাই নাই? যাইহোক আবরার মব জাস্টিসে মারা যায় নাই শুকরিয়া। ছোট ভাইয়ের সুস্থতা কামনা করি।”
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (ইবি শাখা) মেজবাহ উদ্দিন ফেসবুকে লিখেন, “মধ্যরাতে ডেইলি ক্যাম্পাস প্রতিনিধির সাংবাদিক আবরারের ওপর হা’ম’লা, গুরুতর অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি! এইতো ক্যাম্পাসে থাকতেই আবরার ছেলেটার মা মারা গেল! মা হারা এতিম ছেলেটাকে মারতে তোদের মায়া করলো না? শিবিরের আবার দয়া মায়া! জীবিত রাখছে এটাই অনেক। আবরারকে কখনো ছাত্রলীগের সাথে দেখি নাই! অন্য সাংবাদিকরা আমাদের কাছ থেকে কিছু খেলেও আবরারকে কখনো সেধেও কিছু খাওয়াতে পারি নাই। সেই আবরারকে দিচ্ছে ছাত্রলীগের ট্যাগ! আর প্রকৃত যারা আমাদের লুঙ্গির নিচেই থাকতো শিবির সন্ত্রাসীরা, আগে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম চালাতো আর এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ভাঙিয়ে এইরকম সব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ইবির সাংবাদিকরা যদি এবারও চুপ থাকে তাহলে আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের বোঝার কিছু বাকি থাকবে না। তীব্র নিন্দা জানায় এই সকল সাংবাদিকদের উপর! যারা আজকের ঘটনার পরও চুপ থাকবে।”
হল সূত্রে জানা গেছে, আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে অবৈধভাবে দীর্ঘদীন ধরে অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রভোস্টকে দেখিয়ে তাকে নামানোর দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট তাকে হল থেকে নামিয়ে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে আবারও ওই হলে অবস্থান করতে শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নেননি। পরে রাত ১২ টা ২০ মিনিট নাগাদ তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলা হলে এক পক্ষ প্রতিরোধ করায় শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের মধ্যে ঠেলাঠেলি সহ শুরু হয় গণ্ডগোল।
ঘটনাস্থলে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রভোস্ট হল থেকে বের হয়ে যেতে বললেও আবরার হল থেকে বের হননি। কতিপয় সমন্বয়ক ও নেতা তাকে শেল্টার দেয়ায় প্রভোস্ট স্যারও অসহায় হয়ে গিয়েছিলো। তাই আমরা তাকে বলতে গেছিলাম যে, সে যেন হল ছেড়ে দেয়।’
শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘ওয়াসিফ আল আবরার কলেজে থাকা অবস্থায় পাবনার বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিল। জুলাই আন্দোলনেও তার ভূমিকা বেশ বিতর্কিত ছিল। তার প্রোফাইলে জুলাই আন্দোলন কেন্দ্রিক উল্লেখযোগ্য কোনো নিউজও শেয়ার করতে দেখা যায়নি। চারদিকে যখন আন্দোলনকারীরা একে একে শহিদ হচ্ছিল তখন সে হাসিমাখা ছবি পোস্ট আপলোড দেয়।’
এদিকে গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা শাখা ছাত্রলীগের অফিস ভাংচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। এতে একটি সংবাদে আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ বলে আখ্যা দেন তিনি। এছাড়াও ৫ আগস্টের পরেও বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জমানো জামাকাপড় ‘হরিলুট’ বলে প্রচার করছে বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার ওয়াসিফ আল আবরার বলেন, “আমাকে ৭/৮ জন লোক গিয়ে বলে ‘২ মিনিট সময় হল থেকে বের হবি।’ আমি তখন জিনিসপত্র নিচ্ছিলাম। আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে তারা বলে ‘আপনি হলুদ সাংবাদিক পরে আবার ঝামেলা করবেন’ বলে আমার ফোন নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ৮/৯ জন মিলে রুমের লাইট বন্ধ করে আমাকে মারধর করে।”
ইবি মেডিকেল (উপপ্রধান মেডিকেল অফিসার) ডাক্তার মো. পারভেজ হাসান জানান, আশা করা যায় তেমন গুরতর কিছু হয়নি। মেডিকেলে নিয়ে আসার পর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পরে ১ ঘণ্টার মত নেবুলাইজার দিয়ে রাখা হয়। অতপর অবস্থা আগের থেকে উন্নত হলে রাত ২ টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এদিকে মেডিকেলে রোগীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক সাকিব আসলামকে বাধা দেয় এবং হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কতিপয় সমন্বয়কের বিরুদ্ধে।
পরে রাত দেড়টার দিকে শাখা সহ-সমন্বয়ক সহ শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপ উপাচার্যের সামনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। মারমুখী অবস্থান সৃষ্টি হলে প্রক্টরিয়াল বডি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত হন। দুই পক্ষকে নিয়ে রাতভর আলোচনায় বসেন প্রক্টরিয়াল বডি।
শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এটিএম মিজানুর রহমান জানান, ‘ওই ছেলেটা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে হলে ছিল। হলে বৈধ সিট ছিল না৷ তাই লিগালি সময় নিয়ে বের করে দেয়া হয়েছিল। আবারও কেন হলে অবস্থান করলো এটা তদন্ত করে দেখা যাবে। এর আগেও আমি তার রুমমেটকে কল দিয়ে রিকুয়েস্ট করেছিলাম যে, সে যেন হলে অবস্থান না নেন।’
সবার বক্তব্য শুনে সকাল ৮ টায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘দুই পক্ষের কথা শুনেছি। সমন্বয়কদের মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে- একটা হল কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ আখ্যা, ইবিতে সাংবাদিককে মারধর

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙ্গার পর জুলাই আন্দোনকারীদের ‘দুবৃত্ত’ আখ্যা দেওয়ার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাস সাংবাদিক ওয়াসিফ আল আবরারকে মারধর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কলেজে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও তোলা হয়।
আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন এন্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান আবাসিক হলে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর নিরাপত্তার স্বার্থ বিবেচনায় তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
হল সূত্রে জানা গেছে, আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলে অবৈধভাবে দীর্ঘদীন ধরে অবস্থান করছিলেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রভোস্টকে দেখিয়ে তাকে নামানোর দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রভোস্ট তাকে হল থেকে নামিয়ে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে আবারও ওই হলে অবস্থান করতে শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নেননি। পরে রাত ১২ টা ২০ মিনিট নাগাদ তাকে হল থেকে নেমে যেতে বলা হলে এক পক্ষ প্রতিরোধ করায় শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের মধ্যে ঠেলাঠেলি সহ শুরু হয় গণ্ডগোল।
ঘটনাস্থলে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রভোস্ট হল থেকে বের হয়ে যেতে বললেও আবরার হল থেকে বের হননি। কতিপয় সমন্বয়ক ও নেতা তাকে শেল্টার দেয়ায় প্রভোস্ট স্যারও অসহায় হয়ে গিয়েছিলো। তাই আমরা তাকে বলতে গেছিলাম যে, সে যেন হল ছেড়ে দেয়।’
শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘ওয়াসিফ আল আবরার কলেজে থাকা অবস্থায় পাবনার বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিল। জুলাই আন্দোলনেও তার ভূমিকা বেশ বিতর্কিত ছিল। তার প্রোফাইলে জুলাই আন্দোলন কেন্দ্রিক উল্লেখযোগ্য কোনো নিউজও শেয়ার করতে দেখা যায়নি। চারদিকে যখন আন্দোলনকারীরা একে একে শহিদ হচ্ছিল তখন সে হাসিমাখা ছবি পোস্ট আপলোড দেয়।’
এদিকে গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা শাখা ছাত্রলীগের অফিস ভাংচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। এতে একটি সংবাদে আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ বলে আখ্যা দেন তিনি। এছাড়াও ৫ আগস্টের পরেও বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জমানো জামাকাপড় ‘হরিলুট’ বলে প্রচার করছে বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার ওয়াসিফ আল আবরার বলেন, “আমাকে ৭/৮ জন লোক গিয়ে বলে ‘২ মিনিট সময় হল থেকে বের হবি।’ আমি তখন জিনিসপত্র নিচ্ছিলাম। আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে তারা বলে ‘আপনি হলুদ সাংবাদিক পরে আবার ঝামেলা করবেন’ বলে আমার ফোন নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ৮/৯ জন মিলে রুমের লাইট বন্ধ করে আমাকে মারধর করে।”
ইবি মেডিকেল (উপপ্রধান মেডিকেল অফিসার) ডাক্তার মো. পারভেজ হাসান জানান, আশা করা যায় তেমন গুরতর কিছু হয়নি। মেডিকেলে নিয়ে আসার পর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পরে ১ ঘণ্টার মত নেবুলাইজার দিয়ে রাখা হয়। অতপর অবস্থা আগের থেকে উন্নত হলে রাত ২ টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এদিকে মেডিকেলে রোগীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক সাকিব আসলামকে বাধা দেয় এবং হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কতিপয় সমন্বয়কের বিরুদ্ধে।
পরে রাত দেড়টার দিকে শাখা সহ-সমন্বয়ক সহ শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপ উপাচার্যের সামনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। মারমুখী অবস্থান সৃষ্টি হলে প্রক্টরিয়াল বডি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত হন। দুই পক্ষকে নিয়ে রাতভর আলোচনায় বসেন প্রক্টরিয়াল বডি।
শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এটিএম মিজানুর রহমান জানান, ‘ওই ছেলেটা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে হলে ছিল। হলে বৈধ সিট ছিল না৷ তাই লিগালি সময় নিয়ে বের করে দেয়া হয়েছিল। আবারও কেন হলে অবস্থান করলো এটা তদন্ত করে দেখা যাবে। এর আগেও আমি তার রুমমেটকে কল দিয়ে রিকুয়েস্ট করেছিলাম যে, সে যেন হলে অবস্থান না নেন।’
সবার বক্তব্য শুনে সকাল ৮ টায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজামান বলেন, ‘দুই পক্ষের কথা শুনেছি। সমন্বয়কদের মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে- একটা হল কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি