আন্তর্জাতিক
বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকার হুমকির মুখে: জাতিসংঘ মহাসচিব

বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকার ক্রমশ হুমকির মুখে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে জাতিসংঘের এক অনুষ্ঠানে গুতেরেস বলেন, নারীদের প্রতি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলা বৈষম্য এখন নতুন নতুন হুমকির কারণে আরও প্রকট হচ্ছে। এই সংকট উত্তরণে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, যেহেতু অগ্রগতি বিপরীতমুখী তাই বিশ্ব এভাবে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তিনি বলেন, নারীদের বিরুদ্ধে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা বৈষম্য নতুন হুমকির মাধ্যমে আরও প্রকট হচ্ছে। ডিজিটাল উপকরণগুলো একদিকে যেমন সম্ভাবনাময়, অন্যদিকে এগুলো নারীদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে পক্ষপাতদুষ্টতা আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং হয়রানিকে উসকে দিচ্ছে।
নারীদের শরীর এখন রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অনলাইনে সহিংসতা বাস্তব জীবনের সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। আমরা সমান অধিকারের ধারণাকে সাধারণীকরণের পরিবর্তে, পুরুষতন্ত্র ও নারী বিদ্বেষের প্রসার ঘটতে দেখছি। এসব চলতে থাকলে নারীরা আরও পশ্চাৎপদই হতে থাকবে। নারী অবস্থার পরিবর্তনে এগুলোই সবচেয়ে বড় বাধা বলে জানান জাতিসংঘ প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। সমান অধিকারকে মূলধারায় আনার পরিবর্তে, আমরা উগ্রতা ও নারী বিদ্বেষকে মূলধারায় আনতে দেখছি বলে মন্তব্য করেন গুতেরেস।
গুতেরেস বিশ্বকে এই আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, লিঙ্গ সমতা শুধু ন্যায্যতার বিষয় নয়, বরং এটি ক্ষমতার বিষয়। এটি নির্ধারণ করে কারা সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে বসবে, আর কারা বাইরে থাকবে। এটি সেই কাঠামোগুলো ভেঙে ফেলার ব্যাপার যা বৈষম্যকে টিকিয়ে রাখে। এবং এটি একটি উন্নত বিশ্ব গড়ার ব্যাপার, যা সবার জন্য কল্যাণকর হবে। গুতেরেসের বক্তব্য অনুসরণ করে জাতিসংঘে নারী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহোস বলেন, এই বছরের মতো লিঙ্গ সমতার আহ্বান আর কখনো এত জরুরি ছিল না। তাদের পথের বাধাও এত স্পষ্ট ছিল না। তবে, তাদের সংকল্প আগের চেয়ে আরও দৃঢ় ও অটল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ভারতে ১০ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওডিশা থেকে বাংলাদেশি ১০ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার (৯ মার্চ) ওডিশা পুলিশের অপরাধ দমন শাখার স্পেশাল টাস্কফোর্সের সদস্যরা ওই বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করেছেন।
দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওডিশার রাজধানী ভুবনেশ্বরের রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে ১০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।
পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের সদস্যরা যে ১০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছেন- তাদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, তিনজন নারী এবং একজন শিশু। রোববার সকালের দিকে ভুবনেশ্বর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশ বলেছে, ওই বাংলাদেশিরা অবৈধ উপায়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন। তাদের কাছে কোনও বৈধ নথিপত্র পাওয়া যায়নি। তারা গত কয়েক দিন ধরে ভুবনেশ্বর রেলওয়ে স্টেশন অবস্থান করছিলেন। এ সময় অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে সাতটি মোবাইল ফোন, বাংলাদেশি মুদ্রা জব্দ করেছে এসটিএফ।
ওডিশা পুলিশের একাধিক সূত্র বলেছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা আসামের ধুবরি জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অবৈধ উপায়ে ভারতে প্রবেশ করেন। পরে সেখান থেকে তারা ওডিশায় পৌঁছান। তাদের কাছে কোনও বৈধ নথিপত্র পাওয়া যায়নি।
ওই বাংলাদেশিরা কয়েক দিন ধরে ভুবনেশ্বর রেলওয়ে স্টেশনে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে ওডিশা পুলিশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ইয়েমেনে নৌকা ডুবে ১৮০ জনের বেশি নিখোঁজ

জিবুতি ও ইয়েমেনের মধ্যে অভিবাসী বহনকারী চারটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে ১৮০ জনেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা (আইওএম) এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটি নৌকাগুলোতে থাকা ব্যক্তিদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়নি, তবে প্রায়ই ইথিওপীয়রা উপসাগরীয় দেশগুলোতে কাজ খুঁজে পেতে বা সংঘাত থেকে বাঁচতে এই পথটি ব্যবহার করে।
আইওএম জানিয়েছে, গত রাতে জিবুতি ও ইয়েমেন উপকূলে চারটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ১৮০ জনেরও বেশি অভিবাসী নিখোঁজ রয়েছে।
আইওএম এর তথ্য অনুযায়ী, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন রুটগুলোর মধ্যে একটি। ২০২৪ সালে ইয়েমেনে ৬০ হাজারেরও বেশি অভিবাসী আগমনের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
জানুয়ারীতে ইয়েমেন উপকূলে নৌকাডুবে বিশ জন ইথিওপীয় নিহত হয়েছিল।
আইওএম জানিয়েছে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এই পথে ৫৫৮ জন মারা গেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশ নিয়ে ভারত-যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা

সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়সহ বাংলাদেশ ও ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন।
এছাড়া বৈঠকে বর্তমান বিশ্বের ভূরাজনৈতিক নানা ইস্যুও ভারতীয় ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় স্থান পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাজ্যে সরকারি সফরে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। দুই মন্ত্রী ইউক্রেন, বাংলাদেশ, পশ্চিম এশিয়া এবং কমনওয়েলথ নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জয়শঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ বলেছেন।
অবশ্য বাংলাদেশ বিষয়ে তারা ঠিক কী আলোচনা করেছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জয়শঙ্কর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া ওই পোস্টে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইউক্রেন ইস্যু, পশ্চিম এশিয়া, বাংলাদেশ, কমনওয়েলথসহ নানা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছি। অনিশ্চিত ও অস্থির বিশ্বে ভারত-যুক্তরাজ্য স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পথে অবদান রাখছে।”
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি ভারতেই নির্বাসনে রয়েছেন। গত বছরের আগস্টে পদচ্যুত হয়ে ভারতে পালানোর পর হাসিনাকে ঘিরে কিছু জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছিল।
শোনা গিয়েছিল, হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য তাকে আশ্রয় দেয়নি। ইউরোপের এই দেশটি সেসময় বলেছিল, এই পরিস্থিতিতে কাউকে আশ্রয় দেওয়ার কোনও আইনি ব্যবস্থা তাদের নেই।
এছাড়া শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশ ছেড়ে পলায়নের পর তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ বের হয়ে আসছে এবং দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তাদের একজন ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নী।
বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর গত জানুয়ারি মাসে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। মূলত টিউলিপ ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং পদত্যাগের আগে তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া।
অবশ্য লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে।
এসবের মধ্যেই দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টিও টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কানাডা, মেক্সিকোর ওপর শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) কানাডা ও মেক্সিকোর জন্য আরোপিত কঠোর শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশ্ববাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা ওই তিন দেশের ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর, বিশ্ববাজারে তীব্র মন্দাভাব দেখা দেয়। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দেবে ও স্বল্পমেয়াদে মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে।
যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই শুল্কের ফলে বাজারের অস্থিরতার সঙ্গে তার সিদ্ধান্তের সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি উত্তর আমেরিকার আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির আওতাভুক্ত আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেন।
এছাড়া, ট্রাম্প কানাডার পটাশ সারের ওপরও শুল্ক কমিয়ে দেন। পটাশ হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সার, যা যুক্তরাষ্ট্রে কম উৎপাদিত হয়।
এই শুল্ক বিরতি ২ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এর একদিন আগে গাড়ি নির্মাতা শিল্পের জন্যও সাময়িক শুল্ক ছাড় ঘোষণা করেছিল হোয়াইট হাউজ।
ট্রাম্প বলেন, এই সিদ্ধান্ত আমাদের মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারীদের জন্য পরিস্থিতি আরও অনুকূল করে তুলবে।
তবে, তিনি সতর্ক করে বলেন, ২ এপ্রিলের পর নতুন শুল্ক কাঠামো ঘোষণা করা হবে। ওইদিন ‘প্রত্যুত্তরমূলক শুল্ক’ নীতির আপডেট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প, যা যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে অন্যায্য বাণিজ্যিক চর্চার বিরুদ্ধে নেওয়া হবে।
এছাড়া ট্রাম্প বলেন, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই, যা আগামী সপ্তাহে কার্যকর হবে।
অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও বিশ্লেষকদের প্রতিক্রিয়া
ক্যাটো ইনস্টিটিউটের জেনারেল ইকোনমিক্সের সহ-সভাপতি স্কট লিন্সিকোম বলেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত “অর্থনৈতিক বাস্তবতার স্বীকৃতি”।
তিনি বলেন, শুল্ক সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন ঘটায়, শুল্কের বোঝা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর পড়ে, এবং বাজার এই অনিশ্চয়তা পছন্দ করে না।
শুল্কের রাজনৈতিক ও কৌশলগত উদ্দেশ্য
ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকে ট্রাম্প একাধিকবার মিত্র ও প্রতিপক্ষদের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান বাণিজ্য অংশীদার কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে অবৈধ অভিবাসন ও মাদক চোরাচালান ঠেকানোর যুক্তি দেন।
তবে, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ ফেন্টানিল সরবরাহের ১% এরও কম যোগান দেয় এবং এটি অবৈধ অভিবাসনের তুলনামূলকভাবে ছোট উৎস বলে মার্কিন ও কানাডিয়ান সরকারি তথ্য অনুযায়ী জানা যায়।
এদিকে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের ফেন্টানিল সরবরাহে ভূমিকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এটি মূলত অভ্যন্তরীণ সমস্যা, যা শুল্ক দিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির নতুন রেকর্ড
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্পের শুল্ক মূল্যস্ফীতি বাড়াবে না, এবং দাম বৃদ্ধির প্রভাব ‘সাময়িক’ হবে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি জানুয়ারিতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির বাণিজ্য ঘাটতি ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৩ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সোনার আমদানি বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ীরা সম্ভাব্য শুল্কের আগে অতিরিক্ত পণ্য আমদানি করায় এই ঘাটতি আরও বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচারে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব কমে যাওয়ায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে (জিটিআই) আগের বছরে চেয়ে ২০২৫ সালে তিন ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছর এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩২তম থাকলেও চলতি বছর তা ৩৫তম।
বুধবার (৪ মার্চ) অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের (আইইপি) প্রকাশিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক-২০২৫-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০১২ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের প্রধান বৈশ্বিক প্রবণতা ও বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে স্কোর গণনায় পাঁচ বছরের সময়কাল ধরে প্রত্যেক বছর এই সূচক প্রকাশ করে আইইপি।
ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের ১২তম সংস্করণে বলা হয়েছে, ভারত, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক গড়ের তুলনায় ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের কম প্রভাব দেখা গেছে।
জিটিআইয়ের ২০২৫ সালের সূচকে ৩ দশমিক ০৩ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। শূন্য থেকে ১০ স্কোরের হিসেবে কোনও দেশ শূন্য পেলে সেই দেশে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব নেই বলে ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া কোনও দেশ ১০ স্কোর পেলে সেই দেশে সন্ত্রাসবাদের সর্বাধিক প্রকোপ রয়েছে বিবেচনা করা হয়।
এ বছর বিশ্বের ১৬৩ দেশকে নিয়ে ১০০টি স্থান নির্ধারণ করেছে ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস। বাংলাদেশ ৩ দশমিক ০৩ স্কোর পেয়ে সূচকে ৩৫তম অবস্থানে রয়েছে। গত বছর বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের এই সূচকে বাংলাদেশ ৩২তম অবস্থানে ছিল।
বিশ্বজুড়ে এক বছরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা, হামলায় নিহত অথবা আহত ও সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মির পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের এই সূচক তৈরি করে ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস।
সিডনিভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান বলেছে, সন্ত্রাসবাদ এখনও বৈশ্বিক হুমকি হিসাবে রয়ে গেছে। বছরে অন্তত একটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে এমন দেশের সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ২০২৪ সালে ৫৮ থেকে বেড়ে ৬৬ হয়েছে।
সূচকে উন্নতি করা দেশের তুলনায় সন্ত্রাসবাদের অবনতি ঘটা দেশের সংখ্যা গত সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের ৪৫টি দেশে সন্ত্রাসবাদের অবনতির বিপরীতে উন্নতি ঘটেছে মাত্র ৩৪টি দেশে।
আইইপি বলেছে, গত বছর বিশ্বে চারটি প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের সহিংসতা আরও তীব্র করে তুলেছে। এর ফলে আগের বছরের তুলনায় প্রাণহানি বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ।
সূচকে হামলা ও প্রাণহানির হিসেবে এ বছর সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তকমা পেয়ে বুরকিনা ফাসো। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের কারণে যত সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, তার এক পঞ্চমাংশই বুরকিনা ফাসোতে। এরপরই রয়েছে পাকিস্তান ও সিরিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে সর্বোচ্চ গড় স্কোর পেয়েছে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল। গত এক দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের শীর্ষ অঞ্চলের অবস্থান ধরে রেখেছে দক্ষিণ এশিয়া।
সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক সূচকে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের খারাপ অবস্থানের পেছনে প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যাওয়াকে চিহ্নিত করেছে আইইপি। যদিও এক দশক আগের তুলনায় এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার উন্নতি ঘটেছে। কেবল পাকিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশই এই সূচকে উন্নতি করেছে।
আইইপি বলেছে, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হ্রাস পাওয়ার ফলে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের উন্নতি ঘটেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে জিটিআইয়ের সবচেয়ে খারাপ স্কোর আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের। বিশ্বে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির দশটি দেশের তালিকায় রয়েছে ওই দুই দেশ।
সূচকে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে সন্ত্রাসবাদী দেশ পাকিস্তান। দেশটির স্কোর ৮ দশমিক ৩৭৪। একই সঙ্গে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পরই রয়েছে আফগানিস্তান; ৭ দশমিক ২৬২ স্কোর নিয়ে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে দ্বিতীয় রয়েছে দেশটি। এছাড়া ৬ দশমিক ৪১১ স্কোর নিয়ে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে ১৪তম স্থানে আছে ভারত।
আইইপির সূচকে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সাতটি দেশের মধ্যে কেবল ভুটান এবং শ্রীলঙ্কার জিটিআই স্কোর শূন্য। এর অর্থ গত পাঁচ বছরে দেশ দু’টিতে সন্ত্রাসী হামলার রেকর্ড নেই। এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদে তৃতীয় সর্বনিম্ন প্রভাবিত দেশ নেপাল। দেশটির স্কোর ১ দশমিক ১১৩। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে নেপালের অবস্থান ৬৮তম।