আইন-আদালত
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ৩ মার্চ

ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৩ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার (২ মার্চ) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। অপরপক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, মুনতাসির আহমেদ।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদনের শুনানির জন্য ২ মার্চ নির্ধারণ করেন আদালত।
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে আদালত এ রায় দিয়েছেন। একইসঙ্গে আদালত মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরে এই রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
গত ১৯ নভেম্নর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এ আদেশ দেন। পাশাপাশি রুল জারি করে আদালত।
গত ৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগপ্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

আইন-আদালত
বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরল সুপ্রিম কোর্টে

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ অবৈধ এবং বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আইনজীবীরা জানান, এ রায়ের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরেছে। এ ছাড়া এ রায়ের ফলে সুপ্রিম কোর্টের পৃথক সচিবালয় স্থাপনে কোনো বাধা থাকল না।
এদিন সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায় ঘোষণা শুরু হয়।
গত ১৩ আগস্ট বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
গত ২৩ এপ্রিল বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।
বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। গত ২০ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।
এর আগে মামলাটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। তবে গত ২৪ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সেই বেঞ্চটি ভেঙে যায়। এরপর সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য নতুন বেঞ্চ নির্ধারণের আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি গত বছরের ২৫ আগস্ট ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে মূল সংবিধানের ১৯৭২ সালের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান-বিদ্যমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না।
বর্তমানে প্রযোজ্য (সংশোধিত) সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে।’ কিন্তু ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, ‘বিচারকর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্বে নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকবে।’
বিদ্যমান সংবিধানের অনুযায়ী বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি ও শৃঙ্খলাবিধির ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব রয়েছে, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কাফি
আইন-আদালত
বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে হতে পারে তৃতীয় ট্রাইব্যুনাল: আইন উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ আরও গতিশীল করতে তৃতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে বিচারকাজ সন্তোষজনকভাবে এগোচ্ছে এবং মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনে নতুন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হতে পারে।
সংসদ নির্বাচনে ভোটকক্ষে নারী-পুরুষ ভোটার সংখ্যা বাড়লো
পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন গৃহায়ন, গণপূর্ত ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এবং চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ ইতোমধ্যেই জোরেশোরে শুরু হয়েছে। একাধিক মামলায় অভিযোগ গঠন সম্পন্ন হয়েছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িত বেশ কয়েকটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বর্তমানে ট্রাইব্যুনাল-১ ও ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিচার কার্যক্রম চলছে। তবে মূল ভবনের সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারকাজ টিনশেড ভবনে পরিচালিত হচ্ছে।
আইন-আদালত
জবানবন্দি দিতে ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ জবানবন্দি দেবেন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
তিনি তার নিজের মামলায় সাক্ষ্ গ্রহণের ১১তম দিনে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন। প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১- এ ক্যামেরা ট্রায়ালে জবানবন্দি দেবেন তিনি। এ সময় কোনো সাংবাদিক উপস্থিত থাকতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এই সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে সকালে তাকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান।
আজ মামলার ১১তম দিনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা রয়েছে। এর আগে এই মামলায় ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের এই মামলার পলাতক আসামি।
এর আগে, ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনালে নিজের দায় স্বীকার করেন শেখ হাসিনার এ মামলায় স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজসাক্ষী হতে চান চৌধুরী মামুন। একইসঙ্গে নিজের সব দায় স্বীকার করেন।
এ মামলায় গত ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
এরও আগে গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।
আইন-আদালত
হাইকোর্টের আদেশ চেম্বারে স্থগিত, ডাকসু নির্বাচনে বাধা নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিকেল ৪টা ৪২ মিনিটে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। এর ফলে ডাকসু নির্বাচন হতে আইনগত আর কোনো বাধা নেই বলে জানান তিনি।
এর আগে আজ বিকেল ৪টার পরে ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট।
শিক্ষার্থী ঐক্যজোট মনোনীত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এসএম ফরহাদ হোসেনের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট রুলসহ ওই আদেশ দিয়েছিলেন।
এর আগে ডাকসু নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হয়। তপশিল অনুযায়ী, ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে। এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। আর সদস্যপদে সবচেয়ে বেশি ২১৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এবার মোট ৪৭১ প্রার্থী ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়ায় বাদ পড়া ১০ প্রার্থী আপিল না করায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৮ প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। ফলে চূড়ান্তভাবে ৪৭১ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ১৯ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ১৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক ১১ জন ও ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে ২১৭ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আইন-আদালত
জামিন চাইবো না, আদালতের জামিন দেওয়ার ক্ষমতা নেই: লতিফ সিদ্দিকী

সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াতে তার স্বাক্ষরের জন্য যান অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। তখন লতিফ সিদ্দিকী তাকে বলেন, আদালতের জামিন দেওয়ার ক্ষমতা নেই, এজন্য ওকালতনামায় স্বাক্ষর করবো না।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এদিন রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না, মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খাঁন, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
এদিন সকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের এজলাসে তোলা হয়। এসময় আসামিদের হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল। এজলাসে নিয়ে তাদের আসামির কাঠগড়ায় রাখা হয়।
এসময় শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন) পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ভয়াবহ অবস্থা। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট খুলি। এসময় পুলিশ সদস্যরা তাদের জ্যাকেট খুলে দেন। কাঠগড়ায় হাস্যেজ্জ্বল ছিলেন লতিফ সিদ্দিকী।
পরে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটের দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক এজলাসে ওঠেন। তখন আদালতের অনুমতি নিয়ে আইনজীবীরা ওকালতনামায় আসামিদের স্বাক্ষর নেন। লতিফ সিদ্দিকী বাদে অধিকাংশ আসামিই ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন। লতিফ সিদ্দিকীর কাছে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সাইফ স্বাক্ষর নিতে গেলেও তিনি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেননি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখিসহ অন্য আইনজীবীরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামিদের প্রত্যেকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে নেওয়ার পথে সাংবাদিকরা লতিফ সিদ্দিকীর নিকট জানতে চান তার কিছু বলার আছে কি না? তখন লতিফ সিদ্দিকী মাথা নাড়িয়ে জানান, তিনি কিছু বলবেন না।
শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সাইফ জানান, লতিফ সিদ্দিকীর জামিনের আবেদন করতে যখন তার কাছে ওকালতনামা নিয়ে স্বাক্ষর করতে যাই, তখন তিনি বলেন, আদালতের জামিন দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তার কাছে কেন জামিন চাইবো? আমি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করবো না, জামিন চাইবো না।