জাতীয়
হাসিনার আমলে সব গুম-খুনের বিচার করতে হবে: দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের

পিলখানায় ৫৭ জন সেনা অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা, পলাতক হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে দেশে যত গুম, খুনসহ নৃশংসতা হয়েছে তার বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাঝে এখনো যারা ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। একই সাথে প্রতিটি সেক্টরে সংস্কার করে এরপর জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে ‘ন্যায় বিচার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা আন্দোলন’ শিরোনামে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শেখ হাসিনার শাসনামেল গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার পরিবারের সদস্যরা এ দাবি করেন।
সমাবেশে নেক্সাস ডিফেন্স এন্ড জাস্টিজর প্রধান নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাসান নাসিরের (অব.) সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পারওয়ার বলেন, আজকে বক্তব্য দিয়ে জাতিকে জানানোর প্রয়োজন নেই ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার তান্ডব, ২০০৯ সালের পিলখানার নির্মম নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড, ২০১০ সাল তথাকতিথত মানবাতাবিরোধী অপরাধের নামে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের নামে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ মানুষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যা চালানো, আল্লামা সাইদীর রায়ের পর লোকককে হত্যা করা, এরপর ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে হাজার হাজার আমদের সোনার টুকরোকে গুলি করে হত্যা করা, আয়না ঘরে গুম, ক্রসফায়ার সমস্ত হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড শেষ হাসিনা। এই কথা চিৎকার করে বলার প্রয়োজন নেই দেশ এবং সারা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত সমস্ত হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা এত নিষ্ঠুর এবং ফ্যাস্টি যে তার ক্ষেত্রে শুধু ফ্যাস্টি শব্দটি প্রযোজ্য নয়। তাকে আমি স্যাডিস্ট বলি। স্যাডিস্ট ইংরেজিতে তাকে বলা হয় যে খুন, গুম নিষ্ঠুরতা এবং রক্তপাত দেখে পাষান হৃদয় একটুও কাপেনা, বরং উপভোগ করে।
তিনি আরও বলেন, আজকে বিভিন্ন মহল থেকে হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য, সেই খুনি মাস্টারমাইন্ডকে আবার রাজনীতে আনার জন্য নিজের পদপদবিকে রক্ষা করার জন্য অথবা তার আমলে সুবিধা ভোগ করে পিলখানার মতো নৃশংসতাকে আড়াল করার জন্য যারা বাবছেন তাদের ধিক্কার জানাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাড়ে ৬মাস পার করছেন, আমরা জনি খুনি সরকারের কাছে কোনোদিন ন্যায় বিচার পেতাম না। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে আমরা অবশ্যই তার কাছে ন্যয় বিচার প্রত্যাশা করি। ফলে বিলম্ব হলেও আজকে যে কমিশন গঠন করা করা হয়েছে বিডিআর, পিলখানা এবং সেনা হত্যাকান্ডে আওয়ামী লীগ এবং তাদের প্রেতাত্নাদের কী ভূমিকা ছিল আধিপত্ববাদী বিদেশি শক্তির কি ভূমিকা ছিল এসব তদন্ত করে জাতির কাছে এই কমিশনকে সেই তথ্য দিতে হবে। বিডিআর হত্যাকান্ডের পেছনে আধিপত্তবাদি শক্তির কী ভূমিকা ছিল তা প্রকাশ করতে হবে।
‘ফ্যাসিবাদি সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের সাড়ে সাত বছর কারাগারে ছিলাম। হাজার হাজার বিডিআর জওয়ানের কাছে শুনেছি পিলখানায় কিভাবে হত্যাকান্ড চালিয়েছে, লাশগুলো কিভাবে কেটে ড্রেনে ফেলে দিয়েছে। তারা তখন হিন্দিতে কথা শুনেছে। পরিচয় গোপন করতে তারা মুখোস পরে হত্যাকান্ড চালিয়েছে। ফলে এই হত্যাকান্ড নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থ হলো বিচার প্রক্রিয়াকে চাপা দিতে চাওয়া। অন্তবর্থী সরকার যে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে তারা বিলম্ব না করে এর পেছনে রাজনৈতিক শক্তি জড়িত ছিল কি না, বিদেশি শক্তির কি হাত ছিল ফ্যাসিবাদি খুনি হাসিনার কি ভূমিকা ছিল জাতির সামনে তার শ্বেতপত্র অবিলম্বে প্রকাশ করুন। কারাগারে এখনো নিরিহ, নিরপরাধ ব্যক্তি বন্দি হয়ে আছে যারা একেবারেই নিষ্পাপ কিছু জানতো না। সেখানেও নিষ্ঠুরভাবে অনেককে হত্যা করা হয়েছে এরসাথে যারা জড়িত তাদের বিচার করতে হবে। বিচার হীনতার কারণে খুনগুমের মতো ঘটনা ঘটছে, আয়না ঘরের মতো নিষ্ঠুর নির্মম দৃশ্য সারা দুনিয়া দেখেছে। পূনরায় এধরণের লোমহর্ষক ঘটনার পূণরাবৃত্তি বাংলাদেশ হোক তা আমরা চাই না। এসব কারণে আজকে এগুলোর বিচার হওয়া প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আজকের এই মানবিক ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এবং স্পর্শকাতর এধরণের একটি সমাবেশে সংহতি ও সমবেদনা জানানোর জন্য উপস্থিত হয়েছি। কেউ আসুক বা না আসুক বাংলাদেশের দেশ্রপমিক মানুষ এই সমাবেশের আয়োজকদের পাশে থাকবে ইনশা আল্লাহ। এসময় সাংবাদিকদেরকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, স্বামী হারা, সন্তান হারা, মানুষের আকুতি এবং মানবিক ঘটনা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জাতির কাছে তুলে ধরুন। রাষ্ট্রের কোনো অংশ থেকে বিভ্রান্তিকর কোনো কথা বলে থাকলে সেই কথার সত্যতা তুলে ধরুন। জাতির প্রতিবাদের ভাষা আপনাদের মাধ্যমে প্রকাশিত হোক সেই প্রত্যাশা রাখি।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমিও একজন ভুক্তভোগী, আমিও শেখ হাসিনার নিষ্পেশনের শিকার, আমাকেও রাজপথে গুলি করা হয়েছে। সামনে থেকে গুলি ঢুকে পেছন থেকে বের হয়ে গেছে। আমি তিনবার গুমের শিকার হয়েছি। অথচ অনেক মা এখনো তার সন্তানের খোঁজ পাননি। তিনি বলেন, পিলখানায় ৫৭ জন চৌকস সেনা অফিসারকে হত্যার আসামি শেখ হাসিনা তাকে যদি ধরা যায় জিজ্ঞাসাবাদ করা যায় তাহলে কেবল আসল রহস্য উদঘাটিত হবে। আমরা ডলপালারে চেয়ে পৃকৃত খুনিকে ধরতে পারলে সব হত্যার তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাকে বারত থেকে ফিরিয়ে এনে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার বিচার করতে হবে। তাকে বুঝিয়ে দিত হবে কোনো মায়ের কোল খালি করলে তার পরিণতি কেমন হতে পারে। সেই মায়ের কত কষ্ট হতে পারে। শেখ হাসিনার সাথে তার সাঙ্গপাঙ্গ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চিহ্নিত সদস্য যারা শেখ হাসিনাকে সহযোগীতা করেছে তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র শামীম সাঈদী বলেন, পিলখানার ঘটনা সম্পর্কে শেখ হাসিনার আগে থেকেই জানা ছিল। আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলায়, ভারতের বিরোধীতা করায় পরিকল্পিতবাবে হত্যা করা হয়েছে। সারা জীভন যিনি মানবতার পক্ষে কথা বলেছেন আর ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার সাঙ্গপাঙাগরা তাকেই বলেছে মানবতা বিরোধী। তিনি বলেন, আল্লামা সাইদীর স্কাইপ কেলেঙ্কারির মাধ্যমে স্পষ্ট যে কিভাবে মিথ্যা কথা বলে আদালত পরিচালিথ হতো।
ইল আহমদ মাবরুর বলেন, আমি দেখেছি কিভাবে একটি পারবার নিশেষ হয়ে যায়। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.)আবদুর রহিমের পরিবারকে আমি নি:শেষ হেয় যেতে দেখছি। একজন মানুষ ফ্যাসিবাদি শাসনের শিকার হলে পুরো পরিবার কিভাবে কত কষ্ট নিয়ে জীবন কাটে আমি দেখছি। এখনো অনেকেই তাদের স্বজনদের ফিরে পায়নি। পিলখানার ট্রাজেডিকে সেনাবহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চারিয়ে আসছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা।
সভাপতির বক্তভ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাসান নাসির (অব.) বলেন, আমরা ২০০৬ সাল থেকে গুম, খুন ও হত্যাকান্ডের শিকার যারা আমরা সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার চাইতে এখানে সমবেত হয়েছি। তিনি বলেন, নেক্সাস ডিফেন্স এন্ড জাস্টিজ এটি একটি নির্দর্লী প্রতিষ্ঠান। অবসরপ্রাপ্ত নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা আমাদের সাথে আছেন। গত ১৬ বছর ধরে গুম-খুনের শিকার পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হলে অবশ্যই এর বিচার হবে। আমরা জাতীয় শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা পেয়েছি কিন্তু এর মাঝে যে একটি বক্তব্য এসেছে তার সাথে একমত নই। আমরা যেসব তত্য পেয়েছি যেসব তথ্য ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে তার আলোকে বিচার করতে হবে। পিলখানায় ৩০ ঘন্টা ব্যপি তান্ডব চালিয়েছে এর বিচার করতে হবে।
এছাড়াও সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিয়েছেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের দফতর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ, গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান, আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান, শহীদ মেজর তানভীরের স্ত্রী তাসনুভা মাহা, মেজর রেজাউল করিম (বরখাস্ত), মেজর ফিরোজ ইফতেখার ফুয়াদ, লে. ক. হাসিনুর রহমান (বীর প্রতীক), কর্নেল মো> শাহ নুর রহমান, হেফাজতে ইসলাম এর সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুসা ইজহার, হেফাজতে ইসলাম এর যুগ্মসচিব মুফতী মনির হোসাইন, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ এর পুত্র মাবরুর,মায়ের ডাক (সানজিদা ইসলাম তুলি), কুটনীতিক ক্যাপ্টেন মারুফ জামান, গুম ফেরত বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল চৌধুরী প্রমুখ।

জাতীয়
ভ্যাট বাড়ালে একসময় শুধু প্যাকেট থাকবে, বিস্কুট-রুটি নয়

চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রস্তাবিত বাজেটে বিস্কুট ও পাউরুটির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে এই ভ্যাট প্রত্যাহার করা না হলে বিস্কুট-পাউরুটির দাম বাড়ানোসহ প্যাকেট আরও ছোট করার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বিস্কুট-পাউরুটির কাঁচামাল গম, তেল ও চিনির দাম বাড়লেও আমরা পণ্যের দাম বাড়াইনি। কিন্তু সরকার ভ্যাট বাড়িয়ে আমাদের ওপর বোঝা চাপিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত বিস্কুট-পাউরুটি দিয়ে নাশতা করে। এগুলোকে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে ঘোষণা করে ভ্যাট শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনে কোম্পানির ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি করা হোক, কিন্তু বিস্কুট-পাউরুটির ওপর নয়।
তিনি বলেন, আমাদের লজ্জা লাগে আরও কত প্যাকেট ছোট করবো। ভ্যাটের কারণে একদিন দেখা যাবে, শুধু প্যাকেট থাকবে কিন্তু বিস্কুট ও পাউরুটি থাকবে না।
শফিকুর রহমান বলেন, আগে যাকে আমরা ফ্যাসিস্ট বলতাম, তারাও পাউরুটি-বিস্কুটের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে গেছে। তাহলে এখন কেন ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট করা হলো? আমার প্রশ্ন তাহলে ফ্যাসিস্ট কারা? ভ্যাট প্রত্যাহার না হলে দাম বাড়বে তখন আমাদের দায়ী করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবাদ-সমালোচনা উপেক্ষা করে শ্রমজীবী, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের খাবার রুটি-বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাট চাপিয়ে সরকার প্রমাণ করছে, তারা পূর্ববর্তী সরকারের চেয়েও বৈষম্যমূলক ও পশ্চাৎপদ করনীতির দিকে যাচ্ছে, যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার সরাসরি পরিপন্থি।
শফিকুর রহমান বলেন, সরকার সুপারশপগুলো থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে, অথচ গরিবের নিত্যখাদ্যে ভ্যাট বাড়িয়েছে। ধনীদের জন্য ছাড়, আর গরিবের খাবারে কর কেন? এটা কেবল বৈষম্যমূলক নয়, বরং অনৈতিক এবং জাতিকে অপমান করার শামিল।
অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন মামুন বলেন, গবেষণা প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, শ্রমজীবী মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিদিন রুটি ও বিস্কুট খেয়ে তাদের ক্ষুধা নিবারণ করে। আবার বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, খাদ্যনিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশ ‘রেড জোনে’। এ পরিস্থিতির মধ্যে গরিবকে শোষণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের অনৈতিক ও পশ্চাৎপদ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
তিনি বলেন, আমরা অনেকবার বলেছি, যদি রাজস্ব সংগ্রহ করতে চান, তাহলে আমাদের শিল্পের চেয়ারম্যান ও ধনী ব্যবসায়ীদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করুন। কিন্তু ভ্যাট কেন? সরকার আসলে বিস্কুট-রুটি কোম্পানিকে ব্যবহার করছে গরিব শোষণের হাতিয়ার হিসেবে। আমরা এই ভূমিকায় যেতে চাই না। এ ভ্যাট পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে।
শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা মনে করি চাল-ডালের মতোই বিস্কুট রুটি নিত্যপ্রয়োজনীয়। তাহলে রুটি বিস্কুটে ভ্যাট কেন থাকবে?
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড মেনুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রজিৎ সরকার, কিষওয়ান ফুড ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আবদুর রহমান প্রমুখ।
জাতীয়
ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে সাড়ে ৬ লাখ আনসার

নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সারাদেশের ভোটকেন্দ্রে সাড়ে ৬ লাখ আনসার মোতায়েন থাকবে। এর জন্য নতুন করে এক লাখ ৮০ হাজার আনসার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে গাজীপুরের আনসার একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচনে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকবে। নাশকতার চেষ্টা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আনসার বাহিনীকে শক্তিশালী করতে সব সদস্যের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণে যারা টিকে থাকবে তারাই আনসার বাহিনীতে সেবা দেওয়ার উপযোগী বলে বিবেচিত হবে।
এসময় আনসারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপ-মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলাম, একাডেমি কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ নুরুল আবছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
নদী দূষণের সঙ্গে জড়িত কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা: রিজওয়ানা হাসান

নদী দূষণের সঙ্গে জড়িত শিল্প-কারখানার (ডায়িং ফ্যাক্টরি) বিরুদ্ধে শিগগির কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘রাজধানী ঢাকার টেকসই উন্নয়নে বিকেন্দ্রীকরণ ও পরিবেশ সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নদীগুলোকে শিল্প বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। ব্যবসায়িক লাভের জন্য বর্জ্য শোধন না করে সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। নদী সৃষ্টি করা সম্ভব নয়, তাই এর ধ্বংসও বরদাস্ত করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে সাভারে নেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল আসেনি। পরিবেশ রক্ষায় শুধু সরকার নয়, সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। নদী দূষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।
নদী দূষণে জড়িত ডায়িং ও ট্যানারি শিল্পের বিরুদ্ধে শিগগির অভিযান শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীকে দূষণমুক্ত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর অংশ হিসেবেই এসব শিল্পকারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাথর ও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের চলমান অভিযানে অনেকে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এখানে পাথর হলো খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের আর বালুর বিষয়টা ভূমি মন্ত্রনালয়ের। অথচ পরিবেশ বিষয়ক দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের মানুষও এর প্রতি সমর্থন দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যে উন্নয়ন নদী, কৃষি এবং মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, সেটি উন্নয়ন নয়। উন্নয়নের নামে এমন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না। পরিবেশ দূষণে শুধু সরকারের দায় নয়, শিল্প উদ্যোক্তাদেরও সমান দায়িত্ব রয়েছে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলামসহ বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
জাতীয়
কোনো ষড়যন্ত্র নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণা কিংবা কোনো ষড়যন্ত্রই নির্বাচনকে বানচাল করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের বিএডিসি হিমাগার পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নির্বাচনের আগে সব অস্ত্রই উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
সীমান্ত নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্র প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।
বাজার পরিস্থিতি নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বৃষ্টির কারণেই বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। বৃষ্টি কমলে সবজির দামও কমে আসবে। তবে আলুর দাম বাজারে অতিরিক্ত কমে যাওয়ার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জাতীয়
ঢাকায় পৌঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার

তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। শনিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। এর মধ্য দিয়ে ১৩ বছর পর পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকায় সরকারি সফরে এলেন।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে গত দুই দশকের শীতল সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালোচ গত এপ্রিলেই ঢাকা সফর করেন। সেই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় এবার ইসহাক দার এসেছেন।
তিনি দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক সম্পর্ককে পুনরায় সক্রিয় করার পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক যোগাযোগের বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই সফর পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, কারণ প্রায় ১৩ বছর পর কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ২৩-২৪ আগস্ট বাংলাদেশে একটি সরকারি সফর করবেন। ঢাকায় উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন।
এই বৈঠকগুলোতে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের সম্পূর্ণ পরিসর এবং বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ঢাকা সফরকালে ইসহাক দার বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তারই অংশ হিসেবে দার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের বাসায় দেখা করতে যাবেন। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাতের কথা রয়েছে দারের।