জাতীয়
সন্ধ্যার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থা টের পাবেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আজ রাত থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম টের পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আজ সন্ধ্যার পর থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ অন্য বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে যৌথবাহিনী রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টহল দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি বলবো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্যাটিসফ্যাক্টরি (সন্তোষজনক)। তবে এটার উন্নতি করার অবকাশ রয়ে গেছে। আগে কী হতো, যেমন বনশ্রীর ঘটনাটি জানতে জানতে দুদিন সময় লেগে যেতো, এখন সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা জেনে যায়।
তিনি বলেন, ছোটখাটো ঘটনা সবসময় আগেও ঘটেছে, দু-একদিন আগেও ঘটেছে। তবে ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে এজন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আমরা চাই না এ ধরনের একটি ঘটনাও ঘটুক।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কী নির্দেশনা দিয়েছেন- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আজকে রাতেই আপনারা দেখবেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অ্যাকটিভিটিস (কার্যক্রম) অনেক বেড়ে গেছে।
মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে, মানুষকে কীভাবে আশ্বস্ত করতে চান- এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, উপদেষ্টা হিসেবে আশ্বস্ত করার জন্যই তো আজকে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিং করলাম। তাদের একটি দিকনির্দেশনা দিয়েছি, তারা যেন সন্ধ্যার পর থেকেই কাজ শুরু করে। আপনারা এটি সন্ধ্যার পর থেকেই টের পাবেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পেয়েছি ৫৩ বছর, এই ৫৩ বছরে মনে হয় কোনো মিডিয়ায় এভাবে লিখে নাই যে, এ বছর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। আমি এক সময় সাংবাদিকতা করেছি, আমরাও কোনোদিন করিনি। এখন যে পরিস্থিতি আগের মতোই অবস্থা।
‘পুলিশকে আমি যে অবস্থায় পেয়েছিলাম, ওই অবস্থা থেকে আরও ভালো হয়েছে না? আমাদের কর্মকাণ্ড আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। তারা চেষ্টা করছেন তাদের কমান্ডাররাও চেষ্টা করছেন। এটি আস্তে আস্তে আরও ভালোর দিকে যাবে।’
অপারেশন ডেভিল হান্টের মধ্যে ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, এতে অপারেশন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্ট করা হচ্ছে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। রাজশাহীতে ঘটনা ঘটছে, সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেসব ওসি মামলা নিতে বিলম্ব করেছে, তাদের আমরা আইনের আওতায় এনেছি, সাসপেন্ড করে দিয়েছি।
‘অন্য সময় হলে কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি হতো না। আপনাদের রিপোর্টের কারণে আমরা অনেক সিনিয়র অফিসারকেও ক্লোজ করে নিয়ে এসেছি। আপনারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা চালিয়ে যান, আমরা খুব খুশি হবো।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগে কিছু (কারও বিপদ) হলে আমরা দৌড়ে যেতাম, এখন গিয়ে মানুষ ছবি উঠায়। আগের দিন হলে মানুষ দৌড়ে গিয়ে ওই লোকটাকে ধরে ফেলতো। মানুষের মন-মানসিকতাও একটু পরিবর্তন হয়েছে। একজন আরেকজনের বিপদে কিন্তু এগিয়ে আসতে হবে।
সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেটা ঠিকমতো কাজ করছে কি না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যাকে যে কাজ দেওয়া হয়েছে, তারা সেভাবেই তাদের কাজটি করে যাচ্ছেন।
এরপর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সভায় প্রথম সিদ্ধান্ত হয়েছে- ঢাকা এবং যেসব জায়গায় আমরা দেখছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হয়েছে, এসব জায়গায় টহল বাড়াবো। এই টহল আজকে সন্ধ্যা থেকে আপনারা দেখবেন। পুরো ঢাকা শহরেই দেখবেন।
তিনি বলেন, এজন্য যে জিনিসটি করা হচ্ছে, যৌথটহল হবে। পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ টহল হবে। জায়গায় জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটর করা হবে। তল্লাশির ব্যবস্থা করা হবে।
গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ইন্টেলিজেন্স উইং, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি- তারা তাদের মতো করে নজরদারি করবেন। সে অনুযায়ী আমরা অ্যাকশনে যাবো।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য কেনা হবে মোটরসাইকেল
শফিকুল আলম বলেন, ঢাকা যানজটপ্রবণ এলাকা। কোথাও কিছু ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে যেতে যেতে অনেক সময় দেরি হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে প্রচুর মোটরসাইকেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুত মোটরসাইকেলগুলো কেনা হবে। যেন তারা খুব দ্রুত মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে যেতে পারেন।
প্রেস সচিব আরও বলেন, পুলিশের ক্ষেত্রে আপাতত ১০০ মোটরসাইকেল কেনা হচ্ছে, পরবর্তী সময়ে আরও ১০০ কেনা হবে। অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর যারা আইনশৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত, তাদের জন্য আরও ৫০টি করে মোটরসাইকেল নেওয়া হবে।
সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কি না- এ বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সিরিয়াসলি নিচ্ছে বলেই আজকের মিটিংটা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যে এজেন্সিগুলো কাজ করে তারা সবাই এখানে ছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অসহযোগিতা দেখছেন না বলে জানিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব উন্নতি করা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। আমরা এ কাজটি সুচারুভাবে করতে চাই।
‘আমরা আশা করছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি খুব দ্রুত দেখবেন।’
কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, কক্সবাজারের এসপি এবং যে নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো রয়েছে তাদের কাছে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে, তারা প্রতিবেদন দিলে আপনারা জানবেন।

জাতীয়
৫ আগস্ট পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা

৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে সব পোশাকশিল্প কারখানা সাধারণ ছুটি হিসেবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি মালিকদের এই নির্দেশনা দেয়।
বিজিএমইএর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার প্রতি বছর ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ সাধারণ ছুটি হিসেবে ঘোষণা করেছে। যদিও শ্রম আইন অনুযায়ী বছরের শুরুতে নির্ধারিত ১১ দিনের উৎসব ছুটির মধ্যে এই দিন অন্তর্ভুক্ত ছিল না, তবুও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১১৮ এবং শ্রম বিধিমালা ২০১৫-এর বিধি ১১০ অনুযায়ী এই ছুটি বাধ্যতামূলক নয়, তবে সংগঠনটি বিশেষভাবে দিনটি সাধারণ ছুটি হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
জাতীয়
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব শাকিল আখতার

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সংযুক্ত) এস এম শাকিল আখতারকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। পদোন্নতির পর তাকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে।
রবিবার (৩ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে বদলি করা হয়। এরপর থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন সচিবের রুটিন দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
জাতীয়
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠের তারিখ, সময় ও স্থান প্রকাশ

বহুল আলোচিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠের তারিখ, সময় ও স্থান প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (৩ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পোস্টে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করা হবে।
পোস্টে বলা হয়, ছত্রিশ জুলাই—গত বছর এই দিনে পৃথিবী দেখেছিল এক অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান, যার ফলে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল ফ্যাসিস্ট। বহু শহীদের রক্ত ও যোদ্ধাদের ত্যাগের পথ ধরে পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছিল। পথে পথে ছিল উল্লাসমুখর জনতার জোয়ার। বাংলাদেশের বহু রাস্তায় আবেগাপ্লুত মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন। এক বছর পর আবার ফিরে এসেছে ছত্রিশ জুলাই। এই দিনে ঘোষিত হতে যাচ্ছে জাতির আকাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। এই উপলক্ষে সারা দিনব্যাপী আয়োজন থাকছে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।
পোস্টে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ৫ আগস্ট ‘৩৬ জুলাই উদ্যাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানসূচি যুক্ত করা হয়েছে। সূচি অনুযায়ী, অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা ১১টায়। নানা অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় বিকেল ৫টায় ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। অনুষ্ঠানে সবশেষ আয়োজন হিসেবে রাত ৮টায় থাকছে আর্টসেল-এর গান।
অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় থাকছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আর সহযোগিতায় থাকছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়।
বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ঘোষণাপত্রের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলগুলো সম্মত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও লিখেন, ‘আগামী মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫ বিকেল পাঁচটায় গণ-অভ্যুত্থানের সকল পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।’
কাফি
জাতীয়
বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী শমশের আলী মারা গেছেন

বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য, প্রফেসর এমিরেটাস ড. এম শমশের আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
শমশের আলীর বড় ছেলে জেহান আলী তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাদ জোহর ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের বায়তুল আমান মসজিদে জানাজা হবে। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির প্রাক্তন সভাপতি শমশের আলী ১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৪ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্টিক পাস করেন। ১৯৫৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৫৯ সালে শ্রেষ্ঠত্বের সঙ্গে অনার্স ও ১৯৬০ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬১ সালে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেন। ১৯৬৫ সালে সেই ম্যানচেস্টার থেকেই থিওরেটিক্যাল নিউক্লিয়ার ফিজিক্স বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬১ সালে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগদানের মাধ্যমে শমশের আলীর কর্মজীবন শুরু হয়। পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করার পর ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকায় আণবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র সায়িন্টিফিক অফিসার হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতার জন্য তিনি ১৯৭০ সালে অত্যন্ত অল্প বয়সে আণবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্পেশাল সাইটেশনের মাধ্যমে শমসের আলীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি প্রফেসর অব ফিজিক্স করে তাকে একটা বিরল সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।
এর মধ্যে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সাল থেকে ২০১০ সাল সময় পর্যন্ত সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন অধ্যাপক শমসের আলী।
অধ্যাপক এম শমশের আলী গত ২৪ মার্চ বাউবির প্রফেসর ইমেরিটাস পদে তার দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেন।
জাতীয়
শতকোটি টাকা নিয়ে পালালো ফ্লাইট এক্সপার্ট

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছে অনলাইনে বিমানের টিকিট কাটার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফরম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’। তাদের অফিস বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ওয়েবসাইট হারিয়ে গেছে। বহু এজেন্সি ফ্লাইট এক্সপার্টে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
ফ্লাইট এক্সপার্টের সেলস ডিপার্টমেন্টের একজন মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘গত রাতেই আমাদের মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমরা এখন মতিঝিল থানায় যাচ্ছি।’
এদিকে ফ্লাইট এক্সপার্টের সিওও সালমান তাদের অফিসের অভ্যন্তরীণ একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখেছেন, সাঈদ, হোসাইন এবং সাকিব তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
তারা খুব সতর্কতার সাথে পরিকল্পনা করে গত বৃহস্পতিবারের মিটিংয়ে এসব দোষ তার (সালমানের) ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল এবং সালমানকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। আজ সকালে তারা ৩ কোটি টাকা বা তার কম টাকা তুলে নিয়েছেন এবং তা নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন। এর ফলস্বরূপ, কম্পানিটি এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
সালমান আরো জানিয়েছেন যে, তার দিকে আসা হুমকি এবং দোষারোপের কারণে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তিনি ছুটি নিয়েছেন। এই পরিস্থিতির জন্য তিনি দুঃখিত এবং বলেছেন যে এভাবে চলে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা তার ছিল না।
এদিকে ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন, ফ্লাইট এক্সপার্ট মালিক গতরাতেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
ফ্লাইট এক্সপার্টের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের সর্বশেষ পোস্ট ছিল হজ নিয়ে। সেই পোস্টে হজ ২০২৬-এর রেজিস্ট্রেশন শুরু জানিয়ে হজ প্যাকেজের মূল্য ছাড়া হয়েছে।
জয়িতা আফ্রিন নামে একজন প্রশ্ন করে লিখেছেন, ফ্লাইট এক্সপার্টের মতো ট্রাস্টেড কম্পানি যদি দেশ থেকে পালিয়ে যায় তাহলে আর কাকে বিশ্বাস করব?
ফ্লাইট এক্সপার্ট ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। তখন একটি লঞ্চ ইভেন্টের মাধ্যমে তাদের প্ল্যাটফরম চালু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি খুব দ্রুত বাংলাদেশের অনলাইন ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিতে একটি প্রভাবশালী নাম হয়ে ওঠে। তখন তারা দেশের ফ্লাইট টিকেটিং শিল্পে একটি বড় জায়গা দখল করে নেয়।
প্রতিষ্ঠানটি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, ট্যুর প্যাকেজ এবং ভিসা প্রক্রিয়াকরণের মতো নানা ধরনের সেবা দিত। বিশেষ করে, সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইট টিকিট বুক করার সহজ সুবিধার কারণে এটি গ্রাহকদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার, ডিসকাউন্ট এবং সহজে পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকায় এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।