জাতীয়
সীমান্তে স্থাপনা-বেড়া নির্মাণে যৌথ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত

শেষ হয়েছে ৪ দিনব্যাপী বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৫তম সীমান্ত সম্মেলন। যা ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের সম্মেলনে সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো, হত্যা, আহত বা মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যৌথ টহল বৃদ্ধি, উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী উপকৃত হবে এমন তাৎক্ষণিক ও আগাম গোয়েন্দা তথ্য একে অপরের মধ্যে আদান-প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
পাশাপাশি সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা, কাঁটাতারের বেড়া, প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত হয় এমন কোনো স্থাপনা বা বাংকার নির্মাণের ক্ষেত্রে উভয় দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ পরিদর্শক দলের পরিদর্শন এবং যৌথ আলোচনার দলিল (জেআরডি) এর ভিত্তিতে নির্মাণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়।
ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনের পর যৌথ প্রেস বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন।
অপরদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী দলজিৎ সিং চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিহতের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সীমান্ত হত্যার ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসএফ মহাপরিচালকের প্রতি জোর আহ্বান জানান।
সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে যে কোনো স্থায়ী স্থাপনা এবং কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের ক্ষেত্রে উভয় দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ পরিদর্শকদলের পরিদর্শন ও যৌথ আলোচনার দলিল (জেআরডি) এর ভিত্তিতে নির্মাণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়।
আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরে সীমান্তে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার বিষয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বিএসএফ মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এছাড়া সীমান্তবর্তী নদীর ভাঙন রোধে তীরবর্তী বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ এবং পূর্বাভাস না দিয়ে বাংলাদেশের উজানে বাঁধ খুলে পানি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করার জন্য বিএসএফকে অনুরোধ জানানো হয়।
এছাড়া ভারত থেকে বাংলাদেশে মাদক ও অস্ত্র পাচার রোধ, স্বর্ণসহ অন্যান্য দ্রব্যাদির চোরাচালান রোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ এবং সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মতো অপরাধ দমনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়। সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিজিবি মহাপরিচালক।
বিএসএফ মহাপরিচালক মানুষের জীবন ও মানবাধিকার চেতনার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে সীমান্তে হত্যা নিরসনে বিএসএফ কর্তৃক ‘অ-প্রাণঘাতী’ নীতি অনুসরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি মাদক পাচার ও চোরাচালান রোধসহ সীমান্তে শান্তির জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে এমন যে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
এবারের সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ
১. সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো/হত্যা/আহত/মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যৌথ টহল বৃদ্ধি, উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী উপকৃত হবে এমন তাৎক্ষণিক ও আগাম গোয়েন্দা তথ্য একে অপরের মধ্যে আদান-প্রদান, সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের মধ্যে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ এবং বিভিন্ন ধরনের আর্থ-সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ এবং সীমান্তে যে কোনো হত্যা সংঘটিত হলে তার যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে।
২. আলোচনায় সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোন স্থাপনা, কাঁটাতারের বেড়া, প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত হয় এমন কোনো স্থাপনা বা বাংকার নির্মাণের ক্ষেত্রে উভয় দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ পরিদর্শক দলের পরিদর্শন এবং যৌথ আলোচনার দলিল (জেআরডি) এর ভিত্তিতে নির্মাণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়। এছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজগুলোর ব্যাপারে যথোপযুক্ত পর্যায়ে জয়েন্ট ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে আলোচনা হয়।
৩. বিভিন্ন ধরনের আন্ত:সীমান্ত অপরাধ দমন বিশেষ করে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ও গবাদিপশু পাচার রোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার, স্বর্ণ, অস্ত্র, জাল মুদ্রার নোট প্রভৃতি চোরাচালান রোধ এবং এসব অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে।
৪. আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করে উভয় দেশের নাগরিক ও বাহিনীর সদস্যদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের ফলে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সীমান্তে উভয় বাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি দুই দেশের সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা থেকে বিরত রাখতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে।
৫. মানবপাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ বিশেষ করে মানবপাচারের মত অমানবিক কার্ক্রমের সাথে জড়িত উভয় দেশের অপরাধী বা দালালচক্রের কার্যক্রম প্রতিরোধে পরস্পরকে সহায়তা এবং মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদেরকে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রচলিত দেশের আইন অনুযায়ী উদ্ধার ও পুনর্বাসনে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছেন।
৬. এছাড়া আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে প্রবাহিত সীমান্তবর্তী ৪টি খালের বর্জ্য পানি অপসারণে উপযুক্ত পানি শোধনাগার স্থাপন; জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর সাথে রহিমপুর খালের মুখ উন্মুক্তকরণ; আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
৭. উভয়পক্ষ ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) এর আওতায় পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির জন্য গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে উভয় বাহিনীর পারস্পরিক সহযোগিতার প্রশংসা করেন। উভয়পক্ষ আগামী দিনে যৌথ খেলাধুলা ও জয়েন্ট রিট্রিট সিরিমনিসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে সম্মত হয়েছে।
কাফি

জাতীয়
আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি: আলী রীয়াজ

গত সাতদিন ধরে আমরা আলোচনা করেছি। বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও সত্যি কথা হচ্ছে, আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খানিকটা পিছিয়ে আছি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
রোববার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার সপ্তম দিনের বৈঠক শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, এই অগ্রগতির জায়গাটা অর্জন করা দরকার এই কারণে, আমরা কেউই চাই না আগের জায়গাটায় ফিরে যেতে। এটা আগামীকাল, আগামী দিনের বিষয় না। এটা দীর্ঘদিনের বিষয়।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হবো। যে ব্যবস্থা ফ্যাসিবাদী শাসনকে তৈরি করেছে, তার কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো আমাদের করতে হবে। এই সংকল্প থেকে সমস্ত কিছু পাশে রেখে আমরা সমবেত হয়েছিলাম। আপনাদের কর্মীরা প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়ন সহ্য করেছেন। সেই রক্তের ওপর পা রেখে আমরা এখানে এসেছি।
কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, কমিশন আপনাদের প্রতিপক্ষ না। কমিশন আপনাদেরই অংশ, আমরা একটা দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। আপনাদের অবস্থানের কারণে কমিশনের নমনীয়তা প্রকাশিত হয়েছে। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই, আপনারাই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। আপনাদের মধ্য দিয়েই এক সময় দেশ শাসিত হবে।
তিনি বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদের ক্ষেত্রে কমিশনের যে প্রস্তাব ছিল সেখান থেকে কমিশন আলোচনার মধ্যদিয়ে সরে এসেছে। স্থায়ী কমিটিগুলোর বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাব ছিল এক রকম, কিন্তু আমরা আলোচনার মধ্য দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত এক জায়গায় এসেছি, সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। উচ্চকক্ষের বিষয়ে দুটি প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে একটি, ১০৫ জন সদস্যকে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দেবেন। আপনারা এই বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন। সঙ্গতভাবে কমিশন এই জায়গা থেকে সরে এসে ১০০ জন সদস্যের উচ্চকক্ষ তৈরির বিষয়ে একমত হতে পেরেছি। মূলনীতির ক্ষেত্রে কমিশনের কিছু প্রস্তাব ছিল সংবিধান সংস্কার কমিশনে। সেখানে আমরা আলোচনা করেছি, অনেকটা অগ্রসর হয়েছি। আরও আলোচনা করব।
আলী রীয়াজ বলেন, আর এক দিন পর জুলাই মাস। কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা আন্তরিক থাকতে চাই। জুলাই মাসের মধ্যেই যেন আমরা একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে পারি। সেই প্রচেষ্টায় আমাদের একটা স্বপ্ন ছিল। আমরা আশা করেছিলাম আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকীতেই সবাই মিলে সনদে স্বাক্ষর করতে পারব। সেটা কতটা সম্ভব হবে তা আপনাদের ওপর নির্ভর করে। আমরা খানিকটা শঙ্কিত যে, সে জায়গায় যাব না। তবে এটা আমরা বলতে পারি জুলাই মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়ার একটা পরিণতির দিকে যেতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে এগিয়ে যেন কোনো ধরনের সংবিধান সংশোধন না হয়, সেটা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করা দরকার। ব্যক্তির ক্ষমতা সীমিত করা প্রয়োজন হচ্ছে এই কারণে, শেষ পর্যন্ত শাসনের ক্ষেত্রে এক ধরনের ব্যক্তিতান্ত্রিকতা তৈরি হয়েছিল এবং তার আশঙ্কাকে আমরা উড়িয়ে দিতে পারছি না। সাংবিধানিকভাবে এ রক্ষাকবচগুলো আমাদের তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
আজকের সভায় আলোচনার বিষয়গুলো হচ্ছে- সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট; উচ্চকক্ষের নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা।
জাতীয়
কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ, মূল আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫

কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি ফজর আলীকে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া, ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও বিবস্ত্র ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (২৯ জুন) সকালে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফজর আলী (অভিযুক্ত ধর্ষক) এবং ভিডিও ধারণকারী অনিক, সুমন, রমজান ও বাবু। সবাই মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পাঁচকিত্তা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে হোমনা থেকে মুরাদনগরে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসা এক নারীকে পাঁচকিত্তা গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে ফজর আলী কৌশলে ঘরের দরজা খুলে ধর্ষণ করেন। ঘটনার সময় আশপাশের কয়েকজন লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে ভিডিও ধারণ করে এবং পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
পরে স্থানীয়দের কাছে মারধরের শিকার হয়ে পালিয়ে যায় ফজর আলী। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী নারী নিজেই বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ অভিযানে নামে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, ধর্ষণের মামলার পাশাপাশি ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় আলাদা একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, মূল আসামি ফজর আলীকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিও ছড়ানোয় জড়িত চারজনকে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাফি
জাতীয়
একদিনে ডেঙ্গুতে আরও এক শিশুর মৃত্যু, আক্রান্ত ২৬২

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২৬২ জন। শনিবার (২৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৮ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আটজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৪০ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ছয়জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ছয়জন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিনজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের এ যাবত আট হাজার ৩৮০ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছরের ২৮ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার ৪৮৪ জন। এর মধ্যে ৫৮ দশমিক নয় শতাংশ পুরুষ ও ৪১ দশমিক এক শতাংশ নারী রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে ৪১ জন মারা গেছেন। মৃত একজন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মারা যান ৫৭৫ জন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
জাতীয়
ঢাকার তিন এলাকায় ই-রিকশা নামানোর ঘোষণা আসিফের

ঢাকার তিনটি এলাকায় ই-রিকশা নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এসব রিক্সা তৈরি করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে তিন চাকার স্বল্প গতির ব্যাটারি চালিত ই-রিকশার প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ঢাকা শহরের অনিয়ন্ত্রিত রিকশা একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। সড়কের ৩২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে এসব অটো রিকশার কারণে। তাই নিরাপদ বাহন হিসাবে ই-রিকশাকে তৈরি করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন ই-রিকশার ক্ষেত্রে লাইসেন্সের ব্যবস্থা থাকবে। যা হবে অনলাইনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আগামী আগস্ট থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির পল্টন ও ধানমন্ডি এবং উত্তর সিটির উত্তরায় প্রাথমিকভাবে চলবে এসব ই-রিকশা।
একই অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, আগস্টের প্রথম থেকেই মার্কেটে আসবে নতুন এই রিকশা পাওয়া যাবে। দুই সিটির দুই জোনে অনুমোদনহীন রিকশাগুলো ধীরে ধীরে সরিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
চালক প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানানো হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় প্রথমে মাস্টার ট্রেইনার গড়ে তোলা হবে, যারা পরে মাঠ পর্যায়ে চালকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
মাস্টার ট্রেইনার তৈরির লক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থী, যুব মহিলা ও পুরুষদের মধ্য থেকে ২০০ জন এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে ১০০ জনসহ মোট ৩০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
দেশে গুঁড়া দুধ আমদানি লজ্জার বিষয়: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

দেশে গুঁড়া দুধ আমদানি করা হয়, যেটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। যে টাকা দিয়ে আমরা গুঁড়া দুধ আমদানি করি সেই টাকা দিয়ে আমরা অনেকগুলো চিলিং সেন্টার স্থাপন করতে পারবো। এই বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে। শুধু সরকারি ভাবে নয়, বেসরকারি ভাবেও উৎসাহ দেব যাতে করে চিলিং সেন্টার স্থাপন করা হয় বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
শনিবার (২৮জুন) সকালে মানিকগঞ্জ সদরের জয়নগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত নির্বাচিত ৪টি জেলায় গবাদিপশুর ক্ষুরারোগের টিকা প্রদান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, পর্যায়ক্রমে সারাদেশে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ও ক্ষুরারোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। সেটা দেশে আমাদের পক্ষ থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে। কিছু আমদানিও করা হতে পারে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি