আন্তর্জাতিক
আ.লীগ সরকারের উৎখাতের কারণ জানা গেল জাতিসংঘের প্রতিবেদনে

জাতিসংঘের অধিকার অফিস (ওএইচসিএইচআর) বলেছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের প্রথম দিকের ধারাবাহিক ঘটনাবলীর কারণে বিগত সরকার উৎখাত হয়েছে এবং গণঅভ্যুত্থানের শেষ দিনগুলোতে ‘সাময়িকভাবে ভাটা পড়া’ আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা রাস্তায় বিক্ষোভকে পুনরায় উস্কে দিয়েছিল।
ওএইচসিএইচআর রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোটা ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আসতে অনেক দেরি করেছিল এবং সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ বিক্ষোভকারীদের নেতাদের কাছে ‘কুটিল’ বলে মনে হয়েছিল।
এতে বলা হয়েছে, ‘বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার জন্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বিগত সরকার হাইকোর্টের কোটা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দাখিল করে, যা মূলত বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পরের দিন সন্ধ্যায় পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় শিক্ষার্থীদের সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যাশিত ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে বলেছিলেন, ১৬ জুলাই প্রাণহানির জন্য সমবেদনা জানিয়েছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে, ‘আমাদের বিক্ষোভকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সহযোগিতা করেছিল।’
চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের বিক্ষোভের সাথে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘(কিন্তু) প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বিক্ষোভকারী নেতাদের কাছে আন্তরিকতাহীন বলে মনে হয়েছিল।’
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশজুড়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, হাসপাতাল ও জরুরি পরিষেবা খোলা থাকবে, তবে অন্যকোনো প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে না এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো যানবাহন রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব একই সাথে তাদের অনুসারীদের হরতাল সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছিল, যার ফলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আইন, শিক্ষা এবং তথ্য মন্ত্রীদের বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের নেতাদের সাথে আলোচনার জন্য মনোনীত করেছিলেন, পাশাপাশি ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এর চলমান প্রচেষ্টাও অব্যাহত ছিল।
এতে বলা হয়েছে, তবে, সেই পর্যায়ে, ছাত্ররা আর আলোচনার জন্য প্রস্তুত ছিল না, কারণ তারা তাদের ওপর এর আগে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার কারণে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সন্দিহান ছিল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৮ জুলাই থেকে, যখন বিক্ষোভকারীরা গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল ব্যাহত করার চেষ্টা করছিল তখন সাধারণ জনগণও রাস্তায় নেমে আসে এবং নিরাপত্তা বাহিনী ‘এই পর্যায়ে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের দিকে ঝুঁকে পড়ে’।
এতে বলা হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ হলেও বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কম প্রাণঘাতী অস্ত্রের পাশাপাশি রাইফেল, পিস্তল ও শটগান ব্যবহার করেছিল, এতে উত্তরায় (৩টি ঘটনা) ও অন্যান্য অনেক জায়গায় হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল, পাশাপাশি তারা আহতদের চিকিৎসা সেবা (৮টি ঘটনা) সক্রিয়ভাবে বাধাগ্রস্ত করেছিল।
এতে বলা হয়েছে, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী জনতা যখন আরও ভিন্নরূপ ধারণ করে তখন জনতার কিছু অংশ পুলিশ, পরিবহন অবকাঠামো এবং বাংলাদেশ টিভি ভবনসহ সরকারি ভবনগুলোতে আক্রমণ করেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ জুলাই সন্ধ্যায়, সরকার বিজিবি (বর্ডার গার্ডকে বাংলাদেশ) সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেয় এবং ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেটসেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।
ওএইচসিএইচআর প্রমাণ পেয়েছে যে, ১৯ জুলাই, বিজিবি, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং অন্যান্যরা রামপুরা ও বাড্ডা ছাড়াও ঢাকা ও সারা দেশে জনতার ওপর গুলি চালায়, কিন্তু শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বা সহিংস অস্থিরতা দমন করতে পারেনি।
সন্ধ্যায়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মধ্যরাত থেকে কার্যকর দেশব্যাপী কারফিউ জারি, ও ২৭,০০০ সেনা সদস্য মোতায়েন করেন। ২০ ও ২১ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনী বড় ধরনের অভিযান চালায়।
এতে বলা হয়েছে, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধ মুক্ত করতে বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী মোড়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি খালি করার জন্য সামরিক রাইফেল ও শটগানের গুলি চালায়।
ওএইচসিএইচআর উল্লেখ করেছে যে, ২১শে জুলাই, সুপ্রিম কোর্টের একটি নতুন রায় মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্য সংরক্ষিত সরকারি চাকরির কোটা ৫ শতাংশে কমিয়ে দেয় এবং ‘সরকার দ্রুততার সঙ্গে আদালতের মতামত মেনে নিয়ে প্রকাশ্যে এই পরিবর্তনকে সমর্থন জানায়।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তবে, সেই সময়ে, ছাত্র আন্দোলন ইতোমধ্যেই তাদের নিজস্ব দাবির মধ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আরও বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত, সেইসাথে ছাত্রদের হত্যাকারী পুলিশ অফিসার এবং ছাত্রলীগ সমর্থকদের জন্য ফৌজদারি জবাবদিহিতার দাবি অন্তর্ভুক্ত করেছিল।’
২৬ জুলাই, বিএনপি সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে ‘জাতীয় ঐক্য’ প্রতিষ্ঠার এবং সরকারের পতনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছিল।
ওএইচসিএইচআর জানিয়েছে যে, রাস্তার বিক্ষোভ ‘সাময়িকভাবে শান্ত থাকলেও’ নিরাপত্তা বাহিনী ছাত্র, বিরোধী সমর্থক এবং বিক্ষোভে জড়িত থাকার সন্দেহে অন্যদের বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার অভিযান চালায় এবং ছয়জন বিশিষ্ট ছাত্রনেতাকেও আটক করা হয়।
জাতিসংঘের কার্যালয় জানিয়েছে যে, এই ব্যক্তিদের প্রায়শই অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ ছাড়াই আটক করা হতো এবং অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতন ও অন্যান্য ধরণের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়েছিল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২৮শে জুলাই, গোয়েন্দা শাখার প্রধান একটি জোরপূর্বক বিবৃতির একটি ভিডিও রেকর্ডিং প্রকাশ করে। এতে আটক ছয়জন ছাত্রনেতা বিক্ষোভের নিন্দা করেছিলেন। এই ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ওএইচসিএইচআর আরও জানিয়েছে যে, ২৫ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙচুর করা মেট্রো স্টেশন এবং পরের দিন পুড়ে যাওয়া বাংলাদেশ টিভি ভবন পরিদর্শন করেছিলেন এবং একই দিনে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করে পুলিশ ও বিজিবির গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আহত রোগীদের সাথে কথা বলেছিলেন।
তিনি ২৮ জুলাই নিহত ছাত্রদের পরিবারবর্গকে তার বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং ‘এই সময়ে, তিনি প্রকাশ্যে বিরোধী দলগুলোর ওপর সহিংসতা ও প্রাণহানির জন্য সমস্ত দোষ চাপিয়েছিলেন’।
৩০ জুলাই, সরকার জামায়াতে ইসলামী এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব ঘটনা ২০২৪ সালের আগস্টের শুরুতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা উস্কে দিতে অবদান রেখেছিল। নতুন করে জোরদার গণবিক্ষোভ শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
ওএইচসিএইচআর উল্লেখ করেছে যে, বিক্ষোভ পুনরায় শুরু হওয়ার পর গণআন্দোলন ‘তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পদত্যাগ’ করার একটি নতুন, একক দাবির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের প্রতিক্রিয়ায় প্রাণঘাতী অস্ত্রসহ ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ সম্পর্কে আগস্টের শুরুতে একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং মন্ত্রিসভার একজন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছিলেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাস্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছিল। কিন্তু ‘বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগের জন্য অফিসার ও সৈন্যদের মধ্যে সমর্থন হ্রাস পাচ্ছিল’। ৩ আগস্ট সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান একটি বড় সেনা সভা আহ্বান করেন, যেখানে জুনিয়র অফিসাররা তাকে জানান যে, তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে চান না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন কর্মসূচিতে ৫ আগস্ট ঢাকায় একটি গণমিছিলের পরিকল্পনা করেছিল। ৪ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, যেখানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন। তারা ঢাকায় গণমিছিল ঠেকাতে পুনরায় কারফিউ আরোপ এবং তা কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা করেন।
৪ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি প্রধানদের সাথে দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেনাপ্রধান ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে আশ্বস্ত করেন যে, ঢাকায় সমাবেশ করতে দেয়া যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি পরিকল্পনায় তারা সম্মত হয়েছিল যে, ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
এতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট, লাখ লাখ বিক্ষোভকারী ঢাকার কেন্দ্রস্থলের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ সমর্থকরা অনেক স্থানে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়, যদিও সেনাবাহিনী ও বিজিবি বেশিরভাগ সময় পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভকারীদের মিছিল করতে দেয়। তবে, সৈন্যরা অন্তত একবার যেমন যমুনা ফিউচার পার্কে (ঘটনা ৭) গুলি চালিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকালে, সেনাপ্রধান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন যে, সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদেরকে তার বাসভবনে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারবে না। দুপুর ২টার দিকে শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে দেশ থেকে চলে যান।

আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ভারত: জয়সওয়াল

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘উপযুক্ত পরিবেশে’ বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়েই আলোচনা করতে প্রস্তুত ভারত।
শুক্রবার (২৭ জুন) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক মোকাবিলা করা যায়।
তার এ মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারতের পার্লামেন্টে পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলোচনার জন্য ৪ জন বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানিয়েছে, এই বিশেষজ্ঞরা হলেন- সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম হাশনাইন, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই ভারতে সংশোধিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগেও বহুবার গঠনমূলক বৈঠকে আলোচনা করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।
নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত, যদি তা পারস্পরিক উপকারে উপযোগী পরিবেশে হয়। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৯ জুন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। চীনের কুনমিংয়ে ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপজিশন অ্যান্ড দ্যা সিক্সথ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ শীর্ষক বৈঠকের সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারতীয় সংসদীয় কমিটির বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ আলোচনার প্রাথমিক প্রস্তুতিপত্র অনুযায়ী, আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যে বিষয়গুলোতে মতামত চাওয়া হবে তা হলো- ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান, বাংলাদেশের অস্থিরতা থেকে ভারতের নিরাপত্তা হুমকি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ-চীনের ‘কৌশলগত সখ্যতা’ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ।
আন্তর্জাতিক
ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে মুখ থুবড়ে পড়া আলোচনার টেবিলে ইরানকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ইরানকে কোটি কোটি ডলার ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে খুশি করতে চায় দেশটি। আলোচনায় ফিরতে রাজি হলে দেওয়া হতে পারে আরও নানান সুযোগ সুবিধা।
ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের লোকজন বিষয়টি নিয়ে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে। তারা গোপনে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। খবর সিএনএনের।
খবর অনুসারে, পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক শক্তি ব্যব্হার করা হলে ইরানকে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে। এছাড়া শিথিল করা হবে দেশটির উপর বিদ্যমান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন দেশে ফ্রিজ করে রাখা ইরানের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সম্পদের একাংশ ছাড় করা হবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বেশ কিছুদিন ধরেই দেশটির সঙ্গে আলোচনায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকের ঠিক একদিন আগে ইসরায়েল একতরফাভাবে ইরানে হামলা চালায়। তারা ইরানের বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার কোনো প্রতিবাদ করেনি। বরং তারা নিজেরাও ইসরায়েলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে। এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ ইরান তখনই ঘোষণা করেছিল তারা আর আলোচনার টেবিলে ফিরবে না। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রস্থানীয় কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের মাধ্যমে গোপনে এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে আগানোর চেষ্টা করছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিদেশে আটক সম্পদ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার অবমুক্ত করার মতো বিষয় রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে সরাসরি ইরানকে কোনো আর্থিক বা বিনিয়োগ সুবিধা দেবে না; মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এই অর্থের যোগান দেবে। তা দিয়ে ফরডো পারমাণবিক স্থাপনা পুর্নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে গত শুক্রবার অর্থাৎ ইরানে মার্কিন হামলার ঠিক আগের দিন মধ্য প্রাচ্যের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত উইটকফ।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবে ইরান সম্মতি দেবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ দু’দিন আগে ট্রাম্প ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র আবার আলোচনার টেবিলে ফিরছে বলে ঘোসণা দিলেও উরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা নাকচ করে দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে আরও কমলো স্বর্ণের দাম

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে কমছে স্বর্ণের দাম। মূলত ইরান ও ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ও মার্কিন-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা কমেছে। পাশাপাশি, মার্কিন মূল্যস্ফীতির নতুন তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৭ জুন) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৮৮ দশমিক ৫৫ ডলারে। এই সপ্তাহে স্বর্ণের দাম মোট ২.৩ শতাংশ কমেছে। আর ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। বেচাকেনা হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ দশমিক ৪০ ডলারে।
এএনজেড কমোডিটি স্ট্র্যাটেজিস্ট সোনি কুমারী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বাজারের ইতিবাচক মনোভাবের কারণে স্বর্ণের দাম কমেছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি এবং মার্কিন-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির ফলে বাজারের অনিশ্চয়তা কমেছে, যা স্বর্ণের দাম কমার বড় কারণ।
ইরান ও ইসরাইল ১২ দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার (২৪ জুন) থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। অন্যদিকে, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ করার চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ দ্রুত সরবরাহের জন্য চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ধারণা নিতে বিনিয়োগকারীরা শুক্রবার মার্কিন ব্যক্তিগত খরচ ব্যয়ের তথ্যের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। রয়টার্সের জরিপে অংশ নেয়া বিশ্লেষকরা এই খাতে মাসিক ০.১ শতাংশ এবং বার্ষিক ২.৬ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন।
বাজার মনে করছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সুদের হার ৬৩ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমানো হতে পারে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফেডকে এখনই সুদের হার কমানো উচিত। তবে জুলাইয়ের সভায় মাত্র দুজন নীতিনির্ধারক সুদের হার কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
এদিকে, স্পট সিলভারের দাম শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৪ ডলার। প্লাটিনামের দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৭৮ দশমিক ১৮ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে, প্যালাডিয়ামের দাম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৩৫ দশমিক ৩৬ ডলারে উঠেছে, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ইরানি সেনাসহ গ্রেপ্তার ১৩০ জন

একের পর এক অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানি নাগরিকদের গ্রেপ্তার করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস পুলিশ (ইউ এস ইমিগ্রেশন অ্যান্ট কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসিই)। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে মোট ১৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ইরানের একজন সাবেক সেনাসদস্যও রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-ডিএইচএস) সূত্রে জানা গেছে- গ্রেপ্তার ওই ইরানি সেনার নাম রিদওয়ার কারিমি। মার্কিন নাগরিকের বাগদত্ত সঙ্গী হিসেবে একটি বিশেষ ভিসায় গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ করেছিলেন রিদওয়ার। যুক্তরাষ্ট্রে এসে ওই নাগরিককে বিয়েও করেছিলেন, কিন্তু তারপর আর নিজের ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস হালনাগাদ করেননি। অর্থাৎ তিনি যে বিয়ে করেছেন- তা স্থানীয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি।
গত ২২ জুন যেদিন ইরানের তিন পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বিমান বাহিনী, তার পরের দিন তাকে আলবামা অঙ্গরাজ্য গ্রেপ্তার করে কাস্টমস পুলিশ।
বর্তমানে আলবামায় মার্কিন কাস্টমস পুলিশের বন্দিশালায় আছেন রিদওয়ার। তার অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রী মরগান কারিমি স্বামীর বুধবার মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকে স্বামীর মুক্তির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
রিদওয়ার কারিমিসহ ১৩০ জন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত সপ্তাহে। তাদের সবার বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসন এবং কয়েক জনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
কাস্টমস পুলিশসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আইসিই বন্দিশালায় ৬৭০ জন অনুপ্রবেশকারী ইরানি নাগরিক আছেন।
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত আরও ৭১ ফিলিস্তিনি

গাজায় বিতর্কিত মানবিক প্রকল্পের আড়ালে পরিচালিত খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রগুলো এখন ‘জল্লাদখানা’য় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন খাবারের লাইনে অপেক্ষারত সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাজুড়ে অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা সিটি থেকে দির আল-বালাহ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এসব হামলায় হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রও রেহাই পায়নি। হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিহতদের বড় অংশ নারী ও শিশু।
বিশেষ করে, নেতজারিম করিডোরে অবস্থিত খাদ্য সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষারত অবস্থায় গুলিতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে অন্তত ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চার সপ্তাহ আগে মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থিত জিএইচএফ-এর বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে এসব ত্রাণ কেন্দ্রকে ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে এসব ঘটনায় এখনও ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বৃহস্পতিবার আবারও গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এই সহায়তা কার্যক্রমকে ইসরায়েলের জন্য ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর প্রতি সহানুভূতির কোনো স্থান নেই।
আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের হাতে সহায়তা যাওয়ার আশঙ্কায় ইসরায়েল গাজায় দুই দিনের জন্য সহায়তা সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এরইমধ্যে উত্তর গাজাগামী সহায়তা করিডোরগুলো বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য সরাসরি সহায়তা প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে তাদের পরিবার জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি সরকারের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থে জিম্মিদের বলি দেওয়া হচ্ছে।