অর্থনীতি
মূল্যস্ফীতি নিয়ে ৫-৬ মাসের মধ্যে ভালো কিছুর প্রত্যাশা: গভর্নর

প্রত্যাশার সঙ্গে বাস্তবতাকে মেলাতে হবে। মূল্যস্ফীতি কমেছে, আরও কমবে। পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে আরও ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীতে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
গভর্নর বলেন, পলিসি ঠিক থাকলে বাজার ঠিক থাকবে। তাছাড়া মূল্যস্ফীতি পাঁচের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
তিনি বলেন, আমাদের রিজার্ভের পতন এখন আর নেই। একটু একটু করে বাড়ছে। আইএমএফের টাকা না এলেও নিজস্ব সক্ষমতায় আমরা রিজার্ভ বাড়াতে পারছি।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের রেমিট্যান্স এবং রপ্তানির প্রবাহ ভালো। রিজার্ভ-প্রবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তার কারণ নেই।
রমজানের জন্য নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে বলেও এ সময় জানান গভর্নর।
আমাদের দেশে যত সমস্যা, তা সাধারণত একসঙ্গে কোনো দেশে হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজস্ব খাতের ব্যর্থতা এক বছরের সরকার কখনোই সমাধান করতে পারবে না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
পাঙ্গাস-তেলাপিয়াতে স্বস্তি, অপরিবর্তিত গরু-মুরগির দাম

শীতের বিদায়ে শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হতে থাকায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে সবজির দাম। তবে তেলাপিয়া-পাঙ্গাসসহ বেশ কিছু মাছ এবং মুরগির মাংসের দাম দুইশোর নিচে থাকায় কিছুটা স্বস্তি মিলছে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে। গরু-খাসির মাংস অপরিবর্তিত রয়েছে বলেও বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে মাঝারি সাইজের পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি, কিছুটা বড় পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকাতে। এদিকে মাঝারি তেলাপিয়া মাছও বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা কেজিতে। একটু বড় আকৃতির তেলাপিয়া কিনতে গুণতে হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। আজকের বাজারে সরপুঁটি মাছও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার মধ্যেই। এছাড়া শিং ৩৫০-৪০০ টাকায়, বড় আকৃতির রুই ৩৫০ টাকায়, ছোট আকৃতির রুই ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, কার্প ২২০-২৪০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, মলা মাছ ৩৫০ টাকা এবং শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে।
এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মুরগির মাংসের দামও কিছুটা কমেছে। পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষ্যে গত সপ্তাহে মুরগির বাড়তি চাহিদা ছিল। এ কারণে মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছিল। সেই দাম আবার কমে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এছাড়াও প্রতি কেজি সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা, লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়। এমনকি আজকের বাজারে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়।
গত সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল অবস্থা দেখা গেছে গরুর মাংসের দামে। বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১১০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। এদিকে আজকের বাজারে গরুর কলিজা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা এবং খাসির কলিজা বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
পূর্ব রামপুরা বাজার থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে পাঙ্গাস মাছ কিনেছেন ভ্যান চালক শহিদুল ইসলাম। আড়াই কেজি মাছের দাম পড়েছে ৪৫০ টাকা। তবুও দাম তুলনামূলক কম থাকায় স্বস্তি নিয়ে তিনি বলেন, মাছ-মাংসের দাম কিছুটা কম থাকায় কোনোরকম খেয়েপরে পরিবার নিয়ে চলা যাচ্ছে। পাঙ্গাস মাছ কিনেছি ১৮০ টাকা কেজি করে। সংসারে ৫ জন মানুষ। দামটা একটু বাড়তি থাকলেই পকেটেও টান পরে।
তিনি বলেন, সরকার যদি বাজারের দিকে একটু নজর দেন, তাহলে জিনিসপত্রের দাম আরও কমে যাবে। এখন তো ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে দাম কমায় বাড়ায়। এই সরকারের কাছে আমাদের মতো মানুষের অনেক প্রত্যাশা।
বনশ্রী এ ব্লক কাঁচাবাজার এলাকায় গিয়ে কথা হয় মাওলানা রফিকুল ইসলাম নামক এক মাদ্রাসা শিক্ষকের সঙ্গে। বাজারদর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ব্লকের এ বাজারে জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি। এখান থেকে ব্রয়লার নিয়েছি ২০০ টাকা কেজিতে। অথচ একটু ভেতরে গেলেই ১৯০ টাকায় কেনা যায়। শবেবরাতের আগে মুরগির দাম বেড়ে গিয়েছিলো ২০/৩০ টাকা পর্যন্ত। বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই, স্থিতিশীলতাও নাই। আজ দেখছি কম, আবার কাল সকালেই যে বেড়ে যাবে না তার কোনো ঠিক নেই।
অপরদিকে মাছ-মাংসের বাজার নিয়ে ক্রেতাদের সন্তুষ্টিতে খুশি বিক্রেতারাও। রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়াও বলেন, এ সপ্তাহে মাছের বাজারে দাম কিছুটা নিম্নমুখী, তবে বেচাকেনা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। দাম একটু কম থাকলে সবসময়ই বেচাকেনা ভালো থাকে। অনেক সময় সকালেই সব মাছ বিক্রি হয়ে যায়, আবার বাজার বাড়তি থাকলে বরফ দিয়ে পরদিনও বিক্রি করতে হয়।
মুরগির মাংস বিক্রেতা আব্দুল হামিদ বলেন, গত সপ্তাহেই মুরগি বিক্রি করেছি ২২০ টাকা কেজিতে, তখন শবে বরাত উপলক্ষ্যে দাম কিছুটা বেশী ছিল। আজ ২০০ টাকায় বিক্রি করছি। কেউ হয়ত ১৯০ টাকায় বিক্রি করছে, কিন্তু সেগুলো নির্ভর করে মানের উপর।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় এই দিনে মুরগির চাহিদাটা একটু বেশিই থাকে। সেইসঙ্গে দাম গত সপ্তাহের তুলনায় একটু কম থাকায় আজ বিক্রিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এনবিআরের আইবাসে একদিনে রেকর্ড ১৭২৩ নিবন্ধন

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের জাল বাড়াতে ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমে (আইভাস) অন্তর্ভুক্ত হতে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছিল এনবিআর। সেই আহ্বানে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। এনবিআরের আইবাসে একদিনে রেকর্ড ১৭২৩টি নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এনবিআর জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধির নির্দেশনা প্রদানের দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে গতকাল একদিনে রেকর্ড সংখ্যক ১৭২৩টি নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উৎপাদক শ্রেণিতে ৪৬টি, সেবাগ্রহীতা ৮৬২টি, খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা ৫০০টি, আমদানিকারক ২৯টি, রপ্তানিকারক ০৯টি ও অন্যান্য ২৭৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
অন্যদিকে সারাদেশে ১ দিনে চট্টগ্রাম কমিশনারেট ৫৭৯ জন, ঢাকা (উত্তর) কমিশনারেট ১৮০ জন, ঢাকা (পশ্চিম) কমিশনারেট ২৬৬ জন, খুলনা কমিশনারেট ১৯৫ জন, রাজশাহী কমিশনারেট ৫০ জন, যশোর কমিশনারেট ৪৭ জন, রংপুর কমিশনারেট ৪১ জন, কুমিল্লা কমিশনারেট ২৭ জন, ঢাকা (দক্ষিণ) কমিশনারেট ৭১ জনসহ মোট ১৭২৩ জন ব্যবসায়ী নতুন নিবন্ধন গ্রহণ করেছে।
সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন এ বিষয়ে বলেন, ভ্যাট আদায় বৃদ্ধি ও করজাল বিস্তৃতিতে দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তারা দৈনিক কর্মঘণ্টার অতিরিক্ত সময়েও কাজ করছে। রাজস্ব আদায়ে সরকারের নতুন নীতি ও দিক-নির্দেশনা বাস্তবায়নে পূর্ব থেকেই সক্রিয়ভাবে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। কর জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, কর আদায় সন্তোষজনক ও করজাল বিস্তৃতি সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের কর্মকর্তারা মাঠে যুগপৎ কাজ করছে।
ইতোপূর্বে, ফেব্রুয়ারি মাসকে কমিশনারদের জন্য নিবন্ধনের মাস হিসবে ঘোষণা দেয় এনবিআর। সে লক্ষ্যে নতুন ভ্যাট নিবন্ধন বৃদ্ধির জন্য গতকাল সদস্য (মূসক বাস্তাবায়ন ও আইটি) সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম আইবাস++, আইভাস এবং জেনেক্সের প্রতিনিধি ও ভ্যাট বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাদের সম্পৃক্তি, সংযোগ, সমন্বয় রক্ষার জন্য দিক নির্দেশনা দেয়। একইভাবে মাঠপর্যায়ের কমিশনারদেরও সম্পৃক্ত করে। ফলে ১ দিনে রেকর্ড সংখ্যক নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি গত সারাদেশে ৪৩৯টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হলেও ১৯ ফেব্রুয়ারি এ সংখ্যা ১৭২৩ উন্নীত হয়। বর্তমান সরকার নিবন্ধনের আওতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিদ্যমান ভ্যাট আইনে সংশোধন আনে। এখন যে কোন ব্যবসায়ীর বাৎসরিক টার্নওভার ৫০ লাখ টাকার অধিক হলেই তাকে ভ্যাট নিবন্ধন নিতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে ভোগ্যপণ্যের মজুত করলে সরকার কঠোর হবে: অর্থ উপদেষ্টা

রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের অবৈধ মজুতের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজারে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যেন কোনো রকমের কারসাজি না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসকদের স্থানীয়ভাবে মনিটরিং করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, খাদ্যের সরবরাহ থাকলেও অনেক সময় ভোক্তার কাছে সেই খাদ্য যায় না। গুদামে পড়ে থাকে, লুকিয়ে রাখা হয়। এগুলো যেন কোনোভাবেই না হয়। রোজার সময় আমরা এটি নিশ্চিত করবো।
তিনি বলেন, আজকে অনেক দীর্ঘ মিটিং হয়েছে, অনেকগুলো এজেন্ডা ছিল। তার মধ্যে চাল, সার আমদানি, সারের গুদাম তৈরি করা, কিছু রাস্তা, ব্রিজ ও বন্দরের রাস্তার বিষয় রয়েছে। আজকে যেটা করা হয়েছে সেটা হলো অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য, আর কতোগুলো আছে ভৌত অবকাঠামো সেগুলো আমরা অনুমোদন দিয়েছি।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমাদের ভৌত অবকাঠামোগুলো বিরাট বিরাট মেগা প্রকল্প না। আমরা যেটা দিয়েছি সেটা অত্যন্ত দরকারি। এর মধ্যে ব্রিজ ও রাস্তা রয়েছে কতগুলো। এই হলো আমাদের ক্রয় কমিটিতে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এখন তো খাদ্য পরিস্থিতি খারাপ না। এখন অন্য পণ্যে দাম বাড়বে-কমবে। আমি বলেছি একজন মানুষের বাজেটে অনেক ধরনের খাদ্য থাকে, সেখানে একটা কমবে একটা বাড়বে। সার্বিকভাবে বা মোটাদাগে যদি দেখেন মোটামুটি সহনীয়। আমাদের পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে।
তিনি বলেন, রমজান চলে আসছে, আমরা বাজার মনিটরিং আরও বাড়াব। সেটি ডিসি সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টাও বলেছেন। আমিও তাদের বলেছি স্থানীয় পর্যায়ে মনিটরিং করার জন্য। পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যেন কোনো রকমের কারসাজি না হয়।
তিনি আরও বলেন, রমজানে আমরা এটি নিশ্চিত করব। আপনারা দেখবেন আমরা বিশেষ সেলস সেন্টার করেছি। সুতরাং সাধারণ মানুষের যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো অসুবিধা না হয়, সেটি আমরা নিশ্চিত করব।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৩০৭ কোটি টাকায় ডিএপি-ফসফরিক কিনবে সরকার

কৃষিখাতে ব্যবহারের জন্য ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার এবং সার কারখানার জন্য ১০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ৩০৭ কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে এ ডিএপি সার ও ফসফরিক অ্যাসিড কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির প্রস্তাব দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। এরআগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান চুক্তির শর্তগুলো অভিন্ন রেখে চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
সূত্রটি আরও জানায়, সৌদি আরব থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৯৯ কোটি ৮৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতি টন ডিএপি সারের দাম ধরা হয়েছে ৬১৪ দশমিক ৫০ ডলার।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের টিএসপিসিএলের জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির প্রস্তাবে দেওয়া হয়। এ প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বৈঠকে সূত্রে জানা যায়, টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক অ্যাসিড ও রক ফসফেট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র একটি দরপত্র জমা পড়ে। দরপ্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা হিসেবে এ অ্যাসিড সরবরাহ করবে গুয়াংজি পেঙ্গুইন ইকো-টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রতি টন ফসফরিক অ্যাসিডের দাম ৬৩০ ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভারত থেকে আসছে আরও ৫০ হাজার টন চাল

দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বাড়িয়ে সরকারি বিতরণব্যবস্থা সচল রাখতে ভারত আরও ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি ৫৩ টাকা ২ পয়সা করে দরে এ চাল আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৬৫ কোটি ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম এবং সিঙ্গাপুর থেকে চাল আমদানি অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এর মধ্যে ভারত থেকে দুই দফায় ৫০ হাজার টন করে লাখ টন, পাকিস্তান ও সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন করে এবং ভিয়েতনাম থেকে ১ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা পর্যালোচনা করে অনুমোদন দেয়। ভারতের এম/এস বগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট থেকে এ চাল আমদানি করা হবে।
প্রতি কেজি চালের মূল্য ধরা হয়েছে ৫৩ টাকা ২ পয়সা। আর প্রতি মেট্রিক টন চালের মূল্য ৪৩৪ দশমিক ৫৫ মার্কিন ডলার। এতে ৫০ হাজার টন চাল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৬৫ কোটি ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
জানা যায়, এ ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে আটটি দরপত্র জমা পড়ে। আটটি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভারতের এম/এস বগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের অ্যাগ্রো কর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই, এলটিডি থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এ চালের প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ধরা হয় ৪৩৪ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলার। আর মোট ক্রয়মূল্য ধরা হয় ২৬৫ কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।
তার আগে গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ভিয়েতনাম থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এ জন্য ব্যয় ধরা হয় ৫৭৮ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর প্রতি টনের মূল্য ধরা হয় ৪৭৪ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার।
এছাড়া ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
পাকিস্তান থেকে ‘জিটুজি’ পর্যায়ে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কিনতে ব্যয় ধরা হয় ৩০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আর প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ধরা হয় ৪৯৯ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির ব্যয় ধরা হয় ২৭৭ কোটি ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে প্রতি মেট্রিক টন চালের মূল্য ধরা হয় ৪৫৪ দশমিক ১৪ মার্কিন ডলার।
পাকিস্তান থেকে চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়ার আগে গত বছরের ৪ ও ১৮ ডিসেম্বর ভারত থেকে ৫০ হাজার টন করে নন-বসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৪ ডিসেম্বর আমদানির অনুমোদন দেওয়া চালের মূল্য ধরা হয় ২৮০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আর ১৮ ডিসেম্বর আমদানির অনুমোদন দেওয়া চালের মূল্য ধরা হয় ২৭৪ কোটি ২০ হাজার টাকা।