জাতীয়
দুর্নীতি বন্ধে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন প্রয়োজন: ড. ইফতেখারুজ্জামান

বাংলাদেশে দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কতটা দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব? দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন থেকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব? এসব বিষয় নিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেনে, স্বাভাবিক অবস্থায় এটা আশা করা যায় কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। এখনো সেই প্রশ্নটা আছে। এখন আমরা একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আছি। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই অর্জন। ছাত্র-জনতার নেতৃত্বের এই আন্দোলনে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো এর অংশীদার বলে নিজেরা দাবি করছেন। যৌক্তিকভাবেই হয়তোবা। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন লাগবে।
এটা যদি হয়, তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ে প্রত্যাশায় জায়গায় যাওয়া সম্ভব। এই শর্তে যে, আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে হবে। যে কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অবস্থান ছিল, সেই কর্তৃত্ববাদ বিকাশের অন্যতম স্তম্ভ ছিল দুর্নীতি। এই দুর্নীতিকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রের কাঠামো দখল করা হয়েছিল। এটার জন্যই তো সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলো শামিল, ফলে তাদের কাছ থেকে তো ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করাই যায়, যদিও এটার লক্ষণ আমরা দেখিনি। ৫ আগস্ট থেকে দলবাজি, দখলবাজি একইভাবে হয়েছে। এখানে একটা ব্যানারের পরিবর্তন হয়েছে, চর্চাটা এখনো রয়ে গেছে। আমরা তো এটার জন্য আইন পরিবর্তন করতে বলেছি।
আমরা কর্তৃত্ববাদের সময়ও দেখেছি, অন্য সময়ও দেখেছি এবং অন্যান্য দেশেও যেটা হয়, সরকারি খাতে যে দুর্নীতি, সেটা এককভাবে সরকারি পর্যায় থেকে হয় না। সরকারি লোকজন, আমলাদের পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আসে বেসরকারি মালিকানাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন খাত। সেখানে ঠিকাদার, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী হিসেবে, সরবরাহকারী হিসেবে এতে তাদের ভূমিকা থাকে। এই অবস্থা থেকে যদি আমরা বের হতে চাই তাহলে বেসরকারি খাতের দুর্নীতিকেও বের করতে হবে। সেই লক্ষেই এই সুপারিশটা করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানা খাতের দুর্নীতিকে অপরাধ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করাও সম্ভব। আমাদের সুপারিশের মধ্যে অনেক কিছুই আছে, যা আশু করণীয়। সেগুলো আমরা চিহ্নিত করে সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছি। এর মধ্যে আছে বেশ কিছু আইনি সংস্কার, নতুন কিছু আইনের দরকার, বেসরকারি খাতের দুর্নীতির বিষয়টি আছে, এর বাইরেও কিছু আইনি সংস্কারের দরকার আছে। বর্তমান সরকারের আমলেই অধ্যাদেশের মাধ্যমে এগুলো করা সম্ভব, যা পরবর্তীতে সংসদে অনুমোদিত হওয়ার চর্চা আছে।
দ্বিতীয়ত, ব্যবসা খাত, আমলাতন্ত্র ও রাজনীতি এই ত্রিপক্ষীয় আতাতের উপর ভিত্তি করে যে দুর্নীতি, সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা বেশ কিছু সুপারিশ করেছি। এগুলো দুদকে সরাসরি সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এতে কাজেও গতি আসবে। দুদকের স্বাধীনতার পাশাপাশি জবাবদিহিতার ক্ষেত্রেও আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিয়েছি। দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্যও আমরা সুপারিশ করেছি। এগুলো এখনই করা সম্ভব। কাঠামোটাকে তৈরি করে যদি ধরে রাখা হয় তাহলে নির্বাচন পরবর্তীতে কার্যকরভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
তদন্তের আগে অনুসন্ধান বন্ধ করতে সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধান করা না হলে কিভাবে জানা যাবে একজন মানুষ কি পরিমাণ দুর্নীতি করেছেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা তদন্ত না করতে বলিনি। আমরা বলেছি, তদন্তের আগে অনুসন্ধান করা বাধ্যতামূলক করা আছে। সেটা বন্ধ করতে বলেছি। ক্রিমিনাল অপরাধের ক্ষেত্রে কিন্তু অনুসন্ধান পর্যায়ে থাকে না। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।
প্রথমত, এটা করা হয়েছে, দীর্ঘসূত্রতার জন্য। দ্বিতীয়ত, এটার জন্য যে সময় নেওয়া হয়, তাতে যার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান হচ্ছে, তিনি যদি প্রভাবশালী হন, তাহলে তিনি তথ্য সরিয়ে ফেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পান। আমরা এটা বন্ধ করতে বলেছি। পাশাপাশি এটার কারণে দুদকের কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই কারণে আমরা আন্তর্জাতিক চর্চাটা এখানে করতে বলেছি।
উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি বন্ধে যে টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রসঙ্গে বলেন, বিদেশে টাকা পাচারের ক্ষেত্রে দুই ধরনের টাস্কফোর্সের কথা বলা হয়েছে। সার্বিকভাবে বিভিন্ন দেশের চর্চা অনুযায়ী, দুদকের পাশাপাশি এনবিআর, বিএফআইইউ, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, সিআইডিকে আমরা যুক্ত করতে বলেছি। দুদকের একার পক্ষের সবসময় আইনগতভাবেই এসবের অনুসন্ধান করা সম্ভব হয় না। সবাই মিলে সমন্বিতভাবে কাজটা করলে প্রক্রিয়াটা সহজ হয়। টাস্কফোর্স সমন্বয়টা নিশ্চিত করবে বলে জানান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
অপর একটি প্রসঙ্গে বলেন, যেহেতু উচ্চ পর্যায়ে অংশগ্রহণ বা নির্দেশে দুর্নীতিগুলো হয়, সেটা বন্ধ করার জন্য সাংবিধানিক অঙ্গীকারের কথা আমরা বলেছি। সংবিধানে এটাকে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক বলে আমরা মনে করি। আমাদের বর্তমান সংবিধানেও এটা বলা আছে। আমরা এর সঙ্গে একটু যুক্ত করতে বলেছি।
বর্তমান সরকারের সময় সংস্কারের যে উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছে, এটা কিন্তু শুধু অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডা না। এটা কিন্তু জনগণের প্রত্যাশার জায়গা। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মূল চেতনার জায়গা হলো, বাংলাদেশে দুর্নীতির যে গভীর বিস্তৃতি রয়েছে, সেটা দেশবাসী আর দেখতে চায় না। এটা যেহেতু সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক এবং আমরা মনে করি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে নিঃসন্দেহে ধরে নেওয়া যায়। তাই এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব, কিন্তু চ্যালেঞ্জ থাকবে বলে মনে করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

জাতীয়
সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার

মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক।
তিনি বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের ঘটনাসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে।
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা তথ্যে ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা টিম আজ রাতে তাকে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জাতীয়
‘ভুয়া তথ্য’ মোকাবিলায় জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

‘ভুয়া তথ্যে’র বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা তৈরি এবং নৈতিক মান বজায় রেখে গণমাধ্যম পরিচালনায় উৎসাহিত করতে জাতিসংঘের আরও সক্রিয় ভূমিকা কামনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউনেস্কোর বাংলাদেশের প্রধান ও প্রতিনিধি সুসান ভাইজ এবং ইউনেস্কোর ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন অ্যান্ড সেফটি অব জার্নালিস্টস সেকশনের সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার মেহদি বেনচেলাহ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
ইউনেস্কো ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে প্রণীত অ্যান অ্যাসেসমেন্ট অব বাংলাদেশ’স মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপ: ফোকাসিং অন ফ্রি, ইনডিপেনডেন্ট অ্যান্ড প্লুরালিস্টিক মিডিয়া— শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশের প্রাক্কালে তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রতিবেদনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা এই রিপোর্টটির জন্য আগ্রহভরে অপেক্ষা করছি। আমাদের প্রধান সমস্যা হলো বিভ্রান্তিকর তথ্য, ভুয়া সংবাদ… এদের একটি বড় অংশ প্রবাসী ব্যক্তিদের দ্বারা ছড়ানো হয়; আবার কিছু স্থানীয় মানুষও এর সঙ্গে জড়িত। এটা এক ধরনের অবিরাম বোমাবর্ষণের মতো।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শুধু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নয়, অনেক সময় প্রচলিত গণমাধ্যমও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায়। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা শুধু সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন না, গণমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলবেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। কোনো গণমাধ্যম যদি বারবার বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায়, তবে তাকে মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন যে, তারা আর বিশ্বাসযোগ্য নয়।
ইউনেস্কো প্রতিনিধি সুসান ভাইজ জানান, বৃহস্পতিবার প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনটিতে আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। এই প্রতিবেদনটি দেখাবে কী কাজ করছে, কী কাজ করছে না এবং এতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুপারিশ থাকবে। কর্মকর্তা, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগের সদস্যদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে যাতে তারা এই মানদণ্ড অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন।
ইউনেস্কোর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা মেহেদী বেনচেলাহ বলেন, প্রতিবেদনটিতে সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশ, যা এখন একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয় এবং নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়েও সুপারিশ থাকবে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এই বিষয়গুলোতে বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে।
জাতীয়
ছয় মাসে ৯ লাখ এনআইডি আবেদন নিষ্পত্তি: ইসি সচিব

গত ছয় মাসে ৯ লাখের মতো এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বর্তমানে ৭৬ হাজারের মতো আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
বুধবার (২ জুলাই) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে ‘এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত ক্র্যাশ প্রোগ্রামের’ অগ্রগতি তুলে ধরেন তিনি। এসময় জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে নাগরিকদের দুর্ভোগ কমেছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিব।
নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, প্রতি মাসে নাগরিকদের এনআইডি সংশোধন নিয়ে আবেদনও কমে আসছে। ভোগান্তির মাত্রাও কমে এসেছে। আশা করি আগামীতে এনআইডি সেবা নিয়ে আর হয়রানির অভিযোগ থাকবে না।
সচিব জানান, চলতি বছরের শুরুতে ১ জানুয়ারিতে এনআইডি সংশোধনের অনিষ্পন্ন আবেদন ছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৬টি, ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে নতুন আবেদন পড়ে ৬ লাখ ৫ হাজার ৫২০টি। সব মিলিয়ে ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫৬টি আবেদনের মধ্যে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রামে’ নিষ্পন্ন করা হয়েছে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬৬২টি। প্রতি মাসে আগে যেখানে গড়ে এক লাখ করে আবেদন পড়ত, এখন তা কমে এসে প্রায় ৮০ হাজারে নেমেছে। বর্তমানে অনিষ্পন্ন আবেদন রয়েছে ৭৬ হাজার ৬৯৪টি।
তিনি আরও জানান, এনআইডি সংশোধনকে ঘিরে বরাবরই নাগরিকদের নানা ধরনের হয়রানি ও দুর্ভোগের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বর্তমান ইসির উদ্যোগে তা ধীরে ধীরে কমে আসছে। এনআইডি আবেদনের ক্ষেত্রে সংশোধনের মাত্রা দেখে চারটি ক্যাটাগরি করে দিয়েছে ইসি সচিবালয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যাদিপূরণ, দলিলাদি যথাযথ কিনা যাচাই, শুনানি করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশোধন করে দেওয়া হয়। ২০২০ সাল থেকে ৫৪ লাখ ৭৬ হাজার ১১টি আবেদন হয়েছে। সেক্ষেত্রে চার ক্যাগাটরিতে আবেদন নিষ্পন্ন হয়েছে ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৪২০টি।
আখতার আহমেদ বলেন, আমার মনে হয়, নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে মানুষের ভোগান্তির মাত্রাটা কমেছে। ছয় মাসে তুলনামূলক আবেদনের সংখ্যাও কমেছে। আগামী কয়েক মাসে তা সন্তোষজনক পর্যায়ে আসবে এবং হয়রানি অভিযোগগুলো আর হয়ত থাকবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, নানা কারণে এনআইডি লক করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে এনআইডির অপব্যবহার রোধে তা করা হয়। তেমনি আমার টাও নাকি এনআইডি লক করা আছে। কারোর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে তথ্য না নেওয়াই ভালো।
জাতীয়
আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানো: ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ২৪ জুন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য ২ জুলাই নির্ধারণ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন সাইমুম রেজা তালুকদার। এ সময় আদালতে অভিযোগ গঠনের জন্য এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়। পরে শুনানি শেষে নতুন দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আশুলিয়ায় ছয় লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গত ১৯ জুন জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য আমরা এক সপ্তাহ সময় চেয়েছি। এ ঘটনায় ১৬ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে তদন্ত প্রতিবেদনে। এর মধ্যে সাতজন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এএফএম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক ও কনস্টেবল মুকুল।
গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ছয় তরুণ। এরপর পুলিশ ভ্যানে তাদের লাশ তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নৃশংস এ ঘটনার সময় একজন জীবিত ছিলেন। কিন্তু তাকেও বাঁচতে দেননি তারা। পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়।
কাফি
জাতীয়
ঢাকায় সৌদি আরবের নতুন রাষ্ট্রদূতের যোগদান

বাংলাদেশে সৌদি আরবের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ড. আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সৌদি এয়ার লাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে বাংলাদেশে পৌঁছান তিনি।
সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল অনুবিভাগ এবং ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান।
চলতি বছর এপ্রিলে ঢাকা ছেড়ে যান সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ড. আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিচয়পত্র পেশ করে ঢাকা মিশন শুরু করবেন এ কূটনীতিক।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রিধারী ড. আব্দুল্লাহ জাফরকে সৌদি ফরেন সার্ভিসে চীন ও কোরিয়ার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কূটনীতিক ২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়াতে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সিটি হাউস্টনের সৌদি কনস্যুলেট সামলেছেন। তিনি সেখানে কনসাল জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন।
২০১৩ সালে তিনি সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা ডেস্কের পরিচালক ছিলেন। সেখান থেকে তাকে কোরিয়ায় সৌদি দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন হিসেবে পাঠানো হয়। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিউলে দায়িত্ব পালন করেন। ড. আব্দুল্লাহ জাফর কোরিয়া থেকে যান জেনেভায়। তিনি সেখানে দায়িত্ব পালন করেন ২০২১ সাল পর্যন্ত। জেনেভা থেকে তাকে পাঠানো হয় চীনে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর গুয়াংজুতে সৌদি কনসাল জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন।
কাফি