জাতীয়
দুর্নীতি বন্ধে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন প্রয়োজন: ড. ইফতেখারুজ্জামান

বাংলাদেশে দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কতটা দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব? দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন থেকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব? এসব বিষয় নিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেনে, স্বাভাবিক অবস্থায় এটা আশা করা যায় কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। এখনো সেই প্রশ্নটা আছে। এখন আমরা একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আছি। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই অর্জন। ছাত্র-জনতার নেতৃত্বের এই আন্দোলনে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো এর অংশীদার বলে নিজেরা দাবি করছেন। যৌক্তিকভাবেই হয়তোবা। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন লাগবে।
এটা যদি হয়, তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ে প্রত্যাশায় জায়গায় যাওয়া সম্ভব। এই শর্তে যে, আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে হবে। যে কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অবস্থান ছিল, সেই কর্তৃত্ববাদ বিকাশের অন্যতম স্তম্ভ ছিল দুর্নীতি। এই দুর্নীতিকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রের কাঠামো দখল করা হয়েছিল। এটার জন্যই তো সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলো শামিল, ফলে তাদের কাছ থেকে তো ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করাই যায়, যদিও এটার লক্ষণ আমরা দেখিনি। ৫ আগস্ট থেকে দলবাজি, দখলবাজি একইভাবে হয়েছে। এখানে একটা ব্যানারের পরিবর্তন হয়েছে, চর্চাটা এখনো রয়ে গেছে। আমরা তো এটার জন্য আইন পরিবর্তন করতে বলেছি।
আমরা কর্তৃত্ববাদের সময়ও দেখেছি, অন্য সময়ও দেখেছি এবং অন্যান্য দেশেও যেটা হয়, সরকারি খাতে যে দুর্নীতি, সেটা এককভাবে সরকারি পর্যায় থেকে হয় না। সরকারি লোকজন, আমলাদের পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আসে বেসরকারি মালিকানাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন খাত। সেখানে ঠিকাদার, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী হিসেবে, সরবরাহকারী হিসেবে এতে তাদের ভূমিকা থাকে। এই অবস্থা থেকে যদি আমরা বের হতে চাই তাহলে বেসরকারি খাতের দুর্নীতিকেও বের করতে হবে। সেই লক্ষেই এই সুপারিশটা করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানা খাতের দুর্নীতিকে অপরাধ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করাও সম্ভব। আমাদের সুপারিশের মধ্যে অনেক কিছুই আছে, যা আশু করণীয়। সেগুলো আমরা চিহ্নিত করে সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছি। এর মধ্যে আছে বেশ কিছু আইনি সংস্কার, নতুন কিছু আইনের দরকার, বেসরকারি খাতের দুর্নীতির বিষয়টি আছে, এর বাইরেও কিছু আইনি সংস্কারের দরকার আছে। বর্তমান সরকারের আমলেই অধ্যাদেশের মাধ্যমে এগুলো করা সম্ভব, যা পরবর্তীতে সংসদে অনুমোদিত হওয়ার চর্চা আছে।
দ্বিতীয়ত, ব্যবসা খাত, আমলাতন্ত্র ও রাজনীতি এই ত্রিপক্ষীয় আতাতের উপর ভিত্তি করে যে দুর্নীতি, সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা বেশ কিছু সুপারিশ করেছি। এগুলো দুদকে সরাসরি সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এতে কাজেও গতি আসবে। দুদকের স্বাধীনতার পাশাপাশি জবাবদিহিতার ক্ষেত্রেও আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিয়েছি। দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্যও আমরা সুপারিশ করেছি। এগুলো এখনই করা সম্ভব। কাঠামোটাকে তৈরি করে যদি ধরে রাখা হয় তাহলে নির্বাচন পরবর্তীতে কার্যকরভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
তদন্তের আগে অনুসন্ধান বন্ধ করতে সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধান করা না হলে কিভাবে জানা যাবে একজন মানুষ কি পরিমাণ দুর্নীতি করেছেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা তদন্ত না করতে বলিনি। আমরা বলেছি, তদন্তের আগে অনুসন্ধান করা বাধ্যতামূলক করা আছে। সেটা বন্ধ করতে বলেছি। ক্রিমিনাল অপরাধের ক্ষেত্রে কিন্তু অনুসন্ধান পর্যায়ে থাকে না। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।
প্রথমত, এটা করা হয়েছে, দীর্ঘসূত্রতার জন্য। দ্বিতীয়ত, এটার জন্য যে সময় নেওয়া হয়, তাতে যার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান হচ্ছে, তিনি যদি প্রভাবশালী হন, তাহলে তিনি তথ্য সরিয়ে ফেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পান। আমরা এটা বন্ধ করতে বলেছি। পাশাপাশি এটার কারণে দুদকের কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই কারণে আমরা আন্তর্জাতিক চর্চাটা এখানে করতে বলেছি।
উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি বন্ধে যে টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রসঙ্গে বলেন, বিদেশে টাকা পাচারের ক্ষেত্রে দুই ধরনের টাস্কফোর্সের কথা বলা হয়েছে। সার্বিকভাবে বিভিন্ন দেশের চর্চা অনুযায়ী, দুদকের পাশাপাশি এনবিআর, বিএফআইইউ, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, সিআইডিকে আমরা যুক্ত করতে বলেছি। দুদকের একার পক্ষের সবসময় আইনগতভাবেই এসবের অনুসন্ধান করা সম্ভব হয় না। সবাই মিলে সমন্বিতভাবে কাজটা করলে প্রক্রিয়াটা সহজ হয়। টাস্কফোর্স সমন্বয়টা নিশ্চিত করবে বলে জানান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
অপর একটি প্রসঙ্গে বলেন, যেহেতু উচ্চ পর্যায়ে অংশগ্রহণ বা নির্দেশে দুর্নীতিগুলো হয়, সেটা বন্ধ করার জন্য সাংবিধানিক অঙ্গীকারের কথা আমরা বলেছি। সংবিধানে এটাকে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক বলে আমরা মনে করি। আমাদের বর্তমান সংবিধানেও এটা বলা আছে। আমরা এর সঙ্গে একটু যুক্ত করতে বলেছি।
বর্তমান সরকারের সময় সংস্কারের যে উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছে, এটা কিন্তু শুধু অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডা না। এটা কিন্তু জনগণের প্রত্যাশার জায়গা। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মূল চেতনার জায়গা হলো, বাংলাদেশে দুর্নীতির যে গভীর বিস্তৃতি রয়েছে, সেটা দেশবাসী আর দেখতে চায় না। এটা যেহেতু সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক এবং আমরা মনে করি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে নিঃসন্দেহে ধরে নেওয়া যায়। তাই এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব, কিন্তু চ্যালেঞ্জ থাকবে বলে মনে করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে সরকার: প্রেস উইং

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
শুক্রবার (৯ মে) প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
ইতোমধ্যে সরকার জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে বলেও উল্লেখ করেছে প্রেস উইং।
এতে আরও বলা হয়, এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে ক্ষোভ বিষয়ে সরকার অবগত বলেও উল্লেখ করেছে প্রেস উইং। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: ৩ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার-বরখাস্ত

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিনভর আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে রাত পৌনে ৮টায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বার্তায় জানানো হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার ও আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং এসবির একজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তারা হলেন- অতিরিক্ত এসপি তাহসিনা আরিফ, এসআই মো. আজহারুল ইসলাম ও এটিএসআই মো. সোলায়মান।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ওবায়দুল কাদেরের নামও রয়েছে।
এ মামলা হওয়ার আগে কিশোরগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের আসামি করে প্রায় অর্ধশত মামলা হয়। তবে সেসব কোনো মামলাতেই আবদুল হামিদকে আসামি করা হয়নি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনবো, না হলে চলে যাবো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশত্যাগে যারা যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের শুধু পদত্যাগ না, তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। যদি আমি তাদের শাস্তির আওতায় আনতে না পারি তাহলে আমি চলে যাবো (পদত্যাগ করবো)।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আইশৃঙ্খলা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্ট। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় যারা যারা জড়িত তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। আপনারা যে পরিস্থিতিতে আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি থেকে এখন পর্যন্ত অনেক উন্নতি হয়েছে তো।’
এরপর দিনাজপুর গম গবেষণা ইনস্টিটিউটে মতবিনিময় সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ত্যাগ করেন উপদেষ্ট।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ৯ মাস পর দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বুধবার (৭ মে) দিনগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশ ছাড়েন।
এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি থেকে এ আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও বাড়ল

সশস্ত্র বাহিনীকে দেওয়া বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার মেয়াদ আরও দুই মাস বা ৬০ দিন বাড়িয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৮ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮ এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী বর্ণিত অধিক্ষেত্রে অর্থাৎ সারাদেশে ও সময়কালে স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব সমমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং কোস্টগার্ডে প্রেষণে নিয়োজিত সমমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) সারা দেশে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ এবং ১৪২ ধারার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তারা কার্যক্রম চালাতে পারবেন।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৪ মে থেকে পরবর্তী ৬০ দিন এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
এর আগে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সারাদেশে মোতায়েন করা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দুই মাস বা ৬০ দিনের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পরে গত ১৫ নভেম্বর, ১২ জানুয়ারি ও ১৩ মার্চ তিন দফায় সশস্ত্র বাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া ক্ষমতা দুই মাস করে বাড়ানো হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কা, নিহত ৫

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে থেমে থাকা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নারীসহ ৫জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চারজনকে চিকিৎসক দুপুর ২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন, আব্দুস সামাদ ফকির, তার ছেলে বিল্লাহ ফকির, মেয়ে আফসানা ও অ্যাম্বুলেন্স চালক। অপরজনের নাম জানা যায়নি।
দুর্ঘটনায় আহতরা জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুরের সদর উপজেলার মিঠাপুর গ্রামে। বিল্লাল ফকিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩০) অন্তঃসত্ত্বা। চলতি মাসের ২৩ তারিখ তার বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ। তবে গতরাত থেকে তার ব্যথা হচ্ছিল। এজন্য সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে পরিবারের ১০ জন মিলে ঢাকার পথে আসছিলেন। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার কথা ছিল। অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা দেয়ার পর এক্সপ্রেস ওয়ের নীমতলি এলাকায় আসার পর চাকা পাংচার হয়ে যায়। এরপর রাস্তার ডান পাশে চাপিয়ে সেটির চাকা মেরামত করছিলেন চালক। আর তারা কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে বসে ছিলেন, আর কয়েকজন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস পিছন থেকে এসে সজোরে অ্যাম্বুলেন্সে ধাক্কা দেয়।
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসের হেল্পার সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, তারা কুষ্টিয়া থেকে যাত্রীবোঝাই বাসটি নিয়ে আসতেছিলেন ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকায়। নীমতলী এলাকায় এক্সপ্রেস ওয়ের ডান পাশের লেনে দাঁড়িয়ে ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন দ্রুতগতির বাসটি চালক ফয়সাল (৪০) ব্রেক করেও থামাতে পারেননি। সজোরে গিয়ে ধাক্কা লাগে থেমে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের পিছনে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাইওয়ে থেকে বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চারজন মারা যায়। এরমধ্যে এক নারী তিন পুরুষ। আহত কয়েকজনকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, মাওয়ার নীমতলি এলাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। আর আহতদের ঢাকা মেডিকেল পাঠান হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে কেউ মারা গেছে কিনা সেটি তার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ঘটনাস্থলে যেই নারী নিহত হয়েছেন তার লাশ পুলিশ হেফাজতে আছে। বাস, অ্যাম্বুলেন্স দুটিই জব্দ করা হয়েছে।
কাফি