অর্থনীতি
উন্নয়ন বাজেট থেকে বাদ যাচ্ছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা

চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে পরিবহন অবকাঠামো সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোতে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে এক লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
কিন্তু বৈদেশিক ঋণের ১৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে না। নতুন করে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৮১ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি ব্যয় কমছে সরকারি তহবিলেরও। এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা থেকে কমে সরকারি তহবিল দাঁড়াচ্ছে এক লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে সরকারি তহবিল থেকেও বাদ যাচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। দুই খাত মিলিয়ে বাদ যাচ্ছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা।
বৈদেশিক তহবিলের বরাদ্দের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ৫০ বছরের মধ্যে এত বরাদ্দ কমাতে হয়নি কখনো। এমনকী করোনা মহামারির সময়েও কমাতে হয়েছে এর চেয়ে অনেক কম। এ অবস্থার নেপথ্যে রয়েছে প্রধানত পাঁচটি কারণ। এগুলো হলো- আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড় না করা, অন্তর্বর্তী সরকারের কড়াকড়ি, অদক্ষতায় সময়মতো কাজ করতে না পারা এবং পুরোনো সমস্যার আবর্তে ঘুরপাক। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাদ দিয়ে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন সেক্টর, মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ ভাগবাটোয়ারার কাজ করছে পরিকল্পনা কমিশন। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় অনেক প্রকল্পও বাদ দেওয়া হচ্ছে।
রেকর্ড পরিমাণে বৈদেশিক ঋণ কাটছাঁট প্রসঙ্গে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব (ফাবা ও আইসিটি) নূর আহমদ বলেন, আমরা পরিবর্তিত অবস্থানের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। কিছু প্রকল্প বদল হয়েছে। কিছু রি-ভিজিট করতে হচ্ছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প ছিল। এগুলো বাদ দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দেওয়া হচ্ছে। যৌক্তিক যতটুকু ব্যয় করা যায় ততটুকু করতে হচ্ছে। কারণ আমরা চাই না বৈদেশিক ঋণের একটি টাকাও অপ্রয়োজনীয়ভাবে ব্যবহার হোক।’
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে মোট বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে এর পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। এতে সরকারি তহবিলের বরাদ্দ দেওয়া হবে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ৮১ হাজার কোটি টাকা। এ বরাদ্দ দিয়ে শিগগির সেক্টর, মন্ত্রণালয় ও প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ নির্ধারণে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করবে পরিকল্পনা কমিশন।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নেও বিরাজ করছে করুণ দশা। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের এক শতাংশ অর্থও খরচ করতে পারেনি। এগুলো হলো- স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন হার এখনো ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। সার্বিকভাবে এডিপির বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছিল ২৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
গুরুত্ব পাচ্ছে বিদ্যুৎ-সড়ক
সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১৫ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ২০ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা পাচ্ছে শিক্ষা বিভাগ। স্বাস্থ্য খাতে ৮ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। ৩২ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগে। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৪৮ হাজার ১১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়নে ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।
রেকর্ড পরিমাণে ব্যয় কমানো প্রসঙ্গে পরিকল্পনা সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, প্রকল্পে টাকার চাহিদা কম। অনেক প্রকল্পে টাকা খরচ হয়নি। আমরা সব কিছু রিভিশন করছি। আমাদের কাছ থেকে বরাদ্দ কম বা বেশি দেওয়ার বিষয় না। যাদের প্রকল্প তাদের থেকে উদ্যোগ নেওয়া। যাদের প্রকল্প তারাই খরচ করতে পারেনি। এ কারণেই মূলত বরাদ্দ কমছে।

অর্থনীতি
কাল থেকে আমদানি-রপ্তানির সব সনদ অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক

আগামীকাল ১ জুলাই থেকে এনবিআরের সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমের আওতায় আমদানি ও রপ্তানি পণ্যচালানের শুল্কায়নে ১৯টি সংস্থার ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) অনলাইনের মাধ্যমে দাখিল করতে হবে।
সোমবার (৩০ জুন) এক সংবাদ বিবৃতিতে এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে এনবিআর জানায়, বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা প্রয়োজনীয় সিএরপির জন্য আবেদন ও সংগ্রহ করতে পারবেন। এই সিস্টেম ব্যবহারের জন্য প্রথমে বিজনেস সনাক্তকরণ নম্বর বা বিন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে।
এই সিস্টেম ব্যবহারের ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে যে সব সুবিধা পাওয়া যাবে সেগুলো হলো-
১. একটি কমন প্লাটফর্মে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য সার্টিফিকেট, লাইসেন্স এবং পারমিট সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সংস্থা কর্তৃক যুগপৎভাবে অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে।
২. সরকারি কাজে ব্যক্তিগত যোগাযোগ না থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
৩. পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে।
৪. দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির মধ্যমে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
এনবিআর আরও জানায়, সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম থেকে ইতোমধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট সংখ্যা অদ্য ৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৫টি অতিক্রম করেছে। সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের ৮৫.৯৭ শতাংশ একঘণ্টার কম সময়ে এবং ৯৪.৬৩ শতাংশ একদিনের সময়ে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় ইস্যু করা হয়। ইতোমধ্যে সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যুকারী ১৯টি সংস্থার (DGDA, EPB, DOEX, BNACWC, BEZA, BEPZA, DOE, BSTI, BAERA, BAEC, CAAB, BTRC, DOF, DLS, PQW, BIDA, BGMEA, ΒΚΜΕΑ, CCI&E) ক্ষেত্রে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ অবস্থায় আগামীকাল ১ জুলাই থেকে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যচালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে উক্ত ১৬টি সংস্থা কর্তৃক ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রয়োজনে হটলাইন ১৬১৩৯ এ যোগাযোগ কিংবা www.bswnbr.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে সহায়তা নেওয়া যাবে।
অর্থনীতি
আন্দোলনের মধ্যেও এনবিআরের রাজস্ব আদায় ৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান।
সোমবার (৩০ জুন) সকালে আন্দোলন স্থগিতের পর প্রথম কার্যদিবসে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “সবকিছু ভুলে দেশের জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। রাজস্ব কর্মকর্তাদের দেশপ্রেম নিয়ে কাজে ফিরতে হবে।” তিনি আরও জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, গত অর্থবছর ২০২৩-২৪-এ জাতীয় রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ আয় আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
এর আগে টানা দেড় মাস ধরে চলা ‘মার্চ টু এনবিআর’ এবং ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহারের মাধ্যমে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরেছেন এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সকালে এনবিআর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, রাজস্ব ভবনের বিভিন্ন বিভাগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। জমে থাকা ফাইল ও সেবাগ্রহীতাদের ভিড়ে ফিরে এসেছে চেনা কর্মচাঞ্চল্য। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ভবনের আশপাশে এখনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
এর আগে রোববার রাতে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, “দেশের আমদানি-রফতানি, সরবরাহব্যবস্থা ও অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং সাধারণ জনগণের ভোগান্তি দূর করতে আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি।”
প্রসঙ্গত, এনবিআরে সংস্কার ও কাঠামোগত পরিবর্তনের দাবিতে গত ১২ মে থেকে আন্দোলনে নামে এনবিআরের কর্মকর্তারা। এতে প্রায় দেড় মাস ধরে রাজস্ব আদায় ও সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। তবে আন্দোলন প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে ফের সচল হয়েছে রাজস্ব আদায়ের অন্যতম এই প্রতিষ্ঠান।
কাফি
অর্থনীতি
জুনের ২৮ দিনেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকে

চলতি মাস জুনের প্রথম ২৮ দিনে ২৫৩ কোটি ৯২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। ব্যাংকিং চ্যানেলে এসব রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। তবে এ সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকের মাধ্যমে।
এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল ও বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুনের ২৮ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৫ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি (মাস) জুনের ২৮ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। পরের মাস নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। সবশেষ মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অর্থনীতি
৪৮ ঘণ্টা শাটডাউনের পর এনবিআরের আন্দোলন প্রত্যাহার

গত ৪৮ ঘণ্টা শাটডাউনের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রাত সাড়ে নয়টার দিকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এর ফলে গত কয়েক দিন ধরে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি আপাতত শেষ হলো।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এবং দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলের নেতারা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, দেশের শীর্ষস্থানীয় চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা প্রমুখ।
গত শনিবার থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের সার্বিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা শুরু হয়। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা এই কর্মসূচির কারণে ঢাকার এনবিআর ভবন থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর, ঢাকা কাস্টমস হাউস, বেনাপোল, সোনামসজিদ, আখাউড়া, বুড়িমারীসহ দেশের সব স্থলবন্দর শুল্কস্টেশনে শুল্ক-কর আদায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। স্থবির হয়ে যায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
অবশ্য গত দেড় মাস ধরে সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে এনবিআরের যৌক্তিক সংস্কারে দাবিতে আন্দোলন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অর্থনীতি
সহযোগী সংস্থাগুলোকে ১১ হাজার কোটি টাকা দেবে পিকেএসএফ

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সহযোগী সংস্থাগুলোকে ১১ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। এছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে পিকেএসএফ পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছে।
রবিবার (২৯ জুন) রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে অনুষ্ঠিত পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর পরিচালনা পর্ষদের ২৬০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের সুবিধাবঞ্চিত, নিম্ন-আয়ের মানুষের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে ‘পিকেএসএফ কৌশলগত পরিকল্পনা (২০২৫-২০৩০)’ অনুমোদন করেছে পিকেএসএফ-এর পরিচালনা পর্ষদ।
পিকেএসএফ জানায়, প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই পিকেএসএফ এর কার্যক্রমের মান ও কার্যকারিতা দেশে-বিদেশে সমাদৃত হলেও বর্তমানে আর্থ-সামাজিক, প্রাযুক্তিক, দারিদ্র্য পরিস্থিতি ও মানুষের চাহিদার বিবর্তন ঘটেছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশে টেকসইভাবে দারিদ্র্য নিরসন ও নিম্ন-আয়ের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পিকেএসএফ নতুন এই কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১১ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের প্রস্তাব উত্থাপন করে। পরিচালনা পর্ষদ প্রস্তাবটি গ্রহণ করে তা সাধারণ পর্ষদে অনুমোদনের লক্ষ্যে উপস্থাপনের পরামর্শ দেয়। বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পিকেএসএফ থেকে সহযোগী সংস্থা পর্যায়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। বর্ধিত এ অর্থায়নের ফলে সহযোগী সংস্থাগুলো তৃণমূলে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে অধিকতর কার্যকরভাবে পিকেএসএফ এর সেবাগুলো পৌঁছে দিতে পারবে।
সংস্থাটি জানায়, পিকেএসএফ এর সাধারণ পর্ষদের ১৪তম সভায় ‘পিকেএসএফ কৌশলগত পরিকল্পনা (২০২৫-২০৩০)’ এর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ১২ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়।
পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দু’টি সভাতেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের, পর্ষদ সদস্য ড. সহিদ আকতার হোসাইন, নূরুন নাহার, ফারজানা চৌধুরী, প্রফেসর ড. মো. তৌফিকুল ইসলাম এবং লীলা রশিদ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া সাধারণ পর্ষদের সভায় সব পর্ষদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।