অর্থনীতি
ব্যাংক খাত স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে: গভর্নর

আমানতকারীদের আস্থা হারালে চলবে না। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে প্রত্যেক আমানতকারীটাকা ফেরত পাবেন। ধৈর্য ধরতে হবে। কিন্তু তার আর প্রয়োজন হবে না। ইতোমধ্যেই ব্যাংক খাত স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
আজ শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) ২৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘তোমরাই আগামী দিনের ব্যাংকার। তোমাদের মধ্য থেকেই দেশের মানুষের আমানতের রক্ষক (কাস্টোডিয়ান) তৈরি হবে। তবে সবসময় সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, তোমরা এখন কর্মজীবনে প্রবেশ করবে। আগামীতে তোমরাই জাতির উন্নয়নে অবদান রাখবে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতিতে নেতৃত্ব দেবে।
যে পেশাতেই যাও না কেন সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করবে। কর্মজীবনে দুই ধরনের পথই খোলা থাকে। চাইলে অসৎ হওয়া যায়, আবার সৎ পথেও থাকা যায়। পছন্দ তোমার। তবে পথ হারালে তুমি তোমার পরিবার ও সমাজসহ পুরো দেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যেমন এখন আমরা একটি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান গভর্নর।
তিনি বলেন, আমরা এখন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার কারণ ব্যাংক খাতের দুর্নীতি। ব্যাংক খাতের বর্তমান নাজুক পরিস্থিতির দায় কোনো ব্যাংকার এড়াতে পারেন না। তাদের জন্যই আজ ব্যাংক খাতের বেহাল দশা। এখন প্রয়োজন শুধু একতা। সবাই মিলে একতাবদ্ধ হতে পারলেই আমরা দেশটাকে আবার ঢেলে সাজাতে পারবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমানতকারীদের আস্থা হারালে চলবে না। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে প্রত্যেক আমানতকারীটাকা ফেরত পাবেন। ধৈর্য ধরতে হবে। কিন্তু তার আর প্রয়োজন হবে না। ইতোমধ্যেই ব্যাংক খাত স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বিদেশি মুদ্রার বাজারও স্থিতিশীল। বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাব এখন উদ্বৃত্ত। সুতরাং এখন ভয়ের আর কোনো কারণ নেই।
উল্লেখ্য, পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ মাত্র ২২ হাজার কোটি টাকা থেকে ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকাতে উন্নীত হয়েছে। সিংহভাগ ব্যাংকের মালিকানা চলে যায় আওয়ামী রাজনৈতিক সুবিধাভোগীদের কব্জায়। নামে-বেনামে বের হয়ে যায় বিপুল অঙ্কের ঋণ। দেশ থেকে পাচার হয় ২৪০ বিলিয়ন ডলার। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে ১৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। যদিও সেটা এখন বেড়ে ২০ বিলিয়নে অবস্থান করছে। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এসব চিত্র বেরিয়ে আসলে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে শুরু করেছিল আমানতকারীরা। এখনও সেই চাপ সামাল দিয়ে উঠতে পারেনি ব্যাংকগুলো। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংক খাতের যে ক্ষতি হয়েছে তার দিকে ইঙ্গিত দিয়ে গভর্নর বলেন, ব্যাংকের ব্যর্থতা বা বর্তমান নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার দায় কোনো ব্যাংকার এড়াতে পারে না।
গভর্নর বলেন, আমরা একটা বড় ধাক্কা সামাল দিয়েছি। সরকার গঠনের শুরুতে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি, ভাঙাচুরা ব্যাংকিং খাত ও দুর্বল অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। কিন্তু ইতোমধ্যেই চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাব-দুটিই এখন উদ্বৃত্ত। লেনদেনের ভারসাম্যও শক্তিশালী। বিদেশি মুদ্রারও বাজার স্থিতিশিল। রিজার্ভ ভালো, প্রবাসী আয়ও (রেমিট্যান্স) ভালো। এজন্য আমি বিদেশে থাকা আমাদের বাংলাদেশি ভাইদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। যারা কঠোর পরিশ্রম করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান।
তিনি বলেন, ব্যাংক খাত সংস্কারে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেসব কাজ এখনও চলমান। এর ফলে ইতিবাচক ফল আসা শুরু করেছে। জানুয়ারিতে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে। আশা করি এ বছরের জুনের মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে। তবে আগামী বছরে (২০২৬) মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে নিয়ে আনা সম্ভব।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক খাতকে সিস্টেমেটিক্যালি নষ্ট করা হয়েছে। সেই সিস্টেমকে ঠিক করার জন্য বার বার নীতি সুদহার বাড়াতে হয়েছে। আমিও চায় ঋণের সুদহার ৭ থেকে ৮ শতাংশে নেমে আসুক। এজন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
আইইউবি-র দেওয়া তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫তম সমাবর্তনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের এক হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করা হয়েছে। সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক হাজার ৫৫০ জন স্নাতক ও ৪১৯ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের। কৃতিত্বপূর্ণ ফল অর্জনকারী দুই স্নাতক শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব এবং সনদ প্রদান করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান, আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন এডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (ইএসটিসিডিটি)-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান উপাচার্য অধ্যাপক ম. তামিম প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউবির কোষাধ্যক্ষ খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার, রেজিস্ট্রার মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

অর্থনীতি
হিলিতে কাঁচামরিচের দাম বাড়লেও কমেছে পেঁয়াজের

হিলিতে একদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে, তবে বেড়েছে দেশি কাঁচামরিচের দাম। কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা এবং দেশি কাঁচামরিচ কেজি প্রতি ৩০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি হওয়াতে কমতে শুরু করেছে দাম।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে হিলির কাঁচাবাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচামরিচের সরবরাহ কম হওয়াতে দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম কমাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধিতে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা রায়হান কবির জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সোনা-মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ৪ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আগামীকাল রোববার হিলি স্থলবন্দর দিয়েও পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কথা রয়েছে। যার ফলে দেশের বিভিন্ন মোকামে কমতে শুরু করেছে দাম। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমরা কম দামে কিনে কম দামে বিক্রি করছি।
হিলি বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতা বিপ্লব হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে করে কাঁচামরিচের সরবরাহ কমে গেছে। যার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে ২০০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের থেকে ক্রেতা অনেক কম।
অর্থনীতি
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিলিতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শনিবার (১৬ আগস্ট) হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
তবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দু’দেশের মাঝে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা হিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান।
তিনি বলেন, শনিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শুভ জন্মাষ্টমী। এ উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় কাস্টমসের সকল বিভাগ বন্ধ থাকবে। যার কারণে এদিন বন্দর দিয়ে দু’দেশের মাঝে পণ্য আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামী রোববার থেকে আবারো আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে।
অর্থনীতি
সবজির বাজার চড়া, বেড়েছে চাল-ডিমের দাম

এ মাসের শুরুতেই প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১২০ টাকা। যা এখন ঠেকেছে ১৫০ টাকায়। সহজ প্রোটিনের উৎস এ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় দারুণ অস্বস্তিতে পড়েছেন নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ। অন্যদিকে বাজারে চালের দাম বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই বেশি। এরমধ্যে বেশিরভাগ সবজিও মিলছে না প্রতি কেজি ৮০ টাকার নিচে। সঙ্গে গত দুই সপ্তাহ ধরেই পেঁয়াজ, আদা ও এলাচের দাম বেড়েছে।
সবমিলে অনেকগুলো পণ্যের দাম একসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন গড়পড়তা আয়ের মানুষ। অনেকে সাধ্যের মধ্যে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর কয়েকটি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেই এমনটি জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, এখন মুদি দোকানে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা হালি, ১৫০ টাকা ডজন। কোথাও এক ডজন নিলে ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকা রাখা হচ্ছে।
মালিবাগ এলাকার দোকানি মফিজুর রহমান বলেন, দুই সপ্তাহ আগে ডিমের দাম ১২০ টাকা ডজন ছিল। যা এখন ৩০ টাকা বেড়েছে। তারপরও ডিমের সরবরাহ ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, বাজারে সবজির দামও চড়া। বিক্রেতারা জানিয়েছেন টানা বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকার সবজি নষ্ট হয়ে সরবরাহ কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে দামে।
বাজারে প্রতি কেজি ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, বরবটি ও কাঁকরোল ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ধরন ভেদে বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকার মতো।
বিক্রেতাদের হিসাবে বর্তমানে ৬০ টাকার নিচে রয়েছে আলু ও পেঁপে। আর ৬০ থেকে ৮০ টাকার আশপাশে দাম রয়েছে শুধু ঢ্যাঁড়স, পটোল, মিষ্টিকুমড়াসহ হাতেগোনা দু-চারটি সবজির।
অবশ্য কারওয়ান বাজার বা বড় পাইকারি বাজারে প্রতিটি সবজির দামই তুলনামূলক কম। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার সবজির দাম কিছুটা বেড়ে যায়।
এদিকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়।
পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। এরমধ্যে, কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
কারওয়ান বাজারে পাইকারি বিক্রেতা জুবায়ের আলী বলেন, উৎপাদন এলাকায় পেঁয়াজের দাম কয়েক দিন বেড়েছে। পাবনা-ফরিদপুর এলাকার মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম প্রায় ৪০০ টাকা বেড়েছে।
বাজারে প্রতি ১০০ গ্রামে এলাচ আগে ৪০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন সেটি সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় উঠেছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আদার দাম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা।
অন্যদিকে, চালের চড়া দামে নিম্নমুখী কোনো প্রবণতাই লক্ষ্য করা যায়নি। মাস দেড়েক ধরে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের এক ধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজিরশাইল রয়েছে, যেটা শুধু ৬৫-৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি সব চাল সাধারণত ৭৫-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর খুব ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে।
অর্থনীতি
দেশের রিজার্ভ আরও বাড়লো

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বর্তমানে রিজার্ভ বেড়ে এখন ৩০৮৩৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০.৮৩ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০৮৩৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০.৮৩ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২৫৮২৭ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫.৮২ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে ১০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৩০২৪৮ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৫২৩২ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫.৩২ বিলিয়ন ডলার।
গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৪.৯৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগে গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০০০৪ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৪৯৮৮ দশমিক ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। দেশের মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
কাফি
অর্থনীতি
প্রথম ১০ দিনেই ১ লাখ করদাতার ই-রিটার্ন দাখিল

২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে ই-রিটার্ন চালুর পর থেকে প্রথম ১০ দিনে (১৩ আগস্ট পর্যন্ত) ৯৬ হাজার ৯৪৫ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর অনলাইন রিটার্ন দাখিল শুরুর প্রথম ১০ দিনে ২০,৫২৩ জন করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। সে হিসেবে এ বছরের ই-রিটার্ন দাখিলের দৈনিক গড় সংখ্যা গত বছরের দৈনিক গড় সংখ্যার প্রায় ৫ গুণ।
চলতি বছর গত ৩ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বিশেষ আদেশ জারি করে জানায়, দেশে ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি ব্যতীত সারা দেশের সব ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার (Individual Taxpayers) অনলাইনে (www.etaxnbr.gov.bd) আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১১ আগস্ট বিশেষ আদেশটি প্রতিস্থাপন করে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদেরকেও অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সমর্থ না হলে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত/যুগ্মকর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তিনি পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্য যেকোনো মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর পরিশোধ করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের acknowledgement slip প্রিন্ট নিতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখপূর্বক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট করতে পারেন।
ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। উক্ত কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতাগণ ই-রিটার্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন হতে করদাতাগণ ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা লিখিতভাবে জানাতে পারবেন এবং সমাধান পাবেন।
এছাড়াও ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাগণকে যথাসময়ে www.etaxnbr.gov.bd পোর্টাল ব্যবহার করে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।