আন্তর্জাতিক
শেখ হাসিনা দালাই লামা নন, ভারতের উচিত তাকে সমর্থন বন্ধ করা: দ্য প্রিন্ট

গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ১৮০তম দিনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে ভাষণ দেওয়ার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। তার এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে— অনেকেই ভাবতে শুরু করেন তার দল আওয়ামী লীগ হয়তো প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করছে। শুরুতে যা ছিল শেখ হাসিনার একটি সাধারণ ফেসবুক পোস্ট, বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণরা তা কার্যত লুফে নেয়। সেইসঙ্গে ঢাকার কেন্দ্রে প্রতিবাদীদের একটি বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনা যতক্ষণে তার বক্তৃতা শুরু করেন, ধানমন্ডি ৩২-এর ঐতিহাসিক ভবনটির সামনে আনা হয় কয়েকটি বুলডোজার, ততক্ষণে আগুনে জ্বলছিল ভবনটি। ঐতিহাসিক এই বাড়িতেই শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মুকুটহীন রাজা হিসেবে তার শেষ দিনগুলো কাটিয়েছিলেন। হলুদ বুলডোজারের বড় ধাতব ব্লেডগুলো ভবনের একের পর এক অংশ গুঁড়িয়ে দিতে শুরু করে। এই ভবন থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
ঘটনাটি অনেককে, এমনকি বাংলাদেশের এস্টাবলিস্টমেন্ট সদস্যদেরও বিস্মিত করেছে। প্রায় ৪০ জন সেনা সদস্য রাস্তার মুখে গিয়ে ওই বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তারা বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভের মুখে সেখান থেকে সরে যান।
পরদিন সূর্যোদয়ের সময় বাংলাদেশ যখন জেগে ওঠে তখন তার ল্যান্ডস্কেপে পরিবর্তন ঘটে গেছে— বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যা করতে পারেনি, তা ওই রাতের ৯ ঘণ্টায় ঘটেছিল। ৩২ নম্বর রোডের ভবনটিতে ইট ও ছাই- ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
কিন্তু ভুল বুঝবেন না। এরা বিক্ষুব্ধ জনতা বা ধর্মান্ধরা নয় যারা ইতিহাসকে নতুন করে লেখার চেষ্টা করছে বা বাংলাদেশকে ১৯৭১ সালের আগের দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে যখন দেশটি পাকিস্তানের অংশ ছিল। বাড়িটি ভাঙার সাথে সাথে যারা হাততালি, উল্লাস ও সেলফি তুলছিলেন তাদের মধ্যে দেশের ইংরেজি-শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং শহুরে মানুষও দাঁড়িয়েছিলেন।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হাসিনা ও তার দোসরদের হাতে তাদের ভোটাধিকার হরণ হতে দেখেছে তারা। বিক্ষোভেকারীদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন যারা হাসিনার শাসনামলে একের পর এক কারচুপির নির্বাচনের কারণে তাদের জীবনে কখনো ভোটই দিতে পারেননি।
অবশ্য ভোটে কারচুপি করলেও মানুষের সমর্থন পেতে হাসিনা তার বাবার উত্তরাধিকার এবং দেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করেছেন। এই কাজটা তিনি এতটাই করেছেন যে- সাধারণ বাংলাদেশিরা মুজিবকে হাসিনা থেকে আলাদা ভাবতে পারেননি। উভয়ই দুঃখজনকভাবে একে অন্যের সাথে মিলে গিয়েছেন। হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে এখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই আবহে ভারত এখন পররাষ্ট্রনীতির জালে আটকে পড়েছে। ঢাকায় এখন আবেগ তুঙ্গে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ এহতেশাম হক বলেছেন, লাখ লাখ ভুক্তভোগী মানুষ তাদের নিপীড়কের প্রতীককে সম্মান করবে বলে আপনি আশা করেন? যা কিনা ইট-বালি দিয়ে তৈরি একটি বাসা মাত্র- আপনি কি আমাদের কাছ থেকে চুরি করে নেওয়া সম্পদ ফিরিয়ে দিতে পারবেন? আমাদের দেশবাসীর কাছ থেকে নৃশংসভাবে কেড়ে নেওয়া চোখ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফিরিয়ে আনতে পারবেন? আজকে ভেঙে ফেলা প্রতিটি ইট ন্যায়বিচারের প্রতীক, যা নিপীড়ক শাসকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করছে। মুজিবকে গুম, অপশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতীকে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। ৩২ নম্বর রোডের বাড়িটি, যাকে একসময় বাংলাদেশিদের গর্বের স্মারক হিসেবে দেখতেন, তা এখন হাসিনা নামের সমার্থক হয়ে উঠেছে।
ভারতের আওয়ামী লীগের সমস্যা
শেখ মুজিবুর রহমান যখন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির সেন্ট্রাল জেল মিয়ানওয়ালিতে বন্দি ছিলেন তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর তাজউদ্দীন আহমেদসহ মোট চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। তাজউদ্দীনের বিধবা স্ত্রী ও সোহেল তাজের মা সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন করেন এবং ১৯৭৭ সালে দলটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, ৩২ নম্বর রোডের বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যাবার একদিন পরও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সোহেল তাজ কোনও সমালোচনা করেননি। কারও নাম না করে তিনি তার দলের দুঃখজনক অবস্থার জন্য ১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকা শেখ হাসিনার ওপরই দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, কেউ একজন এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে দেশের স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দলের সুনামই আজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
যতবারই মিডিয়ায় শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশিত হয় ততবারই তার প্রতি ভারতের নিরবচ্ছিন্ন এবং অটল সমর্থনের প্রশ্নটিও সামনে এসে যায়। কয়েকদিন আগে, শেখ হাসিনা তার দলের সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন- যারা তার বিরোধিতা করেন তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দিতে। একটি অডিও ক্লিপে তাকে বলতে শোনা যায়, “তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিন।”
এটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, শেখ হাসিনা কোনও দালাই লামা নন যে, তিনি বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতকে নৈতিক সংকটে ফেলবেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী ভারতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ হচ্ছে বাংলাদেশে ভারতের একমাত্র মিত্র। কিন্তু শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পুনর্বাসন করা এককথায় অসম্ভব, বিশেষ করে যখন সারাদেশে তার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি এখনও জনসাধারণের মনে টাটকা, সতেজ। ৩২ নম্বর রোডে মুজিবের বাড়ি ভাঙা তারই একটি বহিঃপ্রকাশ।
অবশ্য শেখ হাসিনা সেই দুর্ভাগ্যজনক বক্তৃতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার বিরোধীরা বিশৃঙ্খল অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল- হাসিনার বিরুদ্ধে বিপ্লবের দিকে পরিচালিত আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিতে শুরু করেছিল। কিন্তু, হাস্যকরভাবে, শেখ হাসিনা সফলভাবে তার বিরোধীদের আবার একত্রিত হওয়ার রসদ যুগিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি সক্ষম হয়েছেন। যে মুহূর্তে শেখ হাসিনার ছায়া দিগন্তে আবির্ভূত হয়েছিল, নিজেদের মধ্যে সব মতবিরোধ তারা দ্রুত ভুলে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) বেশ অস্বস্তিকর অবস্থানে ফেলেছে। ভারতকে খুশি করতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে দলটি। ভারতবিরোধী বক্তব্য না দেওয়ার ও ছড়ানোর ব্যাপারেও সতর্ক রয়েছে বিএনপি। কিন্তু দিনশেষে দলটির নেতাদের নির্বাচনের সম্মুখীন হতে হবে- আর তাই বিএনপি কতদিন তার কণ্ঠ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে।
এই মুহূর্তে ভারতকে দেশের তরুণ প্রজন্মের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখতে হবে, যারা বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনার হাতে নিজেদের মৌলিক মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হতে দেখেছে। হাসিনার হাতে কেবল দুটি অস্ত্র ছিল- তার বাবার উত্তরাধিকার এবং ভারতের সমর্থন। মুজিবের ঐতিহাসিক বাসা ধ্বংসকে এই আলোকে দেখা উচিত এবং বিপুলসংখ্যক জনগণের মধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে বিরাজমান ব্যাপক ক্ষোভকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝা উচিত। নয়া দিল্লিকে অবশ্যই তার গর্ব খর্ব করতে হবে এবং বুঝতে হবে যে, এটি এমন একটি দেশের স্বৈরশাসককে নির্লজ্জভাবে সমর্থন করেছে- যার সাথে রয়েছে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম স্থল সীমান্ত। শুধু প্রয়োজন সাবেক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর মতো বাস্তব বুদ্ধি। এমনকি অতীতে যখন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল তখনও তিনি বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিজের উদ্যোগে তার হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের লেনদেনের জগত
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বাস্তববাদী মানুষ। তিনি লেনদেনে বিশ্বাসী। যেখানে সর্বোচ্চ দরদাতা যা চায় সেটাই পায়। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত বাংলাদেশ বৈশ্বিক দুই পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরে কৌশলগতভাবে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশের অবস্থানকে প্রাণকেন্দ্রে হিসেবে দেখে চীন। যদি কখনও দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ-অবরোধের মুখে পড়তে হয় সে ক্ষেত্রে সমুদ্রপথে যাওয়ার জন্য বার্মা বা বাংলাদেশ অথবা উভয়েরই প্রয়োজন হবে চীনের। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। বর্ষা বিপ্লব বাংলাদেশকে উভয় পরাশক্তির সাথে সঠিক দর কষাকষির সুযোগ করে দিয়েছে। যেখানে ভারতের সাউথ ব্লক বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার কল্পনায় অটল বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে চীন ঢাকায় নতুন শাসন ব্যবস্থার প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব দেখাচ্ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতকে অবশ্যই বাংলাদেশে নতুন বন্ধু তৈরি করতে হবে। সাধারণ বাংলাদেশিদের পাকিস্তানের ছায়ামূর্তি হিসেবে চিত্রিত করা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য ভালো হতে পারে এবং পশ্চিমবঙ্গে কিছু ভোট জিততে সাহায্য করতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদী এই কৌশল ক্ষতিকারক হিসেবে প্রতিভাত হবে।
বাংলাদেশের বিষয়ে চীন বরাবরের মতোই বাস্তবতা দেখিয়েছে। তবে ভারতের বাংলাদেশ নীতি ৭৭ বছর বয়সী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, শেখ হাসিনা দেশের মাটিতে একাধিক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছেন। ভারতের এই অবাস্তববাদী নীতির প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও উদ্বেগজনক। কারণ চীনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ওপর নির্ভরশীল ওয়াশিংটন।
সূত্র: দ্য প্রিন্ট
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারত

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারত। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এবিপি আনন্দের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ভারত।
এর আগে ভারতের পহেলগামে হামলার ঘটনার পর পাকিস্তান ঘোষণা দেয়, তারা ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাবে। এ নিয়ে করাচি উপকূলের কাছে নিজেদের ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে’ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানি নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৪ -২৬ এপ্রিলের মধ্যে এই মিসাইল পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ ঘিরে ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
এদিকে পাল্টা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভারতও সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে। গতকাল মিসাইল ধ্বংসের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। নিজেদের প্রযুক্তিতে তৈরি আইএনএস সুরাত থেকে এক নিম্ন-উড্ডয়ন মিসাইল সফলভাবে ধ্বংস করা হয়। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ভারতীয় নৌবাহিনী বলেছে, এতে তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
এই সামরিক পাল্টাপাল্টির মধ্যে ভাষার লড়াইও থেমে নেই। ভারতের সিদ্ধান্তকে ‘শিশুসুলভ’ আখ্যা দিয়ে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ‘আমরা ভারতকে যোগ্য জবাব দেব। এই জবাব কম হবে না।’
সাম্প্রতিক উত্তেজনায় দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ইতোমধ্যে হিমশীতল হয়ে পড়েছে। একে অপরের কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে দুই দেশ। বন্ধ হয়েছে আকাশসীমাও। এখন সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পালা শুরু হয়েছে সমুদ্র ও আকাশপথে।
চলমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারত-পাকিস্তানকে সংযত হওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

ভারত-শাসিত কাশ্মিরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতকে “সর্বোচ্চ সংযম” দেখাতে বলেছে জাতিসংঘ। মূলত হামলার পর দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
হামলার ঘটনাটি ঘটেছে ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে — যা গ্রীষ্মকালে হাজার হাজার পর্যটকের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র। বন্দুকধারীদের গুলিতে সেখানে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দা এবং একজন নেপালের নাগরিক। আহত হন আরও অন্তত ১৭ জন।
এই ঘটনায় পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে ভারত। তবে ভারতের দাবি প্রত্যাখ্যান করে কাশ্মিরের এই হামলাকে সাজানো ঘটনা বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। দেশটি বলেছে, এটি ছিল একটি ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন—অর্থাৎ নিজেরাই ঘটিয়ে অন্যের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা।
হামলার এই ঘটনার পর উভয় দেশই উভয়ের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে এবং এতে করে উভয় দেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
এমন অবস্থায় নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক বলেন, “মহাসচিব এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং এতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা ভারত ও পাকিস্তান – উভয় দেশের সরকারকে সংযম বজায় রাখার জন্য জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছি, যেন পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে না যায়।”
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, মহাসচিব এখন পর্যন্ত পাকিস্তান বা ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেননি। ডুজারিক আরও বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার যেকোনও সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে এবং পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত।”
ভারতের একতরফাভাবে ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মুখপাত্র বলেন, “আমরা এমন কোনও পদক্ষেপ সমর্থন করি না যা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করতে পারে। তাই আমরা সংযম বজায় রাখার আহ্বানই পুনর্ব্যক্ত করছি।”
তবে জাতিসংঘের এই আহ্বানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি)-এ ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। আজাদ কাশ্মির সরকারের কর্মকর্তা সৈয়দ আশফাক গিলানি এএফপি-কে বলেন, “সীমান্তে সেনারা গুলি বিনিময় করেছে। তবে বেসামরিক জনগণের ওপর কোনও হামলা হয়নি।”
এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানান, “দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, আমরা তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কাশ্মির বা জম্মুর অবস্থান নিয়ে আমরা বর্তমানে কোনও অবস্থান নিচ্ছি না।”
এদিকে পেহেলগাম হামলার পর ভারতের কড়া পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য স্থগিত, আকাশপথ বন্ধ এবং আরও বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষামূলক সিদ্ধান্ত।
ভারতের পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করা। বিশ্ব ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং দুই দেশের মধ্যকার নানা বৈরিতার মধ্যেও এতদিন চুক্তিটি টিকে ছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সর্বাত্মক যুদ্ধের সতর্কতা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে পারমানবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে যেন আগুনে ঘি ঢাললেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, প্রতিবেশী দু দেশের মধ্যে আলোচনাই পারে এ সংকট নিরসন করতে। তবে ভারত যদি হামলা করতে চায়, পাকিস্তান কঠোর ব্যবস্থা নেবে। সর্বাত্মক যুদ্ধ হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন জানিয়ে পাকিস্তানি জিও নিউজ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
খাজা আসিফ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে পূর্ণ মাত্রার সংঘাতের সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বকে ‘চিন্তা’ করতে হবে। ভারতের সাথে উত্তেজনা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধে’ রূপ নিতে পারে।
ভারত সরকার পেহেলগামের হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ দৃঢ়ভাবে দাবি অস্বীকার করেছে। এ অবস্থায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জোর দিয়ে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ‘যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত’।
তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, পরিস্থিতি এখনও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা উচিত।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত কিনা জানতে চাইলে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইতিবাচক উত্তর দেন। তিনি বলেন, দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘর্ষ সর্বদা উদ্বেগজনক… যদি পরিস্থিতি ভুল হয়ে যায়, তাহলে এই সংঘর্ষের একটি দুঃখজনক পরিণতি হতে পারে।
জিও নিউজ লিখেছে, পেহেলগাম হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ভারত ছয় দশকের পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার একতরফা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে এবং অধিকৃত অঞ্চলে পর্যটকদের ওপর হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অন্যান্য পদক্ষেপও নিয়েছে।
ভারতের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) সতর্ক করে দিয়েছে, পাকিস্তানের আইনত পানির প্রবাহকে ভিন্ন দিকে সরানোর জন্য ভারতের যেকোনো পদক্ষেপকে যুদ্ধের পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
এরইমধ্যে পাকিস্তান ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে সমস্ত ভারতীয় স্থল পরিবহন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সমস্ত বাণিজ্যিক ভারতীয় বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় হাই কমিশনের কর্মীদের সংখ্যা ৩০ জনে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা এশীয় উপমহাদেশের ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
গত ২২ এপ্রিল বিকেলে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ জন। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার স্থানীয় শাখা দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।
এদিকে, উত্তেজনার মধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) ভারত ও পাকিস্তানের সেনা সদস্যদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
মোদিকে ফোনে করে যা বললেন নেতানিয়াহু

কাশ্মীর হামলার ঘটনায় সমবেদনা জানাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কাশ্মীর হামলা ঘটনা নিয়ে কথা হয় তাদের।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতের শোক ভাগ করে নেয়ার জন্য নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। জোর দিয়ে বলেছেন, দুই দেশই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অভিযানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে।’
এ আগে, মঙ্গলবার পাহেলগাম হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন নেতানিয়াহু। ফোনে মোদি এই বর্বর হামলা সম্পর্কে নেতানিয়াহুকে বিস্তারিত জানিয়েছেন এবং অপরাধীদের ও হামলায় সমর্থনকারীদের বিচারের আওতায় আনার ভারতের দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক্স-এ একটি পোস্টে এসব তথ্য শেয়ার করেছেন।
এক্স-এ বলা হয়, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছেন এবং ভারতের মাটিতে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ভারতের জনগণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতীয়দের সকল ভিসা স্থগিত করলো পাকিস্তান

ভারত-শাসিত কাশ্মিরে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে এবং এরই প্রেক্ষিতে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা তথা সমানুপাতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পাকিস্তান।
ইসলামাবাদ তাৎক্ষণিকভাবে ভারতীয় নাগরিকদের দেওয়া সমস্ত ভিসা স্থগিত করেছে। এর পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারতের কিছু কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে। গত মঙ্গলবারের ওই হামলায় একদল বন্দুকধারী পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়, যাতে ২৬ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন।
ঘটনাটিকে গত কয়েক বছরের মধ্যে কাশ্মিরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের স্তর কমিয়ে আনে এবং একাধিক পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে—দুই দেশের মধ্যে চলাচলের প্রধান স্থলপথ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেওয়া এবং ৬০ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণাও রয়েছে।
জবাবে পাকিস্তানও বেশ কিছু পাল্টা কড়া সিদ্ধান্ত নেয়। দেশটি ভারতের সব ফ্লাইটের জন্য পাকিস্তানের আকাশপথ বন্ধ করে দেয়, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য স্থগিত করে। এছাড়া ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনে কর্মরত কূটনীতিকের সংখ্যা ৩০ জনে নামানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় নৌ, বিমান ও সামরিক উপদেষ্টাদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাকিস্তান ছাড়তে বরঅ হয়েছে।
এদিকে কাশ্মিরজুড়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। কয়েকদিন ধরে বন্ধ থাকা স্কুল, দোকানপাট ও ব্যবসা এখন ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে হামলার এই ঘটনার পর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কাশ্মিরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। জম্মু-কাশ্মির ছাত্র সংঘের প্রধান নাসির খুইহামি জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডে একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের মারধরের হুমকি দিয়ে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে।
যদিও এই ভিডিওগুলোর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।