টেলিকম ও প্রযুক্তি
মনের মতো ইন্টারনেট সেবা পেতে চাইলে

স্পিডের একক নিয়ে জটিলতা
বেশির ভাগ ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের সংযোগের গতি ‘এমবিপিএস’ এককে লিখে থাকেন। সমস্যা হচ্ছে, তাঁদের লেখা ‘এমবিপিএস’-এর অর্থ প্রতি সেকেন্ডে কত মেগাবিট তথ্য স্থানান্তর হচ্ছে। অনেক ব্যবহারকারীই ‘এমবিপিএস’কে মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড ভেবে থাকেন। দুটি এককের মধ্যে সম্পর্ক, ৮ মেগাবিট সমান ১ মেগাবাইট। অর্থাৎ মেগাবাইটে গতি বের করতে চাইলে ইন্টারনেট সংযোগের গতিকে ৮ দিয়ে ভাগ দিতে হবে।
সংযোগের ধরন
রাজধানী ও মূল শহরগুলোর বেশির ভাগ ইন্টারনেট সেবাদানকারীই অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে সংযোগ দিয়ে থাকেন। তবে যেসব ইন্টারনেট সেবাদানকারী এখনো ল্যান ক্যাবল দিয়ে সংযোগ দিচ্ছেন, তাঁদের সেবা ব্যবহারের সময় লক্ষ রাখতে হবে মানসম্মত তার ব্যবহার হচ্ছে কি না। ল্যান ক্যাবলের ধরন রয়েছে বেশ কয়েকটি।
এর মধ্যে ন্যূনতম ধরা যেতে পারে CAT-5E। যদি সম্ভব হয়, তাইলে CAT-6 ব্যবহার করা উচিত। ল্যান ক্যাবল সময়ের সঙ্গে দূর্বল হয়ে যেতে পারে, তাই প্রতিবছরই সংযোগের তারটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনমাফিক পরিবর্তন করতে হবে। ল্যানের গতি দূরত্বের সঙ্গে কমতে থাকে, মূল সংযোগ বক্স যদি বাসা থেকে অনেক বেশি দূরে হয় সে ক্ষেত্রে স্পিডে তারতম্য থাকবেই।
অপটিক্যাল ফাইবারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তারটিতে কোনো বড়সড় বাঁক না থাকে, আর কোনো অবস্থাতেই গিট দেওয়া যাবে না। অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগের জন্য বাসায় ONU, ONT, XPON বা GPON নামের একটি ডিভাইস থাকবে, সেটি হতে হবে মানসম্মত। কমদামি ডিভাইসের কারণেও ইন্টারনেট সংযোগে সমস্যা হতে পারে।
সঠিক রাউটার কেনা
ওয়াই-ফাই রাউটার কেনাটা অনভিজ্ঞদের জন্য জটিল প্রক্রিয়া। রাউটার নির্মাতারা চটকদার সব বিজ্ঞাপনী শব্দ ও সংখ্যা ব্যবহার করে ডিভাইসটির প্রকৃত পারফরম্যান্স বুঝতেই দিতে চায় না। রাউটারের পারফরম্যান্স বুঝতে হলে কিছু টার্ম মাথায় রাখতে হবে।
ইন্টারনেটের সঙ্গে রাউটার সংযুক্ত হয় পেছনে থাকা ইথারনেট পোর্টের মাধ্যমে, WAN/LAN নামেও পরিচিত। সর্বোচ্চ কত গতিতে ফাইল আদান-প্রদান বা ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যাবে, তা সরাসরি ওয়্যান পোর্টের গতির ওপর নির্ভরশীল। বাজারে থাকা প্রচুর বাজেট রাউটারে ‘৩০০ মেগাবিট’ বা ‘১১৫০ মেগাবিট’ গতি লেখা থাকলেও খুঁটিয়ে দেখলে প্রথমেই চোখে পড়বে ইথারনেট পোর্টের গতি ১০/১০০ মেগাবিট। অর্থাৎ ওয়াই-ফাইয়ের সর্বোচ্চ গতি হয়তো ১১৫০ বা ১২০০ মেগাবিট হতে পারে, কিন্তু ইন্টারনেটের গতি ১০০ মেগাবিট বা ১১.৫ মেগাবাইটের বেশি হবে না। আজকাল প্রচুর ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান দেশের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক বা BDIX গতি দিচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ১০০০ মেগাবিট বা ১ গিগাবিট। তাই সম্ভব হলে অবশ্যই গিগাবিট ইথারনেট পোর্টসহ রাউটার কিনতে হবে।
এরপর আসছে ল্যান ক্যাবল। অপটিক্যাল ফাইবারের ONU ডিভাইস থেকে রাউটারের সংযোগ দেওয়ার ক্যাবল যেন অন্তত CAT-5E গিগাবিট গতির হয়, সেটা লক্ষ করতে হবে। যাঁরা রাউটারের সঙ্গে ডেস্কটপ ল্যানের মাধ্যমে সংযুক্ত করে থাকেন তাঁদের সেই ক্যাবলটিও গিগাবিট সমর্থিত কি না সেটা দেখতে হবে। বর্তমানে গিগাবিট সমর্থিত ক্যাবল আর কম গতির ক্যাবলের মূল্য সমান, তাই কম গতির ক্যাবল কেনার কোনো মানে নেই।
বাসার আকৃতি, রাউটার রাখার জায়গা এবং কী পরিমাণ ডিভাইস ব্যবহৃত হবে, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। চেষ্টা করতে হবে রাউটারে বাসার মধ্যভাগে রাখতে। আর ২০০০ স্কয়ার ফুট জায়গা কভার করতে পারে এমন রাউটার কিনতে হবে। যদি এক রুমের বাইরে ওয়াই-ফাইয়ের দরকার না হয়, যেমন মেস বা সাবলেট বাসায়, সে ক্ষেত্রে রেঞ্জ অতটা জরুরি নয়। সর্বোচ্চ কতটি ডিভাইস চলবে সেটা হিসাব করে রাউটারের বাজেট করা উচিত। সাধারণত বাজেট রাউটারগুলো ২০টি ডিভাইসের বেশি হলে ভালো স্পিড ধরে রাখতে পারে না। বেশ কিছু প্রযুক্তি যেমন MU-MIMO বা QoS থাকলে স্পিডের স্ট্যাবিলিটি বাড়বে।
গত পাঁচ বছরে বাজারে আসা বেশির ভাগ ডিভাইস ৫ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাই সমর্থন করে। ডুয়াল ব্যান্ড রাউটার কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ। সাধারণ ২.৪ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাইয়ের চেয়ে ৫ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাইয়ের রেঞ্জ কম, কিন্তু স্পিড অনেক বেশি। অবশেষে অবশ্যই রাউটারের ওয়াই-ফাই কোন প্রজন্মের সেটা দেখতে হবে। যদি সম্ভব হয় অন্তত ওয়াই-ফাই ৬ সমর্থিত রাউটার কেনা উচিত। বাজেট থাকলে ওয়াই-ফাই ৭ সমর্থিত রাউটারও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু ওয়াই-ফাই রাউটার বহু বছর একটানা ব্যবহৃত হয়ে থাকে, তাই চেষ্টা করা উচিত সামর্থ্যের মধ্যে সেরাটা কেনার।
যত দূর সম্ভব ক্যাবল ব্যবহার করুন
ওয়াই-ফাই প্রযুক্তিটি চমৎকার, কিন্তু আজও ইথারনেট তথা ল্যানের চেয়ে নির্ভরযোগ্য নয়। ডেস্কটপ পিসি সব সময়ই ল্যানের মাধ্যমে সংযুক্ত করা উচিত। একাধিক রুমে ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্যও ল্যান ক্যাবল ব্যবহার করা সবচেয়ে সেরা উপায়। ওয়াই-ফাইয়ের সিগন্যালের মান দূরত্বের সঙ্গে দ্রুত কমতে থাকে, বিশেষ করে রাউটার ও ব্যবহারকারীর ডিভাইসের মধ্যে একাধিক ওয়াল থাকলে তার ওপর নির্ভর করাই উচিত নয়।
মেশ রাউটার
বড় এলাকা বা একাধিক তলায় ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক প্রয়োজন হলে মেশ রাউটার ব্যবহার করা উচিত। দুটি বা তিনটি রাউটারের প্যাকেজ কিনে সহজেই নেটওয়ার্কের রেঞ্জ বাড়ানো সম্ভব। আজকাল বেশির ভাগ রাউটারই মেশ নেটওয়ার্ক সমর্থন করে, তাই মূল রাউটারটি যদি মেশ রাউটার হয় তাহলে নেটওয়ার্কের পরিধি বাড়াতে পরবর্তী সময়ে সাধারণ রাউটার কিনলেও চলবে।
নেটওয়ার্ক সেটআপে করণীয়
ওয়াই-ফাই চ্যানেলভিত্তিক নেটওয়ার্ক। মাত্র ১১-১৩টি চ্যানেলে সেটি কাজ করে। রাউটার সেটআপ করার সময় আশপাশের ওয়াই-ফাইগুলো কোন চ্যানেলে কাজ করছে সেটা স্ক্যান করে, যে চ্যানেলটি কিছুটা ফাঁকা রয়েছে সেটা সেট করা উচিত। ওয়াউফাই চ্যানেল স্ক্যান করার জন্য অ্যানড্রয়েড ও আইওএসে বেশ কিছু অ্যাপ রয়েছে। এ ছাড়াও ইন্টারনেট সেবাদানকারীর নিজস্ব DNS সার্ভারের ঠিকানা বের করে সেটা বসাতে হবে। এ ছাড়া ইন্টারনেটের গতি কমবেশি হতে পারে, বিশেষ করে ইউটিউব ও ফেসবুকের ক্যাশ সার্ভার গতি সেই ডিএনএস ছাড়া পাওয়া যাবে না।
ওয়েব ব্রাউজিংয়ের অভিজ্ঞতা অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের কারণে ব্যাহত হতে পারে। অবশ্যই সবার অ্যাড ব্লক করার বিবিধ উপায়গুলো ব্যবহার করা উচিত। ওয়াইফাই রাউটার ও ওএনইউ ডিভাইস যাতে অতিরিক্ত গরম না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে ব্যবহার করতে হবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড। পাসওয়ার্ড যাতে বেহাত না হয় সেটাও খেয়াল করতে হবে।

জাতীয়
২১ সেপ্টেম্বর বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ

আগামী রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আংশিক সূর্যগ্রহণ হবে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানায় আইএসপিআর।
এর আগে, গত ৭ সেপ্টেম্বর দেখা গিয়েছিল এক অপূর্ব চন্দ্রগ্রহণ, যাকে অনেকেই ‘রক্তচন্দ্র’ বলছেন। আর এর ঠিক ১৫ দিন পরে, অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর ঘটতে চলেছে বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ।
আইএসপিআর জানায়, সূর্যগ্রহণ শুরু হবে ২১ সেপ্টেম্বর বিএসটি সময় ২৩টা ২৯ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে, সর্বোচ্চ গ্রহণের সময় ২২ সেপ্টেম্বর ১টা ৪১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে এবং গ্রহণ শেষ হবে ২২ সেপ্টেম্বর ৩টা ৫৩ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে। সূর্যগ্রহণের ব্যপ্তিকাল থাকবে ৪ ঘণ্টা ২৪ মিনিট। তবে বাংলাদেশ থেকে সূর্যগ্রহণের এই বিরল দৃশ্য দেখা যাবে না।
নিউজিল্যান্ড, পূর্ব মেলানেশিয়া, দক্ষিণ পলিনেশিয়া ও পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে সূর্যগ্রহণটি দৃশ্যমান হবে। গ্রহণটির কেদ্রীয় গতিপথের বিবরণ হলো ২১ সেপ্টেম্বর গ্রহণ শুরু যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়া দ্বীপ থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে স্থানীয় সময় ৫টা ৫৩ মিনিট ১৭ সেকেন্ডে। সর্বোচ্চ গ্রহণ অ্যান্টার্কটিকার ডুমন্ট ডি’উরভিল আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ১০টা ১৩ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডে।
গ্রহণ শেষ অ্যান্টার্কটিকার আলেকজান্ডার দ্বীপ থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে ১৭টা ৪৮ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে। সূর্যগ্রহণের সর্বোচ্চ মাত্রা থাকবে ০ দশমিক ৮৫৫।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বছরে ১৬ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স হারাচ্ছে বাংলাদেশ: না’লা

২০২৪ সালে বৈশ্বিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে উচ্চ ফি, লুকানো চার্জ ও কম এক্সচেঞ্জ রেটের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫৭ বিলিয়ন ডলার অপচয় হয়েছে।
একই সময়ে বাংলাদেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৬.৯ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ১.৪৮ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৬,২০০ কোটি টাকা) অতিরিক্ত খরচে হারিয়ে গেছে। এই অঙ্ক বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেটের প্রায় ২.০২৫ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ০.৩৩ শতাংশের সমান।
আন্তর্জাতিক ফিনটেক কোম্পানি ও মানি ট্রান্সফার অ্যাপ ‘না’লা’ (NALA) বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাতে আয়োজিত “মিট দ্য মিডিয়া গেটকীপার্স” অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরে।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বার্ডস আই রেষ্ট্যুরেন্টে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ‘না’লা বাংলাদেশ’-এর হেড অব গ্রোথ মাহমুদুল হাসান।
মাহমুদুল হাসান বলেন, বাংলাদেশি প্রবাসীদের কষ্টার্জিত টাকা জিরো ফিতে দ্রুত এবং নিরাপদভাবে দেশে পৌঁছানোই আমাদের অঙ্গীকার। প্রবাসীরা কঠোর পরিশ্রম করে পরিবারকে সহায়তা করেন, তাঁদের উপার্জিত প্রতিটি টাকা শুধু পরিবারের জীবনমান নয়, দেশের অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করে। তাই রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়ায় যেন বাড়তি খরচ, লুকানো চার্জ বা বিলম্ব না হয়, সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে না’লা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি লেনদেনে আস্থা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। আমরা চাই, বাংলাদেশের প্রবাসীরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারেন—‘আমাদের টাকা নিরাপদে, দ্রুত এবং বিনামূল্যে দেশে পৌঁছাচ্ছে।’ এভাবেই রেমিট্যান্স প্রবাহকে শক্তিশালী করে জাতীয় অর্থনীতিকে এগিয়ে নেব।
এসময় প্রবাসীদের সাচ্ছন্দ্যের লক্ষ্যেই অ্যাপটি চালু হয়েছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, প্রবাস জীবনে সবাই নানাভাবে ব্যস্ত থাকেন। ব্যাংক বা বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জে গিয়ে টাকা পাঠানো অনেক সময় ঝামেলাপূর্ণ হয়ে পড়ে, তাছাড়া অতিরিক্ত চার্জও গুনতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে না’লা-এর তৈরি এ প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে প্রবাসীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘরে বসেই সর্বোত্তম রেটে এবং সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেশে অর্থ পাঠাতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে ‘না’লা’ জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের অ্যাপ ব্যবহার করে প্রবাসীরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের ২১টি দেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারেন। ২০২১ সালে চালু হওয়া এই অ্যাপটির ব্যবহারকারী সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
‘না’লা’ অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশে টাকা পাঠানো দেশগুলো হলো– অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, সাইপ্রাস, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ইটালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, ‘না’লা’ একটি আন্তর্জাতিক ফিনটেক কোম্পানি ও মানি ট্রান্সফার অ্যাপ, যা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে বাংলাদেশসহ আফ্রিকা ও এশিয়ার ১৪টি দেশে দ্রুত, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী উপায়ে টাকা পাঠানোর সুবিধা দেয়। অ্যাপটির মাধ্যমে ২৪৯টি ব্যাংক ও ২৬টি মোবাইল মানি সার্ভিসে লেনদেন সম্ভব। “না’লা”-এর রয়েছে ৫ লাখের বেশি ব্যবহারকারী। প্রতিষ্ঠানটির বি টু বি (B2B) পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম রফিকী এপিআই (Rafiki API) আন্তর্জাতিক লেনদেনকে সহজ করেছে। এটি ওয়াই কম্বিনেটর (Y Combinator), এক্সেল (Accel), বিসসিমার-এর (Bessemer) মতো প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগপ্রাপ্ত। স্বচ্ছতা, গতি ও নিরাপত্তা—এই তিনটি মূলমন্ত্রে কাজ করছে “না’লা” (NALA)।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
হ্যাকারদের নজরে এবার হোয়াটসঅ্যাপ, সুরক্ষিত থাকবেন যেভাবে

এবার জনপ্রিয় মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপে সাইবার অ্যাটাকের কথা শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপ স্পাইওয়্যার হুমকি আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। সর্বশেষ প্রায় ৯০ জন ব্যক্তির উপরে গুপ্তচরবৃত্তি এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার জন্য কুখ্যাত কিছু প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহার করে টার্গেট করা হয়েছে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা গুপ্তচরবৃত্তির উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই আক্রমণের পরিধি নিয়ে উদ্বিগ্ন, যা ব্যবহারকারীদের সতর্কতার বেড়া ডিঙিয়ে ডিভাইস হ্যাক করতে এবং ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করতে দিতে পারে বলেই জানিয়েছেন তারা।
নতুন হোয়াটসঅ্যাপ স্পাইওয়্যার অ্যাটাকটি বিশেষ করে আইফোন এবং ম্যাক ব্যবহারকারীদের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ফলে সংস্থা ব্যবহারকারীদের সম্ভাব্য আক্রমণ এবং এর তীব্রতা সম্পর্কে অবহিত করেছে।
হোয়াটসঅ্যাপ টার্গেটে থাকা ব্যক্তিদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে হ্যাকাররা তাদের ডিভাইস এবং ডাটা, যার মধ্যে ব্যক্তিগত টেক্সটও রয়েছে, তা ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।
ম্যালওয়্যারের কাজ করার জন্য একটি উৎসের প্রয়োজন হয়, তার বিপরীতে, এই উন্নত স্পাইওয়্যারগুলো কেবল ব্যবহারকারীকে একটি বার্তায় ক্লিক করার ফাঁদে ফেলে! এরপর ব্যবহারকারী যখন ফোন ব্যবহার শুরু করেন, তখন ম্যালওয়্যারের কাজ শুরু হয়ে যায়।
পেগাসাসের মতো স্পাইওয়্যার সাইবার যুদ্ধের নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে এমন একটি প্ল্যাটফর্মে যা প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ ব্যবহার করে যা তাদের টেক্সট, ছবি পাঠাতে, এমনকি ভিডিও কল করতেও সাহায্য করে।
মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম এবং এর মূল কোম্পানি মেটা ব্যবহারকারীদের সতর্ক করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে, পাশাপাশি এই জটিল আক্রমণগুলো প্রতিরোধের জন্য বিশেষজ্ঞরা দিনরাত কাজ করছেন, যাতে এগুলো চিরতরে বন্ধ বা প্রতিরোধ করার জুতসই সমাধান খুঁজে বের করা যায়।
এই স্পাইওয়্যার অ্যাটাক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ নাগরিককে টার্গেট করে না, তাই হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিদের গুরুতর ক্ষতি করার আগে এগুলো পর্যবেক্ষণ/শনাক্ত করার একটি উপায় থাকা উচিত।
নিজের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট এবং ডিভাইস সুরক্ষিত রাখতে যা করবেন-
>> হোয়াটসঅ্যাপে অপরিচিত নম্বর থেকে কোনও লিঙ্ক এলে সেখানে ক্লিক করবেন না।
>> নিজের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট টু স্টেপ ভেরিফিকেশন অন করে রাখুন। এর ফলে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের উপর সুরক্ষার একটা অতিরিক্ত আস্তরণ পড়বে।
>> হোয়াটসঅ্যাপের লেটেস্ট ভার্সনেই থাকে যাবতীয় উন্নত ও আধুনিক সিকিউরিটি ফিচার। তাই নিজের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট আপডেটেড করুন নিয়মিত।
>> নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট কোথায় কোথায় সক্রিয় তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি অপরিচিত কোনো ডিভাইস লক্ষ্য করেন, তাহলে অননুমোদিত অ্যাক্সেস প্রতিরোধ করতে দূরবর্তীভাবে লগ আউট করুন।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বাড়ির বিদ্যুৎ খরচ কমাতে যা করবেন

দৈনন্দিন ঘরের কাজ সহজ করতে আমরা অনেক বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করি। টিভি, ফ্রিজ, ওভেন, টোস্টার, ইস্ত্রি, গিজার, হিটার মেশিনসহ আরও অনেক কিছু। তবে এগুলো ব্যবহারে কাজ সহজ হলেও মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল দেখে মাথায় হাত পরে যায়।
তবে আপনি বাড়ির বিদ্যুৎ খরচ কমাতে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ খরচ কিছুটা কমাতে পারেন-
>> অনেক পুরোনো ডিভাইসগুলো বদলে নিতে পারেন। পুরোনো ডিভাইসগুলোতে বিদ্যুৎ খরচ তুলনামূলক বেশি হয়। বাড়ির ফ্যান, লাইট, ফ্রিজ, এসি ধীরে ধীরে বদলে নিন।
>> সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ পোড়ে বাল্ব বা টিউবলাইটে। লাইটের ক্ষেত্রে এলইডি লাইট ব্যবহার করতে পারেন। এটি কম ওয়াটেও বেশি আলো পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়।
>> এসি যত্নে রাখুন, প্রতি পনেরো দিনে একবার এসির কনডেনসার কয়েল পরিষ্কার করলে বিদ্যুৎ খরচ অনেকটাই কমে। তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখলে অতিরিক্ত লোড পড়ে না।
>> এসির হিটিং, ভেন্টিলেশন এবং এয়ার কন্ডিশনার সিস্টেমের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফিল্টার বদলানো থেকে শুরু করে বছরে একবার সার্ভিসিং, অনেকটা বিদ্যুৎ খরচ বাঁচিয়ে দিতে পারে।
>> আধুনিক ফ্রিজ আর টিভির জন্য ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারের প্রয়োজন নেই, অথচ এগুলো মাসে ৩০-৪৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ টেনে নিতে পারে।
>> চার্জার, সেট-টপ বক্স বা টিভি প্লাগে লাগিয়ে রাখলে প্রতিমাসে ৫-১০ ইউনিট পর্যন্ত খরচ হয়। অনেকেই ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্টের স্যুইচ অফ করেন কিন্তু প্লাগ লাগানোই থাকে। এই অবস্থাতেও বিদ্যুৎ খরচ হয়। একে ‘ফ্যান্টম’ বা ‘স্ট্যান্ডবাই’ বলে। প্লাগ থেকে সুইচ অফ করে রাখলে কিছুটা খরচ বাঁচানো সম্ভব।
>> ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হতে পারে। পাশাপাশি ফুল লোডে চালানো হচ্ছে কি না সেটা দেখাও গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে জামাকাপড় শুকনোর জন্য ড্রায়ার ব্যবহার না করে রোদে মেলে দিলেও অনেক বিদ্যুৎ বাঁচবে।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
স্মার্টফোনে আড়িপাতা আছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

সাইবার অপরাধীরা আইফোন বা অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনে আড়ি পাততে সক্ষম অ্যাপ বা স্পাইওয়্যার যুক্ত করে দূর থেকে তার টার্গেটকৃত ব্যক্তির অনলাইন বা দৈনন্দিন কার্যক্রম নজরদারি করে থাকে। শুধু তা-ই নয়, স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে স্মার্টফোনে সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সংগ্রহ করে তারা। ফলে তথ্য বেহাত হওয়ার পাশাপাশি অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন, এমনকি বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ব্ল্যাকমেলের মুখোমুখি হতে হয়। স্পাইওয়্যারগুলো গোপনে স্মার্টফোনে প্রবেশ করানোর কারণে অনেকে জানতেই পারেন না তাদের অনলাইন বা অফলাইন কার্যক্রমে নজরদারি করা হচ্ছে। তবে বেশ কিছু লক্ষণ দেখে স্মার্টফোনে স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়।
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন ট্যাপ করাটা খুব একটা কঠিন নয়। অনেকেই ভাবছেন কীভাবে সহজে এ কাজ করতে পারে? তাদের প্রশ্নের উত্তর হলো- এ কাজের জন্য সেলফোন নেটওয়ার্ক হ্যাক করার প্রয়োজন নেই। আপনার ফোনের ভালনেরাবিলিটি বা দুর্বলতা খুঁজে বের করে সহজেই আপনার ফোনকে ট্যাপিং ডিভাইসে পরিণত করা সম্ভব।
সে যা-ই হোক কেউ যদি আপনার ফোনে আড়ি পেতে কথোপকথন শোনে তাহলে আপনি কীভাবে তা বুঝবেন এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরঘুর করছে। তাদের জন্য কয়েকটি কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হলো, যা খেয়াল করলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে।
মোবাইল ডেটার অস্বাভাবিক ব্যবহার
স্পাইওয়্যার অ্যাপগুলো ফোনের পটভূমিতে চালু থাকার পাশাপাশি সংগ্রহ করা তথ্য নিয়মিত ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠাতে থাকে। ফলে ব্যবহারকারীদের অজান্তেই মোবাইল ডেটার পরিমাণ কমে যায়। কোনো অ্যাপ ব্যবহার না করলেও যদি মোবাইল ডেটা কমতে থাকে, তবে বুঝতে হবে ফোনে স্পাইওয়্যার রয়েছে।
বিভিন্ন সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা বন্ধ
ফোন ব্যবহারের সময় বারবার চালু হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সুবিধা চালু বা বন্ধসহ অনলাইন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন ফাইল নামতে থাকলে বুঝতে হবে ফোনে স্পাইওয়্যার রয়েছে।
ব্যাটারির চার্জ দ্রুত কমার পাশাপাশি ফোন গরম হওয়া
স্পাইওয়্যার অ্যাপগুলো সব সময় ফোনের পটভূমিতে চালু থাকে। আর তাই ফোনের ব্যাটারি নিয়মিত খরচ হতে থাকে। এ জন্য অল্প কিছু সময় ফোন ব্যবহার করলেই ব্যাটারির চার্জ দ্রুত কমে যাওয়ার পাশাপাশি ফোনও গরম হয়ে যায়।
গোপনে এসএমএস পাঠানো
এসএমএস না পাঠালেও যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে আপনার ফোন থেকে এসএমএস যায়, তবে বুঝতে হবে ফোনে স্পাইওয়্যার রয়েছে।
অপরিচিত অ্যাপের সন্ধান
ফোনের সেটিংস অপশন থেকে নামানো অ্যাপের তালিকা পর্যালোচনা করেও অনেক সময় স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তালিকায় অপরিচিত অ্যাপের নাম দেখলেই বুঝতে হবে, এটি স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যার। বিভিন্ন অ্যাপের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অনুমতি তালিকা দেখেও স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব।
স্পাইওয়্যার মুছে ফেলতে যা করতে হবে
ফোনে স্পাইওয়্যার থাকার সম্ভাবনা থাকলে প্রথমেই ফোনে অ্যান্টি-স্পাইওয়্যার অ্যাপ নামিয়ে স্ক্যান করে সেগুলো মুছে ফেলতে হবে। এর পাশাপাশি আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের হালনাগাদ সংস্করণ ব্যবহারের পাশাপাশি ফোনে থাকা অপরিচিত অ্যাপগুলো মুছে ফেলতে হবে। এরপরও স্পাইওয়্যার মুছে না গেলে ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করতে হবে।