জাতীয়
আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া সেই প্রবাসীদের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে সাজা পেয়েছিলেন ৫৭ বাংলাদেশি। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ অনুরোধে তাদের সাজা স্থগিত করে দেশটির সরকার। এরপর দেশে ফিরে আসেন সেই প্রবাসীরা। এখন তারা প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন। না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করে এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। আজ (শুক্রবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, জুলাই বিপ্লবে প্রবাসীরা হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মিছিল করে এবং রেমিট্যান্স বন্ধের কর্মসূচি পালন করেন। মিছিলকে কেন্দ্র করে সে দেশে (আমিরাতে) অনেককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাজা দেওয়া হয়। এ ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মিছিলের সাথে সম্পৃক্ত অথবা সম্পৃক্ত নয় কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের সমালোচনাকারী এ রকম অনেকের নামের তালিকা তৎকালীন অ্যাম্বাসেডরের মাধ্যমে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তালিকার সূত্র ধরে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আমাদের কাউকে ফোন করে ডেকে নিয়ে আবার কাউকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর দীর্ঘদিন তাদের হেফাজতে ও পরবর্তীতে জেলে রাখে। জেলে নেওয়ার পর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ১০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা কয়েকশ প্রবাসী মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসতে পেরেছি। এ জন্য আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ।
তাদের অভিযোগ
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— প্রবাসী খালেদ সাইফুল্লাহ, হাফেজ মুহাম্মদ, জাহাঙ্গীর আলম, মাইনুদ্দীন বাবু, মুহাম্মদ পারভেজ প্রমুখ। তাদের অভিযোগ, কিন্ত কঠিন সময়েও প্রবাসী শ্রমিকদের পাশে সরকার বা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এমনকি উপদেষ্টাও সংকট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। গত ২৮ ডিসেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে প্রবাসীদের ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়, কিন্তু তাতে প্রবাসীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২৯ ডিসেম্বর ৭ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানান। সে মোতাবেক তারা উপস্থিত হলেও উপদেষ্টা সাক্ষাত করেননি।
এ অবস্থায় দাবি আদায়ে ও সংকট নিরসনে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের দাবি জানিয়েছেন তারা। এই সংবাদ সম্মেলন থেকে নিজেদের কিছু দাবিও তুলে ধরেন তারা। তাদের দাবিগুলো হলো—
• আরব আমিরাতসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। যারা বিদেশ যেতে চায়, সরকারি উদ্যোগে বিনা খরচে তাদের বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা। যাদের দেশে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে, যোগ্যতা অনুসারে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা। সেসব দেশে যারা ব্যবসায়ী ছিলেন এবং নতুন করে যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের ব্যাংক বা যে কোনো সংস্থার মাধ্যমে বিনা সুদে প্রয়োজনীয় লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করা। যারা বয়স্ক তাদের বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতার আওতায় নিয়ে আসা।
• সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ ফেরত প্রবাসীদের নো-এন্ট্রি দেওয়া হয়েছে। নো-এন্ট্রি তুলে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া।
• একই মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখনও গ্রেপ্তার চলমান রয়েছে। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে অতিদ্রুত গ্রেপ্তারি প্রক্রিয়া বন্ধ করা তথা মামলাটি শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া। এ ছাড়া এ মামলায় এখনও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে যেসব বাংলাদেশি প্রবাসী বন্দী আছেন তাদের অতি দ্রুত মুক্ত করে নিয়ে আসা।
• যারা আমাদের নামের তালিকা সেসব দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়েছিল, সে সময়ের কূটনীতিক, কনসাল জেনারেল বিএম জামালসহ জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করা।
• ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মতো একটি ট্রাস্ট গঠন করা, যাতে দেশের স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত যে কোনো প্রবাসী একটি ক্ষতিপূরণ পেতে পারে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থনের কারণে কারানির্যাতিত হয়ে দেশে আসা প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা।
• বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের মুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন ও সে অনুষ্ঠানের জন্য সম্মতি জ্ঞাপন ও আমন্ত্রণ পৌঁছানোর জন্য ৭ জনের প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি প্রদান করা।

জাতীয়
একদিনে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪০৬

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে ৪০৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বুধবার (৯ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ডেঙ্গু প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মৃত ব্যক্তি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা।
এই সময়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন বরিশাল বিভাগে ৯৮ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮ জন, ঢাকা বিভাগে ৬৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫৩ জন, ঢাকা উত্তরে ৩৬ জন, খুলনায় ৩৫ জন, রাজশাহীতে ৩১ জন, রংপুরে ৫ জন, ময়মনসিংহে ৪ জন এবং সিলেটে ২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে ২১ জন, বরিশালে ১৪ জন, ঢাকা উত্তরে ৫ জন, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৪ জন করে, রাজশাহীতে ২ জন এবং ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন। এ সময়ের মধ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৭৫ জনের।
কাফি
জাতীয়
পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি

বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন অতিরিক্ত ডিআইজি, ১০ জন পুলিশ সুপার ও একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন।
বুধবার (৯ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বদলির এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, অতিরিক্ত ডিআইজিদের মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরের রেবেকা সুলতানাকে সিআইডিতে, রাজশাহীর সারদার ফয়সল মাহমুদকে সিলেট রেঞ্জে, এটিইউয়ের মো. আশরাফুল ইসলামকে পুলিশ সদর দপ্তরে, পুলিশ সদর দপ্তরের ফারুক আহমেদকে এপিবিএন হেডকোয়ার্টার্সে এবং এসবির মো. মিজানুর রহমানকে ঢাকার টিডিএসে বদলি করা হয়েছে।
এছাড়াও, পুলিশ সুপারদের মধ্যে হাইওয়ে পুলিশের ড. আ ক ম আকতারুজ্জামান বসুনিয়াকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে, বরিশাল ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের মো. সাখাওয়াত হোসেনকে রাজারবাগ পুলিশ টেলিকমে, হাইওয়ে পুলিশের মো. খাইরুল ইসলামকে ট্যুরিস্ট পুলিশে, পিবিআইয়ে বদলির আদেশপ্রাপ্ত খন্দকার নুর রেজওয়ানা পারভীনকে পুলিশ সদর দপ্তরে, নোয়াখালী পিটিসির মীর আবু তৌহিদকে সিআইডিতে, ট্যুরিস্ট পুলিশের মো. মিজানুর রহমানকে এপিবিএনে, খুলনার উপপুলিশ কমিশনার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমানকে সিআইডিতে, কুষ্টিয়া ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের সৈকত শাহীনকে শিল্পাঞ্চল পুলিশে, এটিইউয়ের কাজী মো. আবদুর রহীমকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে, সিআইডির মো. আব্দুল্লাহ আল ইয়াছিনকে বরিশাল ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে এবং সিলেটের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. আমিনুর রহমানকে এসবিতে বদলি করা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
এখন আর শেখ হাসিনার পালানোর পথ নেই: প্রেস সচিব

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, এখন আর শেখ হাসিনার পালানোর কোনো পথ নেই।
বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলমের এ মন্তব্য আসে বিবিসির একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে, যেখানে দাবি করা হয়—২০২৩ সালের জুলাইয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর আদেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পোস্টে তিনি লেখেন, “বিবিসির গভীর অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন বলছে, শেখ হাসিনা সরাসরি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। শতাধিক শিশুর মৃত্যুর বিষয়টিও ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই প্রকাশনার পর শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়বে।”
তিনি আরও লেখেন, “শেখ হাসিনাকে অবশ্যই গণহত্যার দায়ে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে দমননীতি ও সহিংসতা তিনি চালিয়েছেন, তার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। তিনি এবং তার আদেশে যারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তারাও শাস্তি এড়াতে পারবে না।”
বিবিসির ‘আই ইনভেস্টিগেশন’ ইউনিটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় বলেন, “যেখানেই ওদের পাওয়া যাবে, গুলি করা হবে।” ওই ফোনালাপের একটি অডিও ফাঁস হয় চলতি বছরের মার্চ মাসে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, তারা ওই অডিওর সত্যতা যাচাই করেছে এবং নিশ্চিত হয়েছে—ফোনালাপে যিনি কথা বলছেন, সেটি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর। বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)–ও অডিওটি যাচাই করে নিশ্চিত করেছে কণ্ঠস্বরটি তার সাথেই মিলে যায়। প্রতিবেদনে এটিকে আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি প্রাণঘাতী হামলার আদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়।
কাফি
জাতীয়
জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন হাসিনা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং থেকে জানা গেছে, গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি তিনি নিজেই দিয়েছিলেন।
বিবিসির যাচাই করা ওই রেকর্ডিং অনুসারে, শেখ হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দিয়েছেন এবং ‘তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবে, তারা গুলি করবে’।
অজ্ঞাত একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ যে তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করার জন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছিলেন।
ফাঁস হওয়া অডিওটি সম্পর্কে জানেন এমন একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত ১৮ জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনালাপটি করেন।
চলতি বছরের মার্চের শুরুতে ফোনালাপের অডিওটি কে ফাঁস করেছে তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভের পর থেকে হাসিনার কলের অসংখ্য ক্লিপ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে যার অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।
১৮ জুলাইয়ের ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়ে এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে এবং তারা এটিতে এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পায়নি। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তারা জানিয়েছে।
মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে ধারণ করা হয়েছিল যেখানে ফোন কলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল। কারণ এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।
ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা রেকর্ডিংজুড়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি বা ইএনএফ শনাক্ত করেছে, যে ফ্রিকোয়েন্সি অন্য একটি ডিভাইস থেকে অডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই উপস্থিত থাকে। এটি এমন এক সূচক যার মানে হলো অডিওটিতে হেরফের করা হয়নি।
তারা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছে এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছে। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণও খুঁজে পায়নি।
ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেছেন, ‘রেকর্ডিংগুলো তার (শেখ হাসিনার) ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এগুলো স্পষ্ট এবং সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত।’
তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন যেখানে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘বিবিসির উল্লেখ করা টেপ রেকর্ডিংটি সত্য কি না তা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না’ এবং এই টেপটিতে কোনো ‘বেআইনি উদ্দেশ্য’ বা ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া’ দিতেও দেখা যায়নি।
আইসিটি মোট ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছে যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেফতার রয়েছে। আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বাংলাদেশের আদালতে বিচার চলছে।
জাতীয়
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশে সহায়তা দেবে তুরস্ক

বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশে সম্ভাব্য কারিগরি ও কৌশলগত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার সচিব অধ্যাপক হালুক গরগুন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আশ্বাস দেন তিনি। সেনাসদরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাৎকালে পারস্পরিক কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার সচিব বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশে সম্ভাব্য কারিগরি ও কৌশলগত সহায়তার আশ্বাস দেন।
সেনাপ্রধান তুরস্কের সহযোগিতায় দেশে বিভিন্ন আধুনিক যুদ্ধসরঞ্জাম তৈরি এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি উন্নয়নের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
একই দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন অধ্যাপক হালুক গরগুন।