আইন-আদালত
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ফাঁসির ৯ জনসহ সব আসামি খালাস

পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ৯ আসামিসহ সবাইকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি হামিদুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে সভা করার কথা থাকলেও বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ তার নেতৃত্বে মামলার অন্যান্য আসামিরা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঈশ্বরদী স্টেশন এলাকায় ট্রেনে গুলি ও বোমা বর্ষণ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিনই একটি মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। এদের মধ্যে পাঁচজন মারা গেলে তাদের চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে ৩ জুলাই জাকারিয়া পিন্টুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। সেই সঙ্গে ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর মেয়াদ কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়।
পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি খালাস চেয়ে আপিল করেন আসামিরা।

আইন-আদালত
হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন মাহমুদুর রহমান

দেশে জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত আছেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ১৪তম দিনের মতো এ মামলায় ছয় জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ফলে এখন পর্যন্ত এ মামলায় মোট ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গত ১০ জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
ওইদিন তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।’
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠনের সময় মামুন এসব কথা বলেন।
একইদিন এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন।
এ মামলায় তিন জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।
আইন-আদালত
ইস্টার্ন ব্যাংক চেয়ারম্যানের পরিবারের ১৪৬ হিসাব খতিয়ে দেখবে দুদক

ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরীর পরিবারের ১৪৬ ব্যাংক হিসাবে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
যদিও এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানা গেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দ অবস্থায় রয়েছে।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কামরুল ইসলাম নামেন একজন আইনজীবী এ বিষয়ে একটি অভিযোগও দাখিল করেছেন।
অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, অভিযোগটি ইতোমধ্যে আমরা পেয়েছি। বর্তমানের আমাদের যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে রয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশের আলোকের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দাখিল করা অভিযোগ ও বিএফআইইউ’র গোয়েন্দা প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান তাসমিয়া আম্বারীন, মেয়ে জারা নামরীন ও ছেলে জারান আলী চৌধুরী চারজনের এখন পর্যন্ত ২৮টি ব্যাংকে ১৮৭টি হিসাব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ইবিএল চেয়ারম্যানের নামে ১৪টি হিসাব, তার স্ত্রীর নামে ১৫টি হিসাব, জারা নামরীনের নামে ৯টি হিসাব ও মো. জারান আলী চৌধুরীর নামে ৩টি হিসাব এবং তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ১৪৬টি হিসাব পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ১৫ জুন পর্যন্ত আসা হিসাব অনুযায়ী এসব ব্যাংক হিসাবে ৮ হাজার ৪০৭ কোটি ৯১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৮২.২২ টাকা জমা করা হয়। যার মধ্যে ৮ হাজার ২৪৭ কোটি ৫৬ লাখ ৯২ হাজার ৭৬০.৩১ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ওই সময়ে ব্যাংকগুলোতে স্থিতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৩ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ১৫৮ টাকা। উল্লিখিত হিসাবগুলোর কেওয়াইসি, হিসাব বিবরণী এবং অন্যান্য দলিল বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
হিসাবগুলোর মধ্যে শওকত আলী চৌধুরীর ঢাকা ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখায় পরিচালিত ঢাকা ব্যাংক প্লাটিনাম হিসাবটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি হিসাবটি ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি খোলেন এবং ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর বন্ধ করেন। এই ব্যাংক হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ৯৬ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ টাকা। মোট উত্তোলনের পরিমাণ মোট ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি ২৩ লাখ ২ হাজার ৮৩৫ টাকা। তবে বন্ধকালীন স্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৩০ হাজার ৪৩৯ টাকা। এ হিসাব ব্যবহার করে তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এসএন কর্পোরেশনের লেনদেন করেছেন, যা পরোক্ষভাবে ট্যাক্স ফাঁকির উদ্দেশে করা হয়ে থাকতে পারে বলে বিএফআইইউ মনে করছে।
শুধু তাই নয়, অভিযোগ রয়েছে শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যের নামে সিঙ্গাপুর, দুবাই ও যুক্তরাজ্যে সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরে দুটি বাড়ি ও অন্য দুই দেশের সম্পদের তথ্যগুলো বিএফআইইউ তদন্ত করছে বলে জনা গেছে।
গত ৩০ শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বিএফআইইউ। এখন পর্যন্ত সেগুলো জব্দ অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে। বিএফআইইউর একটি সূত্রানুসারে, শওকত আলী চৌধুরীর সঙ্গে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফতের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের ১৭ বছরের শাসনামলে শওকত আলী চৌধুরী চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ জে এম নাসির ও শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস আলাউদ্দিন নাসিম, চৌধুরী নাফিস শারাফাত, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, নূর আলী ও ফজলে করিমের সঙ্গে অংশীদারিত্ব মূলক ব্যবসা ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদীর সম্পর্ক রয়েছে।
আইন-আদালত
বিচারপতি আক্তারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি আক্তারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ৩১ আগস্ট অনিয়মের অভিযোগে ছুটিতে পাঠানো হাইকোর্টের এই বিচারপতি রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি আক্তারুজ্জামান জেলা জজ থাকাকালীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছিলেন।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর ১২ জন বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তাদের হাইকোর্টের বেঞ্চে বিচারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়। তাদের মধ্যে বিচারপতি আক্তারুজ্জামানও ছিলেন।
অন্যান্যরা হলেন— বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি আতাউর রহমান খান, বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম, বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করে।
গত বছরের ২০ অক্টোবর ওই রিভিউ নিষ্পত্তির পর পুনরুজ্জীবিত হয় বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। নতুন করে গঠন করা হয় কাউন্সিল। এরপর বিচারপতিদের বিষয়ে বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। কাউন্সিলের অপর দুই সদস্য হলেন- আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
আইন-আদালত
হাবিবুরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, ৭ সেপ্টেম্বর চতুর্থ দিনের মতো এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে একজন শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি। বাকি দু’জন হলেন- আনাসকে গুলি করতে দেখা প্রত্যক্ষদর্শী রাব্বি হোসেন ও ব্যবসায়ী আবদুল গফুর।
ওই দিন সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাদের জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
গত ২১ আগস্ট চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন শহীদ রাকিব হোসেন হাওলাদারের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বড় ভাই রাহাত হাওলাদার। তারা দু’জনই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
১৩ আগস্ট তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন শহীদ ইয়াকুবের মা রহিমা আক্তার, তার প্রতিবেশী চাচা শহীদ আহমেদ ও শহীদ মো. ইসমামুল হকের ভাই মহিবুল হক। ১২ আগস্ট দ্বিতীয় দিনে জবানবন্দি দিয়েছেন দু’জন। এর মধ্যে একজন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন ও আরেকজন শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদের বাবা শেখ জামাল হাসান।
১১ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্য শেষে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে, আজও কারাগার থেকে এ মামলার চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করবে পুলিশ। তারা হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি করে পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।
আইন-আদালত
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৪তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ১৪তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, ৮ সেপ্টেম্বর ১৩তম দিনে তিনজন সাক্ষ্য দেন। তবে ৩৯তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া এসআই মো. আশরাফুল ইসলামের জেরা হয়নি। তাকে আজ জেরা করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
গত ২ সেপ্টেম্বর ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলার আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। একইসঙ্গে অজানা অনেক তথ্য ট্রাইব্যুনালের সামনে এনেছেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
এর আগে, ১ সেপ্টেম্বর দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এদিন জবানবন্দি দিয়েছেন ছয়জন। এর মধ্যে চিকিৎসক-সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজও সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।