আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের শুল্কারোপ, প্রতিশোধ নেবে কানাডা-মেক্সিকো-চীনও
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার—চীন, মেক্সিকো ও কানাডার বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। অন্যদিকে চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক হবে ১০ শতাংশ। তবে কানাডার জ্বালানি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কিছুটা কম, তা ১০ শতাংশ।
ট্রাম্পের দাবি, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যা যেমন অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয়।। মার্কিন সরকার বলছে, মেক্সিকোর সরকার মাদক পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আর চীন ফেন্টানাইলের মতো বিপজ্জনক মাদক আমদানিতে জড়িত। তবে এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে কানাডা ও মেক্সিকো তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, তারাও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।
শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, কানাডা এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একেবারেই প্রস্তুত। তিনি বলেন, কানাডা ১৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, যার মধ্যে থাকবে মদ, ফল, শাকসবজি, পোশাক, বাসনপত্র, আসবাবপত্র ও অন্যান্য পণ্য। ট্রুডো আরও জানান, কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া ফেন্টানাইলের পরিমাণ খুবই কম। সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও ট্রাম্পের উদ্বেগের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমও এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, শুল্ক আরোপ কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বরং এটি আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, মেক্সিকো মার্কিন সরকারের সঙ্গে মাদক পাচার রোধে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে সমস্যার সমাধান হবে শুধু আলোচনার মাধ্যমে। শুল্ক আরোপের মাধ্যমে নয়। যদি তা হয়, মেক্সিকোও মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।
এদিকে, চীনও ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন এই শুল্ক আরোপকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মনে করে এবং স্বার্থ রক্ষায় পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।
অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে, বিশেষ করে গাড়ি, যন্ত্রাংশ, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও খাদ্যপণ্যের। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো—সব দেশেই মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে। এমনকী বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়বে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
গোপনে ঢাকায় এসে টিউলিপের তথ্য নিয়ে গেল ব্রিটিশ দল
ব্রিটেনের ‘এফবিআই’ হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে ঢাকায় এক গোপন বৈঠকের পর ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
গত মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিএ কর্মকর্তাদের জানানো হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে নতুন প্রমাণ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ এনসিএ কর্মকর্তারা টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাব, ই-মেইল রেকর্ড এবং অন্যান্য তথ্য খতিয়ে দেখতে পারেন, এমনকি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির মাধ্যমে টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন। এ প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ঋণ এসেছে ক্রেমলিন থেকে, আর দায়িত্বে আছে রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটম।
২০১৩ সালে মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের ছবিতে টিউলিপ সিদ্দিককে দেখা গিয়েছিল।
এনসিএ-র কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটেনের লেবার পার্টির জুনিয়র মিনিস্টার এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নী টিউলিপ সিদ্দিক গত মাসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর তার এমপি পদে থাকা নিয়েও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে জোর আপত্তি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
নোবেল পুরস্কারের মনোনয়ন পেয়েও প্রত্যাখ্যান ইলন মাস্ককের
বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ককে ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল, তবে তিনি সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। মাস্কের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল বাকস্বাধীনতা এবং মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার অবদানের জন্য।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ব্রাঙ্কো গ্রিমস জানান, টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্কের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়ার আবেদন নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। এই মনোনয়ন মাস্কের বাকস্বাধীনতা এবং শান্তির মতো মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘদিনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হয়।
গ্রিমস তার এক্স (টুইটার) একাউন্টে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন, যেখানে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আপনার মনোনয়ন সফলভাবে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি এই মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সহ-প্রস্তাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মাস্কের প্রত্যাখ্যান
তবে, মাস্ক তার এক্স অ্যাকাউন্টে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ‘আমি কোনো পুরস্কার চাই না।’ এর মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করেন যে, তার কোনো স্বীকৃতি বা পুরস্কার গ্রহণের ইচ্ছা নেই এবং তার কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি কোনো পুরস্কারের প্রত্যাশা করেন না।
সমালোচনা ও বিতর্ক
মাস্কের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার পর, তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর ব্যবস্থাপনা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেক বিরোধী মন্তব্যকারীরা দাবি করেছেন যে, তার নীতিগুলো প্ল্যাটফর্মে মিথ্যা তথ্য, হয়রানি এবং ঘৃণা ভরা ভাষার প্রসার ঘটিয়েছে। যা সামাজিক আলোচনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আগের মনোনয়ন
এটি প্রথম নয়, এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ব্রাঙ্কো গ্রিমস ইলন মাস্ককে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিলেন। এছাড়া, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নরওয়ের সংসদ সদস্য মারিয়াস নিলসেনও মাস্ককে শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছিলেন, কিন্তু তখনও তাকে পুরস্কৃত করা হয়নি। ২০২৪ সালের শান্তি পুরস্কার ছিল হিরোশিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের নামে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস
বিশ্ববাজারে প্রথমবারের এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে। এতে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববাজারে স্বর্ণের রেকর্ড দাম নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহ শেষে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৭ ডলার। অবশ্য সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেনের একপর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৮১৫ ডলার পর্যন্ত উঠে যায়। এর আগে কখনো এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার হয়নি।
বিশ্ববাজারের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৭৭০ ডলার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেনের একপর্যায়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭৩১ ডলারে নেমে যায়। তবে এরপর আবার দাম বাড়ার প্রবণতা শুরু হয়। ২৯ জানুয়ারি প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭৬০ ডলারে উঠে যায়।
এদিকে, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এমন দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে বেড়েছে, দেশের বাজারে সেই হারে বাড়েনি বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) দায়িত্বশীল এক সদস্য।
তিনি জানান, বিশ্ববাজারে এক আউন্স স্বর্ণের দাম যে কোনো সময় ২ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে অনেক আগেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দফা দুই হাজার ৮০০ ডলারের কাছাকাছি গিয়ে ফিরে আসে। গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও গত সপ্তাহে দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে স্বর্ণের দাম বাড়েছে, তাতে দেশের বাজারে যে কোনো সময় আবার দাম বাড়তে পারে। আর দেশের বাজারে এখন স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলে, বিশ্ববাজারের পাশাপাশি দেশের বাজারে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে।
প্রসঙ্গত, ২৯ জানুয়ারি বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে পরের দিন ৩০ জানুয়ারি থেকে স্বর্ণের নতুন দাম কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাজুসের এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩৬৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৯১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩০৭ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১০৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়ে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৫৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৬ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসার পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪০ ডলারের মতো বেড়ে গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস
বিশ্ববাজারে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে সোনা। প্রথমবারের এক আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে। বিশ্ববাজারে সোনার এমন দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে বেড়েছে, দেশের বাজারে সেই হারে বাড়েনি। ফলে দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়তে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশের বাজারে সোনার দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এ বাজুসের দায়িত্বশীল এক সদস্য জানান, বিশ্ববাজারে এক আউন্স সোনার দাম যে কোনো সময় ২ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে অনেক আগেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দফা দুই হাজার ৮০০ ডলারের কাছাকাছি গিয়ে ফিরে আসে। গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো এক আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও গত সপ্তাহে দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে সোনার দাম বেড়েছে, তাতে দেশের বাজারে যে কোনো সময় আবার দাম বাড়তে পারে। আর দেশের বাজারে এখন সোনার দাম বাড়ানো হলে, বিশ্ববাজারের পাশাপাশি দেশের বাজারে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে।
বিশ্ববাজারের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৭৭০ ডলার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেনের একপর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৭৩১ ডলারে নেমে যায়। তবে এরপর আবার দাম বাড়ার প্রবণতা শুরু হয়। ২৯ জানুয়ারি প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৭৬০ ডলারে উঠলে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস।
২৯ জানুয়ারি বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে পরের দিন ৩০ জানুয়ারি থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাজুসের এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩৬৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৯১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩০৭ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১০৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়ে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৯৫৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৬ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসার পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪০ ডলারের মতো বেড়ে গেছে। সপ্তাহ শেষে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৭ ডলার। অবশ্য সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেনের একপর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৮১৫ ডলার পর্যন্ত উঠে যায়। এর আগে কখনো এক আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার হয়নি।
বিশ্ববাজারে এতদিন এক আউন্স সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল ২ হাজার ৭৯০ ডলার। গত ৩০ অক্টোবরে সোনার এ দাম হয়। বিশ্ববাজারে সোনার এ রেকর্ড দাম হওয়ার পর ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরের দিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫৪৭ ডলার পর্যন্ত নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন সোনার দাম বাড়ানো হয়, তেমনি বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালোমানের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯ হাজার ১৭ টাকা কমানো হয়।
এরপর বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরেও কয়েক দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো বা কমানোর ঘটনা ঘটে। আর নতুন বছর ২০২৫ সালে এখনো পর্যন্ত দেশের বাজারে তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। এ তিন দফা দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসার আগে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বড় অঙ্কে বাড়তে দেখা গেছে।
চলতি বছর দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম তিন দফায় বেড়েছে ৪ হাজার ৫০৩ টাকা। অপরদিকে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৭৩ ডলার। এক আউন্স সমান ৩১ দশমিক ১০৩৪৭৬৮ গ্রাম। এ হিসাবে বিশ্ববাজারে চলতি বছর এখনো পর্যন্ত এক ভরি সোনার দাম বেড়েছে ৭ হাজার ৯১৫ টাকা (এক ডলার সমান ১২২ টাকা ধরে)।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সরকারি কর্মচারীদের জন্য ডিপসিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করলো তাইওয়ান
নিজেদের সরকারি সব প্রতিষ্ঠানে চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উৎপাদনকারী কোম্পানি ডিপসিকের যাবতীয় পণ্য ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাইওয়ানের সরকার। শুক্রবর তাইওয়ানের ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এ তথ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেহেতু ডিপসিক চীনা কোম্পানি, তাই তাইওয়নের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মীরা এই কোম্পানির পণ্য ব্যবহার করলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তথ্য চীনে পাচার হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকার কারণেই দেওয়া হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সরকারি সব দপ্তর, স্কুল-কলেজ ও শিক্ষাকেন্দ্রসহ যাবতীয় রাষ্ট্রয়ত্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ক্ষেত্রেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। সেই সঙ্গে যেসব স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সরকারি তহবিল গ্রহণ করে, সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মীরাও এর আওতায় পড়বেন।
প্রঙ্গত, চীনা কোম্পানি ডিপসিকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত একট চ্যাটবট সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে তোলপাড় তৈরি করেছে। ডিপসিকের নতুন মডেল আর-১ বাজারে আসার পর বিশ্বের অন্যতম বড় চিপ ফার্ম এনভিডিয়ার মার্কেট ভ্যালু ৬০০ বিলিয়ন কমে গেছে।
এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ডিপসিকের কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাত কেঁপে উঠেছে, কারণ তারা দাবি করেছে, তাদের আর-১ মডেলটি তৈরি করতে মাত্র ৬ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। যেখানে অন্যান্য এআই প্রতিষ্ঠানগুলো একই জিনিস তৈরিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। ডিপসিক এত কমে চ্যাটবট তৈরি করার পর এই খাতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়া চ্যাটবটের ওপর মার্কিন ফার্মগুলো যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের কথা বলে আসছিল, সেটিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও পরিচিত চ্যাটজিপিটির সর্বশেষ যে চ্যাটবটটি বাজারে ছাড়া হয়েছে, সেটির সঙ্গে ডিপসিকের তুলনা করে দেখা গেছে, এটি বেশ কিছু ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির সমান দক্ষতাই দেখিয়েছে।
ওপেনএআইয়ের প্রধান স্যাম আল্টম্যান ডিপসিকের প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে এটি কমদামে যে মানুষকে সেবা দিতে পারছে এই বিষয়টি তার পছন্দ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চীনা এই কোম্পানি দাবি করেছে, তাদের মডেলটিকে ২ মাত্র দুই হাজার বিশেষায়িত চিপের ওপর প্রশিক্ষণ দিলেই হয়। যেখানে একই ধরনের একটি চ্যাটবট তৈরিতে ১৬ হাজার চিপকে প্রশিক্ষণ দিতে হয়।