অর্থনীতি
১১ বছরে অর্থনীতিতে কমেছে শিল্প খাতের অবদান

গত ১১ বছরে শিল্প খাতের অবদান কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৭৭ শতাংশ। যা ২০১৩ সালে ছিল ১১.৫৪ শতাংশ। এছাড়া ২০১৩ সালে দেশে অর্থনৈতিক ইউনিট ছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টিতে। অর্থাৎ গত ১১ বছরে দেশে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা বেড়েছে ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৯টি বা ৫১.৯১ শতাংশ।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানী আগারগাওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরো (বিবিএস) সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভাপতি ড. কে এস মুর্শিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বক্তব্য রাখেন প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে উৎপাদন খাতে মোট উৎপাদনের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৯৭ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। সর্বশেষ হিসাবে গত অর্থবছরে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ লাখ ৩২ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকায়। ১১ বছরে উৎপাদন খাতের মোট উৎপাদনমূল্য প্রায় ৫.৭৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার প্রতিবছর গড়ে ১৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনাভাইরাসের প্রভাবে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ধস নামার বছরেও এই খাতে ৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছিল। এছাড়া প্রতিবছরই উৎপাদন খাতে ডাবল ডিজিট, এমনকি কোনো কোনো বছর ১৮ শতাংশ ছুঁই ছুঁই প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে। এই সময়ে মোট জিডিপিতে উৎপাদন খাতের অবদান ১৭.২৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৩.১৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলেও দাবি করে হাসিনা সরকার। উৎপাদন খাতের হাত ধরে শিল্প খাতে বছরের পর বছর ধরে দেখানো জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই হিসাব মিলছে না বিবিএস পরিচালিত অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪ এর প্রাথমিক ফলাফলে।
অর্থনৈতিক শুমারির প্রাথমিক হিসাব বলছে, গত ১০ বছরে উৎপাদন খাতে অর্থনৈতিক ইউনিটের (প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১৫.৩৯ শতাংশ। অথচ ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালিত শুমারির তুলনায় ২০১৩ সালের শুমারিতে এই খাতে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা বেড়েছিল ১০০.৪২ শতাংশ। সার্বিকভাবে দেশে অর্থনৈতিক ইউনিটের প্রবৃদ্ধি কমেছে বলে প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, উৎপাদন খাতের প্রতিষ্ঠানে তুলনামূলক কম প্রবৃদ্ধি হওয়ায় অর্থনৈতিক ইউনিটে এই খাতের অবদান ৮.৭৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে মোট অর্থনৈতিক ইউনিটে উৎপাদন খাতের অবদান ছিল ১২.১৪ শতাংশ, যা ২০১৩ সালে ১১.৫৪ শতাংশে নেমে আসে। এ হিসাবে টানা দুই শুমারিতেই কমেছে উৎপাদন খাতের প্রতিষ্ঠানের অবদান। গত ১০ বছরে সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৯ লাখ ১৫ হাজার ৯৮২ থেকে ৫৬.৬৮ শতাংশ বেড়ে এক কোটি আট লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৬-এ দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিএস। এর ফলে মোট প্রতিষ্ঠানে সেবা খাতের অবদান ৮৮.৮৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১.২৩ শতাংশে।
গেল এক দশকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে ৪০ লাখ কোটি টাকা। এই সময়ে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের যুক্ত হয়েছে ৪০ লাখ ৫৮ হাজার খানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সার্ভিস তথা সেবা খাতের প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে ৩৯ লাখ ১৯ হাজারটি আর উৎপাদন খাতে যুক্ত হয়েছে মাত্র এক লাখ ৩৮ হাজারটি। এ কারণে গত ১০ বছরে মাত্র ৬২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
অর্থনৈতিক শুমারির প্রতিবেদন মতে, গত এক দশকে অর্থনৈতিক ইউনিট বেড়েছে ৪০ লাখ ৫৮ হাজারটি। এর মধ্যে সেবা খাতে বেড়েছে ৩৯ লাখ ১৯ হাজারটি আর উৎপাদন খাতে বেড়েছে এক লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫টি; অর্থনৈতিক ইউনিট বাই টাইপে এক কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টি। এর মধ্যে পার্মানেন্ট ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ২১৪টি, টেস্পোরারি পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৬২১টি। ইকোনমিক হাউসহোল্ডে ৫০ লাখ ১২ হাজার ৫২৯টি। ঠিক এর এক দশক আগে প্রতিষ্ঠান ছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এর মধ্যে পার্মানেন্ট ছিল ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৯১টি, টেম্পোরারি ছিল চার লাখ ৮২ হাজার ৯০৩টি। আর ইকোনমিক হাউজহোল্ড ছিল ২৮ লাখ ২১ হাজার ৫৭১। অর্থাৎ ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৯টি অর্থনৈতিক ইউনিট বেড়েছে।
এছাড়া অর্থনৈতিক ইউনিটের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে রয়েছে ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৬১টি, আর শহরাঞ্চলে রয়েছে ৩৫ লাখ ৩১ হাজার ২০৩টি। এর আগে ২০১৩ সালে গ্রামাঞ্চলে ছিল ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৯টি, শহরাঞ্চলে ছিল ২২ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৬টি। স্থানীয় বা পার্মানেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে রয়েছে ৩৯ লাখ ৪১ হাজার ৬৮টি, শহরাঞ্চলে রয়েছে ২৩ লাখ ৪৭ হাজার ১৪৬টি; যা ১০ বছর আগে ছিল গ্রামাঞ্চলে ২৯ লাখ ৩৬ হাজার ৪৫৯টি আর শহরাঞ্চলে ছিল ১৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৩২টি। টেম্পোরারি পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৬২১টির মধ্যে শহরাঞ্চলে রয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯০৯টি আর গ্রামে দুই লাখ ৯১ লাখ ৭১২টি; যা ২০১৩ সালে ছিল দুই লাখ ৭৬ হাজার ৬৯৩টি।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে তিন কোটি সাত লাখ ৬১ হাজার ৩৪ জন বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এর মধ্যে পুরুষ দুই কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ২৯৮ জন। মহিলা ৫১ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭ জন, হিজড়া দুই হাজার ৫৯ জন। এর আগে ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে কর্মসংস্থান বেড়েছিল এক কোটি ৩৩ লাখ। আর ২০১৩ সালে এসে কর্মসংস্থান দাঁড়ায় দুই কোটি ৪৫ লাখ ৮৫০। সে হিসাবে গত ১০ বছরে নতুন কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ৬২ লাখ ৬০ হাজার ১৮৪ জন। শিল্প খাতে গত ১০ বছরে এক লাখ ১৬ হাজার ৯৭৮টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
সম্পূরক ঋণ চুক্তিতে ৭৬ কোটি টাকা দিচ্ছে কোরিয়া

সম্পূলক ঋণ চুক্তির আওতায় ৭৬ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে কোরিয়া সরকার। ‘গ্লোবাল সামুদ্রিক বিপদ সংকেত ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সমন্বিত নৌচালনা ব্যবস্থা স্থাপ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে “ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) তহবিল এই ঋন দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি’র এশিয়া, জেইসি ও এফএন্ডএফ শাখার অতিরিক্ত সচিব মিজ মিরানা মাহরুখ এবং কোরিয়ার পক্ষে দেশটির এক্সিম ব্যাংকের ডিরেক্টর জেনারেল মি. কিম কিসাঙ্গ সম্পূরক ঋণ চুক্তিতে নিজ নিজ পক্ষে স্বাক্ষর করেন। এই প্রকল্পটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়ন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ৪৫৫ কোটি টাকার ঋণ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৭টি লাইট হাউজ ও কোস্টাল রেডিও স্টেশন স্থাপন এবং ঢাকায় একটি কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে চলমান জাহাজগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যমান লাইট হাউজ আধুনিকীকরণ ও নতুন লাইট হাউজ স্থাপন করা।
উল্লেখ্য, কোরিয়া সরকার কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অগ্রাধিকারভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পে নমনীয় ঋণ সহায়তা দিয়ে আসছে। এই প্রকল্পে ‘ইডিসিএফ’ তহবিলের আওতায় ঋণ চুক্তির সুদের হার হবে ০.০১ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাড়ে ১৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট সাড়ে ৪০ বছর।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
একদিনের ব্যবধানে ফের বাড়লো স্বর্ণের দাম

মাত্র একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণেয় পাঁচ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। দেশের বাজারে স্বর্ণের এত দাম আগে কখনো হয়নি।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গতকাল সোমবার ঘোষণা দিয়ে আজ মঙ্গলবার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৪ হাজার ৭১৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশের বাজারে এটিই ছিল সোনার সর্বোচ্চ দাম। কিন্তু এই রেকর্ড দাম নির্ধারণ করার একদিন পর আজ আবার দাম বাড়ানো হলো। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠলো সোনা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৫ হাজার ১০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৭৩২ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকা।
এর আগে গতকাল ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৪ হাজার ৭১৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের ভরিতে ৪ হাজার ৪৯১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৮৬০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরিতে ৩ হাজার ২৮৯ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা। আজ মঙ্গলবার এ দামেই সোনা কেনাবেচা হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানোর পাশাপাশি রূপার দামও বাড়ানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপায় ২৮৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রূপার ভরিতে ২৬৯ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২ হাজার ৭১৮ টাকা।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি রূপায় ২২২ টাকা বাড়িয়ে ২ হাজার ৩৩৩ টাকা আর সনাতন পদ্ধতির রূপায় ভরিপ্রতি ১৬৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সিঙ্গাপুর থেকে ৫৯৮ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার

দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সিঙ্গাপুর থেকে ৫৯৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৯ হাজার ৮৪০ টাকা ব্যয়ে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে এ এলএনজি আমদানি করা হবে।
এক কার্গো এলএনজি আমদানির পাশাপাশি ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্পে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৩ লাখ ৫ হাজার ১৪৪ টাকা ভেরিশেনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব দুটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বিদেশ থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নিয়ে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পেট্রোবাংলা কর্তৃক এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। তার মধ্যে চারটি প্রস্তাব কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুর এই এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১২ দশমিক ৪৭৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় কবে ৫৯৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৯ হাজার ৮৪০ টাকা।
সূত্র জানায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্পে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বৃদ্ধির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
জানা গেছে, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’-এর অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেইন্যান্স কনট্রাক্টর নিয়োগের লক্ষ্যে বিড ডকুমেন্ট প্রস্তুত ও অন্যান্য পরামর্শক সেবা প্রদানের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএলএফ কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স, ইউএই-কে ২০ লাখ ২১ হাজার ১২৫ ডলারে নিয়োগ দেওয়া হয়।
পরবর্তীসময়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ বাড়ায় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৭৬২ ডলার ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দেয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলারের দাম ১২২ টাকা হিসাবে ব্যয় বাড়বে এক কোটি তিন লাখ পাঁচ হাজার ১৪৪ টাকা।
ভেরিয়েশনের কারণ হিসেবে জানা গেছে, বিশেষ বিধান আইনের অধীন চলমান ক্রয় কার্যক্রম স্থগিত করায় সিঙ্গেল সোর্স পদ্ধতিতে ঠিকাদার নিয়োগের বিড ডকুমেন্ট বাতিল হয়। পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জি-টু-জি (সরাসরি) ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগের বিড ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা হয়। আবার পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে নিয়োগের জন্য বিড ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
২১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার

বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্সের এ গতিধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনেই এসেছে প্রায় দুই বিলিয়ন (১৯৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২৩ হাজার ৯৮৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর প্রতিদিন আসছে ৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের বেশি বা ১১৪২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনে এলো ১৯৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। যা গত বছরের একই (২০২৪ এর এপ্রিলের প্রথম ২১ দিন) সময়ে এসেছিল ১৩৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে প্রায় ৫৭ কোটি ডলার বেশি এসেছে। শতকরা হিসাবে রেমিট্যান্সের গ্রোথ প্রায় ৪১ শতাংশ।
এ নিয়ে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯ মাস ২১ দিনে ২ হাজার ৩৭৫ কোটি ১০ লাখ ডলার এসেছে। যা গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৯ মাস ২১ দিনে এসেছিল ১ হাজার ৮৪৭ কোটি ১০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের রেমিট্যান্স বেড়েছে ৫২৮ কোটি ডলার বা ২৯ শতাংশ বেশি।
এর আগে সদ্য বিদায়ী মাস মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩.২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন আসছে প্রায় ১০.৬১ কোটি ডলার বা ১২৯৫ কোটি টাকা করে।
তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১.৭১ বিলিয়ন বা ১৭১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সদ্য বিদায়ী মার্চে ১৫৮ কোটি ডলার বেশি এসেছে। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৪৭০ কোটি ডলার বেশি এসেছে।
গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়ল মার্চ মাস। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে।
অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর সবশেষ মার্চে এলো ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ইংরেজি মাধ্যমে পরীক্ষার ব্যয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো যাবে

ইংরেজি মাধ্যমের (ও লেভেল, এ লেভেল এবং এএস লেভেল) পরীক্ষার ফি কেন্দ্রের মাধ্যমে পাঠানো যাবে। অনুমোদিত পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো ভর্তি ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ফি টাকায় সংগ্রহ করতে পারবে। এসব পরীক্ষার মধ্যে আরও আছে টোয়েফল, এসএটি, ইত্যাদি এবং স্বীকৃত বিদেশি একাডেমিক সংস্থা বা কর্তৃপক্ষের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের বিদেশি শিক্ষা কার্যক্রম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ গতকাল সোমবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। এর আগে এ ধরনের রেমিট্যান্সের জন্য অনুমোদিত ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হতো।
অনুমোদিত ব্যাংকগুলোকে পাঠানো এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোকে সংশ্লিষ্ট বিদেশি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো ইনভয়েসের ভিত্তিতে এবং বিস্তারিত তথ্যসংবলিত বিবরণীর ভিত্তিতে বিদেশে অর্থ পাঠাতে পারবে। রেমিট্যান্স কার্যকর করার আগে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা নিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
ব্যাংকগুলোকে এ ধরনের রেমিট্যান্সের জন্য এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হতো। এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই ব্যাংকগুলো বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের (যেমন ও, এ বা এএস লেভেল) পরীক্ষার জন্য রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবে। এছাড়া অনুমোদন ছাড়াই টোয়েফল, এসএটি ইত্যাদির পরীক্ষার ফি-ও এখন বিদেশে প্রেরণযোগ্য হবে।