ব্যাংক
পদত্যাগ করলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডি ও ডিএমডি
খেলাপি ঋণে জর্জরিত বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তৌহিদুল আলম খান ও ডিএমডি (উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক) আব্দুল মতিন পদত্যাগ করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তৌহিদুল আলম খান বলেন, আমি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারনে পদত্যাগ করেছি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া অনুমোদন অনুযায়ী, এমডি তৌহিদুল আলম খানের মেয়াদ ছিল চলতি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত। যদিও এমডি গত মাসের ৭ তারিখেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ডিএমডি আব্দুল মতিন গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে পদত্যাগপত্র জামা দিয়েছেন। উভয়েই কন্টাকচুয়ালি (চুক্তির ভিত্তিতে) ছিলেন। তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ায়, এবং নতুন করে নিয়োগ না পাওয়ায়— তাদের চলে যেতে হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই ন্যাশনাল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় শিকদার পরিবার (শিকদার গ্রুপ)। জয়নুল হক শিকদার, তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়েরা ছিলেন ব্যাংকটির পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত।
ন্যাশনাল ব্যাংকে বেনামি ঋণ, কমিশন নিয়ে ঋণ, নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে অভিযোগের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব শুরু হলে— বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া হয় এস আলম গ্রুপের হাতে।
তবে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন এনেছে, তার একটি ন্যাশনাল ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন মতে (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ব্যাংকটির মোট ঋণের প্রায় ৫৬ শতাংশ বা ২৩ হাজার ৭২২ কোটি টাকা-ই খেলাপি ঋণ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আতঙ্কে নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরা, নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার ৪
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে আতঙ্কে আছেন নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীরা। নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরাও একইভাবে দুশ্চিন্তায়। কারণ, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ধারপাকড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
শপথ গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিবাসন–সংক্রান্ত শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিলসহ নতুন ৪৭টিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের শক্ত হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। নথিপত্রহীন সন্দেহভাজন অভিবাসীদের ব্যাপক মাত্রায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক বাংলাদেশি বলেন, ফুলটন এলাকায় আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। অতর্কিতে সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে আমাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন।
একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। তিনি এ কথা বলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে শপথ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অতিক্রম করে লাখ লাখ অনুপ্রবেশকারী নির্দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সীমান্তে প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করা হবে। তারপর বের করে দেওয়া হবে অপরাধীদের।
ইতিমধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রাখা হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এই আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজন বলেন, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যাঁরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার পথ ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকতেন, সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। সে হিসাবে অভিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যাপক সুযোগ পেয়েছেন। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সেসব নিয়োগ নির্ধারিত হবে। ফলে ছাটাই হতে পারেন অসংখ্য বাংলাদেশি।
সংবিধানের তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশ জারি করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের একটি বিধানও বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এতে এখন থেকে ৩০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানেরা দেশটির নাগরিকত্ব পাবে না। তবে ইতিমধ্যে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ২৪টি রাজ্য ও শহরে মামলা হয়েছে। যেহেতু এটা মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনের বিরুদ্ধে যায়, সে কারণে হাইকোর্ট এটি বাতিল করে দিতে পারে।
খাদিজা মুনতাহা বাংলাদেশিদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। অন্যের ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এই কঠিন সময়ে অহেতুক পুলিশি অথবা অন্য কোনো বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়ানো যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঙালি–অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় যেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যেত, এখন সেখানে লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের সুকুক বন্ডে বরাদ্দের হার বাড়ালো সরকার
ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের জন্য সুকুক বন্ডের ইউনিট বরাদ্দের হার বাড়িয়েছে সরকার। ফলে এখন থেকে ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা সুকুক বন্ডের ২০ শতাংশ বরাদ্দ পাবে। আগে এই হার ছিল ৫ শতাংশ। নতুন সার্কুলার অনুসারে, ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স প্রভৃতি ইস্যুতব্য সুকুকের আগের চেয়ে ১৫ শতাংশ বরাদ্দের হার বেড়েছে।
আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়।
সার্কুলারে বলা হয়, শরিয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানি ইস্যুতব্য সুকুকের ৭০ শতাংশ, কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর ইসলামিক ব্রাঞ্চ ও উইন্ডোজ ইস্যুতব্য সুকুকের ১০ শতাংশ এবং ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স প্রভৃতি ইস্যুতব্য সুকুকের ২০ শতাংশ হারে পাবে। এ ছাড়া আগের নির্দেশনার অন্যান্য বিষয় অপরিবর্তিত থাকবে। নতুন নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
২০২৩ সালের জারি করা নির্দেশনায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানি ইস্যুতব্য সুকুকের ৮৫ শতাংশ, কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর ইসলামিক ব্রাঞ্চ ও উইন্ডোজ ইস্যুতব্য সুকুকের ১০ শতাংশ এবং ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স প্রভৃতি ইস্যুতব্য সুকুকের ৫ শতাংশ হারে বরাদ্দ ছিল। নতুন নির্দেশনায় শরিয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানির বরাদ্দের হার ১৫ শতাংশ কমিয়ে ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স প্রভৃতিতে বরাদ্দের হার বাড়ানা হয়েছে।
আগের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩টি শ্রেণিতে প্রয়োজনীয় সাবস্ক্রিপশন না পাওয়া গেলে অকশনে অংশগ্রহণকারী কনভেনশনাল ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিমা কোম্পানির মধ্যে অবশিষ্ট সুকুক আনুপাতিক হারে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পাঁচ মাসে স্কুল ব্যাংকিংয়ে আমানত কমেছে ২৮৫ কোটি টাকা
২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমছে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়। এক মাসের ব্যবধানে স্কুল ব্যাংকিংয়ে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা। আর গত পাঁচ মাসে সঞ্চয় কমেছে প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সদ্যবিদায়ী ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে স্কুল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৪১ কোটি টাকা, যা গত অক্টোবরে ছিল ২ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে আমানত কমেছে ৪৬ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস শেষে আমানতের স্থিতি ছিল ২ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমানতের স্থিতি কমেছে কমেছে প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন মতে, গত জুন মাসে আমানত ছিল ২ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে পাঁচ মাসে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কমেছে ২৮৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৭২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে কমছেই স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়।
গত নভেম্বর মাস শেষে ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৪২ হাজার ২৫৯টি। আর তার আগের মাস অক্টোবরে হিসাব সংখ্যা ছিল ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৫৯টি। সে হিসাবে এক মাসে হিসাব সংখ্যা কমেছে প্রায় ২২ হাজার। এর মধ্যে সর্বশেষ ছেলেদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ৫ হাজার ৯৮৪টি আর মেয়েদের হিসাব সংখ্যা ২১ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৫টি। নভেম্বরে ছেলেদের হিসাব সংখ্যা কমলেও মেয়েদের হিসাব সংখ্যা বেড়েছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্কুল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হলো নতুন করে যেসব হিসাব খোলা হয়েছে কিংবা আগের হিসাবে যে পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে তার চেয়ে বেশি অঙ্কের টাকা উত্তোলন হচ্ছে। আর্থিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীরাও তাদের সঞ্চয় ভেঙে ফেলছেন।
ব্যাংকাররা বলছেন, বছরের শুরুতে কিংবা শেষদিকে অনেকের টাকা উত্তোলনের চাপ থাকে। অনেকে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় বেড়াতে যান। আবার অনেকে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করতে গিয়ে আমানত ভাঙতে বাধ্য হন। তবে বছরের পুরো সময়জুড়ে শিক্ষার্থীদের আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নিয়মিত খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এ অবস্থার মধ্যেই আমানত উত্তোলন করতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। এ কার্যক্রমের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আরও উপযোগী করে তোলা। এখন পর্যন্ত ৫৯টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করেছে। যাদের বয়স ১১ থেকে ১৭ বছর এমন শিক্ষার্থীরা এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এই অ্যাকাউন্টে সব ধরনের ফি ও চার্জের ক্ষেত্রে রেয়াত পাওয়া, বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া, ন্যূনতম স্থিতির বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে ছাড় ও স্বল্প খরচে ডেবিট কার্ড পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখেই এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন তারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
১০ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৫৬ হাজার কোটি টাকা
ভালো ও মন্দ ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখতে পারছে না সরকারি ও বেসরকারি খাতের ১০টি ব্যাংক। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এসব ব্যাংকে মোট প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সরকারি, বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১০টি ব্যাংকের মোট সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ ৫৬ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। কয়েকটি ব্যাংক তাদের লক্ষ্যমাত্রার বেশি সঞ্চিতি রেখেছে, যার ফলে ব্যাংক খাতে সার্বিক প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা।
গত জুনে ব্যাংক খাতের প্রভিশন ঘাটতি ছিল ৩১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ২৪ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এখন ব্যাংকের যে অবস্থা তাতে প্রভিশন ঘাটতি হবে। কারণ দিন দিন খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
এর পরও সম্প্রতি খেলাপি ঋণ অনেক বেড়ে গেছে। তাই প্রভিশন ঘাটতি বাড়বে। এখানে শতভাগ প্রভিশন রাখা দরকার। এখানে একটির সঙ্গে আরেকটি জড়িত।
এভাবে প্রভিশন বাড়তে থাকলে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে যাবে। প্রভিশন ঘাটতি কমাতে হলে আগে খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করে দিতে হবে, যাতে টাকাগুলো আবার ফেরত আসে।
নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে পরিচালন মুনাফার ০.৫ থেকে ৫ শতাংশ সাধারণ ক্যাটাগরির ঋণের বিপরীতে প্রভিশন হিসেবে, নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ এবং সন্দেহজনক খেলাপি ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের জন্য মন্দ বা লোকসান ক্যাটাগরির খেলাপি ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশনিং আলাদা করে রাখার বিধান রয়েছে।
প্রভিশন ঘাটতি ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি অশনিসংকেত, কারণ এটি ব্যাংকগুলোর দুর্বল আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে, যা মূলত উচ্চ খেলাপি ঋণের ফল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ব্যাংকারদের বিদেশযাত্রায় সব ধরনের বাধা তুলে দিল সরকার
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশযাত্রায় সব ধরনের বাধা উঠিয়ে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংকারদের বিদেশে ভ্রমণে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবে না। ব্যাংকের ভ্রমণ নীতিমালা অনুযায়ী কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, কর্মশালা ও শিক্ষাসফরে যেতে পারবেন।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগে ব্যাংকের অর্থায়নে প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও স্টাডি ট্যুরে অংশগ্রহণের জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তবে কিছু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশে ভ্রমণের সুযোগ ছিল। নতুন নির্দেশনায় দাপ্তরিক প্রয়োজনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
কাফি