আন্তর্জাতিক
চীনে বিদেশি শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের অংশগ্রহণে শিক্ষা সফর
চীনের সানমিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের অংশগ্রহণে দুই দিনব্যাপী শীতকালীন শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্য হলো, চীনের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীর ধারণা তৈরি এবং চীন ও অন্যান্য জাতির মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে উৎসাহিত করা।
গত ২০ থেকে ২১ জানুয়ারী দুই দিনব্যাপী শিক্ষা সফরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এন্ড এক্সচেঞ্জ অফিসের সহযোগিতায় স্কুল অফ ওভারসিজ এডুকেশন ফুচিয়ান প্রদেশের সানমিং শহরের ইউশি কাউন্টিতে আয়োজন করে।
শিক্ষা সফর চলাকালীন, প্রতিনিধিদলটি হাতে কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন এবং তাদের বোধগম্যতা আরও গভীর করার জন্য গুইফং প্রাচীন গ্রাম, কনফুসিয়ান মন্দির, ঝুজি সাংস্কৃতিক উদ্যান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করে।
এসময়, তারা মিং এবং ছিং রাজবংশের প্রাচীন পারিবারিক সংস্কৃতি এবং স্থাপত্য কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, কনফুসিয়ান সংস্কৃতির, প্রাচীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং এর নীতিমালা সম্পর্কে গভীর ধারণা অর্জন, স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে লোক রীতিনীতি এবং অনন্য খাবার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগও পেয়েছিল। তাছাড়া, নব্য-কনফুসিয়ানিজমের প্রধান ব্যক্তিত্ব ঝু শি’র জীবন, কর্ম, দর্শন এবং বিশ্বাস সম্পর্কে একটি বিস্তৃত ধারণা অর্জন করেছিল।
বাংলাদেশ, মালি, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মঙ্গোলিয়া, উজবেকিস্তান এবং রাশিয়ার ২০ জনেরও বেশি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী এই অনন্য শীতকালীন ছুটির সামাজিক অনুশীলন কার্যকলাপে অংশ নিয়েছিলেন।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
গ্রিন কার্ড আবেদনকারীদের সুসংবাদ দিলেন ট্রাম্প
অভিবাসন ইস্যুতে কঠোরতার মধ্যে নতুন সুসংবাদ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্প ট্রাম্প। তিনি জানান, এখন থেকে গ্রিন কার্ড তথা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদায় সমন্বয়ের জন্য আবেদনকারীদের করোনোর টিকার সনদ দেখাতে হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসনসংক্রান্ত পরিষেবা ইউএসসিআইএসের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বৈধ স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদায় সমন্বয়ের জন্য আবেদনকারীদের এখন থেকে আর করোনার টিকার প্রমাণ হিসেবে কোনো ধরনের নথি জমা দিতে হবে না। এ ধরনের বাধ্যবাধকতা মওকুফ করা হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়ার পরিধি বাড়িয়েছেন ট্রাম্প। দুই বছর বা তার বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের প্রমাণ দেখাতে না পারা অভিবাসীরা এর আওতায় পড়বেন।
এদিকে প্রেসিডেন্টসিয়াল নির্বাচনের প্রচারণায় নেমে সেই ২০১৫ সাল থেকেই জন্মস্থান সূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আওয়াজ তুলেছিলেন ট্রাম্প। ওই সময় একটি পলিসি পেপারে তিনি বলেছিলেন, অবৈধ অভিবাসনের সবচেয়ে বড় চৌম্বকীয় ক্ষেত্র হচ্ছে এই জন্মস্থান সূত্রে নাগরিকত্ব। ২০২৩ সালে একটি ভিডিওতে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, গর্ভাবস্থার শেষ কয়েক সপ্তাহ হোটেলে কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান জন্ম দেন অভিবাসীরা। এভাবে নাগরিকত্ব বাগিয়ে নেওয়ায় এটিকে তিনি বার্থ টুরিজম বলেও বর্ণনা করেছিলেন।
একবার সন্তান জন্ম দেওয়ার পর স্বজনদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসে এসব অভিবাসীরা। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় চেইন মাইগ্রেশন, যা ফ্যামিলি-বেসড মাইগ্রেশন নামেও পরিচিত। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালে এই জন্মস্থান সূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। যদিও শেষ পর্যন্ত এমন কিছুই করেননি তিনি। কেননা ওই সময় কোভিড-১৯ মহামারির প্রকোপ শুরু হয়েছিল। ট্রাম্প তার পুরো নজর সেই মহামারির পেছনে লাগিয়ে দেন।
জন্মস্থান সূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়ার এই নিশ্চিয়তাকে হাস্যকর বলেও মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। তার দাবি, বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র দেশ, যেখানে জন্মস্থান সূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। যদিও সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক বলছে, বিশ্বে প্রায় ৪০টি দেশ জন্মস্থান সূত্রে নাগরিকত্ব দিয়ে থাকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্প প্রশাসনের অ্যাকাউন্ট জোরপূর্বক ফলো করানো নিয়ে যা বলল মেটা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেটওয়ার্ক ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের সত্ত্বাধিকারী সংস্থা মেটা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট ফলো করতে ব্যবহারকারীদের বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত সোমবারের অভিষেকের পর কিছু ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন, তারা ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফলো করতে বাধ্য হয়েছেন।
মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বুধবার ব্যাখ্যা করেছেন, এই অ্যাকাউন্টগুলো হোয়াইট হাউস পরিচালনা করে এবং নতুন পদধারীদের প্রতিফলিত করতে সেগুলো হালনাগাদ করা হয়েছে। তিনি এক বিবৃতিতে লেখেন, ‘এই প্রক্রিয়া আমরা আগের প্রেসিডেন্ট বদলের সময়ও অনুসরণ করেছিলাম।’
এই অ্যাকাউন্টগুলো প্রেসিডেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটসের সংক্ষিপ্ত রূপ পোটাস, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটসের সংক্ষিপ্ত রূপ ফ্লোটাস নামে পরিচালিত হয়। সংরক্ষিত অ্যাকাউন্টগুলোর পূর্ববর্তী সংস্করণে দেখা যায়, পোটাস ও ফ্লোটাস অ্যাকাউন্টগুলো আগে যথাক্রমে জো বাইডেন ও জিল বাইডেনের নাম ও অফিশিয়াল ছবি বহন করত।
স্টোন আরো বলেন, ‘যেহেতু এই অ্যাকাউন্টগুলো নতুন হাতে হস্তান্তর হচ্ছে, তাই ফলো ও আনফলো অনুরোধ সম্পন্ন হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।’
মেটার মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের সময় মানুষকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের কোনো অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট ফলো করানো হয়নি।’
গত সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প দ্রুতই বিভিন্ন নির্বাহী আদেশ ও নির্দেশ জারি করেন, যার মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে প্রত্যাহার ও মেক্সিকো সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা রয়েছে। তার অভিষেক অনুষ্ঠানে মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গ, নতুন প্রশাসনের উপদেষ্টা হিসেবে থাকা এক্সের প্রধান ইলন মাস্কসহ প্রভাবশালী টেক বিলিয়নেয়াররা উপস্থিত ছিলেন।
মেটার প্রতি আগে থেকেই সমালোচনামুখর ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিলে ৬ জানুয়ারির দাঙ্গায় জড়িত ব্যক্তিদের ‘প্রশংসা’ করার অভিযোগে মেটা তাকে নিষিদ্ধ করেছিল।
ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে সহায়তা করে বাইডেনের ছেলে হান্টার সম্পর্কে অভিযোগ ও করোনা মহামারির সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু কনটেন্ট দমনের জন্য মেটাকে অভিযুক্ত করেছিলেন। জাকারবার্গ এই সিদ্ধান্তের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন।
এ ছাড়া গত আগস্টে প্রকাশিত একটি বইয়ে ট্রাম্প লিখেছিলেন, যদি জাকারবার্গ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন, তবে তাকে ‘জীবনের বাকি সময় জেলখানায় কাটাতে হবে’।
তবে নভেম্বরের শুরুর দিকে নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়লাভের পর থেকে জাকারবার্গ তার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। জাকারবার্গ নভেম্বরের শেষের দিকে ট্রাম্পের মার-এ-লাগো বাসভবনে তার সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন এবং অভিষেক অনুষ্ঠানে এক মিলিয়ন ডলার অনুদান দেন।
এ ছাড়া মেটা এই মাসের শুরুর দিকে জানায়, তারা তৃতীয় পক্ষের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রক্রিয়া বন্ধ করে এক্সের কমিউনিটি নোটসের মতো একটি পদ্ধতির দিকে এগোবে, যা ট্রাম্পের পূর্ববর্তী কিছু সমালোচনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। কম্পানিটির মতে, এটি তাদের ‘মৌলিক মুক্ত মতপ্রকাশের অঙ্গীকারে’ ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আতঙ্কে নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরা, নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার ৪
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে আতঙ্কে আছেন নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীরা। নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরাও একইভাবে দুশ্চিন্তায়। কারণ, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ধারপাকড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
শপথ গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিবাসন–সংক্রান্ত শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিলসহ নতুন ৪৭টিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের শক্ত হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। নথিপত্রহীন সন্দেহভাজন অভিবাসীদের ব্যাপক মাত্রায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক বাংলাদেশি বলেন, ফুলটন এলাকায় আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। অতর্কিতে সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে আমাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন।
একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। তিনি এ কথা বলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে শপথ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অতিক্রম করে লাখ লাখ অনুপ্রবেশকারী নির্দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সীমান্তে প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করা হবে। তারপর বের করে দেওয়া হবে অপরাধীদের।
ইতিমধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রাখা হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এই আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজন বলেন, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যাঁরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার পথ ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকতেন, সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। সে হিসাবে অভিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যাপক সুযোগ পেয়েছেন। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সেসব নিয়োগ নির্ধারিত হবে। ফলে ছাটাই হতে পারেন অসংখ্য বাংলাদেশি।
সংবিধানের তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশ জারি করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের একটি বিধানও বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এতে এখন থেকে ৩০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানেরা দেশটির নাগরিকত্ব পাবে না। তবে ইতিমধ্যে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ২৪টি রাজ্য ও শহরে মামলা হয়েছে। যেহেতু এটা মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনের বিরুদ্ধে যায়, সে কারণে হাইকোর্ট এটি বাতিল করে দিতে পারে।
খাদিজা মুনতাহা বাংলাদেশিদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। অন্যের ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এই কঠিন সময়ে অহেতুক পুলিশি অথবা অন্য কোনো বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়ানো যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঙালি–অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় যেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যেত, এখন সেখানে লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ক্রিপ্টোকারেন্সিকে জাকাতের আওতাভুক্ত করলো মালয়েশিয়া
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ক্রিপ্টো কারেন্সিকে জাকাতের আওতাভুক্ত করেছে মালয়েশিয়া। দেশটির সরকারি ইসলামী সংস্থা দ্য ফেডারেল টেরিটোরিজ ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিলের অঙ্গসংগঠন জাকাত কালেকশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী দাতুক আবদুল হাকিম আমির ওসমান মঙ্গলবার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাতুক আবদুল হাকিম জানান, মালয়েশিয়ায় ক্রিপ্টো কারেন্সি একটি বিকাশমান খাত বর্তমানে দেশটির মোট বিনিয়োগকারীর ৫৪ দশমিক ২ শতাংশই এ খাতের। এই বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশেরই বয়স ১৮ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে এবং তাদের হাতে জমা রয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি রিংগিতের (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৩ হাজার ৫২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা) সমপরিমাণ সম্পদ।
“এ কারণে আমরা মনে করছি যে এই ক্রিপ্টো খাত জাকাতের একটি নতুন উৎস হতে পারে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য,” সংবাদ সম্মেলনে বলেন দাতুক আবদুল হাকিম।
৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬৪ হাজার মানুষ অধ্যুষিত মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। দেশটির ক্রিপ্টো খাতে বিনিয়োগকারীদেরও একটি বড় অংশ মুসলিম।
সম্প্রতি ফেডারেল টেরিটোরিজ ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিলের ১৩৪ তম সেশনে ডিজিটাল কারেন্সিকে ব্যবসায়যোগ্য পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে— উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “এখন ডিজিটালাইজেশনের যুগ। অর্থনীতি যেহেতু ডিজিটাল হচ্ছে, আমাদেরও পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।”
প্রসঙ্গত, জাকাত ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। ইসলাম ধর্মে প্রত্যেক সামর্থ্যবান নারী ও পুরুষের ওপর জাকাত ফরজ বা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেছেন সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ৯০ দিনের জন্য এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ নেওয়ার পর নির্বাহী এক আদেশ জারির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তবে বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের আদেশ মার্কিন তহবিলের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ দেশটির অনেক কর্মসূচি এরই মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসে তহবিল বরাদ্দ পেয়েছে। আর এসব অর্থ এরই মধ্যে বিতরণ অথবা ব্যয় করা হয়েছে।
সোমবার মার্কিন ক্যাপিটল ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। শপথ নেওয়ার পর নির্বাহী আদেশে সই করার ঝড় বইয়ে দেন তিনি। মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পুনরায় পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধিসহ কয়েক ডজন নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্যগুলোর সঙ্গে একেবারে মিল না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র কোনো বৈদেশিক সহায়তা দেবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে গত সপ্তাহে সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক কমিটিতে শুনানির সময় দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তিনটি মূল প্রশ্ন সামনে রেখে কর্মসূচির ন্যায্যতা দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
মার্কো রুবিওর তিনটি প্রশ্ন ছিল, এই সহায়তা কর্মসূচি কি যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ করে তোলে? এটি কি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও শক্তিশালী করে তোলে? এটি কি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করে তোলে?
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল (কেন্দ্রীয়) বাজেটের প্রায় এক শতাংশই যায় বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি তহবিলে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবে এই বিদেশি সহায়তার সমালোচনা করছেন। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধে কিয়েভে বিশাল পরিমাণের সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো সহায়তার পরিমাণ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বাইডেন প্রশাসনের সাম্প্রতিক বৈদেশিক সহায়তা বিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলে দুর্যোগ ত্রাণ, স্বাস্থ্য ও গণতন্ত্রপন্থি উদ্যোগসহ বিভিন্ন খাতে মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন এই সহায়তার প্রধান প্রাপক ইসরায়েল বার্ষিক ৩৩০ কোটি ডলার, মিশর বার্ষিক দেড় ১৫০ কোটি ডলার ও জর্ডান বার্ষিক ১৭০ কোটি ডলার পায়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এসব দেশের দীর্ঘস্থায়ী চুক্তির কারণে এই সহায়তায় উল্লেখযোগ্য কোনো কাটছাঁট ট্রাম্প করবেন না বলেই মনে করছেন অনেকে।