জাতীয়
ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ বছর করতে রাজি চীন
চীনের কাছ থেকে অগ্রাধিকারমূলক ক্রেতা-ঋণ এবং সরকারি রেয়াত-ঋণ নামে দুই ধরনের ঋণ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ। ওই ঋণের সুদের হার ২-৩ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২০ বছর। এই ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করতে সম্মত হয়েছে চীন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-য়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এই সম্মতি পাওয়া গেছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র আমন্ত্রণে দেশটিতে সফরে গেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। মঙ্গলবার তার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়াতে নীতিগতভাবে সম্মত হন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মঙ্গলবার বেইজিংয়ের দিয়াওইউতাই স্টেট গেস্ট হাউসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে তৌহিদ হোসেন চীনকে অগ্রাধিকারমূলক ঋণ ও সরকারি ছাড়কৃত ঋণের জন্য সুদের হার দুই-তিন শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশ করার অনুরোধ জানান। সেইসঙ্গে কমিটমেন্ট ফি (অঙ্গীকার মাশুল) মওকুফ করতে ও ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০ বছর থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত বাড়ানোরও অনুরোধ করেন।
এ সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুদের হার কমানোর অনুরোধ বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ২০২৬ সালে এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশি পণ্যের ডিএফকিউএফ (শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত মার্কেট অ্যাক্সেস) প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন তিনি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের অনুরোধে পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য তিন থেকে চারটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্ধারণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে শুভেচ্ছা নিদর্শন হিসেবে ঢাকায় চীনের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাবকেও স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শিক্ষা, রেলওয়ে, কৃষি, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পশুসম্পদ, মৎস্য, জাহাজ ভাঙা, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং সবুজ অর্থনীতির মতো খাতে আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশের অনুরোধের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন চীনের মন্ত্রী।
বৈঠকে উভয় দেশ ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। আলোচনা শুরুর আগে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৌহিদ হোসেনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
বৈঠকে উভয়পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ ও সমৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন।
বৈঠকে ওয়াও ই বলেন, বাংলাদেশের জনগণ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব দিয়েছে। তিনি দেশের সভ্যতা ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেছেন এবং তার সরকার বাংলাদেশের জন্য অনেক বাস্তবিক কাজ করেছে।
তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এখানকার স্থিতিশীলতা, সংস্কার, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও উন্নয়ন উদ্যোগকে তার দেশ সমর্থন করে।
চীন তাদের নিজেদের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেরও অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেখতে চায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সফরে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পাশাপাশি চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এবং চীনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার (সিডকা) চেয়ারম্যান লাও ঝাওহুইয়ের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
পরে বেইজিং থেকে সাংহাই যাবেন। সেখানে সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে (এসআইআইএস) একটি আলোচনায় অংশ নেবেন তৌহিদ হোসেন। পাশাপাশি উপদেষ্টা সাংহাই চেম্বারের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। পরে বৈদ্যুতিক গাড়ি, রোবোটিক্স ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ক তিনটি কারখানা পরিদর্শনে যাবেন।
আগামী ২৪ জানুয়ারি উপদেষ্টার চীন সফর শেষ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বিমানের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি, শাহজালালে সতর্কতা
ইতালির রোম থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে ফ্লাইটটি। পরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে বিমান বন্দরে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
জানা গেছে, বিজি-৩৫৬ নম্বর ফ্লাইটটি রোম থেকে ঢাকায় আসার পথে বিমান থেকে জানানো হয়, ওই বিমানের কেউ বা কোনো যাত্রী বোমা বিস্ফোরণের হুমকি দিয়েছেন। এ অবস্থায় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানের ফ্লাইটটি অবতরণের পর এটির চারপাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়া হয়। ওই ফ্লাইট ঘিরে অবস্থান নেয় শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন গ্র্যান্ডি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে শুরু হয় পাঁচদিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন। গুরুত্বপূর্ণ এই সভায় যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার মূল সম্মেলনের ফাঁকে কয়েকটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি মতে, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআই-এর প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন। সংকটের সমাধাণের জন্য, বিশেষ করে চলতি বছরের শেষের দিকে এ বিষয়ে একটি বৈশ্বিক সম্মেলন আয়োজনে গ্রান্ডির সমর্থন চান তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ জবাবে শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা আপনাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
বাংলাদেশে এখন রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে আট লাখ রোহিঙ্গা প্রবেশ করে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী কয়েক মাসে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যার মুখে। সম্প্রতি রাখাইন মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের জেরে আরও প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা এসেছে।
ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার আগমন বাংলাদেশের ওপর আরও বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সংকটের ওপর বিশ্বব্যাপী মনোযোগ ফিরিয়ে আনার আহ্বানও জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। তারা আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে।’
সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল নির্মাণের জন্য উন্নত উপকরণ ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ার জন্য গ্র্যান্ডি প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। পূর্বে রোহিঙ্গাদের কেবল বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে ঘর তৈরি করার অনুমতি ছিল। বৈঠকে তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। সেখানে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
এর আগে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের সঙ্গে বৈঠকেও রোহিঙ্গা ইস্যু তোলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য সেফ জোন তৈরিতে জার্মানির সমর্থন চান তিনি। এদিন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবেরসঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে এই সাইডলাইন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে, সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাতে সুইজারল্যান্ডের ডাভোসের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ড. ইউনূস। পরে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে তিনি সুইজারল্যান্ডে পৌঁছান। এ সময় সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম তাকে স্বাগত জানান।
চার দিনের সরকারি সফর শেষে আগামী ২৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মধুমতি মডেল টাউন প্রকল্প উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
ঢাকার সাভার উপজেলায় মধুমতি মডেল টাউন প্রকল্প উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন প্লট মালিকসহ সেখানে বসবাসকারীরা। একই সঙ্গে এসব ব্যক্তিমালিকানাধীন বসতভিটা হতে উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাজউক) স্মারকলিপি প্রদান করে মধুমতি মডেল টাউন হাউজিং সোসাইটি নামে একটি সংগঠন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজউক ভবনের সামনে জড়ো হন মধুমতি মডেল টাউনের প্লটের মালিক ও সেখানে বসবাসকারীরা।
রাজউকে দেওয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০১ সাল থেকে রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, খাজনা পরিশোধ ও বাড়িঘর করে এখানে বসবাস করে আসছেন সেখানকার বাসিন্দারা। সকল রেকর্ড পত্র- সি.এস/এস.এ ও আরএস পর্চাসমূহে সুস্পষ্টভাবে জমিগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন নাল জমি হিসেবে বর্ণিত আছে। মেট্রো মেকার্স কর্তৃক ব্যাপক ধারাবাহিক প্রচারণায় আকৃষ্ট হয়ে মধুমতি মডেল টাউন প্লট ক্রয় করেন তারা। ঐ সময় কোন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা থেকে প্রকল্প নিয়ে কোনো আপত্তি তোলা হয়নি। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ২০০৪ সালে বন্যা প্রবাহ অঞ্চলে অবস্থিত দাবি করে প্রকল্পটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট পিটিশন দায়ের করে। আদালত ২০০৫ সালের ২৭ জুলাই প্রকল্পটি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়। সেই সাথে প্রকল্প বৈধ হওয়ার রাস্তা খোলা আছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এতে জানানো হয়, নির্দেশনার প্রেক্ষিতে একটি হাউজিং প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ৯টির মধ্যে সরকারের ৮টি বিভাগ যথা- পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ, তিতাস গ্যাস এন্ড ট্রান্সমিশন, ঢাকা ওয়াসা, পল্লী বিদ্যুৎ, টি এন্ড টি বোর্ড, ঢাকা সিটি করপোরেশন, ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ড (ডিটিসিবি) প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মেট্রো মেকার্সকে ছাড়পত্র দিয়েছিল। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট ২০১২ সালের ৭ আগষ্ট এক উদ্ভট, ফরমায়েশি ও গণবিরোধী রায় প্রদান করে। রায়ে মেট্রো মেকার্সকে বলা হয় তাদের খরচে প্রকল্প এলাকার ভরাটকৃত মাটি সরিয়ে এটিকে আবার ধানক্ষেত বানাতে। আর প্লট ক্রেতাদের তাদের মোট প্রদেয় টাকার দ্বিগুণ এবং রেজিস্ট্রেশন বাবদ সকল খরচ প্রদান করে ৬ মাসের মধ্যে প্রকল্পটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য মেট্রো মেকার্সকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে মেট্রো মেকার্স ও প্লট মালিকদের পক্ষ হতে রিভিউ পিটিশন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে সব রিভিউ পিটিশন খারিজ হওয়ার পর প্রায় ৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মেট্রো মেকার্স কর্তৃপক্ষ থেকে আমরা কোন টাকা পাই নাই। বর্তমানে এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ খারিজের রায়ের বিরুদ্ধে মডিফিকেশনের দরখাস্ত শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, প্রকল্পে বর্তমানে ৮০০’র বেশি আবাসিক ভবনে প্রায় ৫০ হাজার লোক বসবাস করেন। প্রকল্পের বাণিজ্যিক জোনে রয়েছে ১০০টির অধিক পোলট্রি ও ডেইরি ফার্ম, ৮টি রিসোর্ট, ৩টি মসজিদ, ৪টি মাদ্রাসা, স্কুল, প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রসহ ও অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এখানে রয়েছে প্রায় ৮/১০ লক্ষাধিক বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছপালা, যা প্রকল্পটিকে একটি সবুজ নগরীতে পরিণত করেছে এবং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। গত ২৪ বছরে এখানে ভূপ্রকৃতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে মধুমতি মডেল টাউনের চারদিক সরকারি বেসরকারি স্থাপনা বেষ্টিত একটি স্থলভূমি। প্রকল্পের অতি সন্নিকটে তথাকথিত ফ্লাডজোনে ডিএনসিসি কর্তৃক জাপান সরকারের সহায়তায় গার্বেজ রিসাইক্লিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকল্পের উত্তরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কোল ঘেষে গড়ে উঠেছে পেট্রোল/গ্যাস ফিলিং ষ্টেশন, আবাসিক এলাকা ও নানা স্থাপনা। প্রকল্পের পূর্বে রয়েছে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন ও তিতাস গ্যাসের স্থাপনা। এইভাবে চারদিকে সরকারি, বাণিজ্যিক ও আবাসন বেষ্টিত মধুমতি মডেল টাউনকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে বন্যা প্রবাহ এলাকা বা জলাধার আখ্যা দেওয়া বা বানানো নিতান্তই অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক। তাছাড়া, ঢাকা শহরের আশেপাশে বাস্তবায়ন করা প্রায় সব হাউজিং প্রজেক্ট এক সময় বিলামালিয়া ও বলিয়ারপুর মৌজার অবস্থায় ছিল। সে বিবেচনায় আদালতের রায় অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক।
যে কোনো রকম উচ্ছেদ পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকা সহ সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষা ও শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করায় বিঘ্ন ঘটানো থেকে নিবৃত থাকা এবং বাস্তবতার নিরিখে মধুমতি মডেল টাউন প্রকল্প এলাকাকে (ডেটাইলেড এরিয়া প্ল্যান) এ নগর আবাসিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ট্যাক্স ছাড়াই করা যাবে বিয়ে
বিয়ে সম্পাদনে আরোপিত কর (ট্যাক্স) বাতিল করেছে সরকার। এক সপ্তাহের বেধে দেওয়া সময়ের তৃতীয় দিনেই কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ তথ্য জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বিয়ে সম্পাদনে আরোপিত একটি কর ছিল, আইন মন্ত্রণালয় এ অযৌক্তিক কর বাতিল করেছে।
তিনি বলেন, বিয়ের ফরমে লেখা থাকতো বিবাহিতা নাকি কুমারী। এটা একটা মেয়ের জন্য অমার্যাদাকর শব্দ। সেটা আমরা অবিবাহিতা করে ফেলেছি। এমন ছোট ছোট অনেক কাজ করেছি। আরও অনেক কাজ করার চিন্তা আছে।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের ট্যাক্সে আজকে সাইন করলাম। আপনি ট্যাক্স ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহের বেধে দেওয়া সময়ের তৃতীয় দিনেই বিয়ের ওপর কর আইন প্রত্যাহার করা হয়েছে। ধন্যবাদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টাকে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি বিয়ের ওপর কর ধার্যের প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন করে ‘সাধারণ ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে একটি সংগঠন।
সেখানে বক্তারা বলেন, পলাতক হাসিনা সরকার বিবাহের মতো একটি পবিত্র বিষয়েও অবৈধভাবে কর আরোপ করেছিল, যা সুস্পষ্টত ইসলামের অবমাননা। এতে করে যেমন যুবকদের চরিত্র নষ্ট করা হয়েছে, একইভাবে ব্যভিচারের দিকেও তা ধাবিত করতে সহায়তা রয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও আইন উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিবাহের উপর আরোপিত এই অবৈধ কর প্রত্যাহার করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট যাবতীয় আইন বাতিল করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বিয়ের ওপর বিভিন্ন করের হারের বিধান করে সিটি করপোরেশন মডেল ট্যাক্স তফসিল। এক্ষেত্রে করের টাকা পাত্র পক্ষকে পরিশোধ করতে হবে।
তফসিলের ১৫২ ধারায় বলা হয়েছে, প্রথম বিবাহ বা প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে বিবাহের জন্য একজন পুরুষকে বিয়ের পিড়িতে বসার আগে ১০০ টাকা ফি দিতে হবে। প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে ৫ হাজার টাকা, প্রথম দুই স্ত্রীর জীবদ্দশায় তৃতীয় বিয়ের জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে হবে।
তফসিল অনুযায়ী, চতুর্থ বিয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ বা নিঃসন্তান হলে এই নিয়ম কার্যকর হবে না। তবে, সেক্ষেত্রে ২০০ টাকা দিতে হবে।
কাফি