অর্থনীতি
৭৫৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার ও চীনের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টন ইউরিয়া সার এবং ৩০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড রয়েছে।
এই সার কিনতে ৭৫৬ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা।
জানা গেছে, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি সভার অনুমোদনের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৩ লাখ ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার সর্বমোট ১ কোটি ৮ লাখ ২৪ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে আমদানির প্রত্যাশামূলক অনুমোদনের প্রস্তাব দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আর এক প্রস্তাবে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন চাওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা।
জানা গেছে, গত বছরের ১১ জুন অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই চুক্তি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে ১৫তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৬০.৮৩ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট ১ কোটি ৮ লাখ ২৪ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে আমদানির প্রত্যাশামূলক অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ ১৭ হাজার ৮০০ টাকায় আমদানির আর একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। এ প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১১ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার অনুমোদনের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
কাতার এনার্জি মার্কেটিং’র সাথে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৩৭৮.৮৩ মার্কিন ডলার হিসেবে ৯ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১ কোটি ১৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ ১৭ হাজার ৮০০ টাকা।
বৈঠকে দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের আর একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। এটিও অনুমোদন দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এই সার কিনতে মোট ব্যয় হবে ১২৯ কোটি ৪৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিকল্পনা মোতাবেক কাফকো, বাংলাদেশ হতে ৫ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের সংশোধিত চুক্তি সই হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য প্রাইস অফার পাঠানো অনুরোধ করা হলে কাফকো, বাংলাদেশ প্রাইস অফার প্রেরণ করে।
কাফকোর সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৩.৭৫ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট ১ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২৯ কোটি ৪৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এদিকে বৈঠকে চট্টগ্রামের টিএসপিসিএলের জন্য আরব আমিরাতের মেসার্স মেসার্স জেনট্রেড এফজেডইর কাছ থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জানা গেছে, টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক অ্যাসিড ও রক ফসেফট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি দরপত্র জমা পড়ে। ৩টি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি’র সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেনট্রেড এফজেডই’র কাছ থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড মোট ৭৫ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আর এক প্রস্তাবে চট্টগ্রামের ডিএপিএফসিএলের জন্য ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড চীনের মেসার্স গুয়াংজি পেঙ্গুয়ে ইকো-টেকনোলজি কোং লিমিটেড থেকে ১৪৯ কোটি ৮৮ হাজার টাকায় আমদানির অনুমোদন চাওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে।
জানা গেছে, ডিএপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক অ্যাসিড বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র একটি দরপত্র জমা পড়ে। প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি’র সুপারিশে রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই, ইউএই (প্রস্তুতকারক: মেসার্স গুয়াংজি পেঙ্গুয়ে ইকো-টেকনোলজি কোং লিমিটেড, চীন) থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড মোট ১৪৯ কোটি ৮৮ হাজার টাকায় ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেক্সিমকোর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ মিলেছে
অনিয়ম দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকিং নিয়মাচার ভেঙে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে ‘বেক্সিমকো গ্রুপ’। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের ঋণের অর্থ ঢুকিয়েছে নিজেদের হিসাবে। গ্রুপটি তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে নানা কৌশলে কর ও শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। একইসঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে করেছে অর্থ পাচার।
সালমান এফ রহমানের গ্রুপটির অনিয়ম ও অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গ্রুপটির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি অর্থ পাচারের অধিকতর অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে তিন সংস্থার সমন্বয়ে যৌথ টিম কাজ করছে। সংস্থাগুলো হলো- দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তদন্ত সমন্বয় করছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
তদন্ত সংস্থাকে দেওয়া চিঠিতে বিএফআইইউ জানায়, সালমান এফ রহমানের ‘বেক্সিমকো গ্রুপ’ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকিং নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ব্যবসার নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকার ঋণের দায় রয়েছে। এছাড়াও সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালে বিভিন্ন অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে লেনদেন করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সালমান এফ রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানের ঘুষ, দুর্নীতি, প্রতারণা, জালিয়াতি, মুদ্রা পাচার, কর ও শুল্ক সংক্রান্ত অপরাধসহ বিভিন্ন অপরাধের অনুসন্ধানের স্বার্থে তিন সংস্থার সমন্বয়ে যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, তদন্ত দলকে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তাদের সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন ও বিধিমালা মেনে অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে বলা হয়েছে। অনুসন্ধান কার্যক্রমের তথ্য গোপনীয়তা ও সংবেদনশীলতা কঠোরভাবে রক্ষার নির্দেশনা রয়েছে। দলের প্রধানকে নিজ সংস্থার অনুমোদন নিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ১৪ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ১ সেপ্টেম্বর বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। ২২ আগস্ট সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
শেখ হাসিনার পরিবারসহ বিতর্কিত ১০ শিল্পগোষ্ঠীর আর্থিক অপরাধ অনুসন্ধানে ১১টি যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করা হয়। এসব দল আলাদা আলাদা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অপরাধ তদন্ত করবে।
শেখ পরিবারের ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ও ট্রাস্টের বাইরে যে ১০ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- আরামিট গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো, নাসা, সিকদার, বসুন্ধরা, সামিট, ওরিয়ন, জেমকন ও নাবিল গ্রুপ। এসব গ্রুপের মালিক, স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তদন্তের আওতায় থাকবেন। ইতিমধ্যে তাদের দেশে ও বিদেশে বিপুল সম্পদের খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
এদিকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত ‘মানি লন্ডারিং অপরাধ অনুসন্ধানে গঠিত যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দলের কার্যক্রম’ বিষয়ক এক বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে শেখ হাসিনা পরিবারসহ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর অনিয়ম তদন্তে গঠিত ১১টি দলকে আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থ উদ্ধারে সমন্বিতভাবে কাজ এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন গভর্নর।
অনুসন্ধান ও তদন্তের আওতায় নেওয়া গ্রুপগুলোর বেশিরভাগেরই ব্যাংক হিসাব ইতিমধ্যে জব্দ করেছে বিএফআইইউ। তাদের ব্যবসায়িক ও অন্যান্য লেনদেন, ঋণের সুবিধাভোগীসহ বিভিন্ন বিষয় অনুসন্ধান চলছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ (ইউএই) বিভিন্ন দেশে তাদের সম্পদের বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চার দেশ থেকে ৯ লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার
ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম থেকে এ বছর সরকার ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা চাল খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ইতোমধ্যে মিয়ানমার ও ভারত থেকে প্রায় ৫০ হাজার টন চাল এসেছে। পাকিস্তান থেকেও ৫০ হাজার টন আসবে।
তিনি বলেন, চাল আমদানির কারণে বাজারে মোটা চালের দাম ৫ টাকা কমেছে। এ ছাড়া রমজান মাসে সারাদেশে ৫০ লাখ মানুষের জন্য একটি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কেন ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, কিছুদিন পর জানানো হবে: অর্থ উপদেষ্টা
ভ্যাট বাড়ানোর কারণে জিনিসপত্রের দাম তেমন একটা বাড়েনি বলে দাবি করে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কী পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, তা কিছুদিন পর জানানো হবে।
আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাজেটের সময় কর ও ভ্যাটের বিষয়গুলো নির্ধারিত হয়। তখন অনেক কিছুই সমন্বয় করা হবে। ভ্যাট বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার আপাতত ওএমএস (খোলা বাজারে সরকারি উদ্যোগে পণ্য বিক্রয়) বিক্রি করবে না। এবার বিশেষ পরিস্থিতিতে এই কার্যক্রম হতে নেওয়া হয়েছিল। এখন বাজারে জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কমে আসায় এই কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সে রকম জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে আবার তা চালু করা হবে।
ওএমএসের বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এত দিন যেভাবে ওএমএস চলেছে, সেভাবে করা যাবে না। সরকার চেষ্টা করছে দ্রব্যমূল্য আরও কীভাবে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়।
ওএমএসের পণ্য কেনে সাধারণত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। এই পরিস্থিতিতে তা বন্ধ হলে এসব মানুষ ভুক্তভোগী হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এসব পণ্য এত ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া হয় যে অনেক সামর্থ্যবান মানুষও এসব পণ্য কেনেন।’
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এয়ার পিউরিফায়ার আমদানিতে শুল্ক-কর কমলো
এয়ার পিউরিফায়ার আমদানিতে বিদ্যমান কাস্টমস শুল্ক হ্রাস এবং রেগুলেটরি শুল্ক ও আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এতে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা শহরের তালিকায় ঢাকা ও বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের নাম রয়েছে। এ বায়ুদূষণের ফলে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতিসহ জনগণের প্রভূত আর্থিক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
সে প্রেক্ষাপটে বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর হ্রাস করার মাধ্যমে এয়ার পিউরিফায়ারের মতো কার্যকর বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম সহজলভ্য করতে এয়ার পিউরিফায়ারের আমদানিতে বিদ্যমান কাস্টমস শুল্ক (সিডি) ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩ শতাংশ রেগুলেটরি শুল্ক (আরডি) ও ৫ শতাংশ আগাম কর (এটি) প্রদান থেকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি প্রদান করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
এ বিষয়ে গত ২০ জানুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে এনবিআর জানায়, এই অব্যাহতি দেয়ার ফলে এয়ার পিউরিফায়ার আমদানিতে বিদ্যমান মোট করভার ৫৮.৬০ শতাংশ থেকে কমে ৩১.৫০ শতাংশে নির্ধারিত হয়েছে।
জারি করা প্রজ্ঞাপনের ফলে প্রতিটি এয়ার পিউরিফায়ারের আমদানি খরচ প্রকারভেদে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত কমবে। আমদানি ব্যয় কমার কারণে এয়ার পিউরিফায়ার জনগণের নিকট কমদামে সহজলভ্য হবে। এয়ার পিউরিফায়ারের বহুল ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মনে করে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঢাকাসহ ১৮ জেলার স্বর্ণের দোকানে বসবে ভ্যাট মেশিন
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৮টি জেলার স্বর্ণের দোকানে ভ্যাট মেশিন বা ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এ জন্য রোববার (১৯ জানুয়ারি) এনবিআরের মূসক তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রকল্প পরিকল্পনা বিভাগের দ্বিতীয় সচিব মো. শাহাদাত জামিল এক চিঠিতে জুয়েলার্স সমিতির কাছে এসব এলাকার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছেন।
চিঠিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার এলাকার বাজার ও এলাকাভিত্তিক দোকানের তালিকা চাওয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তালিকা একবারে দেওয়া সম্ভব না হলে আংশিকভাবে দেওয়ার অনুরোধ জানান দ্বিতীয় সচিব।
জানা যায়, চলতি মাসের শুরুতে জুয়েলার্স সমিতির নেতাদের সঙ্গে ইএফডি স্থাপন নিয়ে আলোচনা করে এনবিআর। সেখানে সমিতির নেতারা জুয়েলারি খাতে ভ্যাট, ব্যাগেজ রুল, সোনা আমদানিসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তারা জানান, জুয়েলারি খাতে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের ভ্যাট নিবন্ধন নেই। অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করে সব প্রতিষ্ঠানে ইএফডি স্থাপনের পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যার যুক্তিসংগত সমাধান করা গেলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে মন্তব্য করেন জুয়েলার্স সমিতির নেতারা।
ওই সভায় এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি এলাকার সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন স্থাপন করা হবে।
এনবিআরের চিঠিতে আরও বলা হয়, জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন স্থাপনের বিষয়ে ২৩ জানুয়ারি অংশীজনদের নিয়ে সচেতনতামূলক অনলাইন সভা করা হবে।
কাফি