রাজনীতি
অতি বিপ্লবী চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি কাম্য নয়: ফখরুল

অতি বিপ্লবী কোনো চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করা কারোর জন্য কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, হঠকারিতা করা যাবে না। চরম একটা অবস্থা সৃষ্টি করা কোনোভাবেই কাম্য হবে না। অনেকে রোমান্টিসিজম বলেন। এটার মানে শুধু প্রেম নয়, এটা বিপ্লবের প্রতি প্রেম। অর্থাৎ এ মুহূর্তে আমি সব পাল্টে দেব, এই মুহূর্তে আমি সব দখল করব, অন্যায় রোধ করব, এটা হয় না। আপনাকে ধাপে ধাপে করতে হবে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত গ্রন্থ আড্ডায় তিনি এসব কথা বলেন।
সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের এখানে এখন যে অস্থিরতা চলছে, এই অবস্থার যদি নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, আমাদের ধৈর্য ধরে পা ফেলতে হবে। এমন কিছু আমরা করব না, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আরও বিপদ যেন আমরা ডেকে না আনি। এই বিষয়গুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, কখনো ধৈর্য হারাবেন না, আশা হারাবেন না। আমি কেন জানি না, আমাদের প্রত্যাশা অনেক কিন্তু আমাদের ধৈর্য একেবারেই কম। এইতো মাত্র কয়েকটা মাস হয়েছে। এর মধ্যেই আমরা পাগল হয়ে গেছি। আমাদের সরকার অনেক ভুলত্রুটি করছে, ভুল তো করবেই তারা তো আর সরকারে ছিল না, রাজনীতি করেনি। রাজনীতি বিষয়টা তারা জানে না। তাদের তো সে সময়টা দিতে হবে। পরিবর্তন তো একদিনে হবে না। ধৈর্য ধরেন, স্ট্রাকচার আমরা তৈরি করি, একটা গণতান্ত্রিক স্ট্রাকচার তৈরি হোক, সেই স্ট্রাকচার তৈরি হলে নিশ্চয়ই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, একটা কথা আমি আবারও বলি, আমাকে ভুল বুঝবেন না। আপনি এত নির্বাচন নির্বাচন করেন কেন? বিশেষ করে ছাত্ররা তো বলেনই। নির্বাচনের কথা বলার কারণটা হচ্ছে একটাই, আমি বিশ্বাস করি, যে কোনো নির্বাচিত সরকার একটা অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমার এক্সেস থাকে, আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি। এখনই নির্বাচন করে ফেলতে হবে আমরা তা তো বলছি না। ন্যূনতম যে সংস্কার, সেটা করে নিয়ে নির্বাচনটা করলে সমস্যাগুলো অনেকটা সমাধান হবে। সংস্কারের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস যে, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা তিনি খুব শিগগিরই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে ডাকবেন, একটা সমাধানের দিকে আসবেন, আলোচনা হবে ঐক্যমত্যের ভিত্তিকে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাব।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি
কামরাঙ্গীরচরে জামায়াতের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা শুরু

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কামরাঙ্গীরচর উত্তর থানার উদ্যোগে স্থানীয়দের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ‘ফ্রি মেডিকেল সেন্টার’ উদ্বোধন করেছে। রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ফ্রি মেডিকেল সেন্টারের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কামরাঙ্গীরচর উত্তর থানা আমীর ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা মো. নাজমুল হক। থানা সেক্রেটারী মহানগেরীর কর্মপরিষদের সদস্য ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমানের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বড়গ্রাম ওয়ার্ডের সেক্রেটারি ও ৫৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. সাজেদুল করিম সুজন।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানা বাইতুল মাল সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, তারবিয়াত সম্পাদক মো. জামাল হোসেন, পশ্চিম রসুলপুর ওয়ার্ড সভাপতি মিনহাজ ভুঁইয়া, সেক্রেটারি ডা. মো. খলিলুর রহমান,পূর্ব রসুলপুর ওয়ার্ড সভাপতি মো. মহসিন কবির, সেক্রেটারি মো. মহসিন বাবু, কলেজ ওয়ার্ড সভাপতি মো. আবু তাহের, সেক্রেটারি মো. ইয়াসিন, হুজুর পাড়া ওয়ার্ড সেক্রেটারি মো. ওমর ফারুক, ওলামা বিভাগের সেক্রেটারি শেখ মো. আশরাফ আলী প্রমুখ ।
প্রধান অতিথি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ৪ দফা কর্মসূচির অন্যতম একটি হচ্ছে সমাজ সেবা ও সমাজ সংস্কার। সমাজ সেবার অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে মানবিক সহায়তা করে থাকে। এই সহায়তা সমাজের সুবিধা বঞ্চিত প্রতিটি মানুষ সমানভাবে পেয়ে থাকে। এরই অংশ হিসেবে কামরাঙ্গীরচর এলাকার অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত সকল শ্রেনীপেশার লোকজনের জন্য ফ্রি মেডিকেল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এই মেডিকেল সেন্টারে প্রতি রবিবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করবে। ফলে বৃহৎ জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে।
এসময় তিনি আরো বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে জনগণের মৌলিক সকল অধিকার রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জনগণের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত হয়নি। যার কারণে জামায়াতে ইসলামী জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে সারাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, কর্মসংস্থান সহ বিভিন্ন সামাজিক খাতে কাজ করে আসছে। তিনি জামায়াতে ইসলামীকে অনুসরণ করে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও সমাজের কল্যাণে সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানান।
সভা শেষে ফ্রি মেডিকেল সেন্টার উদ্বোধনী দিনে শতাধিক নারী-পুরুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
সিইসির সঙ্গে এনসিপির বৈঠক আজ

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ রোববার (২০ এপ্রিল) বেলা ১২টায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নির্বাচন কমিশন গঠন আইন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন, নিবন্ধনের সময়সীমা ও নির্বাচন কেন্দ্রিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীনের স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
সভায় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করবে। প্রতিনিধি দলের আরও উপস্থিত থাকবেন দলের যুগ্ম আহবায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনূভা জাবীন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
ট্রাম্প-শি-মোদি এসে কিছু করে দিয়ে যাবে না: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকা থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীনের শি জিনপিং, ভারতের মোদী এসে ধাক্কা দিয়ে কিছু করে যাবে না, যা করার আমাদের করতে হবে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীতে ‘রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম-এর দূরদৃষ্টিতে ক্ষমতায়ন বাংলাদেশ: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথে কূটনীতি ও শাসন ব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন আমরা বহুতবাদ এক হয়ে যুদ্ধ করেছি। তেমনি করে ২৪ সালে ছাত্রদের ওপর যখন গুলি চালায়, তখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেভাবে গণঅভ্যুত্থানে সবাই এক হয়েছিল সেভাবে এক হয়ে কাজ করতে আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের লোকের সংখ্যা ছিল সাত কোটি আর এখন ১৮ কোটি। সেই সময়ে আমাদের খাদ্য ঘাটতি ছিল ২৮ লাখ মেট্রিক টন আর এখন খাদ্য ঘাটতি নেই বললেই চলে। আর এই খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে খাদ্য নিরাপত্তায় কাজ করেছে দেশের কৃষক ও কৃষি বিজ্ঞানীরা। যেটা আমরা মনে করি না, বুঝিও না।
তিনি বলেন, সবাই এখন ভিন্ন দিকে নজর দিচ্ছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ট্যারিফ দিয়েছে তা দেশের জন্য একটু বিপদে পড়ার মতোই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বাড়তি শুল্ক দ্রুত সমাধান করতে না পারলে সমস্যা আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, গ্রামের যে মানুষগুলো ক্ষেত খামারে পরিশ্রম করে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে, যে নারী মাত্র ১৫ হাজার টাকার বেতনে কাজ করে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়াচ্ছে। আমরা যদি তাদেরকে নিয়ে না ভাবি, তাহলে কোনোভাবেই দেশে এগিয়ে যাবে না। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে তাদেরকে নিয়ে ভাবি। তবেই দেশ গিয়ে যাবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এইটুকু আশাবাদী আমি, আমরা সবাই যদি বিশ্বাস করি। দেশকে এগিয়ে নিতে ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আমাদেরকে ভাবতে হবে।
তিনি আরো বলনে, সমস্যা থাকবে, সমাধানও হবে। ড. ইউনূস সাহেবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি চেষ্টা করছেন। তাকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি ড. ইউনূস সফল হবেন। আসুন আমরা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
নির্বাচনের আগে বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হতে হবে: এনসিপি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। কিন্তু তার আগে বিচার এবং সংস্কার সরকারকে দৃশ্যমান করতে হবে। এটার জন্য যেটুকু সময় পাওয়া প্রয়োজন, সরকার সে সময়টুকু পেতে পারে।
আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐক্যমত কমিমনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের মধ্যবর্তী বিরতীতে বেরিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, এনসিপি মনে করে অন্তরবর্তীকালীন সরকার যে এজেন্ডা-ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, বিচার এবং সংস্কার দৃশ্যমান করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে। নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে কিন্তু তার আগে বিচার এবং সংস্কার কাজ সরকারকে দৃশ্যমান করতে হবে। এটার জন্য যেটুকু সময় পাওয়া প্রয়োজন, সরকার সে সময়টুকু পেতে পারে। কোনভাবেই কাজ ব্যাতিরেকে সময় পেতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সংবিধানের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এখন পর্যন্ত বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, দুদক এবং পুলিশ সংস্কার কমিশনের মত বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে সংবিধানের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বরং এখানে প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। তার মধ্য দিয়েই সাংবিধানকিভাবে স্বৈরতান্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ রয়েছে৷ আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলছি এবং বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি। সেই প্রেক্ষাপটে কিভাবে সংবিধান পূনলিখন করা যায় এবং গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছি।
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিনাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা আজকে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সাথে বসেছি। সেখানে আমাদের অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ১৬৬ টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ১২৯ টির সাথে একমত হয়েছি। যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি সেগুলোর বিষয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ রয়েছে। মূলত এখন পর্যন্ত আমরা তিনটি বিষয়ে কথা বলেছি। প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, প্রটেকশন অব সিটিজেন বা নাগরিকদের নিরাপত্তা। আমরা দেখেছি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরঙ্কুশ অধিকার নিশ্চিত হয়নি। সেসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কথা বলেছি। দ্বিতীয় বিষয় পিসফুল ট্রানজেকশন অব পাওয়ার বা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর। আমরা দেখেছি যখনই রাষ্ট্রের পাওয়ার ট্রানজেকশনের সময় এসেছে তখনই দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর কিভাবে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। যাতে আমাদের অতীতের যেসব দুঃখ স্মৃতি যেগুলো রয়েছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি আর না হয়। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, সংসদ স্থিতিশীলতার নাম করে আর্টিকেল ১৭ দিয়ে কন্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে। সেটি নিয়ে কথা হচ্ছে। যেটির মধ্য দিয়ে আমরা একসাথে সংসদে স্থিতিশীলতা, সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা আমাদের সংসদকে কিভাবে আরও বেশি কার্যকর করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় এলডি হলে সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাব নিয়ে এই বৈঠক শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে রয়েছেন জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন ও ড. ইফতেখারুজ্জামান। এনসিপির পক্ষ থেকে থেকে রয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসেল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
আরেকটি স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা আসার সকল রাস্তা বন্ধ করবো: নাহিদ ইসলাম

বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরতান্ত্রিক বা ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরে আসবে না—এই পথ চিরতরে রুদ্ধ করতে হবে। এবার আমাদের সামনে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে সবাই মিলে একটি নতুন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির সংলাপে প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজন এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। জনগণ ২০২৪ সালের জুলাই মাসে যে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছে, সেটির মাধ্যমে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসকের পতন ঘটিয়েছে। হাজারো শহীদের রক্ত ও অসংখ্য আহত মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় এনসিপির জন্ম। এই দলটি তরুণদের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে এবং আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট—ফ্যাসিবাদের অবসান ও একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা।
তিনি বলেন, এটি কেবল ক্ষমতা বদলের প্রশ্ন নয়, বরং রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি মানুষের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা। আমরা চাই, এবারের অভ্যুত্থান যেন আর কোনোভাবেই অতীতের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি না হয়। জাতির ভেতরে যে আশার আলো জ্বলে উঠেছে, সেটিকে বাস্তবায়ন করাই আমাদের দায়িত্ব।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “আমরা এনসিপিতে সংস্কার বলতে মৌলিক, রূপান্তরমুখী সংস্কার বুঝি—যা রাষ্ট্রের ভিত্তিকে আমূল বদলে দিতে সক্ষম। দীর্ঘদিন ধরে সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ হয়েছে। সংবিধানে একব্যক্তিকেন্দ্রিক ধারা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার ফলে যে-ই ক্ষমতায় আসুক, শাসনব্যবস্থায় স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা থেকেই গেছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “রাষ্ট্রের কাঠামো, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ সার্বিক ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া এই ফাঁদ থেকে মুক্তি মিলবে না। আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা সেগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একমত হয়েছি। কিছু বিষয়ে আংশিক ভিন্নমত বা মতানৈক্য থাকলেও, সেগুলোর জন্য সংক্ষিপ্তভাবে আমাদের সুপারিশ পাঠিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হলো একটি সর্বসম্মত জাতীয় সনদের দিকে এগোনো।”
শেষে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে জাতির প্রতি আমাদের সবচেয়ে বড় অঙ্গীকার—একটি গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে কোনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।”