রাজনীতি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মারামারি, আহত ৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুই গ্রুপের মারামারিতে তরুণীসহ ৭ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
আহতরা হলেন- ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান সরকার (২১), তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মিম (২২), আবরার (২২), আলামিন (২৫), আফসার উদ্দিন(২৫), জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম কলেজের শিক্ষার্থী আসিফ (২৪) ও ডেমরা বড় মাদ্রাসার ছাত্র মাসুদ (২৪)।
আহত আল আমিন জানান, যাত্রাবাড়ী জোনের সমন্বয়কদের একটি মতবিনিময় সভা ছিল। এ সময় সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে তাদের সামনে আমাদের একজন সহযোদ্ধার ওপর হামলা চালানো হয়। পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই বিষয়ে কথা বলতে এলে নাঈম আসাদ বিন রনি, রিফাত রশিদ ও হৃদয়ের নেতৃত্বে তারা আমাদের ওপরে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন সহযোদ্ধা গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে ঢামেকের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, বাংলামোটর থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে এসেছে। তাদের সবার চিকিৎসা চলছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি
তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারেনি আ.লীগ: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিগত ১৫ বছরে ভারতের কাছে বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু বেচে দিয়েছে কিন্তু তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
তিনি আরও বলেন, শুধু তিস্তা নয়, ৫৪টি অভিন্ন নদীর উজানে ভারত বাঁধ দিয়েছে। বাঁধ দিয়ে তারা পানি তুলে নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। আর আমাদের দেশের মানুষ এখানে ফসল ফলাতে পারে না। জীবন-জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়। জেলেরা মাছ ধরতে পারে না। প্রত্যেকটা মানুষকে কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে।
আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে কাউনিয়াসহ তিস্তা বিস্তৃত রংপুর অঞ্চলের ১১টি পয়েন্টে একযোগে ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি পালন করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিস্তা বাঁচানোর ডাক আমাদের অন্তরের ডাক। আমরা লড়াই করেছি ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। আমাদের ছেলেরা লড়াই করেছে। ৩৬ দিনের সকলের লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি (শেখ হাসিনা) ওই ভারতে পালিয়েছেন। একদিকে পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের যে শত্রু তাকে (হাসিনা) দিল্লিতে রাজার হালতে বসিয়ে রেখেছে। সেখান থেকে তিনি আবার আওয়ামী লীগারদের বিভিন্ন হুকুম রাজি করেন।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আজকের এই সংগ্রাম আমাদের বাঁচা-মরার সংগ্রাম। তিস্তাপাড়ের মানুষের এই সংগ্রামকে আবার কখনো বন্ধ হতে দেবো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই তিস্তা নিয়ে আপনাদের মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আর আপনারা যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেহেতু যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন।
ভারতের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যদি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব যুক্ত করতে চান তাহলে আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে হত্যা বন্ধ করেন। আর আমাদের সঙ্গে বড় দাদার মতো আচরণ বন্ধ করেন। আমরা আমাদের পায়ের ওপর দাঁড়াতে চাই। আমরা আমাদের হিস্যা বুঝে নিতে চাই। আমরা অবশ্যই ভারতকে বন্ধুত্বের সঙ্গে দেখতে চাই। যে বন্ধুত্ব হবে সম্মানের সঙ্গে আমাদের পাওনা বুঝিয়ে দেবার।
এর আগে, সোমবার সকাল থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর সেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায় নদীপাড়ের হাজারো মানুষকে। এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
হাসিনা নেতাকর্মীদের টিস্যুর মতো ব্যবহার করেছে: সারজিস

খুনি হাসিনা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের টিস্যুর মতো ব্যবহার করেছে। তাদের বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনে তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে।
এসময় তিনি বলেন, আমাদের একটি লড়াইয়ের আন্দোলনে খুনি হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। তার থেকে আমাদের অসংখ্য শিক্ষা নেওয়ার আছে। নিজে পালানোর আগে পরিবারকে সেফট এক্সিট দিয়েছে। অথচ সে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার করে বিপদের মুখে রাস্তাঘাটে ফেলে পালিয়ে গেছে।
সারজিস বলেন, পনেরো-ষোলো বছরে যখন আপনাদের কঠিন সময় ছিল তখন কোনো নেতাকে আপনি পেয়েছেন, আবার কোনো নেতা বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থেকে কিংবা দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুবিধা আদায় করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে এমন অনেক নেতাকর্মী ছিল যাদের বিগত ১৬ বছরে খুঁজে পাননি। তারা এখন নতুন করে বিভিন্ন রূপে এই বাংলাদেশে এসেছে। তারা এখন মাথায় হাত বোলাচ্ছে। যাদের আপনাদের কঠিন সময়ে পাশে পাননি। অনুরোধ করি, এখন সুবিধাজনক সময়ে তাদের নেতা হিসেবে মেনে নেওয়ার মতো এই অমানসিকতা দেখাবেন না। যদি দেখান- তাহলে হাসিনা যেভাবে নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে পালিয়েছে- আপনাদের অবস্থাও একই হবে।
সারজিস আরও বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দল এই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে আসছে। অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক আমাদের রাজপথের সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলাম যিনি এই অভ্যুত্থানের ঘোষক, তাকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি যেন পুরো বাংলাদেশকে আবার আমরা সামনের সারিতে থেকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি। সেজন্য আমাদের নাহিদ ইসলাম যেন ওই ক্ষমতার মন্ত্রণালয় ছেড়ে আবারও জনতার কাতারে এসে দাঁড়ান। আমাদের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৬ বছর যে চর্চাগুলো ছিল আমরা এখন আবার সে চর্চাগুলো নতুন করে দেখতে পারছি। স্পষ্ট কথা যারা এইসব চর্চাগুলো করে এসেছে তাদের রক্তে ওই চর্চা একদম মিশে গিয়েছে। সেই চর্চা থেকে বের হয়ে আসতে তাদেরই নেতৃত্ব দিতে হবে, যারা এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া মানে কেন্দ্রীয় কয়েকজন না, তারা এই সোনারগাঁসহ সারা দেশের মানুষ। সারা বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে যারা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে তারাই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সামনে থাকতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে ও শাকিল সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় এ ক্যাম্পেইনে আরও বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সোনারগাঁয়ের শহীদ মেহেদীর বাবা ছানাউল্লাহ ও শহীদ ইমরানের মা কোহিনূর আক্তার এবং আন্দোলনে নির্যাতিত ছাত্র শাকিল আহমেদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ের শত শত শিক্ষার্থী ও নেতারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নাই এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ, যার মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রে পৌঁছাতে পারি।
আজ রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে জেলা বিএনপির আয়োজনে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে পথ, যার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে পারি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সেই লক্ষ্যে আমরা আবার নতুন করে আরেকটা সংগ্রাম শুরু করি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে একটা ভয়ঙ্কর সময় পার করছি। প্রায় ১৫ বছর একটা পাথর বুকের মধ্যে চেপে ছিলো। সেই পাথর সব প্রতিষ্ঠান ধংস করেছে। ছাত্র-জনতা যে অভ্যুত্থান করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের সুযোগ করে দিলো তা যেন আমরা গ্রহণ করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনই একমাত্র পথ যার মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।’
এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক ও জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় মো. আমিনুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন, সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড় সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বিরসহ বিএনপির অন্যান্য নেতারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
তারেক রহমান যাকে মনোনিত করবেন, সবাই তার নির্বাচন করবো: আজম খান

দেশের মাটিতে পা রেখেই সাংগঠনিক দক্ষতার চমক দেখালেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য এবং চাঁদপুর জেলা বিএনপি উপদেষ্টা মো. আজম খান। প্রায় ১০ হাজারের অধিক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে দেশের মাটিতে তাঁর পা রাখার খবর পেয়ে চাঁদপুরসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিমানবন্দর এবং জিয়া উদ্যানে সমবেত হয়। এদিন সকাল ১০ টায় বিমান বন্দরে নামেন বিএনপির দুঃসময়ে অন্যতম সাহসী যোদ্ধা মো. আজম খান। এসময় দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে তাকে স্বাগত জানিন।
বিমান বন্দরে থেকে আজম খান নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে ছুটে যান। এসময় মো. আজম খানের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকার রাজপথ শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে। দুপুর ১২ টায় তিনি প্রায় ১০ হাজারের অধিক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং কবর জিয়ারত করেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের কারণে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী দেশে থাকতে পারেনি। তাদেরই একজন বিএনপির নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য মো. আজম খান। তিনি দীর্ঘ বছর পর আজ নিজের জন্মভূমিতে পা রেখেছেন। তবে বিদেশের মাটিতে থেকেও তিনি দলের দুঃসময়ে একজন যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি গণতন্ত্র এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে একজন সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। দল এবং দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন।
আব্দুস সালাম আরো বলেন, স্বৈরাচারী নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করে শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী বিএনপিকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন। স্বৈরাচার হাসিনার পতন হলেও গণতন্ত্র এখনো পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকাতে হবে।
জিয়াউর রহমানে কবর জিয়ারত শেষে মো. আজম খান বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এসময় তিনি বলেন, আজ অনেক বছর পর আমি আমার মাতৃভূমিতে আসতে পেরেছি। স্বৈরাচার হাসিনা আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর জীবন থেকে এমন অনেক সুন্দর দিনগুলো কেড়ে নিয়েছে। আজ বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখে আপনাদের উপস্থিতি দেখে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি। আমি শহীদ জিয়ার আদর্শকে ভালোবেসে বিএনপির রাজনীতি করি। আমার রাজনীতির পথচলা ছাত্ররাজনীতির মধ্য দিয়ে। চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নেতৃত্বে ছিলাম। বিএনপির দক্ষিণ আফ্রিকা শাখার প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি ছিলাম।
আজম খান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই যুগের একজন নেনসন মেনডেলা। বাংলাদেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি দেশান্তরী হয়েছেন। তার পিতা এদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক এবং আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। দেশের জন্য তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার মা বেগম খালেদা জিয়া এদেশের গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে গিয়ে শেখ হাসিনার নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বৃদ্ধ বয়সেও বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। এরপরেও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে ছিলেন আপোষহীন। ছাত্রজনতার গণ অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। আমারা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তবে এখনো আমাদের গণতন্ত্র ফিরে আসেনি। গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে বিএনপির প্রতিটা নেতাকর্মীকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আগামীর নির্বাচন হবে স্বচ্ছ নির্বাচন। এই নির্বাচনে আমাদের স্বচ্ছ প্রার্থী প্রয়োজন। তাই দেশ এবং দলের প্রয়োজনে আমাদের মাঠে কাজ করতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার কথা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। চাঁদপুরে আমরা বিএনপির বৃহৎ পরিবার এক ও অভিন্ন হয়ে দেশ ও দলের কল্যাণে কাজ করবো। চাঁদপুরের মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে আমরা মানুষের ভোট নিবো। আওয়ামী লীগের মত ভোট ডাকাতি কিংবা নিজেরা নিজের সহযোদ্ধা- ভাইদের সাথে ক্লেশ করবো না। আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান যাকে মনোনিত করবেন তাকে আমরা সবাই সম্মান করবো। বর্তমানে যিনি আছেন তাকে আমরা সবাই সম্মান করবো। ওনাকে যদি একশো বছরও রাখেন, আমরা তার নির্বাচন করবো।
চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম জুয়েলের পরিচালনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ খান, রাফিউস শাহাদাত ওয়াসিম, জিসান চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি এমদাদুল হক মিলন সহ আরো অনেকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
আমরা বাংলাদেশে অযোগ্য শাসক চাই না: হাসনাত

আমরা বাংলাদেশে অযোগ্য শাসক আর চাই না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী দরবার শরীফের দুই দিনব্যাপী ৭৭তম ঈসালে সওয়াব মাহফিলের প্রথম দিনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশের মধ্যে দুর্নীতি রাহাজানি গুম, খুন, হত্যা থাকবে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে প্রত্যেকটা ধর্মের মানুষ, তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, আমরা এমন দেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে আলেম ওলামাদের সামনে থেকে মাইক কেড়ে নেয়া হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে দাড়ি ধরে ধরে আলেম-ওলামাদেরকে জেলে ঢোকানো হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে কোরআন থেকে হাদিস থেকে আলোচনা করার কারণে সেই মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই যে বাংলাদেশে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আমরা সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বাস করতে পারবো।
হাসনাত বলেন, আমাদের রাষ্ট্র কখনো আমাদের ঠিক করতে পারবে না। প্রশাসন আমাদের কে কখনো ঠিক করতে পারবে না। পুলিশ আমাদেরকে কখনো ঠিক করতে পারবে না। যদি না আমরা নিজেরা নিজের থেকে ঠিক না হই। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, আমি ইসলামের অনেক বেশি কিছু জানি না, এখানে যেই আলেমরা রয়েছেন তারা ইসলাম সম্পর্কে অনেক জ্ঞান রয়েছে। আমার ভুল হলে আপনারা মাফ করবেন, আমার যেই বাস্তবিক অভিজ্ঞতা থেকে বলবো, আপনারা ঘুস থেকে দূরে থাকবেন।
তিনি বলেন, তদবির ভালো জিনিস না। আপনি যদি মনে করেন আপনার পরিচিত লোক ক্ষমতার কাছাকাছি রয়েছে, তার থেকে আপনি বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নিবেন, সেটাও এক ধরনের অপরাধ। এই ঘুস থেকে আপনাদের দূরে থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনাদের যারা প্রতিনিধিত্ব করছে, তারা আপনাদের কর্মচারী। আপনাদের কর্মচারী থেকে যদি একটা বিশেষ দিনের আগে দুই হাজার এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে যান, তাহলে আপনাদের যে আমানত রয়েছে, এই আমানতের খেয়ানত আপনারা করবেন। আমরা সারাবছর, পাঁচ বছর দশ বছর আমরা নেতাকে গালাগালি করতে পারব। কিন্তু আপনাদের আপনার হাতে যে একদিনের ক্ষমতা ছিল, ওই একদিনের ক্ষমতা যদি আপনি অপব্যবহার করে থাকেন, তাহলে পাঁচ বছরের অপ শাসনের জন্য, দশ বছরের অপশাসনের জন্য এর দায়ভার আপনাকে নিতে হবে। এজন্য আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা নেতাকে দোষ দেয়ার আগে, আমরা নিজের কাছে আগে প্রশ্নবিদ্ধ হব। আমরা নিজের কাছে আগে দায়বদ্ধ হবো। আপনাদের কাছে করজোড় অনুরোধ করব, আপনারা কর্মচারীর কাছে কখনো বিক্রি হইয়েন না।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আপনারা অত্যাচারীর কাছে কখনো মাথানত কইরেন না, আপনারা কখনো সুদের কাছে মাথানত কইরেন না। আমরা ছোট ছোট মানুষ আমাদের বয়স ২৫ বছর ২৭ বছর, এই বয়সের ছেলেরা এখন পর্যন্ত হয়তো পরিবারের হাল ধরেনি। এখনো পর্যন্ত বাসা থেকে ৫০০ টাকা ১০০০ টাকা নিয়ে চলে, এই বয়সে আমাদেরকে দেশ সংস্কার করতে হচ্ছে। আমাদের ভুল হচ্ছে, আমরা ভুল করছি, আমরা দেখছি, আমরা শিখছি, আমাদের ভুল হলে আপনারা দেখবেন আমরা সেটা থেকে শিখব, এবং আপনাদের দেখানো পথে বাংলাদেশটাকে এগিয়ে দেবো। এ সময় ধামতী দরবার শরীফের গজনীশিন পীর মাওলানা বাহাউদ্দিনসহ বিভিন্ন ওলামায়ে কেরাম এবং পীর মাশায়েখ উপস্থিত ছিলেন।