অর্থনীতি
ঢাকাসহ ১৮ জেলার স্বর্ণের দোকানে বসবে ভ্যাট মেশিন
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৮টি জেলার স্বর্ণের দোকানে ভ্যাট মেশিন বা ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এ জন্য রোববার (১৯ জানুয়ারি) এনবিআরের মূসক তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রকল্প পরিকল্পনা বিভাগের দ্বিতীয় সচিব মো. শাহাদাত জামিল এক চিঠিতে জুয়েলার্স সমিতির কাছে এসব এলাকার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছেন।
চিঠিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার এলাকার বাজার ও এলাকাভিত্তিক দোকানের তালিকা চাওয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তালিকা একবারে দেওয়া সম্ভব না হলে আংশিকভাবে দেওয়ার অনুরোধ জানান দ্বিতীয় সচিব।
জানা যায়, চলতি মাসের শুরুতে জুয়েলার্স সমিতির নেতাদের সঙ্গে ইএফডি স্থাপন নিয়ে আলোচনা করে এনবিআর। সেখানে সমিতির নেতারা জুয়েলারি খাতে ভ্যাট, ব্যাগেজ রুল, সোনা আমদানিসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তারা জানান, জুয়েলারি খাতে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের ভ্যাট নিবন্ধন নেই। অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করে সব প্রতিষ্ঠানে ইএফডি স্থাপনের পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যার যুক্তিসংগত সমাধান করা গেলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে মন্তব্য করেন জুয়েলার্স সমিতির নেতারা।
ওই সভায় এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি এলাকার সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন স্থাপন করা হবে।
এনবিআরের চিঠিতে আরও বলা হয়, জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন স্থাপনের বিষয়ে ২৩ জানুয়ারি অংশীজনদের নিয়ে সচেতনতামূলক অনলাইন সভা করা হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
১৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৪৭২৪ কোটি টাকা
নতুন বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম ১৮ দিনে বৈধ পথে ১২০ কোটি ৬৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৪ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। সে হিসাবে প্রতিদিন গড় রেমিট্যান্স আসছে প্রায় ৮১৮ কোটি টাকা।
আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ১৮ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮৯ কোটি ৩৩ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
আলোচিত সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৯ ব্যাংকে। এগুলো হলো- সরকারি খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেরসকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। বিদেশি খাতের ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে দেশে এক হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
এর মধ্যে অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ১৯৩ কোটি মার্কিন ডলার এবং ডিসেম্বর মাসে এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
এর আগে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার, আগস্টে আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে আসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, অক্টোবরে আসে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, নভেম্বর মাসে আসে ১৯৩ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে আসে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ডলার, জানুয়ারিতে আসে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, মার্চ মাসে আসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার, এপ্রিলে এসেছে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার, মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডিবিসিসিআই’র নতুন সভাপতি মামুন, সেক্রেটারি রিসালাত
ডাচ-বাংলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২৫-২৭ মেয়াদের নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন ভাইয়া গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাখায়াত হোসেন মামুন। আর সেক্রেটারি নির্বাচিত হলেন দ্য ম্যান অব স্টিল অ্যানালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক।
এছাড়া মো. কাজী আফতাবুর রহমান সিনিয়র সহ-সভাপতি, মো. শহীদ আলম প্রথম সহসভাপতি, মেহরুন ইসলাম দ্বিতীয় সহসভাপতি, মো. হারুনুর রশিদ যুগ্ম সম্পাদক, সুমাইয়া নুর চৌধুরী অর্থবিষয়ক পরিচালক। এছাড়া পরিচালক নির্বাচিত হলেন মো. সায়েম ফারুকী (দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং সায়েম ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী), মো. মাজহারুল হক চৌধুরী (চেয়ারম্যান হাভাস মিডিয়া গ্রুপ), নওফেল বিন রেজা, ইঞ্জিনিয়ার রাজিব হায়দার, মো. কাউসার হোসাইন, আব্দুল হাকিম (সুমন), শাহ মোহাম্মদরাফাত আফসার এবং মো. খন্দকার ইমরানুর ইসলাম।
প্রসঙ্গত, শাখায়াত হোসেন মামুন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্প গ্রুপ ‘ভাইয়া গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি ভাইয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড, ন্যাচারাল রাইস ব্রান ওয়েল লিমিটেড, সিগমা সিস্টেমস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং প্যাসিফিক কনজুমার প্রোডাক্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে আছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন বলেছেন, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখ ভুয়া।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁও বিআইসিসিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪-এর সিম্পোজিয়াম, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট নিয়ে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়েছে বলেই আন্দোলন হয়েছে। যা দূর করা সম্ভব নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে।
প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় করই গুরুত্বপূর্ণ। এবং আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এর প্রয়োগ করা।’ অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও গেল ডিসেম্বরে অনৈতিকভাবে লাভ করেছে ব্যাংকগুলো, যা খতিয়ে দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
একই আলোচনা সভায় ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো এবং শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখে অবাক হয়ে গেছি, কীভাবে অবিবেচকভাবে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। কর সংগ্রহ করতে হলে ক্রমান্বয়ে প্রত্যক্ষ কর প্রদানকারীর কাছে যেতে হয়। আমরা প্রত্যক্ষ কর আহরণে কোনো পরিকল্পনা দেখি নাই। যারা কর দেয় না তাদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটা জানা গেল না।
আমাদের এটা চিন্তিত করেছে। আগামী গরমে জ্বালানি পরিস্থিতি আরো জটিল হবে, এই আশঙ্কা করছি।’
রেকর্ড পরিমাণ আমন উৎপাদন করেও সংগ্রহ অভিযানে সাফল্য নেই জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সংগ্রহ অভিযানে আগে যেমন দুর্নীতি ছিল, তা এখনও আছে। কৃষক তার ফসলের মূল্য পাচ্ছে না। সামাজিক সুরক্ষা বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে আছে।
এই সরকার কী ধরনের অর্থনৈতিক উত্তরাধিকার রেখে যাবে প্রশ্ন তুলেন এই অর্থনীতিবিদ। সুষম অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে যে ধরনের প্রশাসনিক কাঠামো বা সংস্কার দরকার সে রকমের কোনো রূপরেখা আমরা দেখলাম না, বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে অবিবেচকভাবে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
অবিবেচকভাবে পণ্যে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিডির সম্মানী ফেলো ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁও বিআইসিসিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪-এর সিম্পোজিয়াম, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট নিয়ে এক আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সেক্টর বেশি মনোযোগ পাচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংস্কারে কোনো মনোযোগ নেই।’ প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দেয়া হয়নি বলেও মন্তব্য করেন ড. দেবপ্রিয়।
এ সময় অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, দেশের প্রবৃদ্ধি চলতি বছর চার শতাংশ হতে পারে। আর নতুন বাজেট ৮ লাখ কোটি টাকার বেশি করার সুযোগ নেই। কেন না আগামীতে অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ- নীতি, রাজনীতি ও প্রকৃতি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে দেশে ও বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে। নভেম্বরে দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে ৪৩১ কোটি টাকা, যা অক্টোবরে ছিল ৪৯৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
আর দেশের অভ্যন্তরে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, অক্টোবরে যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। ফলে এক মাসের ব্যবধানে দেশের মধ্যে লেনদেন কমেছে ৭৩ কোটি এবং দেশের বাইরে ৬৮কোটি টাকা।
প্রতিবেশী ভারত থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই), অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ডে খরচ কমে যাওয়ায় সার্বিকভাবে মে মাসে বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে।
নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন কমলেও ব্যয়ের শীর্ষ তালিকায় রয়েছে দেশটি।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বর মাসে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডধারীরা খরচ করেন ৬৮ কোটি টাকা। এর আগের মাস অক্টোবরে দেশটিতে খরচ হয়েছিল ৮৪ কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে ১৬ কোটি টাকা।
দেশের ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী ৪৪টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিসংখ্যান বিভাগ। মাস ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিবেদনটিতে দেশের ভেতর এবং বাইরের বাংলাদেশি নাগরিকদের এবং দেশের ভেতরে বিদেশি নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের তথ্য তুলে ধরে থাকে।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, মে মাসে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে ভারতে ও আরব আমিরাতে। ভারতে অক্টোবরের চেয়ে নভেম্বরে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমেছে ৬ কোটি টাকা। অক্টোবরে ভারতে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেছিলেন ৫৪ কোটি টাকা, যা নভেম্বর মাসে কমে ৪৭ কোটি টাকায় নেমে আসে।
একই সময়ে আরব আমিরাতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে ৪ কোটি টাকা। অক্টোবরে আমিরাতে যেখানে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেছিলেন ২০ কোটি টাকা, সেখানে নভেম্বর মাসে তা কমে হয় ১৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বর মাসে ২ কোটি টাকা এবং আয়ারল্যান্ডে এক কোটি টাকা কম খরচ করেন এ দেশের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতের ভিসা অনেকে পাচ্ছেন না। আবার অনেকে এই অস্থিরতার মধ্যে যেতে চাচ্ছে না। এজন্য ভারতে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে ব্যবহার কমেছে। এছাড়া অন্যান্য কিছু দেশে অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে বাংলাদেশিরা কম ভ্রমণ করেছেন। এ কারণে সেসব দেশে ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে।
বিদেশের পাশাপাশি দেশেও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমেছে। অক্টোবরে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডে এ দেশের নাগরিকরা খরচ করেন ২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা, যা নভেম্বর মাসে কমে হয় ২ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক মাসে দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে ৭৩ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরে মোটাদাগে ১১টি খাতে ক্রেডিট কার্ড বেশি ব্যবহৃত হয়। এসব খাতের মধ্যে রয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খুচরা কেনাকাটা, বিভিন্ন পরিষেবার বিল প্রদান, নগদ উত্তোলন, ওষুধ ও ফার্মেসি, পোশাক কেনাকাটা, অর্থ স্থানান্তর, পরিবহণ খাতে ব্যয়, বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও পেশাদারি সেবা এবং সরকারি সেবার বিল প্রদানে। এসব খাতের মধ্যে শুধু নগদ উত্তোলনা ছাড়া নভেম্বর মাসে অন্য সব খাতে কম খরচ করেছেন ক্রেডিট কার্ডধারীরা।
নভেম্বরে দেশের মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। এর আগের মাস অক্টোবরে এখাতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য খাতগুলোর মধ্যে নভেম্বরে খুচরা কেনাকাটায় ৪০৬ কোটি টাকা, বিভিন্ন পরিষেবার বিল প্রদানে ২৪৬ কোটি টাকা, নগদ উত্তোলন ১৯৬ কোটি টাকা, ওষুধ ও ফার্মেসিতে ১৬৪ কোটি টাকা, পোশাক কেনাকাটায় ১৪৮ কোটি টাকা, অর্থ স্থানান্তরে ৭৬ কোটি টাকা, পরিবহণ খাতে ব্যয় ৯৯ কোটি টাকা, বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও পেশাদারি সেবা ৭৯ কোটি টাকা এবং সরকারি সেবার বিল প্রদানে ৪৩ কোটি টাকা ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে।
স্থানীয় কার্ডধারীদের পাশাপাশি বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকেরাও নভেম্বর মাসে ক্রেডিট কার্ডে কম খরচ করেছেন। এ দেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকরা অক্টোবরে খরচ করেন ১২৯ কোটি টাকা। নভেম্বর মাসে তারা খরচ করেছেন ২০২ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে বিদেশি নাগরিকেরা এ দেশে ক্রেডিট কার্ডে ৭৩ কোটি টাকা বা ৩৬ দশমিক ১৩ শতাংশ খরচ বেশি খরচ করেছেন।
কাফি