জাতীয়
বায়ুদূষণে বছরে দেশে ১ লাখেরও বেশি মৃত্যু

দেশে বায়ুদূষণের কারণে বছরে প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৬ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ হাজার ২৫৮ শিশু রয়েছে। এমন তথ্য উঠে এসেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অন অ্যানার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের (সিআরইএ) এক গবেষণায়।
আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশে সূক্ষ্মকণা বায়ু দূষণে জনস্বাস্থ্য প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, এই বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর ৯ লাখ মায়ের অকাল প্রসব হচ্ছে এবং প্রায় ৭ লাখ কম ওজনের শিশু জন্মগ্রহণ করছে। আর এ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে প্রতিবছর ৬ লাখ ৭০ হাজার রোগী জরুরি বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন। যার ফলে সম্মিলিতভাবে বছরে ২৬৩ মিলিয়ন কর্মদিবস হারাচ্ছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত দেশের তালিকায় স্থান হয়েছে বাংলাদেশের। যেখানে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বালু কণার বার্ষিক মান ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বার্ষিক জাতীয় মানদণ্ড ৩৫ মাইক্রোগ্রামের দ্বিগুণের বেশি। উচ্চতর স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস হচ্ছে। ২০১৯ সালে সার্বিকভাবে এই ব্যয়গুলো ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল, যা বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ।এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড ৫ মাইক্রোগ্রামের তুলনায় ১৫ গুণ বেশি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাতাসের এমন চরম দূষণ জনস্বাস্থ্যের ওপর অনিবার্য পরিণতি ডেকে আনছে। বিভিন্ন বয়সিরা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ৫ বছর কম বয়সি শিশুদের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।বায়ুদূষণের প্রভাবে উদ্বেগজনক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যেই ২০২২ সালে সরকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ধূলি কণার জাতীয় মান ১৫ মাইক্রোগ্রাম থেকে বাড়িয়ে ৩৫ মাইক্রোগ্রাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টির পাশাপাশি বায়ুর মান অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
সংস্থাটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের জাতীয় বায়ুমানের মানদণ্ড (৩৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) পূরণ করা সম্ভব হলেও তা বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এতে মৃত্যুহার ১৯ শতাংশ, আয়ুষ্কাল জনিত সমস্যা ২১ শতাংশ এবং অক্ষমতার সঙ্গে বসবাস করা বছর ১২ শতাংশ কমতে পারে।এ ছাড়া ডব্লিউএইচও-এর ২০২১ সালের কঠোর নির্দেশিকা বায়ুর মান প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম অর্জন করা সম্ভব হলে মৃত্যুহার ৭৯ শতাংশ হ্রাস পাবে, যা প্রতি বছর ৮১ হাজার ২৮২ মানুষের জীবন রক্ষা করবে। সেইসঙ্গে হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট প্রায় সমস্ত জরুরি চিকিৎসক ভিজিট, অকাল প্রসব এবং বার্ষিক ২৬৩ মিলিয়ন কর্মদিবস অসুস্থতাজনিত ছুটি এড়ানো যাবে।
সংস্থাটি বেশকিছু সুপারিশও করেছে। তা হলো- বাংলাদেশকে নিজস্ব জাতীয় নির্দেশিকা মেনে চলার পাশাপাশি তা প্রয়োগ করতে হবে। মাঝারি মেয়াদে ২০০৫ সালে ডব্লিউএইচও’র নির্দেশিকা প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১০ মাইক্রোগ্রামের দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হিসাবে ২০২১ সালের ডব্লিউএইচও নির্দেশিকা প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম অর্জন করা উচিত।কয়লা ও ডিজেলের মতো কার্বণ নিঃসরণকারী জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসাহিত করা উচিত। এ ছাড়া ক্লিন পরিবহণ ব্যবস্থা ও শিল্প সম্প্রসারণ দীর্ঘমেয়াদে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অপরিহার্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কঠোর শিল্প নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যানবাহন এবং কলকারখানার নির্গমন মান বাড়াতে হবে। ভূমিভিত্তিক এবং স্যাটেলাইট ডেটা একত্রিত করে জাতীয় পর্যবেক্ষণ কাঠামো তৈরি করতে হবে, স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্ধারণে সহায়ক হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলা সম্ভব হলে প্রতি বছর ৮১ হাজার ২৮২ মানুষের জীবন রক্ষা করা যাবে।
সিআরইএ’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশ্লেষক এবং প্রধান লেখক ড্যানিয়েল নেসান বলেন, বিভিন্ন বায়ু মানের মানদণ্ড, বাংলাদেশের বর্তমান মান এবং ২০০৫ ও ২০২১ সালের ডব্লিউএইচও’র নির্দেশিকা তুলনা করে দেখা গেছে যে, পিএম ২.৫ স্তরে সামান্য উন্নতিও জাতীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সুবিধা এনে দিতে পারে। কঠোর নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি গ্রহণের মাধ্যমে বায়ুদূষণের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, বর্তমানে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে গিয়ে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা শুধু মানুষের শরীরেই প্রভাব ফেলছে না, বরং বিপর্যস্ত করে তুলছে মানসিক স্বাস্থ্যকেও।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
বইমেলায় বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ

বইমেলার স্টলে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দোষীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, প্রধান উপদেষ্টা একুশে বইমেলায় একটি বইয়ের দোকানে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এই হামলা বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকার এবং দেশের আইনের প্রতি অবজ্ঞার পরিচয় দেয়। এই ধরনের সহিংসতা এই মহান বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উন্মুক্ত মনের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, যা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার সমর্থনে জীবন উৎসর্গকারী ভাষা শহীদদের স্মরণ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশ ও বাংলা একাডেমিকে এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশকে মেলায় নিরাপত্তা জোরদার করার এবং এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকার সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দেশে যে কোনো ধরনের গণ সহিংসতার ঘটনা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে সন্ধ্যায় বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বই রাখায় একুশে বইমেলায় ‘সব্যসাচী প্রকাশনা’র স্টলে একদল বিক্ষুব্ধ লোকের রোষানলে পড়েন প্রকাশক শতাব্দী ভব। ‘তৌহিদী জনতা’র নামে একদল লোক স্টলটিতে গিয়ে প্রকাশককে ঘিরে ধরে স্লোগান দেয়। এতে উত্তেজনা দেখা দিলে সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টলটি এবং প্রকাশক শতাব্দী ভবকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মব বন্ধ না করলে ‘ডেভিল’ হিসেবে ট্রিট করা হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ

কথিত আন্দোলন আর মবের মহড়া এখন থেকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
কথিত আন্দোলন বা মবের নামে রাষ্ট্রকে অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করা হলে একবিন্দু ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
তিনি লিখেছেন, ‘মব করা বন্ধ করেন, আর যদি মব করেন, তাইলে আপনাদেরও ডেভিল হিসেবে ট্রিট করা হবে।’
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুক পোস্টে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, ‘অভ্যুত্থানের পক্ষে হলে মব করা বন্ধ করেন, আর যদি মব করেন, তাইলে আপনাদেরও ডেভিল হিসেবে ট্রিট করা হবে। আজকের ঘটনার পর আর কোনও অনুরোধ করা হবে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া আপনাদের কাজ না।’
পোস্টে আরও লেখেন, ‘কথিত আন্দোলন আর মবের মহড়া আমরা এখন থেকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করবো। রাষ্ট্রকে অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করা হলে একবিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।’
তৌহিদী জনতাকে উদ্দেশ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তৌহিদি জনতা! আপনারা দেড় দশক পরে শান্তিতে ধর্ম ও সংস্কৃতি পালনের সুযোগ পেয়েছেন। আপনাদের আহমকি কিংবা উগ্রতা সেই শান্তি বিনষ্টের কারণ হতে যাচ্ছে।’
সতর্ক করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘জুলুম করা থেকে বিরত থাকেন, নইলে আপনাদের ওপর জুলুম অবধারিত হবে। লা তাযলিমুনা ওলা তুযলামুনা- জুলুম করবেন না, জুলুমের শিকার ও হবেন না। এটাই আপনাদের কাছে শেষ অনুরোধ!’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সমাজবিরোধীরা কোনো ব্যক্তিকে হুমকি দিলে কঠোর ব্যবস্থা

কোনো ব্যক্তিকে কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। যারা হুমকি দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের (পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স) এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সমাজবিরোধীরা দেশের নানান শ্রেণি-পেশার মানুষকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছে বলে পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কোনো ব্যক্তিকে কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ।
কোনো ব্যক্তি এ ধরনের হুমকির শিকার হলে তৎক্ষণাৎ জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ অথবা নিকটস্থ থানায় জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।
সমাজবিরোধী শক্তি কোনো শান্তিপ্রিয় নাগরিককে হুমকি দিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সাবেক এমপি মজিদ খান গ্রেপ্তার

হবিগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল মল্লিক।
তিনি বলেন, হবিগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খানের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে। হবিগঞ্জের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আব্দুল মজিদ খান ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ বিএনপির

দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অনুরোধ ও তাগিদ দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় তারা এই তাগিদ দেন।
বৈঠক শেষে এদিন রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাদের (বিএনপি নেতাদের) জানিয়েছেন আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কবে হবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে বিএনপির তিনজন শীর্ষ নেতা এসেছিলেন। তারা হলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
সাক্ষাৎকালে নেতারা দেশব্যাপী কিছু উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন।
‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যারা অন্যায় অত্যাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের সবাইকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচার কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার তাগিদ দেন তারা। বিএনপি নেতারা বলেন, হাসিনা সরকার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লাখ ২৫ হাজার মামলা করে। এসব হয়রানিমূলক ও গায়েবি মামলা উল্লেখ করে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেন তারা।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, এছাড়া অপারেশন ডেভিল হান্টে যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন বিএনপি নেতারা। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতাদের আশ্বস্ত করে বলেন, কোনোভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতে দেওয়া হবে না। যারা যারা অন্যায় অত্যাচারের সঙ্গে জড়িত ও যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে- তাদেরকেই অপারেশন ডেভিল হান্টের (আইনের) আওতায় আনা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে মনিটর করা হচ্ছে। কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হোক এটা আমরা চাই না।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সাক্ষাৎকালে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বিএনপি নেতাদের জানান গায়েবি মামলাগুলো নিষ্পত্তির ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। মামলাগুলো নিষ্পত্তির ব্যাপারে বিলম্বের কারণ হিসেবে আসিফ নজরুল বলেন, যারা সরকারি পিপি ছিলেন তাদের অনেকেই পালিয়ে ছিলেন। ফলে মামলাগুলো ভালোভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হয়নি।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি, তবে জাতীয় নির্বাচন দ্রুততম সময়ে চাইছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ডিসেম্বর ও আগামী বছরের জুন মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে বলা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জাতীয় ঐক্য কমিশন (প্রধান উপদেষ্টাকে প্রধান ও ছয় সংস্কার কমিশনের প্রধানরা সদস্য) ও উপদেষ্টারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবেন বলে তিনি জানান।
দেশব্যাপী সহিংসতার ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীরা সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তিনি সম্প্রতি সহিংসতার বিষয়ে বিবৃতি দেওয়ার পর কোথাও আর কোনো কিছু ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
বইমেলায় একটি স্টলে ভাঙচুর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, বিষয়টি আমরা কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে বাংলা একাডেমির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত ঘটনা জানানোর জন্য বলা হয়েছে।