শিল্প-বাণিজ্য
রুগ্ন প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নেওয়ার এক্সিট পলিসি চান ব্যবসায়ীরা

বড় ও মাঝারি শিল্প খাতের রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংকিং খাতের দায়দেনা মুক্তি ও গুটিয়ে নেওয়ার জন্য ‘এক্সিট পলিসি’ চেয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে সুদহার কমানো, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি, একক গ্রাহকের ঋণপ্রাপ্তির সীমা বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণের শ্রেণীকরণের ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানোসহ কিছু নীতি পরিবর্তনের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) ও ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব দাবি জানান। সভাশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বিসিআইর পক্ষ থেকে আমার পণ্য আমার দেশ লোগো সম্বলিত একটি ফ্রেম উপহার দেওয়া হয়।
সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা তুলে ধরেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ।
বিসিআই সভাপতি বলেন, একদিকে সরকার ভ্যাট ও কর বৃদ্ধি করছে, অন্যদিকে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেড়েই যাচ্ছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ শ্রেণীকরণ আরও জটিল করেছে। এভাবে আমাদের সুবিধাগুলো তুলে নেওয়া হলে ব্যবসা করা খুবই কঠিন হবে। তাই আমরা নীতিগত কিছু সুবিধা চেয়েছি।
আনোয়ার-উল আলম বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান রুগ্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান কীভাবে অবসায়ন হবে, তার স্পষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। আমরা গভর্নরের কাছে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর এক্সিট নীতিমালা চেয়েছি। বিদ্যমান বড় শিল্প খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন রুগ্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক বছরের মনিটোরিয়াম সুবিধাসহ আগামী ১২ বছরে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানের এক্সিট পলিসির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যাংক দায়ের ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট, এক বছরের মনিটোরিয়ামসহ ১৫ বছর মেয়াদে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি।
একটি প্রতিষ্ঠান এক্সিট সুবিধা নিয়ে পরবর্তী সময়ে কীভাবে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার-উল আলম সাংবাদিকদের বলেন, একজন ব্যক্তির একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকে। সব প্রতিষ্ঠানই একসঙ্গে খারাপ হয়ে যায় না। যে প্রতিষ্ঠান রুগ্ণ হয়েছে, তার দায় পরিশোধের জন্য তার অন্য ভালো প্রতিষ্ঠানের আয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের শর্ত অনুযায়ী ঋণ শ্রেণীকরণে নতুন নিয়ম চালু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়ম অনুসারে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে তিন মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার পর সব ধরনের ঋণকে খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণীকরণ করা হবে। বর্তমানে এ সময়সীমা ছয় মাস।
এ বিষয়ে আনোয়ার-উল আলম বলেন, ‘ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করার যে শর্ত ঠিক করা হয়েছে, তা শিথিল করার দাবি জানাই। গ্রাহক ছয় মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে খেলাপি হবে, এটাকে অন্তত ৯ মাসে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছি।
ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধি শিল্পের সংকট বাড়িয়েছে উল্লেখ করে বিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যাংক সুদের হার ৯ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা, যে সংকট সমাধান করা অসম্ভব। উৎপাদনমুখী শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য সুদহার কমানোর দাবি জানিয়েছি।
এ সময় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বিসিআইয়ের পরিচালক এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এলএফএমইবির সিনিয়র সহসভাপতি নজরুল হাসান সোইল, বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক, বিসিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইনুল ইসলাম স্বপন, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হাসান, কোকা-কোলা বাংলাদেশের এমডি সাদাপ আহমেদ, বিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
নেপালে আরো ২৭৩ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি

পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে রপ্তানি হয়েছে আরও ২৭৩ টন আলু।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বন্দরটি দিয়ে আলু রপ্তানির তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারেন্টিন ইন্সপেক্টর উজ্জ্বল হোসেন।
তিনি বলেন, ২৭৩ টন আলু নেপালে গেছে। এ নিয়ে ৪ হাজার ৪৯৪ মেট্রিক টন আলু নেপালে রপ্তানি হলো। এর মধ্যে গত সপ্তাহে (১০ এপ্রিল) বন্দরটি দিয়ে ১৪৭ টন আলু রপ্তানি হয়েছে নেপালে।
উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আলুগুলো রপ্তানি করছে থিংকস টু সাপ্লাই, হুসেন এন্টার প্রাইজ, স্বাধীন এন্টার প্রাইজ ও ক্রসেস অ্যাগ্রোসহ বেশ কিছু রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। আলুগুলো পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আলুগুলো সংগ্রহ করে নিয়মিত নেপালে রপ্তানি হচ্ছে। এভাবে আলু নিয়মিত রপ্তানি হতে থাকলে বাংলাদেশ সরকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে আর আমাদের দেশের কৃষক তাদের উৎপাদিত আলুর দাম পাবেন।
বন্দরটি দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারত ও নেপালে পাট, ওষুধ, প্রাণ ও ওয়ালটনের পণ্য, জুস, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিসহ নানা ধরনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। অপরদিকে মসুর ডাল, গম, ভুট্টা, চিরতা, হাজমলা, যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক দানা, রেললাইনের স্লিপার, খইল, আদা ও চিটাগুড় আমদানি করা হয়।
গত ৮ এপ্রিল ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে যাওয়ার সুবিধা বাতিল করে দেশটি। এতে বুধবার থেকে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্রুত ও স্বল্প খরচে বাণিজ্য করার পথ বন্ধ হয়ে গেলেও এ স্থলবন্দরটি দিয়ে নেপাল ও ভুটানের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি দ্রুত কমার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার কাজ করছে। দুই দেশের মধ্যে যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তা দ্রুত কমার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চড়া শুল্ক আরোপের চ্যালেঞ্জ ও সরকারের করণীয় বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এটি অবশ্যই দুশ্চিন্তার বিষয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একপেশে শুল্ক আরোপ করেছে। তবে তিন মাসের জন্য এই শুল্ক আরোপ স্থগিত রেখেছে। এই তিন মাসে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার বিশাল বাণিজ্যিক ঘাটতি দ্রুত কমার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার কাজ করছে। অর্থনৈতিক সক্ষমতা এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্যারিফ এবং নন-ট্যারিফ যে কাঠামো রয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে বুঝিয়ে বলার পাশাপাশি শুল্ক আরোপ নিয়ে দেশটির প্রকৃত মনোভাব জানার চেষ্টা করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
শিল্প উন্নয়নে ন্যায্য জ্বালানি মূল্য নির্ধারণের আহ্বান ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের

বাংলাদেশ এনার্জি️ রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নতুন ঘোষিত গ্যাসের দাম বৈষম্যমূলক, অন্যায় এবং বিভ্রান্তিকর উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ব্যবসায়ী সংগঠন ইউরোচ্যাম বাংলাদেশ। সেই সাথে দেশের শিল্প উন্নয়ন ও বিনিয়োগ পরিবেশ সুরক্ষায় ন্যায্য জ্বালানি মূল্য নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের চেয়ারপারসন নুরিয়া লোপেজের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের টেকসই জ্বালানি ভবিষ্যতের জন্য সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করার সঙ্গে সঙ্গে মনে করে যে এই বৈষম্যমূলক মূল্য নির্ধারণ মডেলটি বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং নতুন এবং সম্প্রসারণশীল শিল্পগুলোর ওপর উচ্চ মূল্য আরোপের মাধ্যমে বিনিয়োগের পথে বাঁধা সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ যখন বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে এমন সময়ে এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি একই খাতের মধ্যেই জ্বালানি ব্যয়ের ভিন্নতা সৃষ্টি করে এবং একইসঙ্গে দেশি-বিদেশি উভয় ধরনের নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করে।
ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের চেয়ারপারসন নুরিয়া লোপেজ বলেন, “বিনিয়োগকারীদের আস্থা নিশ্চিত এবং শিল্প সম্প্রসারণে সহায়তা করার জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ️ জ্বালানি শুল্ক কাঠামো বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। প্রস্তাবিত এই কাঠামো ব্যবসার ধারাবাহিকতাকে বিঘ্নিত করার হুমকি তৈরি করছে এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বর্তা পাঠাচ্ছে।”
বাংলাদেশে অনেকে প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ️দিন ধরে গ্যাস ব্যবহার করে আসছে। এধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানকে নতুন গ্যাস বিক্রয় চুক্তির অধীনে পুনঃশ্রেণীবিভাগ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে বিইআরসি। এ ধরনের সুযোগ বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য হুমকী। এর ফলে ভবিষ্যতে সরকার চাইলে যে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ‘নতুন গ্রাহক’ শ্রেনীতে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে অতিরিক্ত দাম আদায় করতে পারবে। বিইআরসিকে এ বিষয়টি পুনঃবিবেচনার দাবী জানিয়েছে ইউরোচ্যাম।
সাম্প্রতিক গণশুনানিতে শিল্প নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত জ্বালানি সংস্কার কৌশলের আহ্বান জানিয়েছিল। ইউরোচ্যামও সরকার এবং বিইআরসিকে তাৎপর্য️পূর্ণ️ভাবে অংশীজনদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর এবং এমন একটি ট্যারিফ কাঠামো প্রণয়নের আহ্বান জানায় যা শিল্পের স্থিতিশীলতা, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং টেকসই অর্থ️নৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করবে।
অন্তর্ভুক্তিমূল প্রবৃদ্ধি এবং একটি প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তোলার নীতিমালা প্রণয়নে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত ইউরোচ্যাম।
অর্থসংবাদ/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ হচ্ছে বুধবার

পহেলা বৈশাখের দিনেও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে। এদিন ২০১টি ট্রাকে ৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। তবে দেশের হাওর অঞ্চলে নতুন ধান উঠতে শুরু করায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) থেকে এই চাল আমদানির দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভারতীয় ১৪৭ ট্রাকে ১৬১ মেট্রিক টন, রোববার ১৪৪ ট্রাকে ১৬০ মেট্রিক টন ও সোমবার ২০১টি ট্রাকে ১৮৪ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ৮৪ ট্রাকে ৩৬১৭ মেট্রিক টন চাল আমদানির কথা রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। আমদানির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ালেও আগামীকাল শেষ হচ্ছে চাল আমদানির দ্বিতীয় মেয়াদ। এ কারণেই শেষদিকে আমদানি বেড়েছে। ভারতের অভ্যন্তরে এখনও চালবোঝাই শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায়।
হিলি বাজারের চাল ব্যবসায়ী কুলো প্রধান জানান, দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে ভারত থেকে চাল আমদানি করছেন আমদানিকারকরা। এতে করে চলতি এক সপ্তাহের মধ্যে দাম বাড়েনি।
তিনি বলেন, আগামীকাল (বুধবার) ভারত থেকে চাল আমদানির দ্বিতীয় মেয়াদের সময় শেষ হওয়ায় আমদানি বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় নতুন ধান উঠতে শুরু করবে, ফলে দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ সহকারী পরিচালক ইউসুফ আলী জানান, ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সেইসঙ্গে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় চালের আমদানি শুল্ক। এরপর গত ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে চাল আমদানি। ১৬ এপ্রিল চাল আমদানি বন্ধ হবে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দর ও কাস্টমসের তথ্যমতে, গেলো বছরের ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চালের আমদানি শুরু হয়। সোমবার (১৪ এপ্রিল) পর্যন্ত ভারতীয় ৬ হাজার ৪০০ ট্রাকে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫৭ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। হিলি দিয়ে ভারত থেকে বাসমতী ও নন বাসমতী দুই ধরনের চাল আমদানি হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
যুক্তরাষ্ট্রে দুই মাসে ১৫০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি

চলতি বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমেরিকান বাজারে এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে ১৫০ কোটি ডলারের পোশাক। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ১১৮ কোটি ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য পরিসংখ্যান সংস্থা ওটেক্সার তথ্যের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, এই দুই মাসে দেশটি বিশ্বজুড়ে মোট ১৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালে এই দুই মাসে পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশের অংশ ছিল উল্লেখযোগ্য।
বিশ্বের অন্যান্য প্রধান পোশাক রফতানিকারক দেশের মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ, পাকিস্তানের ২৩ দশমিক ০৫ শতাংশ, ভিয়েতনামের ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং চীনের ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
পরিমাণের দিক থেকে (পিস হিসাবে) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ২৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি পোশাক (পিস) আমদানি করেছে। অন্যদিকে, ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে ৩১ দশমিক ৯০ শতাংশ, পাকিস্তান থেকে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ভিয়েতনাম থেকে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং চীন থেকে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
পিসপ্রতি গড় দামে (ইউনিট প্রাইস) বাংলাদেশের পোশাকের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ভিয়েতনামের বেড়েছে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ, চীনের ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। তবে ভারতের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী ইউনিট প্রাইস বেড়েছে ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থানকে আরও সুসংহত করবে, তবে আসন্ন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকাও জরুরি।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশি পোশাক খাতের মান ও সক্ষমতার প্রতিফলন। তবে এই ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ধরে রাখা জরুরি।