অর্থনীতি
এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন বলেছেন, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখ ভুয়া।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁও বিআইসিসিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪-এর সিম্পোজিয়াম, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট নিয়ে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়েছে বলেই আন্দোলন হয়েছে। যা দূর করা সম্ভব নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে।
প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় করই গুরুত্বপূর্ণ। এবং আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এর প্রয়োগ করা।’ অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও গেল ডিসেম্বরে অনৈতিকভাবে লাভ করেছে ব্যাংকগুলো, যা খতিয়ে দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
একই আলোচনা সভায় ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো এবং শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখে অবাক হয়ে গেছি, কীভাবে অবিবেচকভাবে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। কর সংগ্রহ করতে হলে ক্রমান্বয়ে প্রত্যক্ষ কর প্রদানকারীর কাছে যেতে হয়। আমরা প্রত্যক্ষ কর আহরণে কোনো পরিকল্পনা দেখি নাই। যারা কর দেয় না তাদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটা জানা গেল না।
আমাদের এটা চিন্তিত করেছে। আগামী গরমে জ্বালানি পরিস্থিতি আরো জটিল হবে, এই আশঙ্কা করছি।’
রেকর্ড পরিমাণ আমন উৎপাদন করেও সংগ্রহ অভিযানে সাফল্য নেই জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সংগ্রহ অভিযানে আগে যেমন দুর্নীতি ছিল, তা এখনও আছে। কৃষক তার ফসলের মূল্য পাচ্ছে না। সামাজিক সুরক্ষা বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে আছে।
এই সরকার কী ধরনের অর্থনৈতিক উত্তরাধিকার রেখে যাবে প্রশ্ন তুলেন এই অর্থনীতিবিদ। সুষম অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে যে ধরনের প্রশাসনিক কাঠামো বা সংস্কার দরকার সে রকমের কোনো রূপরেখা আমরা দেখলাম না, বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
কাফি

অর্থনীতি
বেড়েছে স্বর্ণের দাম, ভরি প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার

ফের দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৭৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২২ টাকা। এটা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ দাম। আজ প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৭ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২২ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি এক লাখ ৮১ হাজার ২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৫৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ২৮ হাজার ৭০১ টাকা ।
এবার সোনার দামের সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে রুপার দামও। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৩ হাজার ৩১৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৮৪৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এতদিন দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮১১ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা ১ হাজার ৭২৬ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে।
অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের পদত্যাগ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক মুখপাত্র মেজবাউল হক পদত্যাগ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান মেজবাউল হকের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য,পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন।
অর্থনীতি
চা শ্রমিক-মালিকদের দাবি পূরণে কাজ করছে সরকার: শ্রম উপদেষ্টা

চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ ও চা শিল্পের সার্বিক উন্নয়নে আন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চা শিল্পের উন্নয়ন ও কল্যাণবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। টি অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে এ আলোচনা হয়।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ ও চা শিল্পের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। চা শ্রমিকদের নির্বাচন, মজুরি বৃদ্ধি, রেশন চালু, আবাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন, শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা খরচ দেওয়া, চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধি এবং স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপনের বিষয়ে ইতিবাচকভাবে কাজ করছে সরকার।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চা শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো দ্রুত পূরণের জন্য অর্থ, বাণিজ্য, শিল্প, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যাংকের প্রতিনিধিদের নিয়ে শিগগির একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করা হবে। এছাড়া শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে এ খাতের সমস্যা সমাধান করা হবে।
আগামী দুর্গাপূজার আগে চা-শ্রমিকদের বোনাস নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারী শ্রমিকদের জন্য উন্নত স্যানিটেশন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চা শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে একটি কমিটি গঠন করে ডিসেম্বরের মধ্যেই এ নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, চা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনীতি
দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেল ৩৭ প্রতিষ্ঠান

আসন্ন দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির জন্য ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী স্বাক্ষরিত আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। তার আগে বাংলাদেশের ইলিশ পাচ্ছেন ভারতীয়রা।
আদেশে বলা হয়েছে, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির জন্য ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে ৫ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত রপ্তানির সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ইলিশ রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকার কিছু শর্ত আরোপ করেছে।
শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে- রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ এর বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে। এ অনুমতির মেয়াদ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে ৫ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। শুল্ক কর্তৃপক্ষ রপ্তানিযোগ্য পণ্যের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। পরবর্তী আবেদনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী অনুমোদিত পরিমাণ থেকে প্রকৃত রপ্তানির পরিমাণ সংক্রান্ত সব তথ্য-প্রমাণ দাখিল করতে হবে। অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি রপ্তানি করা যাবে না।
এ ছাড়া প্রতিটি পণ্য চালান রপ্তানিকালে শুল্ক কর্তৃপক্ষ ASYCUDA World System পরীক্ষা করে অনুমোদিত পরিমাণের অতিরিক্ত পণ্য রপ্তানি না করার বিষয়টি নিশ্চিত হবেন। এ অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয়, অনুমোদিত রপ্তানিকারক কোনোক্রমেই নিজে রপ্তানি না করে সাব–কন্ট্রাক্ট দিতে পারবেন না। সরকার প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ রপ্তানি অনুমতি বাতিলের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জাতীয় রপ্তানি নীতিতে (২০১৫-১৮) ইলিশ শর্ত সাপেক্ষে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের তালিকায় রাখা হয়। পরের দুটি রপ্তানি নীতিতেও তা একই রকম রাখা হয়।
জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। গত পাঁচ বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি হয়েছে, তা মোট উৎপাদনের মাত্র শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ। এ ছাড়া সরকার যে পরিমাণ রপ্তানির অনুমোদন দেয়, তার কম ইলিশ যায় ভারতে। যেমন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বছর ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ টনের অনুমতি দিলেও বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সব মিলিয়ে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮০২ টন।
উল্লেখ্য, ইলিশ রপ্তানির প্রথম অনুমতি দেওয়া হয় ২০১৯ সালে। সেবার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিকেজি ইলিশ ৬ ডলার (বাংলাদেশের ৫০৭ টাকা) দরে প্রথম তিন চালান পাঠানো হয়েছিল। পরে অবশ্য তা প্রতিকেজি ১০ ডলারে উন্নীত হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৭৬ টন বা ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়। এতে আয় হয় সাড়ে ৩৯ লাখ ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৯৯ টন ইলিশ রপ্তানি করে আয় হয় ১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। তখন প্রতিকেজি ইলিশ ১০, ৬ ও ৮ ডলার দামে রপ্তানি হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ২৩০ টন রপ্তানি করে আয় হয় ১ কোটি ২৪ লাখ ডলার। প্রতিকেজির রপ্তানি মূল্য ছিল ১০ ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৯১ টন ইলিশ রপ্তানি করে আয় হয় ১ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮০২ টন ইলিশ রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৮০ লাখ ডলার। তখন প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ছিল ১০ ডলার বা ১ হাজার ৯৮ টাকা।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কোটিপতির সংখ্যায় নতুন রেকর্ড

দেশের ব্যাংক খাতে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা হিসাবের সংখ্যায় রেকর্ড গড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে এই ধরনের হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি। জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টিতে। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৯৭৪টি কোটিপতি হিসাব।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই সব সময় কোনো ব্যক্তি কোটিপতি—এমনটি নয়। অনেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যাংকে জমা রাখে। তাছাড়া, একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলতে পারেন, ফলে একই ব্যক্তির নামে একাধিক কোটিপতি হিসাব থাকতে পারে। কোটিপতি হিসাব বৃদ্ধির এই প্রবণতা নতুন নয়।
এদিকে, মার্চ শেষে সব হিসাব মিলিয়ে মোট আমানত ছিল ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। জুন শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকায়। তিন মাসে আমানত বেড়েছে প্রায় ৭৩ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।
এই সময়ের মধ্যে দেশে ব্যাংক হিসাবের মোট সংখ্যা ১৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮২১টি থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টি। অর্থাৎ, নতুনভাবে প্রায় ৩২ লাখ ৯৫ হাজার ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। একই সময়ে ব্যাংক খাতে আমানতের পরিমাণও বেড়েছে।
বিশেষভাবে লক্ষ্য করার বিষয় হলো, কোটি টাকার বেশি জমা থাকা হিসাবগুলোতে জমার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। মার্চ শেষে এসব হিসাবে মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা, যা জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকায়। অর্থাৎ তিন মাসে কোটিপতি হিসাবগুলোতে জমা বেড়েছে প্রায় ৯৭ হাজার ১১৯ কোটি টাকা।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে মাত্র ৫টি কোটি টাকার হিসাব ছিল। ১৯৭৫ সালে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৭টিতে, ১৯৮০ সালে হয় ৯৮টি। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে।
১৯৯০ সালে ছিল ৯৪৩টি কোটি টাকার হিসাব ছিল। ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি এবং ২০০৮ সালে বেড়ে হয় ১৯ হাজার ১৬৩টি। ২০২০ সালের শেষে কোটিপতি হিসাব দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টিতে। এরপর ২০২১ সালে তা বেড়ে হয় ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬টি, ২০২২ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০২৩ সালে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে। ২০২৪ সালের শেষে হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৮১টি, যা ২০২৫ সালের মার্চে দাঁড়ায় ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টিতে এবং জুনে এসে পৌঁছায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টিতে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ব্যাংক খাতে কোটিপতি হিসাব বাড়ার বিষয়টি দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। এটি ব্যবসা-বাণিজ্যে টাকার প্রবাহ এবং জনগণের আমানত রাখার সক্ষমতা বৃদ্ধিকে নির্দেশ করে।