পুঁজিবাজার
ব্যাংক খাত পেলেও সংস্কার সহায়তা পায়নি পুঁজিবাজার: মমিনুল ইসলাম

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাত সংস্কারের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক ধরনের সহায়তা প্যাকেজ আসছে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারের জন্য কোনো সহায়তা প্যাকেজ আসেনি বলে বন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ এ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম এ কথা বলেন।
সিএমজেএফ সভাপতি এস এম গোলাম সামদানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে দেশের পুঁজিবাজার গতি ফিরে পাবে। দীর্ঘদিনের অনিয়ম-দুনীতির বিষয়ে টাক্সফোর্স কাজ করছে। ইতিমধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। জুনের মধ্যে সব সংস্কারগুলো শেষ হবে না। তবে কিছু কিছু সংস্কার হয়ে যাবে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সহায়তা করবে। বিনিয়োগিকারী বিশ্বাস করতে শুরু করবে যে, সংস্কার হচ্ছে। পুঁজিবাজারে দীর্ঘস্থায়ী বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে। এখানে অন্যায় করে ছাড় পাওয়া যাবে না, সেই আস্থা ফিরবে। ফলে জুন নাগাদ সংষ্কারের কিছু বিষয় বাজারে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে। আমরা আশা করছি জুন নাগাদ শেয়ারবাজারে ভালো অবস্থা দেখতে পারবো।
তিনি বলেন, আমাদের শেয়ারবাজার অনেক সংকুচিত। গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজার অনেক পিছিয়েছে। তবে একইসময়ে বিশ্বের অন্যসব দেশের শেয়ারবাজার এগিয়েছে। এই অবস্থায় বর্তমান সময়ে দেশের সব স্টেকহোল্ডাররা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে ইতিবাচকভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, আমার এরইমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কাজের ফলাফল পেতে একটু সময় লাগবে। অনেকটা একটি ভবনের ভিত্তি নির্মাণ যেমন বাহিরে থেকে দেখা যায় না, সেরকম। তবে ভবনের উপরে নির্মাণ কাজটা সবাই দেখতে পায়। কিন্তু আসল কাজটা করা হয় ওই ভিত্তি নির্মাণের সময়।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, সবকিছুই বিফলে যাবে, যদি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে না পারি। এজন্য স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৪টি কাজকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ৪টি কাজের মধ্যে দ্রুত সময়ে কিছু ভালো কোম্পানি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এছাড়া নেগেটিভ ইক্যুইটির সমস্যা সমাধান, ট্যাক্স সুবিধা দেওয়া ও ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধ করা। এই ট্রেডিংয়ের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শেয়ারবাজারের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল, তা হয়নি। প্রত্যাশার লেভেল থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অনেক সমস্যায় ছিল। এরমধ্যে অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের মানব সম্পদের অদক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে। আর ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ডিএসইতে কোনো চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট নেই। আমরা চাটার্ড অ্যাকউন্ট্যান্ট নেওয়ার চেষ্টা করছি।
মমিনুল ইসলাম বলেন, বহুজাতিক সংস্থাগুলো, যেমন: আইএমএফ, এডিবির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি, যাতে তাদের কাছ থেকে আমরা সাপোর্ট পেতে পারি। এতে আমাদের সংস্কার কাজগুলো একটু ত্বরান্বিত হবে। আমাদের দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য অনেক ধরনের সহায়তা প্যাকেজ আসছে। এখন পর্যন্ত ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য কোনো সহায়তা প্যাকেজ আসেনি। আমরা সরকারের কাছে সহায়তার দাবি জোড়ালোভাবে তুলে ধরতে চাই। আমাদের সহযোগী যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে, তারা যেন পুঁজিবাজারের দিকে একটু নজর দেন, যাতে আমাদের রিফর্মের কাজগুলো একটু সহজ হয় এবং আমরা যাতে আরো সক্ষম হতে পারি।
সফটওয়্যার সমস্যায় ডিইএসইতে লেনদেন বিঘ্ন ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে একটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সক্ষমতার জায়গা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা। কারণ ট্রেড (লেনদেন) এখন সবই ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হচ্ছে। সেটেলমেন্টও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হচ্ছে। আমরা যে প্লাটফর্ম তুলছি, সেটা আমরা এই মুহুর্তে দেখছি আন্তর্জাতিক মানের প্লাটফর্ম। তারপরও ছোট ছোট যে বিচ্চুতি হচ্ছে, সেখানে আমি বলবো প্রসেসগত কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যে ধরনের স্ট্যান্ডার্ড প্রটোকল থাকা দরকার, সেগুলো স্ট্যাবিলিশ করলে এই ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে আমাদের মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ততটা ভালো নেই। ব্যাংকিং সেক্টরের একটা অস্থিরতা, সেখানে আমরা আশা করছি কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। এখনো আমরা প্রত্যাশিত অবস্থায় যেতে পারিনি। আমরা দেখছি মূলধনী মেশিনারিজ আমদানি কমে গেছে। রিয়েল ইকোনমিক বিনিয়োগ যদি ঠিক না থাকে, তাহলে পুঁজিবাজার তো পুরো মার্কেটের প্রতিচ্ছবি। তো সেটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আমরা আশাবাদি জুন নাগাদ শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা দেখতে পারবো।
সাংবাদিকদের আর এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, সংস্কার করতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু সংস্কার করতে গিয়ে রোগী যাতে মারা না যায় সেটা দেখতে হবে। একটা জায়গায় সমন্বয় করা হয়েছে, ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্সের ওপরে। আমাদের আরও কিছু দাবি-দাওয়া আছে। অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআর থেকে বলা হয়েছে এগুলো পজেটিভভাবে দেখবে। দ্বিতীয় ভালো কিছু কোম্পানি আনতে পারলে বাজারে উৎসা-উদ্দিপনা তৈরি হবে। অনেক বিনিয়োগকারী নিষ্কৃয় হয়ে আছে, তারা সক্রিয় হবেন। একটা ইতিবাচক ধারা তৈরি হবে।
তিনি বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোও অনেক সমস্যায় ছিল। এরমধ্যে অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের মানব সম্পদের অদক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে। আর ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, কোন রকম চাপ বা কোন অনাকাক্সিক্ষত নির্দেশনার মত ঘটনা হয়নি। আমরা চাপ বিহীনভাবে কাজ করছি। আমাদের সব সিদ্ধান্ত গনতান্ত্রিকভাবে হচ্ছে। আমাদের বোর্ডের যে নিয়ম রয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ করছি। নিয়মের বাইরে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, আমরা ডিএসইর সমস্যাগুলো বের করার চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে সমস্যার তালিকা অনেক লম্বা হচ্ছে, এগুলো সমাধানে কাজ করছি। যেসব ব্রোকারেজ হাউজ বিনিয়োগকারীদের অর্থ সরিয়ে নিয়েছে ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড থেকে তাদের সাপোর্ট দেয়া যেতে পারে। এছাড়া ব্রোকারেজ হাউজের সম্পদ বিক্রি করে এবং লাইসেন্স বিক্রি করে ওইসব হাউজের বিনিয়োগকারীদের তহবিল যোগান দেয়া হবে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বাজারের উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। বিশেষ করে আইএমএফের সাথে। এছাড়াও দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহযোগিতা কামনা করবো। আশা করছি এই সহযোগিতা আমরা পাবো।
তিনি আরও বলেন, আগে প্রাইমারি রেগুলেটরকে সব ক্ষেত্রেই বিএসইসির অনুমোদন নিয়ে কাজ করতে হতো। যার ফলে কোম্পানিগুলোকে মনিটরিং করা ডিএসইর জন্য অনেকটা কষ্টকর হয়ে উঠেছিলো। এই অবস্থান থেকে আমরা অনেকটা বের হয়ে আসছি। দুর্বল কোম্পানিগুলোতে এখন ডিএসইর মনিটরিং বাড়বে। এখানে সমস্যা হচ্ছে, এই বাজারের বেশিরভাগ কোম্পানিই দুর্বল। এতগুলো দুর্বল কোম্পানিকে একসঙ্গে মনিটরিং করা ডিএসইর জন্য কষ্টকর। ‘আমাদের বাজারে এমন কিছু কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছ, যেগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা ছিলো না। এগুলোকে ডিলিস্টিং করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
কাফি

পুঁজিবাজার
ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন আসাদুর রহমান

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ আসাদুর রহমান। ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে আসাদুর রহমানকে ডিএসই বোর্ড থেকে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
সোমবার (৩০ জুন) ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুর রহমান নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদকে ধন্যবাদ জানাই, আমাকে এ পদে দায়িত্ব পালনে মনোনীত করার জন্য। আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেটা সঠিকভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে চেষ্টা করব।
জানা গেছে, দেশের শীর্ষ এই পুঁজিবাজারে নেতৃত্ব সংকট কাটিয়ে সাময়িক স্থিতিশীলতা আনতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে ডিএসই।
এর আগে, ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সাত্তিক আহমেদ শাহ অস্থায়ীভাবে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ ২৯ জুন শেষ হওয়ায় পদটি পুনরায় শূন্য হয়ে যায়। পরবর্তীতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে আসাদুর রহমানকে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
তথ্য মতে, ডিএসইর পূর্ণকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদটি ২০২৪ সালের মে মাস থেকে শূন্য রয়েছে। তখনকার এমডি এ টি এম তারিকুজ্জামান পদত্যাগ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। এরপর থেকেই ডিএসইর শীর্ষ নেতৃত্বে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
চলমান নেতৃত্ব সংকট নিরসনে গত বছরের নভেম্বরে ডিএসই তিনটি শীর্ষ নির্বাহী পদ- ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা- পূরণের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। তবে এখন পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।
ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর থেকে এখন পর্যন্ত কেবল কেএএম মাজেদুর রহমানই ডিএসইর এমডি হিসেবে তার পূর্ণ তিন বছর মেয়াদ শেষ করেছেন। তার পরবর্তী এমডিরা কেউই পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি, যার ফলে ডিএসইর নেতৃত্বে স্থায়িত্ব বিঘ্নিত হয়েছে।
কাফি
পুঁজিবাজার
মেঘনা লাইফের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি মেঘনা লইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদেরকে ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ।
সোমবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচারলনা পরিষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছরও কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আগামী (২৮ আগস্ট) বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ জুলাই।
কাফি
পুঁজিবাজার
ইসলামিক ফাইন্যান্সের লোকসান কমেছে ৬২ শতাংশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পিএলসি ৩১ মার্চ, ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান কমেছে ৬১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
সোমবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আলোচিত প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৬২ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে ১ টাকা ৬২ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি অর্থের প্রবাহ বা ক্যাশ-ফ্লো ছিলো মাইনাস ২ পয়সা। আগের বছরে যা ছিলো মাইনাস ৭১ পয়সা। গত ৩১ মার্চ ২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট দায় ৪২ পয়সা।
কাফি
পুঁজিবাজার
হতাশ চার্টার্ড লাইফের বিনিয়োগকারীরা, জালিয়াতির অভিযোগ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসির বিরুদ্ধে ঠকানোর অভিযোগ তুলেছে প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। প্রাতিষ্ঠানটি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গোঁজামিল দিয়ে লোকসান দেখিয়ে ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকেই বিমা কোম্পানিটির আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় লাইফ ফান্ড বা জীবনবিমা তহবিলের আকার বাড়লেও বছর শেষে শেয়ারপ্রতি লোকসান ও নতুন বছরের প্রথম প্রান্তিকে আবারও মুনাফা বিনিয়োগকারীদের মনে সন্দেহ ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এটিকে লভ্যাংশ না দেওয়ার জন্য জালিয়াতি ও বিনিয়োগকারীদের ঠকানো হয়েছে বলে দাবি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্ত চেয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বীমা খাতের কোম্পানি চার্টার্ড লাইফের সমাপ্ত ২০২৪ হিসাববছরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে লাইফ ফান্ডের আকার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আবার চলতি ২০২৫ হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকেও কোম্পানিটির আয় বেড়েছে। অথচ এরমধ্যে ২০২৪ হিসাববছরের শেষ প্রান্তিক বা বছর শেষে শেয়ারপ্রতি ১১ পয়সা লোকসান দেখানো হয়েছে। যার ফলে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এটিকে লভ্যাংশ না দেওয়ার জন্য জালিয়াতি ও বিনিয়োগকারীদের ঠকানো হয়েছে বলে দাবি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলছে, আমাদের ঠকানো হয়েছে। বছরের প্রথম ৯ মাসে ব্যয়ের তুলনায় অধিক আয় হয়েছে। জীবনবিমা তহবিলের আকার বেড়েছে। কিন্ত বছর শেষে ইপিএস লোকসান দেখানো হয়েছে লভ্যাংশ না দেওয়ার জন্য। এমন জালিয়াতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশার। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিৎ বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
এবিষয়ে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসির কোম্পানি সচিব জিএম রাশেদ এসিএস অর্থসংবাদকে বলেন, জীবনবিমা তহবিলের আকার ক্রমেই বাড়তে থাকে এ স্বাভাবিক, তবে সেই হিসাবে ইপিএস হিসাব করা হয় না। বছরে একবারই ইপিএস হিসাব করা হয় সেটি এক্সপেরিয়েন্স ভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে। সেই অনুযায়ী গত বছরের সাথে তুলনা করে এ বছরে লোকসান হয়েছে।
এবিষয়ে সোমবার (৩০ জুন) রাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম অর্থসংবাদকে বলেন, কমিশন থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে কোনো ধরনের জালিয়াতির প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি।
কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে, সমাপ্ত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ হিসাববছরে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১১ পয়সা। যা গত বছরের একই সময়ে আয় ছিলো ১৬ পয়সা। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৯৪ পয়সায়। লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ জুলাই।
এরআগে, হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি’২৪-মার্চ’২৪) শেষে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিল ছিলো ৫৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আগের হিসাববছরের একই সময় শেষে যা ছিল ৫০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের আকার বেড়েছে ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির জীবন বীমা তহবিলের আকার বাড়ে ৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। এছাড়া, তৃতীয় প্রান্তিক শেষে জীবন বীমা তহবিলের আকার বাড়ে ১১ কোটি ০৪ লাখ টাকা। সব প্রান্তিকে আয় বাড়লেও বছর শেষে শেয়ারপ্রতি ১১ পয়সা লোকসানে কোম্পানিটি।
এদিকে, সব প্রান্তিকে আয় বাড়লেও বছর শেষে লোকসান দেখানো প্রতিষ্ঠানটির নতুন বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৫’-মার্চ’২৫) আবারও আয় বেড়েছে। গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের আকার দাড়িয়েছে ৬৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, আগের হিসাববছরের একই সময় শেষে যা ছিল ৫৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের আকার বেড়েছে ৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৩৭ কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ১০ দশমিক ১৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ২৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৫২ টাকায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ২৭ টাকা থেকে ৫৫ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে উঠা-নামা করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৬ জুলাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৮৩০তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। আইপিওর মাধ্যমে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের ১ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে পুঁজিবাজার থেকে ১৫ কোটি উত্তোলন করেছে চাটার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। উত্তোলিত অর্থ সরকারি ট্রেজারি বন্ড, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করবে কোম্পানিটি। উল্লেখ্য, কোম্পানিটিকে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের আইন পরিপালনের স্বার্থে পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর ৩(২)(পি) বিধি পরিপালনের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হয়।
এসএম
পুঁজিবাজার
শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৫২ টাকা লভ্যাংশ দেবে বার্জার পেইন্টস

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানির বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড সর্বশেষ হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদেরকে ৫২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। অর্থাৎ প্রতি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা ৫২ টাকা ৫০ পয়সা লভ্যাংশ পাবেন।
আজ সোমবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচারলনা পরিষদের বৈঠকে গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছর কোম্পানিট ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৭২ টাকা ৬৬ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ছিল ৬৯ টাকা ৯২ পয়সা।
সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশফ্লো ছিল ৫৮ টাকা ৯৪ পয়সা, যা আগের বছর ১৩৯ টাকা ৬৪ পয়সা ছিল।
গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৩৩ টাকা ৪২ পয়সা।
আগামী ২৫ আগস্ট, সোমবার সকাল ১০টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ জুলাই।
এসএম