রাজনীতি
ভ্যাট না বাড়িয়ে সরকারকে খরচ কমানোর পরামর্শ বিএনপির

জনগণের ওপর ভ্যাট না বাড়িয়ে সরকারের অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পরিচালন ব্যয় কমানো ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোকে দেয়া ঋণ বাজেট কমানোর দিকে নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের সর্বপ্রথম নজর দেওয়া উচিত খরচ কমানোর দিকে। আমরা মনে করি, সরকার তার উন্নয়ন বাজেট পুনর্বিবেচনা করে অপ্রয়োজনীয় ও আর্থিকভাবে অযৌক্তিক প্রকল্পগুলো বাদ দিলে প্রায় ২০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব এবং এতে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে সহায়ক হবে। পরিচালন ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকার যদি স্থানীয় সরকারের বাজেট এবং ভর্তুকি খাতে খরচ কমায় এবং সার্বিকভাবে পরিচালন ব্যয় ১০ শতাংশ কমাতে পারে, তাহলে ন্যূনতম ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব। তাছাড়া, সরকার কর্তৃক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া ঋণের বাজেট কমিয়ে সাময়িকভাবে ব্যয় সাশ্রয় করতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫০,৮৭৫ কোটি টাকা ঋণ বাজেট করা হয়েছিল।
সরকার খরচ কমানোর মাধ্যমে বাজেটের ন্যূনতম ১ লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারে এবং ঘাটতি কমাতে পারে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই পদক্ষেপগুলো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সরকারের খরচ কমানোর এই উদ্যোগগুলো সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা কমাবে এবং অর্থনৈতিক চাপ লাঘব করবে। ফলে, জনগণ আর্থিকভাবে স্থিতিশীল হবে এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ী মহলসহ আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট নানা মহলে তীব্র অসন্তোষ পরিলক্ষিত হচ্ছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্পষ্ট প্রমাণ করে যে সরকারের মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি ও বাজার ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়ের চরম ঘাটতি রয়েছে। যদিও এনবিআরের সাম্প্রতিক বিবৃতিতে দাবি করা হয় বর্ধিত করারোপ খাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই, তথাপি দেশের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদেরা এনবিআরের এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের মতে, ওষুধ, এলপিজি, মোবাইল সেবা, রেস্তোরাঁর খাবার, এবং পোশাক এর মতো নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রে করারোপ বৃদ্ধি পেলে জনজীবনে ভোগান্তি আরও ত্বরান্বিত হবে এবং মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফন ঘটবে।
ভ্যাট ব্যবস্থার সমালোচনা করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এমনিতেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এই ভঙ্গুর অবস্থায় সহজ রাস্তায় হেঁটে ভ্যাটের হার তথা কর বাড়িয়ে সরকারের খরচ মেটানোর চেষ্টা করলে তা দেশের জনগণের জন্য কোনভাবেই কল্যাণকর হবে না। আমাদের মনে রাখা উচিত যে এই দেশের জনগণ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছে। আমরা যেন ভুল নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে তাদেরকে আবার সেই দুঃশাসনের মাঝে ফিরিয়ে না নিয়ে যাই।
তিনি বলেন, আমরা পূর্বেও বলেছি যে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতা করে যাব। তাই সরকারকে অনুরোধ করছি, আপনারা নীতিমালা প্রণয়নে জনগণের কথা সর্বপ্রথম বিবেচনায় নিন। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় রাজস্ব সংগ্রহের জন্য অন্যান্য উপায় বিবেচনা করার এবং সে অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
সরকারকে পরোক্ষ কর না বাড়িয়ে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেবার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারণ পরোক্ষ কর সকল শ্রেণীর মানুষকে প্রায় সমানভাবে প্রভাবিত করে এবং নিম্নবিত্ত মানুষের ওপর বোঝা বাড়ায়। প্রত্যক্ষ কর না বাড়িয়েও সরকারি খরচ কমিয়ে (Cost Cutting), এবং চলতি বাজেটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পুনঃবিন্যাস করেও চলমান আর্থিক সমস্যার সমাধান করা যায়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জাবিউল্লাহ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি
ঈদের পর দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঈদ করেই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ মালেক।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
এমএ মালেক বলেন, আপনারা সবাই উনার জন্য দোয়া করবেন। তিনি দেশবাসীর দোয়ায় আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। কারণ উনি তার প্রিয় সন্তান তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান, শর্মিলা রহমান, তিন নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, জাহিয়া রহমান এবং জাফিয়া রহমানের সঙ্গে বাসায় দারুণ সময় কাটাচ্ছেন। তারা সবাই উনার পাশে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা যুক্তরাজ্য বিএনপির টিম উনার পাশে আছি। আলহামদুলিল্লাহ উনি মেন্টালি খুব রিলাক্স। আমরা উনাকে অনুরোধ করেছি আমাদের সঙ্গে অন্তত এই ঈদটা করে যাওয়ার জন্য। আমরা আশা করি, উনি যদি আমাদের কথা রাখেন তাহলে ঈদের পরেই বাংলাদেশে যাবেন। উনি আগের চেয়ে অনেক ভালো রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, হাসিনাই উনাকে স্লো পয়জনিং দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। আল্লাহ অশেষ মেহেরবানী। আল্লাহর ক্ষমতা অনেক বেশি। হাসিনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। হাসিনা যখন লন্ডনে আসেন তখন তিনি ঘোষণা করেছিলেন খালেদা জিয়াকে হত্যার। আল্লাহ বলেছেন এর চেয়ে বড় পরিকল্পনাকারী আমি খোদ আল্লাহ। আল্লাহর পরিকল্পনায় হাসিনার পতন হয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার উত্থান হয়েছে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও কথাবর্তা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কথা বার্তা হয়নি। আমরা কোনও কথাবার্তা বলবোও না। কারণ রাজনীতিতে উনার অনেক সোর্স রয়েছে। উনি অনেক ব্রিফ পান এবং উনার দৃষ্টি বাংলাদেশের প্রতি রয়েছে। আমরা মা-সন্তানের তো উনার আশেপাশে ঘুরঘুর করি। এক টেবিলে ডাকলে আমরা মায়ের সঙ্গে বসে খাই। এটাই আমাদের আনন্দ এবং জীবনের চরম পাওয়া। উনি খুব ভালো আছেন।
গত ৮ জানুয়ারি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর আগের দিন কাতারের আমিরের শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির পাঠানো রাজকীয় বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা থেকে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামেন তিনি। সেখান থেকে সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৫ জানুয়ারি লন্ডন ক্লিনিক থেকে চিকিৎসদের ছাড়পত্র পেয়ে ছেলের বাসায় উঠেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
ভারতের কাছে হাসিনাকে ফেরত চাইলো বিএনপি

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে গণহত্যা হয়েছে, এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অবিলম্বে আমরা এখন থেকে চাইব, ভারত সরকার তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত দিয়ে বাংলাদেশের সরকারের হাতে দেবে এবং তাকে (শেখ হাসিনা) বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া তার সহযোগী যারা ছিল তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যানের সঙ্গে বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল এ কথা বলে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে কবে বাংলাদেশে নির্বাচন হচ্ছে। এ বিষয়ে সবার আগ্রহ থাকে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, আমরা সন্তোষ প্রকাশ করেছি যে, যে ঘটনাগুলো সত্য এগুলো প্রকাশ পেয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো যখন এই ঘটনাগুলো বলি তখন কেউ বিশ্বাস করতে চায় না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে যে হত্যাকাণ্ড হয় তার নির্দেশে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, গণহত্যা হয়েছে তারই নির্দেশে এখানে গণহত্যা হয়েছে, এটা আজকে প্রমাণিত হয়ে গেছে। এদেশের মানুষকে তিনি অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। যত মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্র হত্যা সবকিছু তারই নির্দেশেই হয়েছে। সুতরাং এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে হাসিনা ফ্যাসিস্ট। আমি জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলে, এটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কোনো পার্টি নিষিদ্ধ হবে কি হবে না? কোন পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে।
আয়নাঘর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু পার্টি নয়, দেশের বিভিন্ন মানুষকে গুম করেছে। তুলে এনে জঙ্গি নাটক সাজিয়েছে।
আনুপাতিক হারে নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, এটা আমরা পুরো বিরোধী। মানুষ এতে অভ্যস্ত নয়।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এটা আমরা আগেও বলেছি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার দুটো কারণে। বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, আর ওই গভর্ন্যান্স চালু করা। অর্থনীতি ঠিক হয়ে যাবে, ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া হচ্ছে না সেগুলো ঠিক হয়ে যাবে। নির্বাচিত সরকার না হলে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন।
নির্বাচনের ‘ডেড লাইন’ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমি তো বলতে পারব না। তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) বলেছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার চেষ্টা করছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
হয় আমরা থাকব না হয় আওয়ামী লীগ থাকবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

এই ভূখণ্ডে হয় আমরা থাকব না হয় আওয়ামী লীগ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বিপ্লবী ভাইয়ের শাহাদাত আমাদের ব্যর্থতা। আমরা এতদিন পর্যন্ত সুবিচার নিশ্চিত করতে পারিনি, আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারিনি। এই ভূখণ্ডে হয় আমরা থাকব না হয় আওয়ামী লীগ থাকবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গাজীপুরে হামলায় নিহত শিক্ষার্থী আবুল কাশেমের জানাজা শেষে লাশের কফিন নিয়ে মিছিলে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আজকে আয়না ঘর প্রকাশিত হয়েছে, আজকেই অভ্যুত্থান বিষয়ক জাতিসংঘের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, আজকেই আমাদের ভাই শহীদ হলেন। বিপ্লবী ভাইয়ের শাহাদাত আমাদের ব্যর্থতা। আমরা এতদিন পর্যন্ত সুবিচার নিশ্চিত করতে পারিনি, আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারিনি।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর এ ভূখণ্ডের দখল আমরা পেয়েছি। এ ভূখণ্ডে হয় আমরা থাকব না হলে আওয়ামী লীগ থাকবে। বিপ্লবীরা ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে এ দেশে থাকতে পারে না। আমরা স্পষ্ট করে সরকারকে বলতে চাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর শাস্তি নিশ্চিত করুন এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।
কফিন মিছিলে ছাত্র-জনতা- ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’; ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘আমার ভাই কফিনে, খুনি কেন বাহিরে’; ‘ছাত্র-জনতার অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, খুনি হাসিনা গেলি কই’; ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’; ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
মিছিলে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, গাজীপুরে অভ্যুত্থানের ৬ মাস পরে আমাদের ভাইকে কুপিয়ে শহীদ করা হলো। আমরা কিছুই করতে পারলাম না। লাশ সামনে নিয়ে বিগত দিনের ফ্যাসিবাদকে মনে পড়ছে। যে আওয়ামী লীগ আমার ভাইকে শহীদ করেছে সেই আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনীতি করার বিন্দু পরিমাণ অধিকার রাখে না। শহীদের লাশের শপথ করে বলছি, শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব।
কাশেমের মৃত্যুর ঘটনায় এর আগে কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। কর্মসূচি অনুযায়ী— সারা দেশের প্রত্যেক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে শহীদ আবুল কাশেমের গায়েবানা জানাজা এবং আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে খাটিয়া মিছিল করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলার দাবিতে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট দিনে ৬৪ জেলায় সমাবেশের পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি প্রকাশিত এক বিজ্ঞপিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে সমাবেশের দিনক্ষণ ও কেন্দ্রীয় নেতারা কোথায় বক্তব্য দেবেন তার তালিকা প্রকাশ করেছে।
১২ ফেব্রুয়ারি: স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাট, নজরুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জ, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ফেনী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ খুলনা, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ব্রাক্ষণবাড়িয়া, আসাদুজ্জামান রিপন রাজবাড়ি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল পটুয়াখালী, আরিফুল হক চৌধুরী সুনামগঞ্জ, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উ্ন নবী খান সোহেল জামালপুর।
১৭ ফেব্রুয়ারি: মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যশোর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান টাঙ্গাইল, সেলিমা রহমান মাদারীপুর, আবদুল আউয়াল মিন্টু চাঁদপুর, শামসুজ্জামান দুদু ঠাকুরগাঁও, আবদুস সালাম বগুড়া, আরিফুল হক চৌধুরী মৌলভীবাজার, জহির উদ্দিন স্বপন ভোলা।
১৮ ফেব্রুয়ারি: স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু পাবনা, শামসুজ্জামান দুদু পঞ্চগড়, জয়নুল আবদিন ফারুক কুমিল্লা দক্ষিণ, আবুল খায়ের ভুঁইয়া ঝিনাইদহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মানিকগঞ্জ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী হবিগঞ্জ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স নেত্রকোনা।
১৯ ফেব্রুয়ারি: স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নোয়াখালী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সিলেট, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমান কিশোরগঞ্জ, মিজানুর রহমান মিনু কুষ্টিয়া, ফরহাদ হালিম ডোনার শরীয়তপুর, মজিবুর রহমান সারোয়ার পিরোজপুর, রুহুল কবির রিজভী রাজশাহী।
২০ ফেব্রুয়ারি: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লক্ষীপুর, সেলিমা রহমান বরিশাল দক্ষিণ, আবদুল আউয়াল মিন্টু ময়মনসিংহ দক্ষিণ, আসাদুজ্জামান রিপন ফরিদপুর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান চুয়াডাঙ্গা, মিজানুর রহমান মিনু নওগাঁ, আবদুস সালাম কুড়িগ্রাম।
২২ ফেব্রুয়ারি: জয়নাল আবেদীন ঝালকাঠি, আহমেদ আজম খান চট্টগ্রাম দক্ষিণ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ময়মনসিংহ উত্তর, হারুনুর রশীদ জয়পুহাট, মাহবুব উদ্দিন খোকন কুমিল্লা উত্তর, আসলাম চৌধুরী বান্দরবান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া রংপুর, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ নরসিংদী।
২৪ ফেব্রুয়ারি: স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মুন্সিগঞ্জ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বরিশাল উত্তর, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী নড়াইল, আহমেদ আজম খান নাটোর, হারুনুর রশীদ গাইবান্ধা, হাবিব উন নবী খান সোহেল রাঙ্গামাটি, আবদুস সালাম আজাদ মাগুরা, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সৈয়দপুর।
২৫ ফেব্রুয়ারি: স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস নারায়ণগঞ্জ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গাজীপুর, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু চট্টগ্রাম উত্তর, বরকত উল্লাহ বুলু বাগেরহাট, নিতাই রায় চৌধুরী সাতক্ষীরা, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল দিনাজপুর, আমান উল্লাহ আমান মেহেরপুর, জয়নুল আবদিন ফারুক নীলফামারী, মনিরুল হক চৌধুরী খাগড়াছড়ি, আবদুস সালাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ সবার: জামায়াতের আমির

ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ সবার। আমরা আমাদের এ দেশে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু একেবারেই মানি না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে তারা এ দেশের মর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারো ওপর জোর খাটানোর কোনো অধিকার রাখে না। অন্য ধর্মও কোনো ধর্মের ওপর জোর খাটাতে পারবে না, যদি সেটি ধর্ম হয়ে থাকে।
আজ শনিবার সকালে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর পর কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হওয়া জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
ডা. শাফিকুর রহমান বলেন, সমাজের মধ্যে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু বলে যুদ্ধ লাগিয়ে রাখা হয়েছিল। এখানে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু বলে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের ভাই-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের সম্পদ গ্রাস করা হয়েছে। জায়গা-জমি দখল করা হয়েছে। ইজ্জতের ওপর হাত দেওয়া হয়েছিল। ক্ষেত্র বিশেষে তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর দোষ দেওয়া হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ওপর।
ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় কোথায় জামায়াতের কর্মীরা এসব অপকর্ম করেছে, তা সুস্পষ্ট করে নামঠিকানা দিয়ে আমাদের সাহায্য করুন। আপনাদেরকে কথা দিচ্ছি, ন্যায়বিচার আমরা আপনাদের হাতে তুলে দেবো। আমরা নিশ্চিত এই অপকর্মের সঙ্গে আমাদের সহকর্মীরা জড়িত নয়।
২৪-এর অভ্যুত্থানকারী প্রজন্মকে সম্মান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, তোমাদের নেতৃত্বে আমরা ছিলাম। সাড়ে ১৫ বছর আমরা আমাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। কিন্তু স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারিনি। এটাই সত্য কথা। কিন্তু সাড়ে ১৫ বছরের ধারাবাহিকতায় তোমাদের নেতৃত্বে জাতি শেষ আঘাতটা ফ্যাসিজমের ওপর দিয়েছিল এবং জাতি সফল হয়েছে।
আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অনেকে আবার নিজেরা কৃতিত্ব দাবি করে। আমি মাস্টারমাইন্ড, অমুক ভাই মাস্টারমাইন্ড, তমুক নেতা মাস্টারমাইন্ড। মহা পরিকল্পনাকারী মহান রব্বুল আল আমিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। এখানে কোনো মাস্টারমাইন্ড আমরা বিশ্বাস করি না।
ডা. শাফিকুর রহমান আরও বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমরাও সেভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো, সেটা ছিল আমাদের আশা। কিন্তু বাস্তবে সে আশা পূরণ হয়নি। যদি বলি একেবারেই পূরণ হয়নি, তাহলে কথাটা সত্য হবে না। কিন্তু পূরণ হওয়ার বিশাল প্রত্যাশা মানুষের ছিল। একটা স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা আমরা এখনো পেলাম না।
নিজ দলের প্রতি অবিচারের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াতের আমির বলেন, আইনের অঙ্গনে এসে যারা বেআইনি কর্মকাণ্ড করেছেন, প্রধান বিচারপতির দরজায় এসে লাথি দিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগ তাদের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বানিয়েছিল। এদের কাছ থেকে বিচার পাওয়া যাবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই অবিচারের শিকার হয়ে আমাদের ১১ জন কলিজার টুকরা শীর্ষ নেতা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাদেরকে ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে আমরা অবশ্যই অপকর্মের বিচার চাই। আমাদের কথা স্পষ্ট। সবগুলো খুনের বিচার হতে হবে। বিশেষ করে ২৪-এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। আগে বিচার তারপর অন্য কাজ। এ বিচার না হলে শহীদের আত্মা কষ্ট পাবে।
এ ছাড়া সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ বক্তব্য প্রসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, পুলিশ ভাইদের বলছি, বেনেজিরের ফাঁদে পা দেবেন না।